সারা দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে চার হাজার ৮৮৫টি কিশোর-কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে সৃজনশীল ও গঠনমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে কিশোর-কিশোরীরা। কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক জয়ন্ত কুমার সিকদার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সারা দেশেই কিশোর-কিশোরী ক্লাবের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যে কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই পরিবর্তনের ধারক বা চেঞ্জ এজেন্ট হিসেবে কিশোর-কিশোরী ও নারীদের প্রতি সহিংস আচরণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে সমাজ থেকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দূর হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সৃজনশীল ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরে এবং তৃণমূলে জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্স প্রতিরোধে সক্ষম করে তোলা, সেক্সুয়াল অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ অ্যান্ড রাইটস (এসআরএইচআর) বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের অবস্থানকে দৃঢ় করাই দেশজুড়ে স্থাপিত কিশোর-কিশোরী ক্লাবের উদ্দেশ্য।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেন্ডারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে ‘কিশোর-কিশোরীদের জন্য কর্মকৌশল গ্রহণ করতে হবে। যাতে সমাজের প্রত্যাশিত পরিবর্তন ঘটে। আর এসব ক্লাবের মাধ্যমে পরিচালিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে কিশোর-কিশোরীরা নিজেদের সচেতন করে গড়ে তুলতে পারবে। এছাড়া ইভটিজিং বন্ধ, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, জন্মনিবন্ধন, বিবাহ নিবন্ধন, যৌতুক প্রতিরোধ, শিশু অধিকার, নারী অধিকার, যৌন নির্যাতন ও নিপীড়ন প্রতিরোধসহ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিয়য়েও ক্লাবগুলোতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের সচেতন করা হচ্ছে। প্রতিটি ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ৩০ জন। এর মধ্যে ২০ জন মেয়ে এবং ১০ জন ছেলে। তাছাড়া সকল ক্লাবের সদস্যরা বিভিন্ন দিবস উদযাপন, খেলাধূলা, বই-ম্যাগাজিন, সংগীত, আবৃত্তি, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, মুক্ত আলোচনা, আন্তঃক্লাব প্রতিযোগিতা ও মার্শাল আট প্রশিক্ষণও নিতে পারবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, সমাজের বিভিন্ন স্তরে এবং তৃণমূলে কিশোর-কিশোরীরা জেন্ডার বৈষম্য, সেক্সুয়াল হেরেজমেন্ট রোধে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ প্রকল্প এটি। এ প্রকল্পে সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধে কিশোর-কিশোরীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারীদের আয়বর্ধক কার্যক্রমের আওতায় আনার জন্যই প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। সংগীত, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে তুলে আত্মনির্ভরশীল ও দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তর করার দৃঢ়প্রত্যয়ে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রান্তিক কিশোর-কিশোরীদের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নের কার্যক্রম চলছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।