-আব্দুল করিম আল-আহমদ
১)
জন্ম
আমি জন্মেছিলাম,
নির্ধারিত তারিখের একটু আগে,
রাতে যখন প্রচন্ড বিতর্ক,
সবকিছুতে।
শর্তাবলী মেনে চলার শর্তে মুক্তি পেয়েছিলাম,
আমি প্রতারিত হয়ে জন্মেছিলাম এবং এখনও প্রতারিত।
সেই মুহুর্তে যখন শয়তান তার তৃতীয় বিজয়ের জন্য রুটির শরাব পান করছিল
সেই রাতে,যখন ছুরিতে শান দেয়া হচ্ছিল।
আমি জন্মেছিলাম,
একটি বালিশে,যা সুই সুতোয় সেলাই করা হয়েছিল।
ক্রমশই বৃদ্ধি পাওয়া
দায়বদ্ধ ধারণাগুলোর সাথে,
এমন হাত নিয়ে যা সশস্ত্র যুদ্ধ করতে পারে না,
এমন আত্মা নিয়ে যেখানে উদ্বেগ শিকড় গেড়েছে।
এমন মুখ নিয়ে যা কথা বলতে গিয়ে আটকে যায়।
এবং একটি যৌগিক নাম নিয়ে যার সাথে আধুনিকতার কোন যোগসূত্র নেই
এবং সমস্ত সম্ভাবনার উন্মুক্ত হৃদয় নিয়ে।
আমি জন্মেছিলাম,
খোদার আদেশ দ্বারা।
তৃতীয় বিশ্বের
এক গলিতে।
প্ল্যান বি অনুসরণ করে,
কিছুটা আদিম উপায়ে
এমন প্রসূতির ক্লিনিকে,যিনি ভাগ্যকে বিশ্বাস করেননি।
আমি কিস্তিতে জন্মেছি
দেহ থেকে মুক্তি নিয়ে,
সেই গর্ভ থেকে যা গর্ভপাতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।
২)
ডুবন্ত পল সেলানের প্রতি
যেন এইমাত্র ঘটেছে
সেই নদী যার মাথায় তুমি ঘুরবে,
তোমাকে মনে পড়ে
আজো,
মনে আছে
তোমার সারিবদ্ধ ললাট
তোমার দীর্ঘ চাহনি,
অজানার উদ্দেশ্যে।
তোমার সাদা হয়ে আসা হাত,
ছুরির ফলা আর তোমার ভয়ঙ্কর লাফের কারণে
সেই পাগলাটে সকালে।
সেলান,সবকিছু বাস্তব ছিল,
সেই রহস্যময় ঘটনায়
তোমার জলরোধী জুতা
তোমার শেষ সিগারেট
মিরাবেউ ব্রিজ,
দূরের স্টিমবোটের বাঁশি
তোমার ছায়া যে সবসময় তোমাকে অন্যরকম দেখতে চেয়েছিল।
সেই স্বপ্নগুলো যা শেষ দৃশ্যটা কেমন হবে তার কল্পনা
আর সাত স্তরের আকাশ।
কেন তুমি জিনিসগুলি নিয়ে দীর্ঘকাল ভাবলে না?
পৃথিবী কি এতই ভয়ঙ্কর ছিল?
চৌম্বক নদীর কাদা সম্পর্কে বিশ্বকে জানাতে কী করেছ?
প্রকৃতির মুখে বসতি স্থাপন করা একটি বাগান
অথবা দুই তীরের মাঝখানে চাপা নদীর শিকড়।
সেলান,
তোমার বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল সূর্য
এবং উৎসুক জলের সাধুবাদ,
দারুণ উৎসাহ নিয়ে
তোমার অপ্রতিরোধ্য উপস্থিতি।
জার্মানভাষী ইহুদি,
কমরেড,যাকে বন্দী শিবিরে যন্ত্রণা দেওয়া হয়েছিল।
সেলান
আমরা তোমার অভাব অনুভব করি
আমরা যারা খুব বেশি পড়ি না
আমরা যারা এই আঙ্গুলের উপর টিপে
তাই তারা কিছু বলে,
আমরা যারা সুযোগের উপর নির্ভর করি
নিজেদের খুঁজে পেতে।
আমরা,যারা তোমাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার চেষ্টা করছি।
[টীকা: কবি পল সেলান একজন জার্মান ভাষার কবি।তাঁর সম্পর্কে জানলে দ্বিতীয় কবিতাটি বুঝতে পারবেন।]
লেখক পরিচিতি:
আব্দুল করিম আল-আহমদ সিরিয়ার একজন লেখক।বর্তমানে তিনি জার্মানিতে থাকেন।তিনি কবিতা,গল্প এবং সামাজিক ব্লগ লিখে থাকেন।তাঁর কবিতা বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।
কবিতাগুলো ভাষান্তর করেছেন: টি এইচ মাহির
ইংরেজি ভাষান্তর করেছিলেন: ক্যাথরিন কোভাম