সোহাগ কুমার ঘোষ
কতবার শতবার জন্মিবার সাধ হইয়াছিলো-
প্রতিবার তোমাকে ক্ষণিক দেখিবার মোহে।
পলকের ঝলকে কতবার পোড়ায়েছ-সে খেয়াল কি রাখো-
নাকি প্রতিবার শশিপ্রভার হাসি দেখিয়া- ভ্রান্তিকে ছলনা মনে করো?
সীমাহীন নিঃসঙ্গতায় যতবার খুঁজিয়াছি তোমাকে-
ততোবার পরম সঙ্গী হইয়াছে ধোঁয়া ওঠা সিগারেট।
নিভৃতে আঁখিতে কতবার ঝরায়েছ পানি-কখনও কি চাহিয়া দেখ-
নাকি প্রতিবার কল্পিত খুনসুটি দেখিয়া-প্রলাপকে যথার্থ বিবেচনা করো?
শঠতায় মোড়া তোমার অলীক বচনে-, আশ্বস্ত হইয়াছি কতবার-
প্রতিবারই প্রণয়ের বদলে পাইয়াছি কেবল অনাকাঙ্ক্ষিত অবজ্ঞা।
অতর্কিতে স্পর্শিয়া শিহরিত করিয়াছ কায়া-সে কম্পন বুঝিতে কি পারো-
নাকি প্রতিবার ভয়ে গুটিয়ে যাওয়াকে অগ্রাহ্য বলিয়া অনুমান করো?
আশঙ্কা আতঙ্কে- তোমার সদর্প গর্জনে,আশান্বিত হইয়াছি বহুবার-
তবে প্রতিবার পার্বণে তোমার নিশ্চিহ্ন উপস্থিতিতে উপেক্ষা মানিয়া নিয়েছি ।
সম্ভ্রম বিকিয়ে চন্দ্রিমায় বসিয়া বাহুডোরে বাধিয়াছ-সে আমেজ ভুলিয়া কি গেছো-
নাকি প্রতিবার হারানোর আশঙ্কায় ছিন্ন হওয়াকে অব্যাহতি বলিয়া ভাব?
বিত্ত-বৈভবে তোমার নির্মোহ নির্লিপ্ততা-মনের কোনে পুলক জাগিয়েছে বারংবার
তবে প্রতিবার তোমার আদিখ্যেতায় মোড়া সৌখিন বিলাসিতায় বিভাজন বুঝিয়া গিয়াছি।
তোমার জন্য বেয়াড় হইয়া প্রত্যাখ্যান করিয়াছি পিতৃত্বের অধিকার,সে উন্মত্ততা কি হীন হইয়া
গেল-
নাকি প্রতিবার তোমার অবান্তর প্রলাপে নির্বাক থাকাকে মূঢ়তা বলিয়া জানো?
তোমার মুখের হেয়ালি ধ্রুবতারা শুনিয়া ধন্য হইয়াছি হাজার বার
তবে ভালবাসি বলিতে তোমার অকারণ দ্বিধা দেখিয়া শঠতা বুঝিয়া গেছি।
সব ছাড়িয়া পরিযায়ী পাখির মত তোমাকে খুঁজিয়াছি সে সব কি বিস্মৃত- হয়েছো
নাকি প্রতিবার তোমার স্বেচ্ছা অনীহায় প্রস্থান নেওয়াকে অবজ্ঞা ভাবিয়া বসো?
তোমার মাঝে রক্তের চেয়ে হৃদয়ের টান বেশি দেখিয়া- ভরসা পাইয়াছি বহুবার
তবে বেলাশেষে তোমার নীড়ে ফিরিবার তীব্র আকাঙ্ক্ষায়, পরিজন প্রাধান্য হৃদয়ঙ্গম করিয়াছি।
নিষেধ অমান্য করিয়া তোমার আহ্বানে সাড়া দিয়াছি্ প্রতিবার,সেদিন মনে করিতে কি পারো
নাকি প্রতিবার অনুরাগে মুখ ফেরানোকে উপেক্ষা ভাবিয়া আঁধারে পলায়ন করো?
জীবনসঙ্গী হইতে- সৃষ্টিকর্তার কাছে তোমার উৎসুক আগ্রহ প্রকাশে মুগ্ধ হইয়াছি বারবার
অথচ অসংখ্য দিবস রজনী তোমার অলীক ব্যস্ততায় নতুনের আগমনে সন্ত্রস্ত হইয়াছি।
জীবনের প্রয়োজন উপেক্ষা করিয়া তোমার আরাধনা করিয়াছি সেও কি অস্বীকার করো
নাকি প্রতিবার বিপাকে নিখোঁজ হওয়াকে বিচ্ছেদ মনে করো?
জন্মান্তরের ঘূর্ণিপাকে সহযাত্রী হবে বলিয়াছিলে বলে- আহ্লাদে আত্মহারা হইয়াছি কতবার
তবে প্রতিবার তোমার সীমাহীন মিথ্যার পরতে বিশ্বাস হারিয়ে প্রতারণা মানিয়া লইয়াছি।
শত বিদ্রুপেও অভিমান করিয়া ছাড়িয়া দেইনি হাত- তাও কি অগ্রাহ্য করো
নাকি প্রতিবার পুনরাগমনকে পৌনঃপুনিক ভাবিয়া পুনরায় প্রতিক্ষায় থাকো?
পরম্পরার রীতি চূর্ণ করিয়া যখন ছিন্ন করিলা সব – অশ্রুসিক্ত হইয়াছি অসংখ্যবার
তবে বিশ্বাসভঙ্গের বিনাশক হিংস্রতা থেকে ঐশী জ্যোতির কল্যাণে নিষ্কৃতি পাইয়াছি।
স্বচ্ছলতার আপেক্ষিক অস্তিত্বের অসংগতিতেও প্রসন্ন থাকিয়াছি তবুও কি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করো নাকি প্রতিবার কষ্টার্জিত সমৃদ্ধি পায়ে ঠেলিয়া দীনতায় ভাসিয়া যাইতে বলো?