১.
এক রাজ্যে এক রাণী ছিল
মস্ত বড় তাঁর চুল ছিল,
চশমার আড়ালে বাঁকা চোখ ছিল
মিথ্যা কথায় ভরা তার পেট ছিল ।
বিশাল বড় একটি ছিল তার রাজ্য
সত্য কথা হতো না তার সহ্য,
সত্যের সন্ধানে গেলে সে যেত ফেঁসে
খারাপ কাজে বাঁধিয়ে ভরে দিত জেলে ।
সে রাজ্য করতে চায় একাই শাসন
সকল প্রজাদের করে সে নির্যাতন,
খায় দায় ঘুমায় নেই কোনো চিন্তা
সকল স্বর্ণ মুদ্রা নিয়ে নেওয়ার ধান্দা ।
খাইতো মাছ মাংস বলতো ডাল ভাত
নাক ডেকে ঘুমিয়ে পার করতো রাত,
প্রজাদের দুঃখ কষ্টে সে থাকে চুপচাপ
নরম মনকে করে ফেলেছে সে ইস্পাত ।
…………….
২.
এতো পড়া যে সামলাতে
পারেনা যে আমার ব্রেনে,
কী যে করি এখন
উপায় মেলে না যখন,
সব ছেড়ে পালাবো কখন
তা ভেবেই হলাম মাখন,
কী যে করি এখন
উপায় মেলে না যখন ।
……….……
৩.
পাঁচ শেয়ালে ধরেছিল আমায় জঙ্গলে
তাদের সকল কথা শুনে ও বুঝে
হাত জোড় করে ক্ষমা চাই তাদের কাছে,
আমার ভুল হয়েগেছে এই জঙ্গলে
সকলকে ছেড়ে ও ভুলে একা এসে,
দু’একজন তাদের মাঝে ছিল ভালো
না হলে পরিপূর্ণ জঙ্গলে জীবন হতো কালো,
সকল বাঁধা পেরিয়ে বুঝলাম ভাগ্য আমার ছিল ভালো ।
..…………
৪.
হ্যাঁ আসলেই আমি খারাপ মানুষ
তা অবশ্য সব সময় অপ্রকাশিত,
এতো ঝড় বৃষ্টির পরে যে বুঝলেন
তা সত্যিই বলা যায় আপনার সৌভাগ্য ।
হাজারো গুনের অধিকারী মানুষ গুলোকে
খুব সহজে খারাপ বলা যায় একটি ভুলে,
তখন কূল-কিনারা নাহি পায় তাদের মনে
যারা সহজ মানুষেরে বলে জটিল মানুষ,
তারা নয় কোনো অতি সাধারণ মানুষ
মিষ্টি ভাষি মুখোশের আড়ালে রঙিন ফানুস ।
…………
৫.
ভুলে ভরা আমি
আমি ভুল করেছি নতুন কিছু শিখেছি
ভুল করে আমি আমাকে খুন করেছি,
গোলাপ ছিড়তে যেয়ে রক্ত মাখা হাত করেছি
ভুল করে হাটতে যেয়ে কাঁদায় গা মাখিয়েছি,
অন্যকে সময় দিয়ে নিজের সময় নষ্ট করেছি
অদ্ভুত মানুষকে বিশ্বাস করে ভুল হাত ধরেছি ।
ভুল মানুষের কথায় নিজেকে ভুলে গেছি
মিষ্টি কথায় নিজেকে জড়িয়ে দিন-রাত কেঁদেছি,
মিথ্যা অভিনয়ে মায়ার বাঁধনে ভুল পথে ডুবে গেছি
এই পৃথিবীতে এসে আমি নিজেই ভুল করেছি ।
………….
৬.
তুমি শুধু সুদর্শন মানুষ দেখেছো
তাকে নিয়ে হয়তো কখনো ভাবোনি,
তুমি শুধু ডায়মন্ড দেখেছো
তার গুণাবলি সম্পর্কে জানোনি,
তুমি শুধু স্বর্ণ দেখেছো
আসল নাকি নকল বুঝোনি,
শুধু বিশাল বড় বৃক্ষ দেখেছো
তার ছায়ায় তুমি শান্তি খোঁজোনি,
ভোর সকালে পাখিদের কণ্ঠস্বর শুনেছো
কিন্তু তাদের সম্পর্কে জানতে যাওনি,
তুমি শুধু সুন্দর গোলাপ দেখেছো
কিন্তু তার পাপড়ির স্পর্শে জড়াওনি,
রাতে তারার মিটিমিটি আলো দেখেছো
কখনো হয়তো সেগুলো গুণেও দেখনি ।
……………
৭.
আজ পৃথিবীর সেরাদের সেরা দিন
আজ শেখ হাসিনার জন্মদিন,
আজ ছাদে কাপড় রেখে
মনের সুখে বৃষ্টি দেখার দিন,
সকল ভুল ইচ্ছে করে আজ
মায়ের কাছে বকা খাওয়ার দিন,
আজ সকল অপরাধ করে
চুপচাপ থেকে প্রিয় সাজার দিন,
সকল দিনের মধ্যে আজ সেরা দিন
আনন্দে উল্লাসে মেতে থাকার দিন।
………….
৮.
এক পৃথিবীতে যত ভালোবাসা আছে
তার সকল কিছুই খুব যত্নে রয়েছে,
তারা তোমায় সমুদ্রের জলে ভেজাবে বলে
সাদা মেঘের আবরণে লুকিয়ে রয়েছে।
কোকিল পাখিরা তাদের সুরের মুগ্ধতা
তোমায় শোনাবে বলে অপেক্ষায় আছে,
সুগন্ধি ফুলেরা তোমায় স্পর্শ করবে বলে
না ঘুমিয়ে দিন-রাত এখনো জেগে রয়েছে।
পথেরা পায়ের ধূলো গায়ে মাখবে বলে
এখনো তারা পরিষ্কার হয়ে পথ চেয়ে আছে,
খোলস ছাড়া একঝাঁক সামুদ্রিক মাছ
তোমায় ভেবে সকল পরিশ্রমেও হয়নি ক্লান্ত।
………….
৯.
আমি তোমাকে আমার সবুজে ঘেরা একটি পাহাড়ে নিয়ে যাব
যেখানে নাম না জানা বটবৃক্ষের ন্যায় একটি বৃক্ষ রয়েছে,
সেই বৃক্ষের উচ্চ ডালে একটি পাখির বাসা রয়েছে
সেখানে আমি তোমাকে তাদের সুখের সংসার দেখাতে নিয়ে যাব,
সেই সুখী সংসারে রয়েছে মা-বাবা ভাই-বোন
তাদের পাশেই রয়েছে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী ।
সেখানে আমি তোমাকে তাদের একত্রতা দেখাতে নিয়ে যাব
খেয়ে না খেয়ে কিভাবে সুস্থ অবস্থায় বেঁচে থাকতে হয়,
কিভাবে একটি সংসার সুখে রাখতে হয়
সেই দলের দল নায়কতন্ত্র তোমায় দেখাবো,
শত বিপদের পাশে থেকেও
কিভাবে ভালোবেসে ও যত্নে পরিবার আগলিয়ে রাখতে হয়
সেই দলের সাথে আমি তোমায় পরিচয় করে দিব,
একটি বৃক্ষ নিজ স্বার্থ ছাড়া কিভাবে অন্যদের সাহায্য করে যায়
তাও আমি তোমায় দেখাবো ।
তুমি কি আমার সাথে যাবে,
সবুজে ঘেরা সেই উচ্চ পাহাড়ে
নাম না জানা উচ্চ বৃক্ষের সাথে পরিচয় হতে
পাখিদের একটি সুখী পরিবার দেখতে
তুমি কি যাবে আমার সাথে ?
…………..
১০.
জীবনের কষ্ট
ভালো লাগে না রৌদ্রময় দিন
ঘন কালো অন্ধকার রাত,
কুয়াশায় ঢেকে থাকা সূর্য
মেঘে ঢেকে থাকা চাঁদ,
অলস দেহ ক্লান্ত ভরা মন
চোখের পাতা ভরা অশ্রু যখন,
ব্যর্থ মস্তিষ্ক অর্থের অভাব
ঠোঁট ফাটানো শীতের স্বভাব ।
ভালো লাগে না ছন্নছাড়া জীবন
মাথার ঘাম ঝরা উত্তপ্ত গরম,
বইয়ের পাতায় কঠোর অধ্যাবসায়
গল্প করতে বিকেল বেলায় ।
ভালো লাগে না প্রেমে ব্যর্থতা
পাওয়া না পাওয়ার যন্ত্রণা,
কারো দেখানো যৌবনের অহংকার
দেহের অশ্লীল আচরণ ব্যবহার ।
ভালো লাগে না নিঃসঙ্গ হয়ে হাটতে
খেয়ে না খেয়ে পেটে ক্ষুধা রেখে,
ভালো লাগে না ভাবতে নিজেকে বাদে
আর কখনো অন্য কাউকে নিয়ে ।
ভালো লাগে না অনাকাঙ্ক্ষিত কর্ম
সুখ-দুঃখের মিশ্র সংসার ধর্ম,
দু’চোখ ভরা মিথ্যা স্বপ্ন নিয়ে
পথে চাকরি খুঁজে বেড়ানো ।
ভালো লাগে না আত্মীয় স্বজনের
হিংসা বিদ্বেষ গীবত পরনিন্দা,
বন্ধুত্বের মাঝে সামান্য আঘাতে
মানিক রতনের বিচ্ছেদ স্বার্থপরতা ।
ভালো লাগে না বয়ে যাওয়া স্রোতের ধারায়
জীবনের কষ্টগুলো আর ভালো লাগেনা ।
…………..
১১.
সেই দিন
সেই দিন ছিল আমার আপনজন অন্ধকার
মেঘে ঢাকা আকাশ ছিল শুধুই আমার,
সেই দিন ছিল না আমার কেউ
সাহায্যের হাতে কোনো মানবতার ঢেউ,
আকাশ ভাঙ্গা মাথা নিয়ে ছিলাম শুধুই আমি
এটাই বাস্তবতা চারদিকে তাকিয়ে দেখি ।
সেই দিন পথ ঘাটও যেন বৃদ্ধি পায়
মনে হয়েছিল যেন আমার শত্রু সবাই,
সুখের সন্ধান কোথায় ছিল না আমার জানা
কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা কি ঘটনা,
সময়ের ব্যবধানে তা যাচাই করা বড় দায়
কোথায় যায় কি করি কূল কিনারা নাহি পায়,
বুদ্ধিহীন মস্তিষ্ক নিয়ে ছুটে বেড়ায় রাস্তায়
সেই দিন আজও মনে পরে স্মৃতির পাতায় ।
………………
১২.
কখনো যদি
কখনো কাউকে কিছু বলি যদি
বলবো তবে পথের সন্ধান করতে,
যে পথে রয়েছে শুধুই সত্য
সে সত্যের পাতায় আগামীর রত্ন ।
সবুজ পাতার মায়ায় বয়ছে বাতাস
একেলা পথে আমি আর আকাশ,
কখনো কিছু দেখে যদি থাকি
দেখেছি তবে সুমধুর কণ্ঠের পাখি,
যে পাখির চোখে শুধুই স্বপ্ন
সে স্বপ্ন নতুন প্রজন্মের জন্য ।
………….
১৩.
মন আমার
মন আমার কখনো উড়ন্ত পাখি
কখনো আবার কারো দুটি আঁখি,
মন আমার বিশাল পাখার গাঙচিল
কখনো আবার মুক্ত আকাশের নীল ।
মন আমার চেয়ে আছে স্বার্থহীন ভাবে
কারো কাজল কালো চোখের দিকে,
মন আমার কারো ঝুমকো কানের দুল
কখনো আবার কারো এলোমেলো চুল ।
মন আমার গাছের শুকনো পাতা
কখনো আবার অন্ধকার রাতের তারা,
মন আমার নদীর বহমান স্রোত
কখনো আবার সকালে মিষ্টি রৌদ,
মন আমার সাদা কালো মেঘের বৃষ্টি
কখনো আবার কল্পনাপূর্ণ ভাবনার সৃষ্টি ।
…………….
১৪.
আমি তোমার
তোমার সাহায্যকারী বন্ধু হতে পারি
মনে আঘাত দেওয়া শত্রু নয়,
গ্রীষ্মের শীতল হাওয়া হতে পারি
ঘাম ঝরানো সূর্যের উত্তাপ নয়,
বসন্তের কোকিল হতে পারি
বর্ষার ঝড়ো হাওয়া নয়,
শীতের উষ্ণ বস্ত্র হতে পারি
তাই বলে অশ্লীল পরিধান নয় ।
আমি তোমার রাতের আকাশে
মায়াবী জ্যোৎস্না হতে পারি
মেঘে ঢাকা ভয়ংকর আকাশ নয়,
তোমার ফুলের সুগন্ধ হতে পারি
ব্যাথা দেওয়া রক্তক্ষরণ ফুল নয়,
তোমার প্রেমের মুহুর্ত হতে পারি
চোখের কান্নার কারণ নয়,
সোনালী উজ্জ্বল দিন হতে পারি
কালো লক্ষ দীর্ঘশ্বাস নয়,
দুঃখময় সময়ের সঙ্গী হতে পারি
বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর নয় ।
আমি তোমার ছায়া হতে পারি
বিবেকহীন ভীতু কাপুরুষ নয়,
তোমার হাস্যময় মুখ হতে পারি
দুঃখ দেওয়া কষ্ট নয়,
হৃদয়ে শক্তির উৎস হতে পারি
ভেঙে যাওয়া মনোবল নয়,
আমি শুধু তোমার হতে পারি
আর অন্য কারো নয় ।
……………..
১৫.
কোন একদিন
আমি কোন একদিন পাখি হতে চায়
প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে চায়,
কোন একদিন আমি লেখক হতে চায়
বঞ্চিত অসহায়দের কথা লেখতে চায়,
আমি কোন একদিন গবেষক হতে চায়
মানুষের দুঃখ-কষ্ট মুছে দিতে চায়,
কোন একদিন আমি চাঁদ হতে চায়
মনের কালোকে আলোকিত করতে চায়,
আমি কোন একদিন রাস্তা হতে চায়
পথহীন অঞ্চলে বেড়াতে যেতে চায়,
কোন একদিন আমি গাছ হতে চায়
খেটে খাওয়া মানুষের ছায়া দিতে চায়,
আমি কোনো একদিন সুখ হতে চায়
দেয়াল হয়ে গরিবের ঘরে যেতে চায় ।
……………..
১৬.
বাস্তবতা
অবিশ্বাসকৃত চাদরে মুড়ে গেছে সমস্ত শরীর
শুধু বাকি রয়েছে অতীতের কিছু স্মৃতির,
নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি অন্ধকারের মাঝে
তা নয় মনে হয় মেঘের আড়ালে,
কখনো মনে হয় চারিদিক পরিবেশ নয়
তা যেন সত্য-মিথ্যার নয়-ছয় ।
চেয়েছিলাম মানুষের মাঝে পথ চলতে
সুখের সন্ধানে থেকে দুঃখ ভুলতে,
বাঁচতে চেয়েছিলাম আমি সবাইকে নিয়ে
অর্থকে মুছে ফেলে মানব প্রেমে ।
কখনো বুঝিনি আমি থাকলে অর্থ
পাওয়া যায় শক্তির মূল উৎস্য
হাতির চক্ষু হতে সিংহের দম্ভ,
বুঝেছি আমি মানুষকে করে তুচ্ছ
অহংকারের ভয়াবহ অভিশপ্ত সেই অর্থ,
এটাই কি বাস্তবতার বিশ্বাসকৃত শর্ত ?
……………..
১৭.
মেঘলা আকাশ
আজ নতুন কিছু সৃষ্টির উত্তেজনায়
উদাসীন হয়ে কারো প্রেমের আনমনায়,
বৃষ্টি হয়ে নিচে নামার অপেক্ষায়
আমি আজ রয়েছি অধির ব্যাকুলতায়।
মন খারাপ দেখে আনন্দকে করেছি হ্রাস
তাই তোমার জন্য হয়েছি মেঘলা আকাশ,
কেদো না দুঃখের সঙ্গে ধৈর্য্য হারিয়ে
দেখ আমার কান্না উৎসাহের সাথে।
চারিদিকে হয়েছে অন্ধকারের ঘনঘটা
তাই কেউ আমায় বলে শত্রুতা,
আসলেই কি তাই, আমি বিপদগামি !
তবে কেন করি, অবেশেষে সুখের হাতছানি !
……………….
১৮.
অভিযোগ
আমার সব কিছুর অভিযোগে তুমি
তোমার সৌন্দর্যের সম্পূর্ণতাকি আমি ?
আমার থেকেও দামি তোমার মুখের হাসি
আমার লেখা কবিতায় তোমাকে ভালোবাসি ।
আমার কিছু কথা বলার মাঝে
তোমার মুখের স্বপ্নে আঁকা ছবি ভাসে,
এই পৃথিবিতে আমার সকল অভিযোগে
তোমার নামটি জড়িয়ে আছে আমার হৃদয়ে ৷
সব কিছু ভুলে এসো মোর কাছে
তোমায় নিয়ে যাবো আমার রঙিন পৃথিবিতে,
আমার জীবনের পথ চলার ভাজে
তোমাকে নিয়ে হাজারো কাব্য রটে,
তোমার কথা ভুলিনি কিছুই আমি
আমার কাছে তুমি অনেকাংশে দামী ।
………………..
১৯.
রহস্য
যদি বলি আমি পৃথিবী গোলাকার নয়
যখন ঘুরন্ত তখন ডিম্বাকৃতি হয়,
একধার চ্যাপ্টা বিভিন্ন রঙে আবৃত
তারই সঙ্গী-সাথী তারা-চাঁদ-সূর্য ।
চারিদিকে সব কিছুই যেনো অদ্ভুত কাণ্ড
নানান রকমের আলো-ছায়া যুক্ত,
আকাশ জুড়ে ছোট-বড় তারাময় রাত্রি
পৃথিবীতে আমরা সবাই স্বল্প সময়ের যাত্রী ।
আছে অনেক ছোট-বড় গ্রহ-নক্ষত্র
কোথাও মানুষ-আগ্নেয়গিরি কোথাও স্তব্ধ,
নীল আকাশ ভরা সাদা-কালো মেঘে
আর নিচে চলে খেলা ঝড়-বৃষ্টিতে ।
কোথাও উঁচু-নিচু পাহাড়-পর্বত
কোথাও কয়লার সাথে হীরা-সোনা-জহরত,
সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে বিশাল বড় প্রাসাদ
তারই নিচে কোথাও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ।
……………….
২০.
বন্ধু মানে
বন্ধু মানে পবিত্রতায় ঘেরা একটি স্থান
যেখানে নেই কোনো অশ্লীলতার প্রান,
বন্ধু মানে সীমানাহীন নীল আকাশ
সেই মুক্ত আকাশে উড়ন্ত বাতাস।
বন্ধু মানে বিপদের মুখে সাহায্যের হাত
মনের যত কথা বলার একটি রাত,
বন্ধু মানে মনে পরা শৈশবের স্মৃতি
পুরনো দিনের হাজারো নিয়ম নীতি।
বন্ধু মানে সময়ে অসময়ে খেলার সাথী
খাতায় লিখে রাখা অগোছালো চিঠি,
বন্ধু মানে হৃদয়ের মাঝে আনন্দের জোয়ার
মনের ঘরে লুকিয়ে রাখা শতাধিক উপহার।
বন্ধু মানে মেঘহীন বহমান একটি নদী
স্রোতের ধারায় ছুটে চলা নৌকার মাঝি,
বন্ধু মানে রৌদ্রময় দিনে গাছের ছায়া
বৃষ্টির শেষে রামধনুর সাতটি রঙের মায়া।
…………….
২১.
স্বপ্ন
আমি দেখেছি অন্ধকার কিছু দৃশ্য
যা ছিল স্মৃতির কল্পনায় সৃষ্ট,
দেখেছি কিছু আমি আলোকরশ্মি
উজ্জ্বল নক্ষত্রে যার হয়েছিল সৃষ্টি ।
আমি দেখেছি রঙিন কিছু রং
যেখানে ছিল স্বপ্নের আলোড়ন,
দেখেছি কিছু আমি মধুময় বন
সরিষার ফুলে হয়েছিল যার উত্তলন ।
আমি দেখেছিলাম অবাস্তবতার চাদর
যা ছিল শুধুই ঘুমন্ত একটি শহর,
দেখেছিলাম আমি ঘুরন্ত ডিম্বাকৃতি
যেখানে ছিল লাল-সবুজ রূপের পৃথিবী ।
……………….
২২.
জনতা
জনতা, কেন তুমি এতো ঘৃণ্য হলে
অভিশপ্ত সেই স্বার্থপরতার অহংকারে,
জনতা, বুকে সহস্র আশা নিয়ে
কেন তুমি ঘুমাও ঘুমাও অন্ধকারে ।
জনতা, কেন তুমি অশ্লীলতার চাদরে ঢাকো
তোমার শরীরের পবিত্র সেই সৌন্দর্য,
জনতা, অনাকাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়ের জন্য
কেন তুমি এতো ধৈর্যহীন রাগান্বিত ।
জনতা, কেন তুমি এতো দুর্বল হলে
খেটে খাওয়ার ভয়ে অর্থলোভী পাপাচারে,
জনতা, শরীরে থাকা সত্ত্বেও বল
কেন তুমি করো পরের ওপর নির্ভর ।
জনতা, নিজের দেশকে ভালোবাসতে শিখো
মানব প্রেমের আলো গায়ে মাখো ।
…………………
২৩.
মায়ের স্নেহ
ইচ্ছে হয় চাঁদের দেশে যেতে
স্বপ্ন জাগে তারাকে স্পর্শ করতে,
যদি বলি সব কিছুই পেয়েছি আমি
এসবের থেকেও অনেকাংশে দামি,
তা আমার মায়ের স্নেহ ভালোবাসা
আর কিছুই বলার নাই তাছাড়া ।
এই কথাটি বুঝবে নাকো ভাই
যার কাছে মায়ের মতো মা নাই,
আমি পেয়েছি অমৃত অমূল্য
পেয়েছি সত্যিকার পরিচয় মূল্য ।
আমি কৃতঙ্গ তারই কাছে
যে আমাকে ঠাই দিয়েছে,
রূপময়ী মায়ের পায়ের নিচে
প্রকৃতির সুন্দরের থেকেও সৌন্দর্যে ।
………………
২৪.
নদীর জল
বিশাল আকাশের সীমানাহীন পাখা
স্বল্প স্থায়ী রংধনু রঙিন রঙে আঁকা,
মেঘগুলো আবার সাদা-কালো রঙে ভরা
সেই মেঘের কান্নায় নদী পায় শোভা ।
নির্দিষ্ট লক্ষে উড়ন্ত-ছুটন্ত নদীর জল
জলের ছোয়ায় নদী করে টলমল,
পাহাড় বেয়ে গড়িয়ে এসে পড়ে নদীতে
চলে যায় নির্দিষ্ট দিকে গভীর সমুদ্রে ।
মেঘ-বৃষ্টি পাহাড়-পর্বত সবাইকে কাঁদিয়ে
নিজ স্বার্থ উৎস্বর্গ করে যাচ্ছে হারিয়ে,
পশু-পাখির কল্যানে পৃথিবীকে জাগ্রত করে
অন্যকে বাঁচাতে যাচ্ছে সমুদ্রে তলিয়ে ।
……………….
২৫.
চিঠি
প্রিয় মা,
মাগো তুমি ছাড়া এই পৃথিবীতে যে
আমার আর কেহু রইলো না,
তুমি যে আমার সোনার থালির পেটের ক্ষুধা,
তুমি যে আমার নয়নে আকাশ ভরা স্বপ্নের মেলা,
তুমি যে আমার মুখ ভরা হাসির কারণ,
তুমি যে আমার মিথ্যা পথে যাওয়া বারণ,
তুমি যে আমার বর্ষা বিকেলে মুড়ি মাখানো দুটি হাত,
তুমি যে আমার সোনায় সোহাগা আলো ভরা চাঁদ,
মা তোমায় যে মনে পরে একা গভীর রাতে,
তুমি ছাড়া আর কেউ তো হাত বুলিয়ে দেয়না জ্বর হলে,
তুমি যে আমার স্বর্গ ভরা রত্ন,
তুমি যে আমার আলোর প্রদীপ মায়ায় ভরা যত্ন,
মাগো তুমি তো আর আমার অপেক্ষায় থেকো না রাস্তায় দাড়িয়ে,
কোথায় চলে গেলে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে আমায় একলা করে,
আর তো কেউ রইলো না আমার আপন,
তারা সকলেই তো মায়ের মতো বলে,
হতে পারে কি কখনো মায়ের মতোন ?
তারাই নিষ্ঠুর ও সুযোগে দেয় ধোকা,
বিপদে পরলে তারা দেয়না তো সারা,
সুযোগ বুঝে তারা করে অপমান,
তাদের নেই কোনো মান-সম্মান,
তারা দানবের থেকেও নিকৃষ্ট,
করেনা কখনো কারো ভালো,
তারা অর্থলোভী পাপাচারী সুযোগী সন্ধানী,
মিষ্টি কথায় মাতিয়ে রাখে তাদের উচ্চ ধ্বনি ।
মাগো তোমায় যে আমার খুব মনে পরে,
প্রতিটি বেলায় প্রতিটি সময়ে প্রতিটি পথে,
অন্ধকার হয় চারদিক শুধু তোমায় না পেয়ে,
ভালো থেকো মা ভালো থেকো
ইতি
তোমার আদর যত্নের স্নেহ ।
………………
২৬.
কেউ ভালোবাসা প্রকাশ করে সর্বস্ব দিয়ে
আবার অনেকেই অগোচরে লুকিয়ে রাখে,
অনেকের ভালোবাসা রয়ে যায় বাঁকা চোখে
কেউ আছে স্পষ্ট ভাষি নির্দিধায় প্রকাশে,
অনেকেই আছে মুখ খোলে না তবুও ভালোবাসে
আবার অনেকেই ভালোবাসার পরিক্ষা দিয়ে নাচে ।
………………
________অপেক্ষা________
আমি শুধু তোমায় ভালোবাসবো বলে
অন্য কারো আশায় চেয়ে থাকিনি,
আমি শুধু তোমায় দেখবো বলে
অন্য কারো চোখের দিকে তাকিয়ে থাকিনি,
আমি শুধু তোমার হাতে হাত রাখবো বলে
অন্য কারো স্পর্শে কখনো জড়ায়নি,
আমি শুধু তোমার হতে চাই বলে
অন্য কারো মায়ায় কখনো পরিনি,
আমি শুধু তোমার মিষ্টি কথায় হারাবো বলে
অন্য কারো কথায় সৌন্দর্য খুঁজে পায়নি,
আমি শুধু তোমার সুগন্ধ গায়ে মাখবো বলে
অন্য কারো সুগন্ধ নাকে কখনো পৌছায়নি,
আমি শুধু তোমার পায়ের শব্দ শুনবো বলে
অন্য কারো শব্দ কখনো কানে আসেনি,
আমি শুধু তোমার সাথে হাটবো বলে
অন্য কারো সাথে কোনো রাস্তায় হেটে বেড়ায়নি,
আমি শুধু তোমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজবো বলে
কখনো কারো সাথে ভেজা হয়ে উঠেনি,
আমি শুধু তোমার সাথে রাত জাগবো বলে
অন্য কারো সাথে কখনো রাতের তারা গণা হয়নি,
আমি শুধু তোমায় নিয়ে দিন-রাত ভাববো বলে
অন্য কারো কথা হৃদয়ে কখনো জাগ্রত হয়নি ।
……………..
স্বচ্ছ পরিষ্কার পান করা জল ভেবে
আমি নোংরা ঘোলাটে জল ছুয়েছিলাম,
রাতের অন্ধকারে চাঁদের আলো ভেবে
আমি উত্তপ্ত অগ্নিকাণ্ড আলোকরশ্মি পেয়েছিলাম,
সুন্দর সকালে ভোরের শীতল হাওয়া ভেবে
আমি গা ঘামা গরম ক্লান্তিময় দিন পেয়েছিলাম,
সুন্দর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সুখী জীবন ভেবে
বালুচর মরুভূমি আবর্জনা মাঠ কাদাযুক্ত পথ পেয়েছিলাম ।
……………
ভালোবাসায় খুব যত্নে শ্রদ্ধায় ও সম্মানের সঙ্গে রাখতে চেয়েছিলাম অপরিচিত একটি ভাসমান মেঘ,
সে-তো মেঘ নেই কোনো ঠিকানা নেই পরিচয়,
অপরাধ ছিল শিকল তালা সকল বাঁধা পেরিয়ে তার কাছে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা এবং নিজের আলোয় আলোকিত করে রাখা,
সে-তো মেঘ তবুও আবার ভাসমান থাকতে চাই নিজ ইচ্ছায় ও নিজ সাজ-সজ্জায়,
এই সমুদ্র থেকে ওই সমুদ্র কে পারে তারে আটকায় !
হয়তো মেঘ গুলো এমনই হয় তারা আসে ক্ষণিক সময়ে
বৃষ্টিতে ভেজায় আনন্দ দেয় গা জুড়িয়ে চুপ করে আবার চলে যায়
অন্য কারো সুখের সময় উপহার দিতে,
তাই বলে তা হওয়ার নয়
তার চলে যাওয়ায় মন খারাপে রবে,
অপেক্ষায় আবারো উত্তর-দক্ষিনে অন্য একটি মেঘে ।
………………..
আমি যাকে ভালো বেসেছিলাম সেও আমায় ভালোবেসে ছিলো,
আমাদের ভালোবাসা এতটাই গভীর ছিলো
যা আজ সে অন্য মেরুতে আমি আর এক মেরুতে,
সময়ের স্রোতে আজ কে কোথায় কিভাবে
ভেসে গেলাম তা অজানাই রয়ে গেলো,
গোলাপ কথা দিয়ে কথা রাখেনি তাকে নিয়ে আসার আগেই
অন্য কেউ তাকে নিয়ে গেছে তার শিকড় থেকে,
সে হয়তো তার কাঁটা আমার রক্তে মিশে যেতে চায়নি,
রজনী গন্ধার সুবাসে দুজন আজ দুটি পথে ।
……………….