অভাব || সোহেল রানা
অভাব
আমার স্পর্শ করেনি বাস্তবিকই।
(বন্যা,
দুর্ভিক্ষ ও খরার মত কোনও অপায়)
অভাব
নাস্তি ভাতমাছ পোশাক আশাক ও
দৈনন্দিন জীবন-সরঞ্জামাদি–
তবে
একথাও সত্য : অভাবের ঘর্মাক্ত শরীর লতিয়েই
আজ
আমি চিকচিক
নির্মিত
বড়ো বড়ো প্রাসাদ;
কংক্রিটের
পথঘাট, উন্নয়ন রোল!
এবং
নির্মিত হচ্ছে মানবসভ্যতার প্রাচীর।
একটা
শূন্যতা আর হাহাকার হাঙরের
ক্ষুধা
হয়ে অনলস গোগ্রাসে :
ধীরে
ধীরে গিলে নিচ্ছে সমাজ-সংস্কৃতি-কৃষ্টি কালচার–
এমন
কি সকালের শিশির এবং গোধূলি-রক্তরংও!
আমার
খুব ইচ্ছে করে
অভাবের
ঘর্মাক্ত শরীরে ভিজতে–
যেখানে
মানুষ আর মানবতা আর জীবজন্তু ও জীবনের
আপেক্ষিক
সৌন্দর্য, সৌহার্দ্য এবং সম্প্রীতির বাঁধন ছিল অখণ্ড।
উদোম
আকাশের তলে। ৮৮-র বন্যা।
হোম স্টে
——— শক্তিপ্রসাদ
ঘোষ
বক্সা
ফোর্ট যাবার পথের
দরজায়
দাড়িয়ে সন্তালাবাড়ি
কত গুলো দোকান, মারুতি ভ্যান
হোম
স্টেতে বাহারি ফুলের
হাতছানি
চাকরির
জন্য
পাহাড়ি
ছেলেমেয়েরা বিকাল হতেই
দৌড়
চর্চ্চা
এলাকা
ভিত্তিক জীবিকার প্রস্তুতি
হোম
স্টেতে আপ্যয়নের সাথে
রাতে
ধোঁয়া ওঠা ভাতের সাথে
বুনো
মুরগীর মাংসের ঝোল
তারা ভরা
আকাশে ধনেশ পাখির ডাক
মাঝে
মাঝে গোজিয়ে উঠছে
বনজ
আদিমতার মধ্যে
শহরে
আধুনিকতার আধিপত্য।
——- ——-
রবীন্দ্রনগর,নিউটাউন কোচবিহার-৭৩৬১০১
হেমন্তের উৎসব
আব্দুল্লাহ আল হান্নান
শরত ঋাতুর বিদায়ে হেমন্তু ফিরে আসে
আনন্দে বাংলার ঘরে ঘরে কৃষক হাসে।
নবান্নের উৎসবে মেতে ওঠেন সবাই
নতুন ধানে গোলা ভরে খুশির শেষ নাই।
বাংলার ইতিহাসে ঐতিহ্য নবান্ন উৎসব
ধান কাটা তোলা করে ব্যস্ত থাকে সব।
কৃষানীর ঘরে ঘরে খাওয়ার পরে ধুম
মায়ের আলতো ডাকে ভেঙ্গে যায় ঘুম।
মেয়েকে বাপের বাড়ি নিয়ে আসে নাইওর
জামাইকে দাওয়াত দিয়ে করেন আদর।
ফিরনি সেমাইর সাথে নানা রকম পিঠ,
সাথে আবার ক্ষীর থাকে আহ! কি মিঠা।
সংস্কৃতির বাউল গান নৃত্য কিংবা নাচে
পাড়া গাঁয়ের কিশোরীরা নানা রকম সাজ,
নাগরদোলা লাঠি খেলা রাখালিয়ার সুর
হেমন্তের উৎসবটা ছড়িয়ে পড়ে বহুদূর।
তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ, বাংলাদেশ
আমার ইচ্ছে করে
এম. আর. মিঠুন
আমার ইচ্ছে করে,
ইচ্ছে গুলো তোকে বলতে,
আমার ইচ্ছে করে
তোর ইচ্ছে গুলো পূর্ণ করতে।
আমার ইচ্ছে করে,
না বলা কথা গুলো তোকে বলতে,
আমার ইচ্ছে করে
তোর না বলা কথা গুলো শুনতে।
আমার ইচ্ছে করে,
তোকে পাবো না যেনে-ও
তোর জন্য অপেক্ষা করতে।
আমার ইচ্ছে করে,
ভালোবাসতে তোকে,
বার-বার তোর প্রেমে পড়তে।
আমার ইচ্ছে করে,
বুকের মাঝে তোকে আগলে রাখতে।
আমার ইচ্ছে করে,
তোর হাতে- হাত রেখে
পথ চলতে।
আমার ইচ্ছে করে,
তোকে নিয়ে হারিয়ে যেতে।
আমার ইচ্ছে করে,
তোর মাঝে মিশে যেতে,
আমার ইচ্ছে করে,
তোর ভালোবাসার ফুল হয়ে ফুটতে,
তোর অবহেলায় ঝরে যেতে।
★★তরুনের দল★★
কবিঃ শওকত হোসাইন পারভেজ
হে তরুনের দল,ক্ষয়িত তোমার বল।
মস্তিষ্কচালনায় গরম,রক্ত কেন শীতল।
তুলি তিক্ত ধ্বনি,সংগ্রাম তুলি চল।
মজবুত কর বাহু ,মহাপুরুষের অনুসরণে।
নবজাত জেঁগে উঠুক, তোমার মরণে।
হে তরুনের দল,ক্ষয়িত কেন মনোবল।
চুপসারে দেখ কী,অস্ত্র নিয়ে সামনে চল।
ধ্যার্য বাঁধ ভেঙ্গে,সামনের দিকে যাই চল।
মজবুত কর মন,মহাপুরুষের মরণে।
নবজাত জেঁগে উঠুক,তোমার অনুসরণে।
হে তরুনের দল,ক্ষয়িত কেন সব সম্বল।
জাগ্রতায় দেখ না আর,সামনে দিকে চল।
ভারি কন্ঠে মিছিল তুলে,জাতি বাঁচাই চল।
মজবুত কর হাঁটু,মহাপুরুষের আলোড়নে।
নবজাত স্যালুট করুক,তোমার জাগরণে।।
দুটি বিরহের কবিতা
মোশাররফ হোসাইন
১
অনেক বছর পেরিয়ে যাবে আমাদের দেখা হবে না।
তারপর একদিন দেখা হবে, দুজনেই অভিনয় করে দুজনকে বলবো
অনেক বছর দেখা হয়নি আমাদের।
এই ভাবে কেটে যাবে দিনের পর দিন বছরের পর বছর।
তারপর হয়তো একদিন জানা যাবে তোমার সঙ্গে আমার অথবা— ‘
আমার সঙ্গে তোমার কোনোদিন চোখাচোখি হবে না।
২
আমি নীরবেই কাঁদবো, একসমুদ্র পরিমাণ কাঁদবো।
তোমাকে কখনো বলবো না আর, আমার কান্না পাচ্ছে দেখে যাও।
আমি বিরহের আগুনে একাই জ্বলবো।
মরন বেলাও বলবো না আর,
এই তৃষ্ণার্ত ঠোঁট ভেজাও তোমার প্রেমের জ্বলে।
আমি বেদনাদের নীরবেই সইব।
তোমার ডাকে কখনও চিঠি পাঠাবো না।
বলবো না আর সেই কথা সখি—
পোড়া হৃদয়খানি দেখে যাও একবার।
তখনো বুঝিনি? ভালোবাসা কাকে বলে?
শাহরিয়ার ইসলাম পল্লব
_________________________
তখনো বুঝিনি? ভালোবাসা কাকে বলে?
যখন তুমি ছিলে এ হৃদয়ের অন্তস্থল জুড়ে…
তখনো বুঝিনি? ভালোবাসা কাকে বলে?
যখন তুমি ছিলে আমার আকাশে মেঘ-বৃষ্টি হয়ে..
তখনো বুঝিনি?ভালোবাসা কাকে বলে?
যখন তুমি ছিলে আমার অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনকে আলোকিত করে…
তখনো বুঝিনি? ভালোবাসা কাকে বলে?
যখন না বুঝেই বলেছিলাম ভালবাসি তোমাকে…
তখনো বুঝিনি? ভালোবাসা কাকে বলে?
যখন হেটেছিলাম হাতে- হাত রেখে অচেনা পথ ধরে…
তখনো বুঝিনি? ভালোবাসা কাকে বলে?
যখন ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুম্বন করেছি চেনা কোন পার্কের আবঢালে…
তখনো বুঝিনি? ভালোবাসা কাকে বলে?
যখন তুমি বলেছিলে বাঁচবে না আমায় ছেড়ে আর আমি তোমায় ছেড়ে…
তখনো বুঝিনি?ভালবাসা কাকে বলে?
যখন মুঠোফোন এ ফোনে তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতাম যখন-তখন আনমনে …
তখনো বুঝিনি? ভালোবাসা কাকে বলে?
যখন প্রেম রচনা করতাম তোমায় নিয়ে চিঠির ভাঁজে…
এ সবই ছিল আমার আবেগ ধুলোবালি জমা এ শহরে..
এখন তুমি আমায় ছেড়ে বহুদূরে।
আমার কবিতা তোমায় খুঁজে- ফিরে চেনা সেই পথের সাজে..
লাল-নীল শহর ছেড়ে তোমাকে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করে জোনাকির আলোর কোনো দেশে…
হারাতে মন চায় স্নিগ্ধ কোন প্রেমময় বাতাসের খোঁজে…
যাবে কি আমার সাথে, হারাবে কি হাতটি ধরে?
কারণ তখনো বুঝিনি প্রিয়? ভালোবাসা কাকে বলে?
“খোকা বাবু”
(স্বরবৃত্ত ছন্দে- 4+4,4+2)
//রবিউল হাসান
খোকা বাবু কোথায় গেলি
আয়না ফিরে বাড়ি,
দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হলো
তবু এলি না ফিরি।
কোথায় আছিস কেমন আছিস
হয়নি বুঝি খাওয়া,
তুই না খেলে মা খাবে না
তুই তো জানিস বাবা।
তবু কেন দূরে আছিস
আয়না ফিরে খোকা।
আমি মরে গেলে
মোশাররফ হোসাইন
*
আমার সমাধির পাশে বোসো; সখি!
নির্জন বাঁশির সুর ধরে গেয়ে
যেও অলেখা গান।
ফিসফিস করে কিছু ভালোলাগা
ভালোবাসার কথা বোলো।
পাখিদের জিজ্ঞেস করিও সমাধির নির্জনতার
কথা—
একগুচ্ছ শাদা কাশফুল রেখে দিও
আমার শিতানে
যে তোমাকে মনে রাখে; বাসে ভালো, তারে
দেখতে যেও—
বিবর্ণ স্বরে বলে যেও—
তোমার নতুন ঠিকানার কথা।
ঠিকানা ঃ ইটনা, কিশোরগঞ্জ।
তোমাতেই যাওয়া ভুলে
– রবিউল ইসলাম
তুমি চেনালে যে পথ আবার
সে পথ তুমিই ভুলালে মোরে,
তোমাতেই শেখা যে প্রেম মোর
আবার তোমাতেই যাওয়া ভুলে।
তোমার তরেই ভুলেছিলাম সব
ছিলো যত দুঃখ, বেদনা-ব্যাথা,
বুঝিনি আমার জন্য কাঁদবে তুমি
একলা নদীর কুলে।
তোমাতেই শেখা যে প্রেম মোর
আবার তোমাতেই যাওয়া ভুলে।
তোমার তরেই খুঁজে পেলাম আশা
যেদিন খুঁজে পেলাম নব চেতনা,
সেদিন নদী পাড় সাদা ছিলো
হেলা কাশ ফুলে।
তোমাতেই শেখা যে প্রেম মোর
আবার তোমাতেই যাওয়া ভুলে।
তোমার তরেই উল্লসিত হলো
যেদিন নিবেদিত মোর প্রাণ
সেদিন সকল স্বপ্ন আমার
নিমেষেই পূর্ণ আঁখির জলে।
তোমাতেই শেখা যে প্রেম মোর
আবার তোমাতেই যাওয়া ভুলে।
রবিউল ইসলাম
রঘুনাথপুর, উপজেলাঃ পাংশা,
জেলাঃ রাজবাড়ী
চারু
লেখকঃ তমালিকা দত্ত
এক আকাশ তারা আর একটা চাঁদ
বেশ কাছাকাছি ওরা সবাই,
চারিদিকে আলো আঁধারের ছায়া
নিস্তব্ধ বাতাসের সাথী জোনাকি।
নীল স্বপ্নের বাসন্তী রঙে রঙিন ওরা
ইন্দ্রজালের আগলা আবরনে ঘেরা,
আলোর মিছিলের প্রদীপ ওরা
নীল অনন্তে পালতোলা নৌকা।
কুয়াশার আবছা পর্দা আলোকিত
দীপ্তিমান জোনাকিরা যেন একটা সং,
পাহাড় সমান উঁচু ওরা
অনন্তকাল ধরে ওদের যাএা।
ভেজাল
সুজিৎ চন্দ্র রায়
দিরাই, সুুনামগঞ্জ,, বাংলাদেশ
———————
ভেজালে ভরে গেছে একাল,
সদা সর্বত্র শুধুই ভেজাল।
আসলের দেখা নাই একাল,
নকলে ডুবেছে মায়াজাল।
বিবেকে পরেছে ময়লার স্তুুপ ,
মনুষত্ব হারিয়ে আজ।
ভেজালের ভুবনে ভাসি,
ভুলেছি সকলে ভাল কাজ।
ফাঁকিবাজি, তেলবাজগন,
আছেন বড়ই মহাসুখে।
ন্যায়ের পথে কথা বলা জনের,
কাটে দিন মহাঅসুখে।
এবাবে চলে দিন সকলের,
দিবস ও রজনী সময়ে।
ভেজালের অতলে ডুবে,
ভগ্নহৃদয় নিরবতা নিয়ে।
এবাবে যাবে কত দিন,
ভাল কতগুলি হৃদয়ের।
মুক্ত কি হব কোনদিন,
দেখা কি হবে সু-সময়ের।
—————-সমাপ্ত————