Egyptology ইজিপ্টোলজি হল প্রাচীন মিশরীয় ইতিহাস, ভাষা, সাহিত্য, ধর্ম, স্থাপত্য এবং শিল্পের বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন করা ।যারা এই বিষয়ে লেখা পড়া গবেষনা করেন তাদের কে ভাল বেতনে চাকরি কিংম্বা গবেষনার সুযোগদেয়া হয়।
তাদের কে বলা হয় এক একজন “মিশর বিশেষজ্ঞ”। ইউরোপ মহাদেশে, মিশরবিদ্যাকে প্রাথমিকভাবে একটি ফিলোলজিকাল বিদ্যা হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তবে উত্তর আমেরিকার দেশ গুলিতে এটি প্রত্নতত্বের একটি শাখা হিসাবে বিবেচিত হয়।
কেমন বেতন পান অনেকেরেই প্রশ্ন জাগতে পারে ইজিপ্টোলজিস্টদের জন্য বেতনের সীমা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে বেতন $35,440 থেকে $97,040 পর্যন্ত, যার গড় বেতন $61,220। 60% ইজিপ্টোলজিস্ট $61,220 আয় করেন, শীর্ষলেভেলের $97,040 বছরে উপার্জন করেন।
মিশরবিদরা প্রাচীন মিশরের নানা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন যা তারা খুঁজে দেখেন প্রায় ৭হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে প্রাথমিক মধ্যযুগ পর্যন্ত।
তারা অনেক দৃষ্টিকোণ থেকে কাজ করে, মানবিকের শাখার সাহিত্য তত্ত্ব থেকে শুরু করে রেডিওকার্বন ডেটিং এর পদার্থবিদ্যায় কঠিন বিজ্ঞান পর্যন্ত সমস্ত উপায়ে পন্থা এবং পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা খুঁজে দেখেন।
আজ জার্মান কিছু গবেষকদের পাওয়া একজন মিশরীয় রানী হাটশেপসুট এর মর্মান্তিক কাহিনী বলছি ।
আজ থেকে ৩৫০০ বছর আগে মিশরের রানীকে একটি ক্রিম দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি প্রাচীন ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দরী, প্রশংসিত এবং শক্তিশালী রাণীদের একজন ছিলেন।
অত্যান্ত বুদ্ধিমতি তিনি জানতেন কিভাবে নিজেকে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। তিনি সবসময় নিখুঁত সৌন্দর্যের অন্বেষণ করতেন।এমনিতেই তিনি ছিলেন অসাধারন সুন্দরী।
মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন, সিংহাসনে ছিলেন ২০ বছর ।
তার মৃত্যুর কারন ছিল তার বিউটি ক্রিম । ক্রিমটাই যে ক্যান্সার সৃষ্টি করেছিল তাতে মারা গিয়েছিলেন।
এটিই মিশরীয় রাণী হাটশেপসুটের করুণ কাহিনী, যা আজকের বিজ্ঞান আমাদের কাছে প্রকাশ করেছে।
প্রাচীন মিশর মানেই মরুর তপ্ত বালুর বুকে ফেরাউন, পিরামিড, মমি, এবং হাজারো লুকানো রহস্যের হাতছানি। তৎকালীন মিশরীয় শাসকদের ফেরাউন বলে অভিহিত করা হতো। সাধারণভাবেই শাসক ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে তারা মিশরের রাজা হিসেবেই বিবেচিত হতো। বংশপরম্পরা ও উত্তরাধিকারসূত্রে রাজমুকুট অভিভাবকের মৃত্যুর পর সন্তানের নিকট হস্তান্তর করা হতো। অগণিত ফেরাউনের শাসনের মধ্য দিয়ে স্রোতঃস্বিনী নদীর মতো বয়ে চলা মিশর ইতিহাসে পাতায় স্থান করে নিয়েছে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাচীন সভ্যতা হিসেবে।
প্রায় ৩,০০০ হাজার বছর প্রাচীন মিশরের রাজসিংহাসনে রাজ্য শাসন করা ১৭০ জন ফেরাউনের মাঝে নারীর সংখ্যা মাত্র ৭। তবে এটা ইতিহাসবিদদের ধারণামাত্র। কারণ, ইতিহাসের পাতা থেকে নারী শাসনের অক্ষর প্রায় সময়ই মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এই আলোচনায় হাতশেপসুতের নামই সবার আগে উঠে আসবে অবধারিতভাবে। তাকে অভিহিত করা হতো ‘মহৎ নারীদের প্রধান’ হিসেবে। মিশরের ১৮ তম রাজবংশের পঞ্চম শাসক হিসেবে হাতশেপসুত রাজ্য শাসন করেন খ্রিষ্টপূর্ব ১৪৭৮ অব্দ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৪৫৮ অব্দ পর্যন্ত। শরীরে রাজরক্ত বাহিত হওয়ায় তিনি রাজশাসনের সকল গুণই পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন ফেরাউন প্রথম থুতমোস এবং তার প্রধান স্ত্রী রানী আহমোসের কন্যা।
হাতশেপসুত ছিলেন মিশরীয় নারী ফারাওদের মধ্যে দ্বিতীয় এবং অন্যতম। প্রাচীন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের পঞ্চম ফেরাউন ছিলেন তিনি। হাতশেপসুত অর্থ হলো ‘মহৎ নারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ’।প্রাচীন মিশরবিদরা তাকে সর্বাপেক্ষা সফল ফেরাউনদের একজন হিসেবে গণ্য করেন। মিশরীয় রাজবংশের অন্যান্য নারীদের থেকে তার রাজত্বকাল ছিল দীর্ঘতর। তিনি মিশরের অনেক উন্নয়ন কাজ করেছিলেন।
বন বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মান ইজিপ্টোলজিস্টদের একটি দলের গবেষণায় উঠে এসেছে ।
হাটশেপসুটের মৃত্যুর রহস্য এখন উন্মোচিত ।
ইতিহাসবিদরা অনেক আগে থেকেই তার পেইনটিং বা চিত্রকর্ম,সংরগ্রহ করেছেন ডিক্রিপশন এবং নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটনে তার দুর্দান্ত ছবিগুলি মুর্তিগুলির প্রদর্শনী হয়েছে।তিনি প্রাচীনকালের অন্যতম সুন্দর, আকর্ষণীয়া এবং শক্তিশালী মহিলা ছিলেন।
তিনি ১৪৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তার জন্ম এবং ২০বছর ধরে মিশরে রাজত্ব করেন।
তিনি ফারাও সম্রাট তুতমোসি প্রথম এবং আহমোসের কন্যা, তিনি তার সৎ ভাই তুতমোসি দ্বিতীয়কে বিয়ে করেছিলেন ।
নেফারতিতির মতো, ক্লিওপেট্রার মতো, তার সৌন্দর্য হয়ে ওঠে ক্ষমতার মূর্ত প্রতীক।
হাটশেপসুট মৃত্যু এবং তার মমির অবস্থানিয়ে একটি রহস্য ছিল। তার সমাধিটি কয়েক বছর আগে শনাক্ত করা হয়েছিল, যা এখন দেইর এল-বাহারির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া মন্দিরের রাজকীয় কমপ্লেক্সে।
জার্মান মিশরবিদরা রহস্যের সমাধান করেছেন: তার মৃত্যুর কারণ।
তাদের মধ্যে একজন মাইকেল হোভেলার-ম্যুলার এবং তার জার্মান দল, তাদের মিশরীয় সহকর্মীদের সাথে একসাথে কাজ করছিলেন । ১৫ সেন্টিমিটারের কিছু ছোট ছোট অ্যাম্পুল খুঁজে পান । হাটশেপসুটের সিলযুক্ত শিশি, তারা মনে করেছিলেন এইগুলিতে সম্ভবত কোন সুগন্ধি রয়েছে।
“এই শিশি গুলি তাদের কে সাহায্যে করে ৩৫০০বছরের পুরানো রহস্য উন্মোচনের ” বলেছিলেন হোভেলার-মুলার তিনি ব্যাখ্যা করেন যে বোতলগুলির একটিতেও কোন সুগন্ধি ছিল না, এইগুলি ছিল ত্বকের জন্য একটি বিউটি ক্রিম।
যা রানী হাটশেপসুট তার একজিমা নিরাময় করতে এবং নিখুঁত সৌন্দর্য চর্চায় ব্যবহার করেছিল।
প্রাচীন মিশরে উচ্চ মানের প্রসাধনী শিল্পের বিকাশ লাভ করেছিল। যৌন আবেদন, কমনীয়তা, প্রতিটি বিষয়ের প্রতি মনোযোগ ছিল তখনকার মিসরীয় নারীদের , তাদের পোশাক এবং চুলের শৈলীর তার বড় প্রমান।
রানীর সেই বিউটি ক্রিমই ছিল তার জন্য বড় সর্বনাশ।
এটি পাম তেল এবং জায়ফল তেল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, গবেষকরা বলছেন,
তবে এতে দুটি উচ্চ কার্সিনোজেনিক পদার্থও রয়েছে। এটি হল টার এবং বেনজোপাইরিন, আধুনিক যুগে ট্যারান্টোর ইটালসিডারের বিষের ন্যায়।এখন প্রশ্ন এই ক্রিম কি তাকে কেউ ইচ্ছা করে দিয়েছে যাতে করে তিনি ধিরে ধিরে মৃত্যুর কাথা কাছি হতে পারেন ।
গবেষকরা বলছেন হাটশেপসুট ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। কিন্তু এখন আমরা কার্যত নিশ্চিত যে প্রাণঘাতী বিউটি ক্রিমই তার মৃত্যুর কারন। বোতলগুলিতে রাণীর সিলগুলি ছিল খাঁটি ।কি তিক্ত ভাগ্য, রানী হাটশেপসুট ।
তবে তিনি বিশ্বের প্রথম ব্যক্তিদের মধ্যে একজন যিনি দেখিয়েছিলেন যে একজন মহিলা ও দেশ শাসন করতে পারে।