Sunday, November 10, 2024
spot_imgspot_img
Homeফিচারবিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়ি ১০ টি বাড়ি

বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়ি ১০ টি বাড়ি

মানুষ বসবাসের জন্য এক সময় খোলা আকাশটাই ছিলো একমাত্র ছাদ। তারপর কালের পরিক্রমায় কত কিছু বদলে গেছে। বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে অর্থনৈতিক অবস্থা বদলানোর পাশাপাশি বাসস্থানেও আমুল পরিবর্তন এসেছে। আমাদের আসেপাশে কত বৈচিত্রময় বাড়ি আমরা দেখতে পাই। কোনো কোনোটির সৌন্দর্য আমাদের বিমুগ্ধ করে রাখে। আমরা কল্পনা করি ইস এরকম একটি বাড়ি যদি আমারও থাকতো। কিন্তু খরচের কথা বিবেচনা করলেই নুন আনতে পান্তা ফুরোনো মানুষদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। কখনো কি ভেবে দেখেছেন পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়ি কোনগুলো? কোথায় এগুলোর অবস্থান? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে বিশ্বের দামি ১০ বাড়ির একটি তালিকা তৈরি করেছে ফোর্বস ইন্ডিয়া। দামি বাড়ির এ তালিকায় ঐতিহাসিক রাজকীয় বাড়িগুলো যেমন স্থান পেয়েছে, তেমন আধুনিক স্থাপত্যের বাড়িও যুক্ত হয়েছে। বিলাসবহুল এসব বাড়ি যেন একঝলকে বিশ্বের ধনকুবের মানুষদের জীবনধারাই তুলে ধরছে।

তালিকায় থাকা ১০টি বাড়ি হলো—বাকিংহাম প্যালেস, অ্যান্টিলিয়া, ভিলা লিওপোল্ডা, ভিলা লেস সেড্রেস, লেস পালাইস বুলস, দ্য ওডিয়ন টাওয়ার পেন্টহাউস, ফোর ফেয়ারফিল্ড পন্ড, ১৮-১৯ কেনসিংটন গার্ডেনস, বিয়ন্স অ্যান্ড জে-জেড মালিবু ম্যানশন ও এলিসন এস্টেট।

বাকিংহাম প্যালেস

বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল, দামি বাড়ি বাকিংহাম প্যালেস। এর অবস্থান যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। এটি ব্রিটিশ রাজার আনুষ্ঠানিক বাসভবন ও প্রশাসনিক দপ্তর। এর দাম ৪৯০ কোটি মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রায়)।

মূলত ১৭০৫ সালে নির্মাণ করা হলেও প্রাসাদটিতে বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু সংস্কারকাজ চালানো হয়েছে। এটি বর্ধিতও করা হয়েছে। ব্রিটিশ রাজতন্ত্র ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয় এটিকে। প্রাসাদে আছে নয়নাভিরাম বাগান ও বিখ্যাত ব্যালকনি। বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোতে জনসমক্ষে হাজির হতে রাজপরিবারের সদস্যরা ওই ব্যালকনিতে আসেন। এ ছাড়া প্রাসাদে একটি শিল্পসংগ্রহশালা ও জমকালো অনুষ্ঠানস্থল আছে।

আম্বানি পরিবারের বিলাসবহুল বাসভবন ‘অ্যান্টিলিয়া’

অ্যান্টিলিয়া

২৭তলা সুউচ্চ এ বাড়ির অবস্থান ভারতের মুম্বাইয়ে। ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে বাড়িটি নির্মিত হয়েছে। এর দাম ২০০ কোটি ডলার। ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের মুকেশ আম্বানি এর মালিক। বিলাসবহুল এ বাড়িতে আছে ৩টি হেলিপ্যাড, ১৬৮টি গাড়ির ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি গ্যারেজ, কয়েকটি সুইমিংপুল, ১টি থিয়েটার ও ১টি স্নো রুম।

ভিলা লিওপোল্ডা

বিলাসবহুল বাড়িটির অবস্থান ফ্রান্সের ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরা এলাকায়। দাম ৭৫ কোটি ডলার। নির্মাণকাল ১৯২৯ থেকে ১৯৩১ সাল। ভিলা লিওপোল্ডার মূল মালিক বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় লিওপোল্ড। তাঁর স্ত্রীর জন্য ভিলাটি তৈরি করা হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বাড়িটিকে সামরিক হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ১৯২০-এর দশকে মার্কিন স্থপতি ওগডেন কডম্যান জুনিয়র বাড়িটিকে ‘নিও প্যালাডিয়ান মাস্টারপিস’-এ পরিণত করেন।

ভিলা লেস সেড্রেস

ফ্রান্সের ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরা এলাকায় অবস্থিত এ বাড়ির দাম ৪৫ কোটি ডলার। এটির নির্মাণকাল ১৮৩০ সাল। ১৯০৪ সালে বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় লিওপোল্ড এটি অধিগ্রহণ করেন। তিনি বাড়িটি সংস্কার করেন এবং এর নাম দেন ভিলা লেস সেড্রেস। ১৮ হাজার বর্গফুটের বাড়িটিতে আছে ১৪টি শোবার ঘর, ১টি বলরুম ও ১টি বিশাল গ্রন্থাগার, যেখানে বিরল অনেক বই পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময় বাড়িটির মালিকানা বদল হতে দেখা গেছে।

লেস পালাইস বুলস

ফ্রান্সের কানে এ বাড়ির অবস্থান। বিলাসবহুল বাড়িটির দাম ৪২ কোটি ডলার। নির্মাণকাল ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৯ সাল। ১ হাজার ২০০ বর্গমিটারের (প্রায় ১৩ হাজার বর্গফুট) এ বাড়িতে আছে একটি অভ্যর্থনা হল, ৫০০ আসনে একটি ছাদখোলা অ্যাম্ফিথিয়েটার, ১০টি শোবার ঘর, কয়েকটি সুইমিংপুল ও কৃত্রিম জলপ্রপাত। বাড়িতে ১০টি শোবার ঘর ও ১১টি শৌচাগার আছে।

দ্য ওডিয়ন টাওয়ার পেন্টহাউস

এ বাড়ির অবস্থান মোনাকোতে। দাম ৩৩ কোটি ডলার। এটির নির্মাণকাল ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল। বাড়িটিতে আছে ৫০০ আসনের ছাদখোলা অ্যাম্ফিথিয়েটার, ছাদের ওপর সুইমিংপুল। আরও আছে ব্যক্তিগত প্রেক্ষাগৃহ।

ফোর ফেয়ারফিল্ড পন্ড

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার বর্গফুটজুড়ে এ বাড়ির অবস্থান। শুধু মূল ভবনই প্রায় ৬৪ হাজার বর্গফুটের। এতে আছে ২৯টি শোবার ঘর ও ৩৯টি শৌচাগার। একটি বোলিং অ্যালি, টেনিস কোর্ট ও কয়েকটি সুইমিংপুলও আছে সেখানে। ২০০৩ সালে নির্মিত বাড়িটির দাম ২৫ কোটি ডলার।

১৮-১৯ কেন সিং টন গার্ডেনস

লন্ডনে কেনসিংটন এলাকায় অবস্থিত ‘১৮-১৯ কেনসিংটন গার্ডেনস’ একটি মর্যাদাপূর্ণ ঠিকানা। বিলিয়নিয়ারস রো নামে পরিচিত বিশেষ এ সড়কে বিশ্বের কয়েকটি ব্যয়বহুল বাড়ি রয়েছে। এ সড়কে অনেকগুলো কূটনৈতিক মিশনের অবস্থান। ১৮-১৯ কেনসিংটন গার্ডেনস বাড়িটির দাম ২২ কোটি ২০ লাখ ডলার। এর নির্মাণকাল ১৮৪৭ সাল।

বিয়ন্স অ্যান্ড জে-জেড মালিবু ম্যানশন

বিয়ন্স ও জে-জেড দুজনই সংগীতজগতে আলোচিত দুই নাম। বিলাসিতায়ও তাঁরা কম যান না। যুক্তরাষ্ট্রের মালিবুতে তাঁদের বাড়িটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাড়িগুলোর একটি। যথেষ্ট প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের উপযোগী করে বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। এখান থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের সৌন্দর্যও উপভোগ করা যায়। বাড়ির নির্মাণকাল ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ সাল। এর দাম ২০ কোটি ডলার।

এলিসন এস্টেট

ওরাকল করপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন এ সম্পত্তির মালিক। এর নকশা জাপানি ঢঙে করা। এলিসন স্টেটে কয়েকটি ভবন, বাগানসহ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত এ এস্টেটের দাম ২০ কোটি ডলার। নির্মাণকাল ২০০৪ সাল।

Facebook Comments Box
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনিhttps://protiddhonii.com
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments