Thursday, November 21, 2024
Homeসাহিত্যগল্পরোজা রাখার আনন্দ

রোজা রাখার আনন্দ

মুহাম্মদ মুহিউদ্দীন ইবনে মোস্তাফিজ

চারদিকে হৈ চৈয়ে মেতে উঠছে একটু পরই পশ্চিম আকাশে উঁকি দিবে পবিত্র মাহে
রমজানের বার্তা নিয়ে চাঁদমামা, মাগরিবের নামাজ শেষে চাঁদ দেখার জন্য ভির
জমিয়েছে ছোট বড় সকলেই; কে কার আগে চাঁদ দেখবে তা নিয়ে যেন এক বিরাট
প্রতিযোগিতা। কেউ বা আবার চাঁদ উঠেছে বলে অন্যদের ধোকা দিচ্ছে, এ দিকে
চাঁদমামা যে ভাগ্নেদের সাথে দেখা দেওয়ার অপেক্ষায় আছে, অমনি পশ্চিম আকাশে
উঁকি দিলো চাঁদমামা। সবাই মিলে এক সাথে চিৎকার দিয়ে উঠলো, চাঁদ উঠেছে। সবাই
আনন্দে উৎফুল্ল, আমিও অনেক খুশি। কারণ এ বৎসর আমি রোজা রাখবো।
আমি দৌড়ে গিয়ে আম্মুকে বললাম, আমি রোজা রাখবো।
আম্মু বললো, না তুই এখনো ছোট রোজা রাখতে পারবি না।
আমি বললাম, আমি রোজা রাখতে পারবো। রোজা রাখবোই রাখবো।
আম্মু বলে না রোজা রাখতে হবে না। আমি তো নাছোর বান্দা আমিও ছাড়ছিনা, আম্মু
আমার সাথে কথায় না পেরে বললো, ঠিক আছে রোজা রাখিস। এ প্রথম বারের মতো
রোজা রাখবো, মনে মনে আমি অনেক খুশি। আম্মু আমাকে সেহেরীর সময় ডেকে
দিলো। আমি উঠলাম, উঠে অযু করে সেহেরি খেয়ে নিলাম। তারপর মসজিদের দিকে
রওয়ানা হলাম ফজরের নামাজ আদায় করার জন্য। ফজরের নামাজ আদায় শেষে বাড়ি
ফিরে এসে ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুম থেকে উঠার পর গোসল করতে গেলাম। পুকুর মনের
মতো করে গোসল করলাম। পিছন থেকে এক মুরবী মানুষ বলে উঠলেন, এই ছেলেরা
বেশি গোসল করলে রোজা হালকা হয়ে যাবে। তার কথা শুনে আমি তাড়াতড়ি করে পুকুর
থেকে উঠে পড়লাম। এতো কষ্ট করে রোজা রেখেছি তা যদি হালকা হয়ে যায়। বড় হয়ে
বুঝতে পারলাম মুরবীর কথা ভুল ছিলো। এদিকে আবার যোহরের সময় ঘনিয়ে এলো।
যোহরের নামাজ আদায় করার জন্য মসজিদে গেলাম। যোহরের পরে আমার বেশি
পানির পিপাসা পেল। যে গরম পড়ছে তাতে আমি শেষ হয়ে যাবো পানি না খেতে পারলে।
কাক ফাটা রোদে আমি শেষ।
আমি আম্মুকে গিয়ে বললাম, আম্মু আমার খুব পানির পিপাসা পেয়েছে।
আম্মু বললো, আমি বলে ছিলাম না; রোজা রাখতে পারবি না তাও রাখলি।
আমি আম্মুকে বললাম, আমি রোজা রাখবো ভাঙ্গবো না। দুপুরের পর ছোটছোট
বন্ধুরা মিলে খেলাধুলা করে সময় পার করছিলাম। খেলাধুলা করতে করতে আসরের
সময় হয়ে গেল। আসরের নামাজ আদায় করতে মসজিদে গেল বন্ধুদের সাথে। নামাজ
শেষে আমি শুধু ঘড়ির দিকে বার বার তাকাচ্ছি, সময় কেন যাচ্ছে না? মুয়াজ্জিন
সাহেব কেন স্যাইলেন দিচ্ছে না। আব্বুর কানের সামনে গিয়ে ঘ্যানঘ্যান করতে
লাগলাম। আব্বু বললো, কী হয়ছে? এতো হতাশ হচ্ছিস কেন? আমি আব্বু বললাম,

আজকের রোজাটা অনেক বড়। রোজা শেষি হচ্ছে না। আব্বু ও আমার সাথে
তাল মিলেয়ে বললো, আজকের রোজাটা অনেক বড়। এদিকে মুয়াজ্জিন সাহেব ও
স্যাইলেন দিচ্ছে না। আব্বু বললো, একটু ধৈর্যধর ঠিক সময়ে মুয়াজ্জিন স্যাইলেন
দিবে। এর কিছু সময় পর মুয়াজ্জিন সাহেব স্যাইলেন দিলেন। সবার আগে আমি দৌড়ে
গিয়ে পানি পান করলাম। আমার দৌড় কে দেখে। পানি পান করার পর মনে হলো বুকে
প্রাণ ফিরে এসেছে। তৃষ্ণার্ত গলা পানি পেয়ে খুশিতে নাচছে। পানি পান করার পর
কি যে শান্তি পেলাম। প্রথম বার রোজা রেখে যেমন অনেক আনন্দ পেলাম; তেমন
প্রথম বার সম্পূর্ণ রোজা শেষ করতে পেরে আমি অনেক খুশি।

মুহাম্মদ মুহিউদ্দীন ইবনে মোস্তাফিজ
কাপ্তাই রাস্তার মাথা, চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম।

Facebook Comments Box
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনিhttps://protiddhonii.com
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments