পৃথিবীর অন্যতম সুন্দরতম নিদর্শন সাগর।ভূপৃষ্টে স্থলভাগ বেষ্টন করে আছে বিশাল সাগর,মহাসাগর।বলা হয় পৃথিবীর তিনভাগ পানি আর একভাগ স্থল।পৃথিবী অসংখ্য দেশ মহাদেশ দ্বীপ ঘিরে আছে সাগর।আবার দেশে দেশে ছড়িয়ে আছে হাজারো নদী,হ্রদ।স্থলভাগে অজানা অনেক কিছুই আবিস্কার করতে পারলেও বিশাল সমুদ্রের নিচের জগত নিয়ে মানুষের জানার পরিধি এখনো স্বল্প।তবে সমুদতলে অনেক কিছুই আবিস্কৃত হয়েছে যা মানুষকে বিস্মিত করেছে প্রতিনিয়ত।এমনই এক আবিস্কার সমুদ্রতলে নদী।
সমুদ্র নিজেই বিশাল জলরাশি বেষ্টিত এলাকা।আবার তার নীচেই নদী! অদ্ভুদ ব্যাপার না? অদ্ভু্দ ব্যাপার হলেও এমনই বিস্ময়কর জলপ্রবাহ আছে সমুদ্রের নীচে।মেক্সিকোর সমুদ্রের নীচে আছে এমনই এক নদী।ইউকাটান উপদ্বীপের টুলুম থেকে মাত্র ১৫ মিনিট দূরে অবস্থিত এই প্রাকৃতিক বিস্ময়।সমুদ্রের নিচে স্কুবা ডাইভিং করে গেলে মনে হবে পানির নিচে হয়তো মিঠা পানির আরেকটি ধারা তৈরি হয়েছে।অথবা খাদ সৃষ্টি হয়ে বয়ে চলেছে নদী।অবে আদতেই এই নদী মিঠা পানির।সমুদ্রের লবনাক্ত পানির নিচে বিস্ময়করভাবে অবস্থান করছে মিঠা পানির নদী।বিজ্ঞানীদের মতে এসব নদী হাইড্রোজেন সালফেটের একটি স্তর দ্বারা উপরের লবণাক্ত পানি থেকে পৃথক হয়।যার ফলে নিচে এক ধরণের মিঠা পানির নদী তৈরি হয়।এসব নদীর উপরে হাইড্রোজেন সালফেটের ঘন আস্তরণ দেখা যায়।একে বলা হয় হ্যালোক্লাইন।যা দেখতে অনেকটা মেঘের মতো।এই মেঘের আস্তরণ পার হলেই দেখা পাওয়া যায় নদীর।
পৃথিবীতে সাগরের তলদেশে এমন অনেক নদী আছে।যার মধ্যে মেক্সিকোর সিনোট এঞ্জেলিটা অন্যতম। ধারণা করা হয় আজ থেকে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার বছর আগে চুনাপাথরের ধসে ভূগর্ভস্থ পানি উন্মুক্ত হওয়ার ফলে তৈরি হয় এই নদী।এখানে লবণের কুয়াশা বা মেঘ ভেদ করে দেখা যায় বয়ে চলেছে নদী।যার দুপাশে গাছ আর ঝরা পাতা দেখা যায়।ডুভুরিরা এখানে স্কুবা ডাইভিং করে আসে।কেউ কেউ মাছ ধরে নদীতে।
আবার কৃষ্ণ সাগরের তলদেশে ইউনিভার্সিটি অফ লিডের ড. ড্যান পারসনের দল সমুদ্রের নীচে আরেকটি নদী আবিষ্কার করেছিল।এই নদীটিকে পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম নদী হিসাবে গণনা করার যেতে পারে।কেননা এই নদীতে যথেষ্ট প্রবাহ আছে এবং আকারে বিশাল। আবার বিভিন্ন জায়গায় বেশ গভীর। নদীটি ঘণ্টায় চার মাইল বেগে প্রবাহিত হতে পারে এবং এই নির্দিষ্ট চ্যানেলের মধ্য দিয়ে প্রায় বাইশ হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হতে পারে।