অণুগল্প
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্
কিছুদিন হল নাহিদা ভার্সিটি ক্যাম্পাসে ঢুকেছে।ক্লাশ যেমনটাই হোক,নতুন একটা জীবন শুরু সবারই। দেশের নানান ধরনের পরিবারের,নানা অবস্থার সন্তানেরা এসেছে।এক দুমাস পরিচয় হতে হতেই যাচ্ছে।শিক্ষকদের সাথেও বোঝাপড়া চলছে,খাপ খাওয়ানোর নানান ফিকিরে ব্যস্ত সবাই।
সেদিন ক্লাসে একটা পাখি ঢুকেছে। আর সেইসাথে হৈ চৈ। পাখিটা এলোপাতাড়ি ওড়াওড়িতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। সবাই একযোগে হৈ-হুল্লোড় শুরু করে। শিক্ষার্থীদের চিৎকার বাড়ে,ভীত বিহ্বল পাখিটা এলোপাতাড়ি উড়ছে আবার, এখানে ওখানে গোত্তা খাচ্ছে।প্রায় আধ ঘন্টা সময় নষ্ট করার পরে ওটাকে বের করা গেল।
পর পর তিন চারদিন এরকমই ঘটনা ঘটে গেল।পরদিন আর খবর নেই।
সবাই আবিস্কার করল ওইদিন নাহিদা ক্যাম্পাসে আসেনি।দুদিন পর নাহিদা এল,পাখিটাও এসে সেই ছটফটিয়ে সবাইকে জ্বালাতন করছে।
নাহিদাকেই ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হল।
ক্যাম্পাস ছেড়ে লাইব্রেরি,টিএসসি,নদীর পাড়। যেখানেই যায়,পাখিটাও পিছু নেয়।
ইতিমধ্যে নাহিদার বন্ধু কৌশিক পরামর্শ দিল,ওটাকে ত্যাগ করতে।এক দুদিন ওটাকে না খাওয়ালে এমনিতেই চলে যাবে।কিন্তু নাহিদার চোখে জল দেখে বোঝাই গেল এটা কার্যকর হবে না।
তিন-চারদিনের মাথায় হঠাৎই পাখিটা নেই।নাহিদা বিচলিত হয়ে পড়েছে নানান আশংকায়।
পার্কের যেখানটাতে পাখি’র সাথে প্রথম দেখা হয়েছিল,সেখানে নাহিদা নিয়মিত আসত।ওখানে গিয়ে দেখে ওটা গাছের নীচে পড়ে আছে।পিঁপড়ের ভীড় লেগে গেছে।এক ফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে গেল নাহিদার।
ওর বন্ধুরা ক্যাম্পাসে এনিয়ে বেশ হাসাহাসি।
সামান্য একটা পাখির জন্য,তাই বলে এত ন্যাকামি!
মাটি খুঁড়ে ওটাকে চাপা দিয়ে কিছু ফুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে সে।
ক্যাম্পাসে আবারও হাসাহাসি শুরু হল।