বয়স এখনো ২৯ সামনে লম্বা ক্যারিয়ার তবুও ২০২২ বিশ্বকাপকে শেষ বিশ্বকাপ মনে করছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি নেইমার জুনিয়র। পূর্ণ মনযোগ আর মানসিক সমার্থ ধরে রাখতে সন্ধিহান তিনি। নেইমারের বিশেষ কাতারে অপেক্ষা করছে তার নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের প্রতাশা ব্রাজিলিয়ান মহাতারকার। বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা ভয়ানক ২০১৪ সালের কল্বিয়ার ডিপেন্ডার জুনিগার সেই ফাওল ওই চোটের ব্যাথা এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় নেইমারকে। ক্যারিয়ার শেষের আসংখ্যা এখনো মনে করিয়ে দেয় নেইমারকে। ক্লাব ব্যস্তায় জাতীয় দলের সাথে সমন্বয় কঠিন ফিটনেস পরীক্ষায় কখনো কখনো নেইমারকে দার করিয়ে দেয় কঠিন চ্যালেন্জ এর মুখে!! ক্যারিয়ার লম্বা করতে তাই ভিন্ন উপলব্ধি ব্রাজিলিয়ান মহাতারকার।
“নেইমার সংবাদ সম্মেলনে বলেন : আমার মনে হয় এটিই আমার লাস্ট বিশ্বকাপ এটিকেই আমি শেষ হিসাবে দেখছি কারণ জানিনা ফুটবলে পূর্ণ মনযোগ রাখার মতো মানসিক সমার্থ ধরে রাখতে পারবো কিনা?. তাই কাতার বিশ্বকাপ আমার শেষ বিশ্বকাপ। আমি আমার সার্থদের সবটুকু উজার করে দিব আমার দেশের জয়ের জন্য।যেটা আমি ছেলেবেলা থেকে স্বপ্ন দেখে আসছি এবং আমি আশা করছি আমি পারবো বিশ্ব কাপ জিততে।
কথা ছিল মেসি রোনালদোর উওারঅদিকারী নেইমার যাবে বহুদুর ধারাবাহিকতা আর আভাবের কথা যদি বলা হয় বাস্তববতা হলো চোটের কারনেই খেলতো পারেন নি নিয়মিত তাই বর্ষসেরা পুরষ্কার ও জুটলো কোথায়!
সব কিংবদন্তির কেন হতে হবে হাতে লেখা, পা জোড়া কি ঘোর লাগা আনুরনে পরশ ছোড়াতে পারে রিদয়ের মনি কোটায়!! ঠিক যেন কালযোগী উপন্যাসের মত যখন জ্বলে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি নেইমার জুনিয়র। যুগ বনীত বা নান্দনিক ফুটবলারদের আলোক শিখনো বয়ে বেড়ানো নেইমার কখনো কখনো মুগ্ধতায় ধন্দে ফেলে দিতে পারেন। সব প্লট থাকলেও কেন নেইমারের গল্পটা কোথাও না কোথাও ক্লিসে থেকে জায় সেটা জানতে চলে যেতে হবে পিছনের ইতিহাসে।
২০১৪ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে কলেম্বিয়ার ডিফেন্ডার জুনিগার এর ফাউল মাঠ ছাড়তে হয় নেইমারকে মুমূর্ষু কোনো রোগীর মত। বিশ্বকাপের বাকি অংশ খেলতে পারেন নি। এটার ভিতরে হচ্চে আর খানিকটা উপরে হলে এই দেখাই শেষ দেখা ফুটবল ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ত বটেই, এত দিনে হয়তো হুয়েল চেয়ারে বসে খেলা দেখতো হতো নেইমারকে। মেরুদণ্ডের ব্যাপক ক্ষতি হওয়া সেই চোট এখনো দার করিয়ে দেয় নেইমারকে কঠিন পরীক্ষায়। ওই জায়গায় আরেকবার চোট পেলে ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার ভয় তো বটেই, এইছাড়া আগে থেকে লগে থাকা আরো আরো চোটের বিলাসিতা তো ছিলোই। ফুটবল ক্যারিয়ারটাকে বাড়াতে হলে বেচে নিতে হবে আত্মরক্ষার পথ সেটাই নিয়েছেন নেইমার!!
নিন্দুকদের চোখে সেই আত্নরক্ষার পথটায় নাকী অভিনয় যাকে চাইলে অস্কার ও দিতে পারে। ২০১৪ সালের পর আরো আরো টার্গেট নেইমারকে তারা বুজে গেছেন নেইমারের দুর্ভলতা ও চোটপ্রভানতার কথা!!
অভিনয়ের খেতাব পাওয়া নেইমারের ভিতরের নেইমার ট্রপি কোলের পাথারে চাপা পড়া। দূর থেকে দেখলে এক জোড়া জুতো ঝকঝকে না ফসফসে নানান ব্যাখা তো করাই জায় কিন্তু ভিতরটা কেমন আরাম দায়াক নাকী বেদনা দায়ক সেটা যে পড়েছে সেই বলতে পারে নেইমারের এই গল্পটাও সাদাচোখে কারো কাছে হতে পারে শুধুই অভিনয়।
কিন্তু ব্রাজিলিয়ার ফ্যানদের কাছে সেটায় তার বিরত্ত।
১৮ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক। তার চেয়েও বড় কথা বয়স বিশ পার হতেই হয়ে গেছেন ব্রাজিল মত ফুটবল দলের সবচেয়ে বড় তারকা। পেলের ব্রাজিল, লুইস,রোনালদের ব্রাজিল কাকার ব্রাজিল পাঁচ বার বিশ্ব কাপ জিতছে তারা। ব্রাজিল জাতিয় দলের খেলার স্বপ্ন কত শত তরুণদের আজীবন স্বপ্ন রয়েই জায়, কিন্তু নেইমার খুব অল্প বয়সে সেই দলের মহা তারকা হেয়ে উঠেছেন।
যে কারনে তাকে আগামী দিনের আরেক মহাতরাক ভাবা শুরু হয়েছিল ফুটবল বিশ্বে। কিন্তু নেইমারের বয়স ৩০ পূর্ণ হলো এইতো গত ফেব্রুয়ারী ৫ তারিখে। সাধারনত একজন ফুটবলারদের সেরা সময় ২৫-৩০ বছর বয়েসে। সেই হিসাবে বলা যায় ব্রাজিয়ান মহাতারকা তেমন ঝলক দেখাতে পরেননি খুব বেশি, করন ইনজুরি কারনেই খেইতেইতো পারেন নি নিয়মিত। তাকে নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিল তা পূরন করতে পারেননি এখনো পযন্ত। ৩৬ রোনালদো আর ৩৪ মেসির বয়সের সাথে ইনজুরির পরিসংখ্যান বলে ২৯ বছরে ৬১৪ দিন মাঠের বাহিরে ছিলেন নেইমার জুনিয়র। আর মেসিছিলেন ৫৬৭ দিন, আর রোনালদো ছিলেন ৩৭৫ দিন। সর্বোচ্চ সময়ে চোটের কারনে মাঠের বাহিরে ছিলেন নেইমার। একটা সময় ফুটবল বিশ্বে থাকতে হতো তৃতীয় সেরা খেলোয়াড় হয়ে। সেটা মেসি আর রোনালদোর দপটের কারণে, তবুও মনেকরা হতো যে মেসি রোনালদোর সেরা সময় শেষ হয়েগেলে নেইমার সেরা ফুটবলার এর জায়গা নিবেন কিন্তু ইনজুরির কারনে তিনি তা পারেননি।
মেসি রোনালদোর একের পর এক ব্যালন ডিএর জিতেছেন। নেইমারের ঝুলিতে নেই একটিও। ক্লাবের হয়ে এখনো একটি চ্যাম্পিয়াস লিগ শিরোপা জেতা হয়নি এখনো। নেইমারের বদলে এখন এমবাপ্পে, লেবানোদস্কি, হরালন্ডরা এগিয়ে যাচ্ছেন সেরা ফুটবলারের জায়গা দখন করতে। কিন্তু নেইমার আনফর্মে থাকলে ও ব্রাজিল ফ্যানদের কাছে একটুও ভালোবাসা কমেনি নেইমারের, এখনকার তরুনরা নেইমারকে ফলো করে ভালোবাসে তাদের অন্তর থেকে। নেইমার ২০১৪ও ২০১৮ খেললেও দশকদের পত্যাশা পূরন করতে পারেননি তাদের চাহিদা মত। ৭ দিনপর কাতারে আসছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর, নেইমারকে ঘিরেই ব্রাজিলের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ বা হেক্সা জয়ের স্বপ্ন।
২০২২ সিজনে দারুণ ফর্মে আছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। পিএসজি হয়ে এই আসরে নেইমার পারফর্মেন্স ১৯ ম্যাচে ১৪ গোলের পাশাপাশি ১১ এসেস্ট। যদিও নেইমারের প্রতিভা নিয়ে কারো একটুও সন্দেহ নেই। প্লেমেকিং ফিনিশিং ড্রিবলিং অ্যাসিস্টেন নেইমার কারো চেয়ে কম জানেন না। তাই কাতারে বিশ্বকাপে ফুটবল দেশ ব্রাজিলও তাদের সাপোটাররা তাকিয়ে থাকবে নেইমারের পায়ের দিকে। তারা জানে তাদের মহাতারকা আবারো ফিরে আসবে সেই চিরচেনা রূপে যেটা তারা আশা করে। অবশ্যই যারা খারাপ সময় পেছনে ফেলে আবার চিরচেনা রূপে ফিরতে পারে তারইতো স্যতিকারের চ্যাম্পিয়ান। নেইমার হাল ছেড়ে না, হার মানে না সেটাই প্রামাণ করবে কাতার বিশ্বকাপে।
নেইমার নিজেই বলছেন : আমি গ্যারান্টি দিতে পারবো না পরের বিশ্বকাপ আমি থাকবো কিনা। হয়তো পারবো হয়তো বা না। এটা নির্ভর করবে পরের কোচ আমাকে কতটুক পছন্দ করবে তার উপর আমি আমার বাবা কে বার বার বলেছি আমি এমন ভাবে এবার খেলবো যেন এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ আমার জীবনের সর্বোচ্চটুকু উজাড় করে দিবে তার দেশের জন্য। আরো বলেন আমি জানি বিশ্বকাপ জেতাটা কতটা কঠিন তবে এটা আমার অনেক বড় স্বপ্ন। আমার মনে হয় এইবার বিশ্বকাপে চমক থাকবে – [নেইমার জুনিয়র]। তাই তো এই বার বিশ্বকাপে ফাভারিট হয়ে ১ নাম্বার থেকে কাতার যাচ্ছে ব্রাজিল। তাই ব্রাজিল ভক্তরা আশা রাখতে হবে তাদের কিংবদন্তি নেইমার বিশ্বকাপে পায়ের জাদুতে বিপক্ষ টিমদের করবে নাস্তানাবুদ, আর নেইমার তাদের স্বপ্নের সোনার হরিণ নিয়ে আসবে, আবারো ফিরবে কিংবদন্তি হয়ে।
লেখকঃ মো: ইব্রাহিম জুয়েল
জেলা : ফেনী, ফুলগাজী