ভবিষ্যতের পৃথিবী থেকে তোমাকে লিখছি
আমার আশেপাশে চেনা জানা কোনো নদী নেই
একমাত্র নদী তারও বিয়ে হয়ে গেছে দু’বছর হলো
নদী বলতে এখন আর আগের মত কিছু মনে পর্দায় ভেসে ওঠে না
এখন নদী মানেই রক্তমাংসের শরীরের কেউ
অথচ একদিন চিরবসন্তের সোমেশ্বরী ছিল,চপল মেয়ে সুরমা ছিল
যৌবনোত্তাল পদ্মা,মেঘনা আর যমুনার বুকে
আমার পূর্বপুরুষেরা অবাধ সাঁতারে মেতে উঠতো।
একদিন ধলেশ্বরীর দুরুদুরু বুকে যে ঢেউ উঠতো
গ্রামের ছেলেরা লুঙ্গিতে গেরো দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তো
মধুমতির বুক জুড়ে চলতো নৌকাবাইচ
কত প্রেমিক যুগল চিত্রানদীর পাড়ে বসে সারা বিকেল কাটিয়ে দিত
ঘোড়ামারা থেকে করতোয়া হয়ে নাগর টাংগন কিংবা মাতামুহুরি
অথবা ওপাড়ার রায়মঙ্গল, ধরলা, দুধকুমার, গোমতি
অযত্ন অবহেলায় সবাই মরে গেছে, কেউ আর বেঁচে নেই
ওদের বুকের উপর গড়ে উঠেছে ইটপাথরের বিশাল অট্টালিকা।
পিতৃপরিচয়হীন সন্তানের মত
তোমাদের সময় থেকে দুশো বছর পরের পৃথিবীতে
এই দেশটিও তার পরিচয় দিতে পারে না
নদীগুলো যেভাবে মেরে ফেলেছ অযত্নে অবহেলায়
কে বলবে এই দেশটি একদিন নদীমাতৃক দেশ ছিল?
৭ নভেম্বর ২০২২