The Diary of Anna Frank
এই মেয়েটি বাড়ীর পিছন দিকের লুকোনো চিলেকোঠায় লুকিয়ে ছিলো। বেশী না। ৭৬১ দিন। মানে ২৫ মাস, অর্থাৎ দুই বছরের একটু বেশী।
যেখানে লুকিয়ে ছিলো সে জায়গাটার আয়তন ৪৫০ বর্গফুট। আর ওইটুকু জায়গায় মেয়েটিসহ মোট ছিলো আটজন।
দুই বছর ওই জায়গাতেই থাকা, ঘুম থেকে ওঠা, বাথরুম সারা, সামান্য কিছু খাওয়া, ওইখানেই সন্ধ্যে, রাত দেখা। বাইরে সারা শহরে নাৎসি বাহিনী, গেস্টাপো ঘুরে বেড়াচ্ছে, উপরে আকাশ থেকে বোমা বর্ষণ হচ্ছে। ধরা পড়লেই শেষ।
আর আমাদের মতো হাতে সেলফোন? সেলফোনে সারা বিশ্ব দেখা? ইন্টারনেট? ল্যাপটপ? স্কাইপি, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও চ্যাট?
১৯৪২ সালে স্বপ্নেও কেউ ভাবেনি ওসবের কথা। তাহলে? সময় কাটানো কীভাবে? মেয়েটি ডায়েরি লিখতো প্রতিদিন।
মাত্র ১৫ বছরের মেয়েটি প্রতিদিন লিখে গেছে ডায়েরি।
লিখেছে তার কথা, তার বাবা মায়ের কথা। লিখেছে তার শরীর কীভাবে বদলে যাচ্ছে সেসব বর্ণনাও। সে অকপটে লিখে গেছে সব কথা।
সে লিখেছে–
‘Because paper has more Patience than People’.
কী সাংঘাতিক কথা ১৫ বছরের মেয়ের। মানুষের ধৈর্য নেই, কিন্তু কাগজের আছে। মানুষ আরেক মানুষের আদর্শ, ধর্মবিশ্বাস এসবের সম্মান দেয়না, কিন্তু কাগজ দেয়। মেয়েটি তাই কাগজকেই বলে সব কথা।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। কোনোও এক বিশ্বাসঘাতক তাদের ধরিয়ে দেয়। পরিবারের আটজনের অনেককেই মেরে ফেলা হয়। এই মেয়েটি আর তার বড় বোন টাইফাস জ্বরে মারা যায় নির্যাতন ক্যাম্পেই। শুধুমাত্র মেয়েটির বাবা বেঁচে ফিরতে পেরেছিলেন।
মেয়েটি এত কিছুর পরেও আনন্দ, সৌন্দর্য, মানুষের মহত্ত্ব এসবের উপর বিশ্বাস হারায়নি। মেয়েটি যেসব কথা লিখেছিলো তার থেকে কয়েকটি প্রিয় উদ্ধৃতি দিচ্ছি। আমি নিশ্চিত যে, আপনাদের এই যে খুব খারাপ লাগছে এ সময়ে, এখন কথাগুলো পড়লে বদলে যাবে আপনার ভাবনা।
‘How Wonderful it is that nobody need wait a single moment before starting to improve the World’.
‘ভাবলে ব্যাপারটা কতো চমৎকার যে, আসলে পৃথিবী বদলে দেবার জন্য কারও এক মুহূর্ত অপেক্ষা করার দরকার নেই’।
‘Think of all the Beauty still left around you and be Happy’.
‘চারিদিকের যেসব সৌন্দর্য এখনও বাকী আছে তা দেখো আর আনন্দিত হও’।
‘I can shake off everything as I write; My Sorrows disappear, my Courage is reborn’.
‘আমি লিখতে শুরু করলেই সব ঝেড়ে ফেলতে পারি। আমার দুঃখ দূর হয়ে যায়, আমার সাহস ফিরে আসে’।
“I’ve found that there is always some beauty left. In nature, Sunshine, freedom, in yourself; these can all help you’.
‘আমি দেখেছি সৌন্দর্য কোথাও না কোথাও শেষমেশ থাকেই। প্রকৃতিতে, সূর্যালোকে, স্বাধীনতায়, নিজের ভেতরে। আর এই সৌন্দর্যগুলো তোমাকে সাহায্য করবেই’।
‘I don’t think of all the misery, but of the beauty that still remains’.
‘আমি দুঃখ কষ্টের কথা ভাবিনা, ভাবি যা সৌন্দর্য এখনও বাকী রয়ে গেছে তার কথা’।
‘Whoever is happy will make others happy’.
‘যে নিজে সুখী, সে অন্যকেও সুখী করতে পারে’।
‘In the long run, the Sharpest weapon of all is a kind and gentle spirit’.
‘শেষমেশ সবচেয়ে উপযুক্ত অস্ত্র হলো- দরদী এবং মরমী একটি মন’।
‘Where there’s hope, there’s life. It fills us with fresh courage and makes us strong again’.
‘যেখানে আশা আছে, সেখানেই জীবন আছে। এই আশা আমাদের নতুন সাহস জোগায় এবং শক্ত হতে সাহায্য করে’।
‘Inspite of everything, I still believe that people are really good at heart’.
‘সবকিছুর পরেও আমি বিশ্বাস করি যে, মানুষ তার ভেতরে সত্যিই ভালো’।
মেয়েটির লেখায় বারবার ‘যতোটুকু সৌন্দর্য বাকী আছে’ এ কথা কেনো বলেছে তা বোঝা যাবে দ্বিতীয় ছবিতে। চিলেকোঠার জানালাটা গাঢ় রঙের পর্দা দিয়ে ঢাকাই থাকত, কিন্তু বাইরে বোমাবিধ্বস্ত শহরের চেহারা তখন এমনই।
মেয়েটির নাম এ্যানা ফ্র্যাঙ্ক।
So don’t lose “hope”…Stay “motivated”…And fight till the “end”.