বন্দী কিংবা অপরাধীদের আটকে রাখার জন্য পৃথিবীর বড় বড় কারাগারগুলোর কথা তো আমরা জানি।ভয়ংকর সব কারাগারে বন্দী থাকতো অপরাধীরা।কিংবা গোপন কোনো কারাগারে আটকে রাখার ইতিহাসও আছে।কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট কারাগার সম্পর্কে কি আমরা জানি।গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট কারাগার।যা অবস্থান করছে ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের মাঝামাঝি জায়গায়।
ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে সার্ক আইল্যান্ড নামে একটি দ্বীপ রয়েছে। এই সার্ক আইল্যান্ডেই অবস্থা করছে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট কারাগারটি।যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃত সবচেয়ে ছোট কারাগার।সার্ক দ্বীপটি মাত্র ৫ কিলোমিটার এবং এর জনসংখ্যা ৬০০ জন।এই দ্বীপে কোনো রাস্তা নেই,আলো নেই এবং কোনো গাড়ি নেই।ছোট্ট এই দ্বীপে ১৮৫৬ সালে নির্মাণ করা হয় এক ছোট্ট কারাগার।পাথরের দেয়ালের তৈরি এই কারাগার দেখতে ছোট্ট কুটুরির মতো।মাত্র দুটি কক্ষ নিয়ে গঠিত এই কারাগার।এর একটি কক্ষ ৬ বাই ৬ ফুটের এবং আরেকটি কক্ষ ৬ বাই ৮ ফুট।দুই কক্ষের মাঝখানে আছে খুবই সংকীর্ণ একটি করিডোর। দুটি কক্ষে বন্দীদের ঘুমানোর জন্য পাতলা গদি সহ ছোট কাঠের স্ল্যাটেড বিছানা রয়েছে।এখানে বিদ্যুৎব্যবস্থাও আছে।তবে নেই কোনো জানালা। বন্দীদের এখানে সর্বোচ্চ দুই দিন রাখা হয়।তারপর স্থানান্তর করা হয় পার্শবর্তী দ্বীপ গার্নসির কারাগারে।
গার্নসি দ্বীপের আদালতে ১৮৩২ সাল সার্ক দ্বীপে একটি কারাগার নির্মাণ করতে আদেশ দেয়া হয়।কিন্তু বাজেটের সীমাবদ্ধতার কারণের এটির কাজ শুরু হতে প্রায় দুই দশক সময় লাগে।গার্নসি এবং সার্ক ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স চ্যানেলের দ্বীপপুঞ্জ।
বর্তমানে এই কারাগারটি বন্ধ বললেই চলে।কেননা এই দ্বীপে মানুষের সংখ্যা খুব কম এবং অপরাদের প্রতিবেদন আসে না বললেই চলে।তবে আইনগতভাবে এটি এখনো চালু আছে।প্রায়ই মদ্যপ এবং উচ্ছৃঙ্খল পর্যটক এখানে আসে।তবে এই কারাগারের বিখ্যাত বন্দী বলা হয় আন্দ্রেস গার্ডেসকে।তিনি একজন ফরাসি পারমাণবিক পদার্থবিদ।তিনি সার্ক দ্বীপকে নিজের বলে দাবি করেন এবং তিনি এর উত্তরাধিকারী বলে বিশ্বাস করেন।কিন্তু কেউ তার দাবিকে পাত্তা দেয়নি। তাই তিনি দ্বীপে এক সদস্যের সেনাবাহিনী হিসেবে আক্রমনের পরিকল্পনা করেন।দ্বীপে তা পোস্টার লাগিয়েও ঘোষণা দেন।তারপর তিনি আধা সয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে দ্বীপে আক্রমণের জন্য নামেন।কিন্তু সেসময় দ্বীপে কর্মরত কনস্টেবল তাকে ঘুষি মেরে রাইফেল চিনিয়ে নেন এবং তাকে গ্রেফতার করে সার্ক কারাগারে পুরে দেন।