যুক্তরাজ্যের ডিমন্টফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর ধরে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর পদে রয়েছেন বাংলাদেশের মেয়ে নাফিসা হাবিব। এর আগে তিনি সহপাঠীদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তাঁর কোর্সের লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নাফিসা ডিমন্টফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক শেষ করেছেন। এ সফলতার কারণে সম্প্রতি চার্টার্ড অ্যাসোসিয়েশন অব বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ার্স তাঁকে বেস্ট ফাইনাল ইয়ারস অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে।
২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে যান নাফিসা হাবিব। স্থাপত্যবিদ্যায় উচ্চশিক্ষা নিতে সে বছরই যুক্তরাজ্যের ডিমন্টফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। নাফিসাকে তাঁর সেশনের অন্য চার শিক্ষার্থীর সঙ্গে কোর্স লিডার পদে মনোনয়ন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রথমবারেই সহপাঠীদের ভোটে তিনি কোর্স লিডার নির্বাচিত হন। সেই থেকেই তিনি সহপাঠীদের লেখাপড়ার জন্য গ্রুপ ডিসকাশন, দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা ও আনুষঙ্গিক নানা বিষয়ে ভূমিকা রাখেন। নাফিসা হাবিবের নেতৃত্বগুণে ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর পদে নিযুক্ত করে।
ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর পদে নাফিসাকে ভালো অঙ্কের সম্মানীও দেওয়া হতো। নাফিসা ছুটির দিনগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন ডেতে অংশ নিতেন। তিনি ছাত্রছাত্রীদের সমস্যাগুলো শুনতেন। সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়ও ও সম্ভাবনা তুলে ধরতেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরাও দেখা করতেন তাঁর সঙ্গে। তাঁরা আলোচনা করতেন কীভাবে তাঁদের সন্তানেরা পড়ালেখায় আরও ভালো করতে পারে। নতুন ছাত্রছাত্রী ডিমন্টফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এলে নাফিসা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার ভালো পরিবেশ ও নানা সুযোগ–সুবিধার কথা উল্লেখ করে তাদেরকে উৎসাহিত করতেন।
পড়ালেখার পাশাপাশি নাফিসা খণ্ডকালীন চাকরি করতেন ফাস্ট ফুডের দোকান এবং একটি আর্কিটেক্ট ফার্মে। সেই আয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ও থাকা–খাওয়ার খরচ জোগাতেন।
নাফিসা হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থাপত্যবিদ্যায় মাস্টার্স ও পিএইচডি করার ইচ্ছা আছে আমার। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে আমি এমন কিছু টেকসই ভবনের নকশা নিয়ে আসতে চাই, যেখানে কম জায়গায় অনেক মানুষ আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ বাস করা যাবে। এ ছাড়া গ্রামের বাড়িঘরের জন্যও কিছু ভিন্ন ধাঁচের নকশা নিয়ে কাজ করছি।’