কামরুন নাহার
শীতের দিনের গরমটা উপভোগ করার মত উষ্ণতা নিয়ে হাজির হয়,, সত্যিকার অর্থেই এক অনাবিল আনন্দ দেয় তখন জীবনটাকে ধন্য মনে হয়, হালকা শীতের মধ্যে ঘুমটা তেমন জমে না, তবে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করলে ঘুমটা যেন হয়ে যায় পরম শান্তির, আমার পরিচয় না হয় নাই দিলাম ,হতে পারে কোন এক আগন্তুক যে কিনা আপনার নিরবতায় আছে আবার উৎসুক মনেও বাসা বাধে, এই নীরব রাতের কোনো এক শিয়াল ডাকা রাতে ভয়ানক এক স্বপ্নের কথা আমার মনকে বারবার সাবধান করে ভয় পাওয়া বারন, দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার ,, শীতকালীন ছুটির দিন হওয়াতে সারাদিন নিজের শরীরটাকে কম্বলের নিচে রাখাটাই বুদ্ধিমানের মত কাজ হয়েছে বলে আমি মনে করি, সকালে উঠতে না চাইলেও মনটা কেমন যেন খারাপ লাগছিল কিছু একটা নেই নেই মনে হতেই বুঝলাম শান্তি নেই,, ভোর ৪.০০ টা বাজে উঠে ওযু করে নামাজ পড়ার পর মনে হলো আলহামদুলিল্লাহ এবার শান্তি লাগছে, অভিযোগ করার মত কেউ না থাকুক দুনিয়াতে মানুষরূপে কিন্তু একটা রব তো আছে যার কাছে হাজারও অভিযোগ দিয়ে মনকে শান্ত করা যায়, যে মনযোগ দিয়ে প্রতিটা কথা শুনবে আর বলবে অপেক্ষা করো আমি সব দিব কিন্তু তার আগে পরীক্ষা করে নিব তুমি তার যোগ্য কিনা,, সত্যিই অসম্ভব ভালো লাগে রবের সাথে এই সম্পর্কটি,, কুরআন পড়ার পর সম্পর্কটি আরো গভীর থেকে গভীর হয় , মনে হয় সব সমস্যার সমাধান আগে থেকেই লিখিত আকারে দেয়া তাহলে এত সমস্যার জন্য কষ্ট পাওয়া কেন জীবনে, সবই তো রবের পক্ষ থেকে তিনিই আবার সব ঠিক করে দিবেন ইন শা আল্লাহ,,, সকালের নামাজের শেষে বাহিরে একটু ভ্রমন যেন বাঁচার এক তীব্র অনুভূতি জাগায়, বাড়ি ফিরে আম্মুকে বললাম নাস্তার কাজে সাহায্য করতে হবে কিনা ,,যদিও আমি ছোট সদস্য হওয়াতে কোনো কাজ করতে হয়না তবুও মেয়ে মানুষ কাজ করতেই হবে এটাই যেন সমাজ আর পরিবার থেকে শিক্ষা নিয়ে বড় হওয়া,, আম্মুকে নাস্তার কাজে সাহায্য করার পর একটু বিশ্রাম নেয়ার প্রয়োজন হলো,, তারপর নিজে নাস্তা করে একটু বই পড়ায় মনযোগ দিলাম,, যদিও আমার পরীক্ষা চলছে কিন্তু শীতকালীন ছুটি মাঝে চলে এসেছে তাই পরীক্ষার পড়াশুনা পাশে রেখে গল্প পড়ায় আগ্রহ প্রকাশ করলাম,, বর্তমান যুগটা সামাজিক মাধ্যম অনলাইনের সাথে সবাই জড়িত আমিও তার ভিন্ন নই,,তবে কেন জানিনা এসবের মধ্যেও ৯০দশকের মানুষ আমাকে বেশি আকৃষ্ট করে ,,, আধুনিকতার ছোঁয়া আমাকে অতটাও প্রভাবিত করেনা যতটা আদিম যুগের মানুষের ভাব বিনিময়ের নিষ্পাপ চাহনি করতো,, তাই মোবাইল অনলাইন এসবের থেকে বই পড়ে মানুষের অনুভূতি আর তাদের স্থানে নিজেকে কল্পনা করে বেশি ভালো লাগে,, বইয়ের পাতায় পাতায় নিজের স্বপ্নগুলোকে নতুন করে সাজাতে ভালো লাগে,, দুপুর হয়ে এলো আর সেই সাথে আযান ও দিয়ে দিল,, গোসল করে নামাজ পড়ে খাবার খাওয়ার পর ভাবলাম একটু বিশ্রাম নেওয়া উচিত কিন্তু তার থেকে উত্তম হবে যদি আম্মুর সাথে একটু গল্প করা যায়,, বেশ কিছুক্ষণ গল্প করার পর আসরের আযান দিয়ে দিল নামাজ শেষে বিকেলে আম্মুর সাথে হাঁটতে যাওয়া নদীর পাড়ে এক অসাধারন অনুভুতি ,,, কখনো ভুলে যাওয়ার মত নয়,, বাড়ি ফেরা হলো মাগরিবের ঠিক আগে ,,তারপর নামাজ পড়ে প্রতিদিনের মত একাডেমিক বই পড়তে শুরু করা,, এভাবেই রাত তখন ১০.০০ টা নামাজ খাবার শেষে এবার একটা ঘুম দরকার সত্যিকার অর্থেই খুবই ক্লান্ত আমি,, সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ ,, জীবনটা সত্যিই খুব সুন্দর,, এতক্ষণ যা যা বললাম এই সবকিছুই আমার স্বপ্ন বা কল্পনা বা চিন্তা,, আমি চাই আমার জীবনটাকে ঠিক এমনভাবে তৈরি করতে এমনভাবে ভাবতে ঠিক এমনভাবে বাঁচতে,,, এই যুগের এই সময় খারাপ না আমার ভাগ্য খারাপ নাকি সবই ঠিক আছে আমি ঠিক নেই সেটাই আমি জানিনা,,মানুষজন এত যান্ত্রিক হয়ে গেছে যে একটু সময় কারো কাছে নেই,, বই পড়ার সময় নেই কিন্তু সারাদিন অনলাইন সামাজিক মাধ্যম মোবাইল এর জন্য সবার কাছে সময় আছে,,, এখন আর মানুষের প্রিয়জন থাকে না সবাই প্রয়োজন হয়ে যায়,, এখন আর সম্পর্ক গড়ে না ৯০ শতকের মত চিঠির জন্য অপেক্ষা ও করেনা কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদ আর তারপর অন্য কাউকে বিয়ে ঠিকই হয়,, এখন আর আগের মত মায়া নেই , নেই কারো প্রতি অনুভূতি ,,নেই কোনো টান,,, আম্মুর কথা খুব মনে পড়ে আজকাল কিন্তু দেখা হয়ে উঠে না কখনো আগের মত করে কারণ আমিও যে ব্যস্ত,, স্বপ্ন কখনো সত্যি হয় কিনা জানিনা,, তবে আমার স্বপ্ন কোনোদিনই সত্যি হয়নি,, আজও প্রতিরাতে রবের কাছে হাত জোড় করে শুধু কান্না করি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি কিছু বলতে পারিনা,,, কিছুই যেন বলার নেই,, এই শহর এই পৃথিবী থেকে মুক্তিই যেন একমাত্র ইচ্ছে আর উদ্দেশ্য,,, কিছু চাওয়ার নেই আর পাওয়ার ও নেই,,, তবুও যেন খুঁজতে থাকে মানুষ একটু শান্তি,, একটু মানসিক শান্তি,,, কোথাও যেন নেই কিছুই,,, তবুও স্বপ্ন দেখতে ক্ষতি কি,,, স্বপ্ন দেখা হোক নতুন করে,, নতুন করে বাঁচার নতুন করে নিজেকে ভালোবাসার,,,
স্বপ্ন
Facebook Comments Box
RELATED ARTICLES