ফুল পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কম।পৃথিবীর এক স্বর্গীয় নিদর্শন ফুল।তাইতো মানুষ শখ করে ফুল বাগান করে।কেউ ছাদে,কেউ বাড়ির উঠানে আবার কেউ কেউ পুরো জমি ফুল চাষ করে।অনেক বড় ছোট ফুলের বাগান দেখা যায় পৃথিবীতে।মানুষের ভ্রমণের জায়গা হয়ে উঠে ফুলের বাগানগুলো।তবে পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ফুলের বাগান অবস্থান করছে এমন এক জায়গায় যেখানে সাধারন খাদ্য শস্য ফলানোও কষ্টসাধ্য ব্যাপার।মরুর বুকে বিশাল বড় ফুলের বাগান।দেখতে যেমনই আশ্চর্যজনক,নামটাও তেমনই ‘দুবাই মিরাকল গার্ডেন’।
ধু ধু মরুভূমিতে এক বিশাল ফুলের রাজ্য।প্রায় ৭২ হাজার বর্গমিটারের প্রাকৃতিক ফুলের বাগান।অবিশ্বাস্য এক নিদর্শন।আরব আমিরাতের দুবাইয়ের দুবাইল্যান্ডে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফুলের বাগান।২০১৩ সালে চালু হওয়া এই বাগানে প্রায় ৫০ মিলিয়নের বেশি ফুল আছে এবং ২৫০ মিলিয়নের মতো গাছ আছে! ২০১৬ সালে একে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃতি দেয় সবচেয়ে বড় ফুলের স্থাপত্য/কাঠামো বা নিদর্শন হিসেবে।
শুধু সারি সারি ফুল দিয়ে সাজানো হয়নি এই বাগান।রাশি রাশি ফুল দিয়ে বানানো হয়েছে বিভিন্ন জাহাজ,বাড়ি,ফুলের সাগর,ফুলের দোলনা,ফুলের প্লেন এবং ফুল দিয়ে গড়া বিভিন্ন স্থাপত্য।ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে একটি বিশাল আকারে এমিরেটস এয়ারবাস A380-এর রেপ্লিকা।প্রতি ঋতুতে এই ফুল গুলো রঙ বদলায়।পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের অন্যতম জায়গা এই বাগান।প্রতিবছর পর্যটকরা এখানে ছুটে আসেন বাগানীর নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে।খাবার দাবার সহ ঘোরার বিভিন্ন আয়োজন আছে এই ‘মিরাকল গার্ডেনে।’এই বাগানে ফুলের সাথে প্রজাপতির বাগানও আছে।প্রায় ২৬ প্রজাতির ১৫ হাজারের প্রজাপতির আনাগোনা দেখা যায় এখানে।
মরুর বুকে এমন নয়নাভিরাম বাগান গড়েছে দুবাইল্যান্ড এবং দুবাই প্রপার্টিজ গ্রুপ।পরে ২০১৮ সালে তারা ডিজনির সাথেও একটি চুক্তি করে। বাগানটি বানাতে খরচ হয়েছিল প্রায় ১১ মিলিয়ন ডলার।প্রথম দিকে করা বাগানের নকশা থেকে ২০১৩ সালের জুনে আরো সম্প্রসারণ করা হয়।বাগানে রাখা হয় ফুলেল ঘড়ি, প্রজাপতি বাগান, খুচরা দোকান এবং মসজিদ।মরুর বুকে ফুলের বাগান গড়া যেমন কষ্টসাধ্য তেমনি রক্ষণাবেক্ষণ করাও বেশ ব্যয়বহুল।আরব আমিরাতের আবহাওয়া এই বাগানের জন্য অনুকুল নয়।প্রতিদিন ৭৫৭০৮২ লিটার পানির সাথে ড্রিপ সেচ পদ্ধতির মাধ্যমে ফুলগুলি সতেজ রাখা হয় ।বাগানে উন্নত মানের ফিল্টার করা পানি দিয়ে সেচ দেওয়া হয়।প্রতিদিন রাতে সেচ দেওয়া হয়।গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে এই বাগান বন্ধ রাখা হয়।মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা থাকে ৪০ সেন্টিগ্রেড।তাই বাগান চালু থাকে অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত।সেই সময়টায় দর্শনার্থীরা বাগানে ঘুরতে পারবে।