শিমুল হোসাইন
মানুষের মনোভাব কত ধরনের? এক, দুই, কিংবা আরো??
মাঝে মাঝে আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় কে কেমন। কেউ খারাপ, কেউ ভাল, কেউ বা মন্দ। এই সবকিছু নিয়েই আমাদের সমাজ। ভালো-মন্দের সমাহার। কাউকে দেখে বোঝা যায় না কে কেমন। বুঝতে হলে তার সাথে কথা বলতে হয়, সখ্যতা গড়ে তুলতে হয় তারপর বোঝা যায় কে কেমন। মাঝে মাঝে আমাদের অনেক পরিচিত মানুষের সম্পর্কে আমাদের ধারণাও অসত্য প্রমানিত হয়। অর্থ্যাৎ কে কেমন এটার বাছ-বিচার করা খুব সহজ না। ভাল-মন্দ থাকবেই। আমাদের ভালোকে সঙ্গ, মন্দকে ত্যাগ করতে হবে।
মানুষ সভাবতই অভ্যাসের দাস। এই অভ্যাসের দাসে পরিণত হওয়ার পর কখন যেন মানুষ নিজেকে হাড়িয়ে ফেলে, নিজেকেই নিজে না পারে চিনতে, না পারে বুঝতে। আবার ইসলাম ধর্ম বলে, মানুষের নফস নামক সত্ত্বা আছে। মানুষ নফসের ধোকায় পরে বিভিন্ন মন্দকাজে লিপ্ত হয়।
ভালো-মন্দ মানুষ নিয়ে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের খুব সুন্দর একটি উক্তি আছে। উক্তিটি হলো, “ভালো মানুষ সবসময় বিচ্ছিন্ন; তারা একাএকা থাকে, আর খারাপ মানুষ! তারা থাকে দলবদ্ধ, ঐক্যজোট”। আসলে আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের এই উক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ন। বাস্তবতার নিরিখেও এই কথাটি সত্য। আজকে যারা মন্দকাজে লিপ্ত তাদের বন্ধুর অভাব নেই। তাদের সঙ্গ দেওয়ার লোকও কম না। তাদের সাথে কথা বলার জন্য লোকে মুখিয়ে থাকে । ভাবে বোধহয় তাকে সে সৎ পরামর্শ দেবে। আসলে সে যে ভূল ঠিকানায় এসেছে সেটা বলতে দ্বিধা নেই।
মন্দলোকেরা আজকে ঐক্যজোট। তাাদেরকে আপনি কখনো একা পাবেন না, যদি আপনি তাদের কিছু বলতে যান সেটা আপনার ভূল। আপনার কথা তো তারা শুনবেই না, উল্টো আপনাকেও জ্ঞানের কথা শুনিয়ে দেবে।
মন্দলোক যে আপনার প্রতিবেশী শুধু এটা অনুমান করা ঠিক নয়, কেননা আজ বাঙলা মন্দলোকে স্বয়ংসম্পূর্ন। যেখানেই যাবেন সেখানেই তাদের পাবেন। বিশেষ করে আপনার কর্মসংস্থান কিংবা প্রতিবেশি কারো কর্মলয়ের কথা শুনতে চাইলে জানতে পারবেন মন্দ লোক কি পরিমান। তাদের সময়নিষ্ঠা এবং কর্মগতি দেখলেই বোঝাযায় তারা কেমন । মন্দলোক যদি দেখতে চান তবে সরকারী প্রতিষ্ঠান তার উৎকৃষ্ট উদাহারণ। সেখানে গেলে দেখবেন, পাঁচমিনিটের কাজ কিভাবে ঘন্টায় করতে হয়। তারা জানে তারা যত দেরি করেই কাজ করুক; তারা ঠিকই টাকা পাবে, তাও সময়মতো।
বিপরীত দিকে, ভালো লোকদেরকে প্রথমেই আপনার মন্দ মনে হবে, মন্দ মনে হওয়ার প্রবণতাটাই বেশি। কারণ, ভালো সবসময় ভালোই চায়, কারো মন্দ চায় না। আর তার এই ভালো চাওয়াটাকেই আমাদের মন্দ ভাবার কারণ। ভালো মানুষেরা সবসময় নিরবচ্ছিন্ন। তাদের কোনো হট্টগোল করতে দেখা যায়না। তারা এসমস্ত বিষয়াদি এড়িয়ে চলে। তারা একাএকা চলে। তাদের বিশেষ কোনো বন্ধু থাকেনা, থাকলেও সংখ্যায় কম।
সবসময় ভালো ব্যাক্তিত্বের লোকেরা কথা কম বলে। তারা নিরব ভূমিকা পালন করে। তারা বেজায় চটে না গেলে কারো বিরুদ্ধে কথা বলে না।
আমাদের উচিত ভালো কে ভালো বলা, ভালোর সাথে থাকা। আর মন্দকে উচিত ত্যাগ করা এবং মন্দকে সঙ্গ না দেওয়া।
সাভার,ঢাকা।