কবিতার প্রতিধ্বনি – কবিতার এক পাতা
প্রতিধ্বনির সাপ্তাহিক আয়োজন
২১/০২/২০২৫ ||শুক্রবার
লিখেছেন যারা-
- জাজাফী
- গাজী আবু হানিফ
- মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ
- মাসুমা সুলতানা হাসনাহেনা
- রানা জামান
- মুহাম্মদ তমিজুল হক রিপন
- শ্রী উত্তম সরকার
- সঙ্ঘমিত্রা দাস
- নুরুল ইসলাম বাবুল
- অথই মিষ্টি
- জাকির আলম
- ফেরদৌস জামান খোকন
- শাকিলা নাছরিন পাপিয়া
- মোঃ নূরনবী ইসলাম সুমন
ই-পেপার পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন অথবা এই পাতা থেকেই পড়ুন
যে আমি অন্ধকারে হাঁটিনি কখনো
জাজাফী
মৃত্যুর পর আমাকে কবরে রেখে ফিরে যাবে লোকে
প্রিয়জন কিছুদিন স্মৃতিগুলো মনে করে কেঁদে যাবে শোকে।
পঁচে যাবে আমার এই সুন্দর দেহ,মাটিতেই মিশে যাবে সব
মুছে যাবে মানুষের মন থেকে এই নাম,থেমে যাবে সব কলরব।
যে আমি অন্ধকারে হাঁটিনিকো কোনো দিন, থাকিনি কখনো একা একা
সেই আমাকে মৃত্যুর পর কবরে থাকতে হবে,প্রিয়জনে পাবো নাকো দেখা।
কেমন সে পৃথিবীটা? যারা গেছে কেউ আর আসেনিতো ফিরে
যোগাযোগ নেই কোনো,সেই পথে আমিও যে হাঁটি ধীরে ধীরে।
খালি হাতে পৃথিবীতে এসে, উতলা হয়েছি আমি কত কিছু পেতে
যদিও মৃত্যু হলে সব ছেড়ে খালি হাতে হবে চলে যেতে।
হায় অভাগা আমি! যা কিছু আমার নয় তাই পেতে এতো পেরেশানি
যদিওবা সারাক্ষণ অদৃশ্যলোক থেকে মৃত্যুরা দেয় হাতছানী।
বসন্তের আগমনী গান
গাজী আবু হানিফ
শীতের হাওয়া বদলে গেছে এসেছে দখিনা বাতাস,
শাখায় শাখায় কুঁড়ি মেলেছে ফুলেরা মেলেছে চোখ;
প্রজাপতি পাখিরা কলরবে মাতে মেলেছে আনন্দে ডানা
সূর্য হাসে পুবাকাশে ঝলমল বর্ণিল প্রকৃতির বুক।
পাতায় পাতায় ঝন ঝন তালে বসন্তের আগমনী গান
জেগেছে শিশু কিশোর যুবক বনে বনে গুঞ্জন ;
ফুল মেয়েরা দোলাইছে চুল সুঘ্রাণে বিহ্বল
ছোট পাখি টুনটুনি নাচে অলি করে ভন ভন।
কৃষ্ণচূড়া পলাশ শিমুল আগুন রঙে হাসে
নন্দনে নন্দনে সুর তোলে কোকিল কুহু কুহ তানে;
দোয়েল মেয়েরা বাচ্চা নিয়ে উড়ছে আমের ডালে
আমের মঞ্জুরির পোকা খেয়ে চোখ টানে মাঠ পানে।
পাতায় পাতায় মর্মর ধ্বনি বইছে পুলক হাওয়া
ভুবন জুড়ে বৃক্ষজগতে বসেছে বসন্ত মেলা;
ঋষি তার চোখ খোলে কবি লেখে কবিতা
ফাগুয়ার রাগে জাগে যুবক-যুবতী দেখো বসন্ত বেলা।
বই পড়া
মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ
যদি আলো ঝরানো ভোর পেতে চাও,
তাহলে বই পড়ো, জীবন সাজাও।
যদি হৃদয়ের তৃষ্ণা মেটাতে চাও,
তাহলে বই পড়ো, শান্তি খুঁজে পাও।
যদি বোধের সাগরে ভাসতে চাও,
তাহলে বই পড়ো, সত্য চিনে নাও।
যদি চেতনায় জ্বালাতে চাও আলো,
তাহলে বই পড়ো, মুছবে সব কালো।
যদি স্বপ্নের রাজ্যে পা রাখতে চাও,
তাহলে বই পড়ো, রঙিন পথ পাও।
যদি সাহসের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে চাও,
তাহলে বই পড়ো, শক্তি অর্জন করাও।
যদি অমর হতে চাও জ্ঞানের জগতে,
তাহলে বই পড়ো, থাকবে তুমিও সাথে।
যদি জীবনের পথের দিশা খুঁজতে চাও,
তাহলে বই পড়ো, সাফল্যের দ্বার পাও।
আমার গাঁয়
মাসুমা সুলতানা হাসনাহেনা
সবুজ শ্যামল রূপে ঘেরা
আমার সোনার গাঁয়
কিচিরমিচির পাখির ডাকে
রোজ ঘুম ভেঙে যায়।
আম্র মুকুলের গন্ধ ভাসে
সারা উঠোন জুড়ে
ফুলে ফুলে প্রজাপতি
মধুরস খেয়ে উড়ে।
শিমুল গাছে রক্তজবা
ডালে ডালে ফুটে
দলবেঁধে সব শালিক পেঁচা
সেদিক পানে ছুটে।
প্রকৃতির এই রূপ দেখে
মন যে হয় কবি
রোজ সকালে আলো ছড়ায়
মিষ্টি হাসির রবি।
গদ্যে আছি নাকি পদ্যে
রানা জামান
আমি গদ্যে আছি নাকি আছি পদ্যে
ইঁদুরের ছানাগুলো কাটাকুটি করে বলে
আছি অহোরাত্র ভিন্ন ভিন্ন ছদ্মে
জোরে উষ্টা মারি পরোয়া না করে কাউকে
মুখ দিলে কেউ জলে ভাসা পদ্মে
শাবল চালিয়ে শব্দের ভাণ্ডারে
কখনো বিন্দাস ওড়াউড়ি চলে পাখা মেলে
পৃথিবীর দুই প্রান্তে কী ঠাণ্ডা রে
মাইনকা চিপায় পড়ে গেলে বুঝা যায় সে যে
ছিলো কত বড় বেকুব পাণ্ডা রে
কার্পেটের নিচে লুক্কায়িত দেখে
গুনাহের ছানা, চক্ষু ছানাবড়া হয়ে গর্ত ছেড়ে
কত দ্রুত বের হয় তা না লেখে
ময়নাতদন্তের শিরা-উপশিরা এ টু জেড এঁকে
গিরগিটি মানুষ কেমন তা শেখে
করোটির ঘেরে থেকেও কোমর
বাতে আক্রান্তের সুযোগ মরে না কখনো
পদাঘাতে মরে কত যে ভোমর
ওদের কষ্টের পরোয়া কে করে এ ভ্রহ্মাণ্ডে
আয়েশে কাটায় কচ্ছপ ওমর
কেঁচে গণ্ডুসের প্রচেষ্টা সকল
খেয়ে নেয় ঘুণ আস্তিনের নিচে জন্ম নেয়া
জেন-জি সৃষ্টিতে সয় যে ধকল
ধুরন্ধর নেকড়ে পরিবর্তনের ধূয়া তুলে বেশ
করে থাকে সেই স্বৈরের নকল।
ভাষার টান
মুহাম্মদ তমিজুল হক রিপন
মায়ের মুখের ভাষাতে মোরা
শব্দ করি চরন,
ভুলবোনা কভ তাদের কখনো
করছি হৃদয়ে বরণ।
সালাম রফিক জব্বার সহ
সবাই দিলো প্রাণ,
বাংলার মাটি মানুষের মুখে
মাতৃভাষার কি টান।
হয়তো এখন উর্দু ভাষা
থাকতো সবার মুখে,
মনের ভাব হতো না প্রকাশ
তাইতো উঠলাম রুখে।
আমার মুখের ভাষা কিভাবে
নিতে পারে কেড়ে,
ছাত্র জনতা মানতে পারেনি
বিবেক উঠেছে নেড়ে।
জীবন দিয়ে রক্ষা করছে
মোদের বাংলা ভাষা,
এই ভাষাতে খুশিতে যেন
কামার কুমার জেলে চাষা।
রবের কৃপায় এই ধরাতে
ফেব্রুয়ারীর হাসি,
সালাম রফিক শফিক জব্বার
সবাইকে ভালোবাসি
শেষের যাত্রী
শ্রী উত্তম সরকার
দূর আকাশের যাত্রী আমি
আর কি হবে দেখা!
তারার মাঝে রেখে গেলাম
আমার অশ্রু লেখা।
এই জীবনে দুঃখ নিয়ে
পেলাম শুধুই ব্যথা,
কেউ আসেনি আমার কাছে
শুনতে দুঃখ কথা।
আর বেশিদিন বাঁচবো নাগো
দেখবে তারার মাঝে,
সেদিন হয়তো বুঝতে পারবে
সকাল বিকাল সাঁঝে।
তোমায় ছেড়ে থাকবো আমি
দূর আকাশে একা,
আর পাবেনা কোনোদিনও
আমার তুমি দেখা।
চলে যাবো দূর দেশেতে
তোমায় একা রেখে,
তুলসী তলায় থাকবো পড়ে
চন্দন আতর মেখে।
তুমি ঘর
সঙ্ঘমিত্রা দাস
ইচ্ছা অনিচ্ছায় পথ হেঁটেছি বহুদূর
তবু স্হায়ী বসবাস তৈরী করতে পারিনি
প্রতি মুহূর্তে তোমার স্মৃতিতে মন চঞ্চল
এসেছে তোমার অভাব, পথ বদলেছি-
চেনা পথে
ফুটেছে কিছু ফুল
বেজেছে কত সুর
বেড়েছে পরিচিতদের সংখ্যা
তবু তোমার কাছে ফিরতে চেয়েছি
বারবার, প্রতিবার।
উষ্ণতর পৃথিবীর খোঁজে
নুরুল ইসলাম বাবুল
তোমাদের শহরের মতো
এইসব গ্রামে গ্রামে শীতেরা বেঁধেছে বাসা,
ভীষণ অখুশি আমি;
তবু বিষন্ন সন্ধ্যার মতো পড়ে থাকি
এই শীত-সংসারে।
মাঝে মাঝে পরিযায়ী পাখির ডানায়
উড়ে যেতে চাই-
উষ্ণতর পৃথিবীর খোঁজে।
শুনো ফাল্গুনী
অথই মিষ্টি
বাতাবি লেবুর ফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা চারিধার
ওহে ফাল্গুনী, শুনছো কি?
এই ফাল্গুনে কোকিল মিয়া হয়ে সুরোকার।
ভোরের আলো আজি পূর্ণ রুপে ফোটে
ওহে ফাল্গুনী, তাকাও দেখি!
আমের বনে আজ মূকুলের উত্তাল ঢেউ জেগে ওঠে।
তবে দেখ ঐ স্বল্প শিশির সবুজ পাতার কিনারে জমেছে
ওহে ফাল্গুনী, দেখেছো কি?
বসন্তের রূপসী ফাল্গুনী আজ বাংলার ভূখণ্ডে জেগেছে।
ভরেছে আজি প্রকৃতি নবচারী রঙিন ফুলে
ওহে ফাল্গুনী, সে ঘ্রাণ পেয়েছো কি?
অপর রাজ্য যে ভরে উঠেছে মুকুলে আর মুকুলে।
মৃদু বাতাসে পূর্ণ মিষ্টি পুষ্পের ঘ্রাণ
একলা ফাল্গুনী নয়, জানুক জনে জনে
সুবাসিত প্রকৃতি আজি বসন্তের ছোঁয়ায় প্রশান্ত প্রাণ।
শুনো ফাল্গুনী
অথই মিষ্টি
বাতাবি লেবুর ফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা চারিধার
ওহে ফাল্গুনী, শুনছো কি?
এই ফাল্গুনে কোকিল মিয়া হয়ে সুরোকার।
ভোরের আলো আজি পূর্ণ রুপে ফোটে
ওহে ফাল্গুনী, তাকাও দেখি!
আমের বনে আজ মূকুলের উত্তাল ঢেউ জেগে ওঠে।
তবে দেখ ঐ স্বল্প শিশির সবুজ পাতার কিনারে জমেছে
ওহে ফাল্গুনী, দেখেছো কি?
বসন্তের রূপসী ফাল্গুনী আজ বাংলার ভূখণ্ডে জেগেছে।
ভরেছে আজি প্রকৃতি নবচারী রঙিন ফুলে
ওহে ফাল্গুনী, সে ঘ্রাণ পেয়েছো কি?
অপর রাজ্য যে ভরে উঠেছে মুকুলে আর মুকুলে।
মৃদু বাতাসে পূর্ণ মিষ্টি পুষ্পের ঘ্রাণ
একলা ফাল্গুনী নয়, জানুক জনে জনে
সুবাসিত প্রকৃতি আজি বসন্তের ছোঁয়ায় প্রশান্ত প্রাণ।
ফাগুন এলো
জাকির আলম
ফাগুন এলো ধরা তলে লালে লাল দুনিয়া
মৌন মনে বসে আছি দখিন দুয়ার খুলিয়া।
শিমুলের বনে আজি ধরেছে আগুন
প্রকৃতি নতুন সাজে মনেতে ফাগুন।
কুসুমের ঠোঁটে আজ ভ্রমরের গুঞ্জন
সবুজ বৃক্ষের ডালে ওই কোকিলের কুঞ্জন।
ফাল্গুনী হাওয়ায় ভাসে দোপাটির ঘ্রাণ
শিহরণ জাগে মনে ভরে যায় প্রাণ।
উদাসী মনপাখি ঘরে থাকতে চায় না
প্রেমের নেশায় ধরে আলিঙ্গনের বায়না।
ভালো লাগে পৃথিবী বসন্তের সমাগম
প্রিয়জনের প্রতীক্ষায় হয়ে যাই অগম।
বাবু সোনা
ফেরদৌস জামান খোকন
ওরে সোনা
হাতে গোনা,
শিখতে হবে
আজকে তবে।
শিখব আমি
হবো দামি,
জগতে মাঝে
সকল কাজে।
হতে বড়ো
বইটা পড়ো,
পড়বে যত
শিখবে তত।
মানুষ হবে
এইনা ভবে,
বলবে ভালো
সরে কালো।
কাছে এসে
পাশে বসে,
হাসি মুখে
থাকবে সুখে।
বসন্ত এসেছে নাকি
শাকিলা নাছরিন পাপিয়া
চকিতে শুনিলাম দূর কোন পথে
কে যেন ডাকিয়া কয়,
চোখ তোল মেয়ে, প্রদীপ জ্বালো
ফাগুন যে চলে যায়।
বাতায়ন পথে চাহিয়া দূরে
মাতাল হাওয়ারে ডাকি
শুধালাম আমি উচ্ছাস ভরে
বসন্ত এসেছো নাকি?
নব সৃষ্টির মাধুরী মিশায়ে
কহিল হাসিয়া সে,
হৃদয়ের এতো আকুলতা দেখেও
বুঝো না আমি যে ক
যে তোমায় কাঙাল সাজালো
করিলো কেবল হেলা
তাহার লাগিয়া দূরে কেন রাখো
মধু বসন্ত বেলা?
দ্বার খোলো মেয়ে, চোখ মেলে দেখো
আমি যে রয়েছি চেয়ে —
কবে যাবে তুমি এই পথ দিয়ে
জীবনের গান গেয়ে!
ইতিহাসের শিক্ষা
মোঃ নূরনবী ইসলাম সুমন
ইতিহাসের পাতা খুলে দেখো রক্তাক্ত সে গল্প,
ভুলের মাঝে দগদগে ক্ষত, নিপীড়িতের দলট।
পায়ের নিচে চাপা দিয়ে কাঁদে কত শত প্রাণ,
ব্যর্থতার ছায়ায় ঢাকা জনপদের গান।
স্মৃতির মশাল নিভে গেলে আঁধার নামে ঘোর,
স্বৈরাচারী শকুন আসে শাসন করতে চোর।
ভুলের পুনরাবৃত্তি যে জাতির গ্লানি বয়ে আনে,
নতুন রক্ত ঝরায় তারা ধ্বংসেরই টানে।
যে ভুল ছিল বিভীষিকা, তা পুনরায় কেন?
স্বাধীন মাটিতে কেন গজায় কন্টকময় বীজ যেন?
অভিশপ্ত শাসন আসে, গিলে ফেলে জয়,
রক্তে লেখা ইতিহাস তবে কাদের জন্য হয়?
বিদ্রোহ যদি স্মৃতিহীন হয়, পথের দিশা কোথায়?
সেই তো আবার শৃঙ্খলে বন্দি দাসত্বের ছোঁয়ায়।
কেন আবার নিঃস্ব হবে, কেন কাঁদবে মা?
পৃথিবীতে মুক্ত বাতাস কি জন্ম নেয় না?
তাই আজও শপথ নেবো, ভুল করবো না আর,
ইতিহাসের পাঠ নেবো, থাকবো সদা হুঁশিয়ার।
যে ভুলে রক্ত ঝরেছিল, সে ভুল আজ নয়,
বিদ্রোহ আমার অস্ত্র হবে, চেতনার পরিচয়!
লেখা পাঠাতে নিচে ক্লিক করুন