সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ বয়সে বড় আবার কেউ ছোট। কেউ শিক্ষা বিষয়ক কন্টেন্ট তৈরি করে আবার কেউ সোশ্যাল ইন্সফ্লুয়েন্সার হিসেবে আবার কেউ বা অভিনয় বা মডেলিংয়ের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশী কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে যারা সবচেয়ে আলোচিত ও জনপ্রিয় তাদের মধ্যে অবধারিত ভাবেই যে নামটি উঠে আসে সেটি হলো সিমরিন লুবাবা। বয়স মাত্র তের বছর কিন্তু এই বয়সেই সে খ্যাতির শীর্ষে অবস্থান করছে। এটিকে খ্যাতি বলুন বা আলোচনা সমালোচনা বলুন সিমরিন নামটি সেখানে বেশ উজ্জ্বল। সিমনি লুবাবার দাদু প্রয়াত অভিনেতা আব্দুল কাদের। তিনি জীবিত থাকতে সিমরিন লুবাবা তেমন আলোচিত না হলেও বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে সবচেয়ে আলোচিত দশজন ব্যবহারকারীর মধ্যে সে অন্যতম। বিষয়টা এমন হয়ে গেছে যে সিমরিন কিছু একটা বললেই তা নিয়ে নিউজ হয়েছে। ইংরেজী মাধ্যমের শিক্ষার্থী হওয়ায় সিমরিনের বাংলা উচ্চারণ অনেক সময় অন্যরকম শোনায়। আর সেটা নিয়েই নেটিজেনরা আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। সে যাই হোক সম্প্রতি সময়ে সিমরিন লুবাবার ফেসবুক পেজে ৮ লাখ ফলোয়ার পূর্ণ হয়েছে। যদিও এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে সিমরিন লুবাবার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ফলোয়ার সংখ্যা ৮ লাখ ২৮ হাজার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এতো সংখ্যক ফলোয়ার হওয়ার তার যে উচ্ছ্বাস ছিল না তা নয়। তবে কোনো ভাবে যেন অহমিকা প্রকাশ না পায় তাই সিমরিন ও তার পরিবার কখনো এগুলো ঢালাও ভাবে প্রকাশ করে না বা সেলিব্রেট করে না। কিন্তু এবারের আয়োজনটা হুটকরেই হয়ে গেল। মুবাশশির সিদ্ধান্ত নিলো সিমরিন আপুকে চমকে দিবে। সে কুপার্স থেকে একটা বড় কেক কিনলো। উপরে লিখলো সিমরিন লুবাবা ৮০০ কে। যারা বর্তমান যুগ সম্পর্কে খোজখবর রাখেন তারা সহজেই বুঝে ফেলেন যে এই ৮০০ কে মানে আট লাখ। কেক দেখে সিমরিন খুশি হলো। তবে মুবাশশিরকে বললো তুমি কেন এগুলো করতে গেলে? মুবাশশিরের একটাই কথা আপু তুমি সেলিব্রেট করতে না চাইলেও আমি এমন একটি মুহুর্ত সেলিব্রেট না করে পারছি না। এই যে অর্জন এটাতো শুধু তোমার একার নয় বরং এই ৮ লাখ সদস্য বন্ধু যারা তোমার পেজের সাথে যুক্ত হয়েছে তাদেরকেতো এপ্রিশিয়েট করতে হবে। ধন্যবাদ জানাতে হবে। তাই ভাবলাম তোমার সাথে এই মুহুর্তটি উদযাপন করি।
মুবাশশির এখন ক্লাস সিক্সে পড়ে। ওর স্কুলের নাম সেক্রেড হার্ট হাইস্কুল। ও নিজেও নানা বিষয়ে কন্টেন্ট তৈরি করে। ওর কন্টেন্ট গুলো মূলত শিক্ষামূলক এবং তথ্যমূলক। মুবাশশিরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তুমি কিভাবে কন্টেন্ট তৈরিতে উৎসাহী হয়েছ? সে তখন উত্তর দিয়েছে সে মূলত সিমরিনকে দেখেই আগ্রহী হয়ে উঠেছিল। অল্প কিছুদিনেই মুবাশশির সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ ভালো সাড়া ফেলতে পেরেছে। যেমন বোন তেমন তার ভাই। পাশ থেকে বলছিলো সিমরিনের এক টপ ফ্যান।
বাস্তব জীবনে সিমরিন লুবাবা কেমন? এমন প্রশ্নের জবাবে মুবাশশির বলেছে সিমরিন আপুকে আপনারা যেমন দেখেন বাস্তবে সে অন্যরকম। এক কথায় অসাধারণ। সে মিষ্টি করে গুছিয়ে কথা বলে। নিয়মিত নামাজ পড়ে আর কুরআন তিলাওয়াত করে। তার রুমে তার নিজের ছবিও নেই অন্যদের ছবিও নেই। সিমরিন লুবাবা ও তার ভাইয়া মিলে একটি ইউটিউব চ্যানেলও তৈরি করেছে। চ্যানেলটির নাম “ আখিরাহ পডকাস্ট” । মাত্র একটি ভিডিও আছে পুরো চ্যানেলে। তবে মজার বিষয় হলো এরই মাঝে চ্যানেলটিতে মোট সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৪২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। চ্যানেলের নাম দেখেই অনুমান করা যায় এটি মূলত ইসলামিক কন্টেন্ট দিয়ে সমৃদ্ধ করা হবে।
সিমরিন লুবাবার ফিউচার প্ল্যান সে ও তার ভাইয়া মিলে আখিরাহ পডকাস্ট চ্যানেলটিকে সুন্দর কন্টেন্ট দিয়ে ভরিয়ে তুলবে। বাস্তব জীবনে সিমরিন লুবাবা তার আয়ের একটা বড় অংশই অসহায় মানুষদের কল্যাণে ব্যায় করে থাকে। মুবাশশির নিজে বোনের হয়ে যশোরে এক অসহায় বৃদ্ধকে অর্থ সহায়তা দিয়েছিল। মুবাশশিরের সাথে তখন ওর এক বন্ধু জিলা স্কুলে পড়ুয়া ফয়সালও ছিলো।
সিমরিন লুবাবা মুলত তার নানা বক্তব্যের কারণে বেশি আলোচিত। সে একজন শিশু শিল্পী । তবে এখন আর সে নিজেকে শিশু শিল্পী হিসেবে না দেখে বরং মডেল ও অভিনেত্রী মনে করে। সেই সাথে সে বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে।
সিমরিন লুবাবা তার ফেসবুক পেজে ৮ লাখ ফলোয়ার পূর্ণ হওয়ায় মুবাশশিরকে নিয়ে কেক কেটে সেলিব্রেট করার পাশাপাশি সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে, ধন্যবাদ জানিয়েছে। সে মনে করে তার এই পযর্ন্ত আসার পেছনে এই সব সাপোর্টারদের অবদান অনেক। সবাই এভাবে সাপোর্ট করলে সে আরও এগিয়ে যাবে।