রাজধানী ঢাকার দোয়েল চত্বরের কাছে অবস্থিত তিন নেতার মাজার (Teen Netar Mazar) বাংলাদেশের স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নিদর্শন। বাংলাদেশের জাতীয় তিন নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, খাজা নাজিমুদ্দিন এবং এ কে ফজলুল হক-এর সমাধির উপর ১৯৬৩ সালে স্থপতি মাসুদ আহমদ ও এস এ জহিরুদ্দিনের নকশায় তিন নেতার মাজার স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়েছে। তিন নেতার মাজারের কাছেই রয়েছে হাইকোর্ট এবং শিশু একাডেমি।
যশোর সেক্রেড হার্ট হাই স্কুল এর ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মুবাশশির কবির কিছুদিন আগেই ঘুরে এসেছে তিন নেতার মাজার। তার খুবই ভালো লেগেছে জায়গাটি। তবে তার খুবই আক্ষেপ রাজনৈতিক দলের নেতা যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা জিয়াউর রহমানের কবর যেখানে সেগুলো যেভাবে যত্ন নেওয়া হয় বা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয় সেরকম কিছু এখানে হয়নি। পুরো জায়গাটা নোংরা। যেন সিগারেট খাওয়ার উপযুক্ত স্থান হয়ে উঠেছে।
স্বাধীনতার পূর্ব সময়ে এই তিন মহান নেতাই তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিন নেতার রাজনৈতিক চর্চার বিশেষ অবদান রয়েছে। বাংলার বাঘ খ্যাত শের-এ-বাংলা এ.কে. ফজলুল হক ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী। ফজলুল হক ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া যুক্তফ্রন্ট গঠনে তাঁর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।
খাজা নাজিমুদ্দিন ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৫১ সালে তাঁকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা হয়। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৯২৪ সালে কলকাতা পৌরসভার ডেপুটি মেয়র হন এবং খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রীসভায় তিনি শ্রমমন্ত্রী নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার যেকোন প্রান্ত থেকে নিজস্ব গাড়িতে অথবা গণপরবহনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোয়েল চত্বর সংলগ্ন তিন নেতার মাজারে আসতে পারবেন। মুবাশশির সেদিন প্রথমে মিরপুর থেকে মেট্রো রেলে করে এসে নেমেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে। তারপর হাটতে হাটতে দুমিনিটের মধ্যেই পৌছে গিয়েছিল তিন নেতার মাজারে। তার সাথে আরও অনেক পর্যটক ছিলো।
কোথায় খাবেন
খাবারের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর ক্যান্টিন, টি.এস.সি, ডাকসু, হাকিম চত্বর এবং সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে লাল চা, সমুচা, চপ, সিঙ্গারা, চিকেন প্যাটিস থেকে শুরু করে ভাত, ডাল, আলুভর্তা, মুরগির মাংসের তরকারি, মুরগি ও ডিম খিচুড়ি এবং তেহারি খেতে পারবেন।