Sunday, November 10, 2024
spot_imgspot_img
Homeসাহিত্যকবিতাডিসেম্বর মাসের এক গুচ্ছ কবিতা

ডিসেম্বর মাসের এক গুচ্ছ কবিতা

আসছে ডিসেম্বর 
এস এম আসাদুর রহমান 
---------------------------------------------------------------------------
উড়ছে বিজয়ের নিশানা 
সকলেই দেখছে  যেন -
পূর্ণিমা  চাঁদের জোসনা।

দৌড়ে আসি 
বুকে কস্ট -
মুখে হাসি।

বাজনা কই? বাজা 
বিজয়ের চওড়া বাঁশি 
শত্রুর কাঁপন ধরা।

এই মোক্ষম ক্ষণে -
একাত্মতা প্রকাশ করে, 
ফ্যাসিবাদ বিলুপ্ত করতে হবে।

প্রভাতে মা দেখিস, 
তোর সন্তাদের বিপ্লবী রক্ত -
তুই রাঙিয়ে নিস।

তবু মুক্তি পাক, 
দেশ হতে ফ্যাসিবাদ, 
বেড়িয়ে রাজপথে থাক।

ভয় করিনা বুলেট, 
দেশ মা কে বাচাঁতে -
এগিয়ে এসো হে বিবেক।

আমার দেশ আমার দেশ, 
ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ।
---------------------------------------------------------------------------
"১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস"
          "সুজন কুমার রায়"

------------------0000-----------------
 উনিশশো একাত্তরে বীর বাঙালিরা প্রাণ বিসর্জনে করেছিল যুদ্ধ, 
যুদ্ধের কাহিনী শুনলে এখন মোদের শ্বাস হয়ে যায় রুদ্ধ। 
লাল-সবুজের পতাকা আনতে বাংলার বীর সেনারা দিয়েছিল তাদের তাজা রক্ত, 
সন্তান হারানোর বেদনায় শত মায়ের চোখে নীরবে অশ্রু ঝরেছে তবুও মায়ের মন রয়েছিল শক্ত।
উনিশশো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি লাখো শহীদের আত্মদান, 
বাংলাকে এনে দিয়েছিল গৌরবময় বিজয় অর্জন। 
শপথ নিয়ে যুদ্ধ করেছিল বাংলার বীর সেনারা ভয় পায়নি মোটে,
তাদের আত্মত্যাগে আজ মোদের মুখে বিজয়ের স্লোগান ফোটে।
উনিশশো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলার বীর সেনারা দিয়েছিল প্রাণ,
বিজয়ের দিনে তাই তো বাঙালিরা তাদের প্রতি করে শ্রদ্ধা নিবেদন। 
বিজয়ের মূল্য অনেক দামী মোটেও  সহজলভ্য নয়,
বীর বাঙালিরা বিজয় এনেছিল ত্রিশ লক্ষ প্রাণ ও মা বোনদের সম্ভ্রমের বিনিময়। 
উনিশশো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অনেকে হারিয়েছিল কোলের শিশু অনেকে হারিয়েছিল প্রাণ,
অবশেষে পাক'সেনারা বাংলার বীর সেনাদের কাছে পরাজয়ে করেছিল আত্মসমর্পণ। 
বিজয় দিবস রক্তে ভেজা বীর শহীদের স্মৃতি, 
বিজয় নিয়ে আজকে লেখা আমার সামান্য অনুভূতি, 
বিজয় মাখা ফুলের পাতায়,বিজয় সবুজ ঘাসে;
বছর ঘুরে তাই তো (১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস) এদিন বারেবারে আসে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ছেলেবেলা 
কবিঃ আবুল কালাম আজাদ 
********************
আমার আমি  বড় হয়েছি যে কবে রাখিনি তো খোঁজ! 
ছেলেবেলা গুলো খুঁজে ফিরি সকাল  সন্ধ্যা রোজ..
স্কুল থেকে পালানো ডানপিটে ছেলেটা কখন যে বড় হয়ে গেল 
সংসারের ঘানি টেনে টেনে সবই যে  ভুলে গেল! 
ছেলেবেলার বন্ধুগুলোর এখন তো নেই কোন খোঁজ
তাদের কথা মনে করে কেঁদে উঠি রোজ

কবিঃ আবুল কালাম আজাদ 
গোলাপ বাগ ঢাকা থেকে 
---------------------------------------------------------------------------
মা
মোঃ আব্দুর রশীদ 
********************
মাগো, তুমি আছ আমার চেতনা জুড়ে 
তোমার কপালে দেওয়া চুম্বন,  এখনও অন্মৃত মত 
লেগে আছে,আমার অধরে। 
মাথায় হাত বুলানো,  রক্তের মধ্যে
স্পন্দন সৃষ্ট করে ।
আত্মার জগতে তুমি অনেক সুখে আছো 
তোমার দোয়া সেখান থেকে ঝরে পরে
আমার দেহ-মনে ।
আমার সামনে চলার পথ 
দুর থেকে প্রেরণা দেওয়া
এক আলোকিত উৎস........... ।
---------------------------------------------------------------------------
পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে  / জাকির আলম
********************
আমরাও মানুষ,
আমাদেরও আছে বেঁচে থাকার অধিকার।
আমরাও বুঝি ক্ষুধার জ্বালা,
চাই আমাদের স্বাধিকার।
আমরা লোহার শ্রমিক,
আমাদেরও আছে দুঃখ ব্যথা।
সমাজের কাছে আমরা হীন,
সইতে হয় কতো অমানবিকতা !
 আমরাও শিক্ষা চাই,
আমাদেরও আছে বোধশক্তি।
সত্যের পথে আমরাও বীর,
চাই না দাসত্বের ভক্তি।
আমরাও বুঝি জীবনের মানে,
নিরন্তর খুঁজি মুক্তির পথ।
স্বৈরাচারির শাসন ভেঙে
উদায়ন করি স্বর্গের রথ।
আমরাও সাহসী,
আয় কে আসিস সামনে আয় ! 
লোহার পাঁজর ভেঙে দিবো,
শিকল দিবো দু'টি পায়।
আমরাও শাসক,
দুনিয়া চালাই সাম্যের গানে।
এই পৃথিবীর সবাই মানুষ,
ভেদাভেদ নেই কোনোখানে।
---------------------------------------------------------------------------
মন চাতক
সোহাগ কুমার ঘোষ
********************
চাতক হয়ে আছি গো,
হঠাৎ কোন এক বিকালে, আমার দিকে তোমার হেঁটে আসা দেখবার জন্য।
অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে, তোমার চোখের পানে অপলক তাকিয়ে থাকবার জন্য।
প্রথম অভ্যর্থনায় তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে, নিজেকে স্থির রাখবার জন্য।

চাতক হয়ে আছি গো,
কোন এক গোধূলিতে, তোমার সাথে নির্জন নদীর বাঁকে, সিঁদুরে মেঘ দেখবার জন্য।
তোমার পাশে বসে, তোমার মাথাটা আমার কাঁধে রাখতে দেওয়ার, সুখ অনুভব করবার জন্য।
বাতাসের ঝাপটায় উড়ে আসা চুলগুলো সরিয়ে, তোমার গালে হাত বুলিয়ে দেওয়ার জন্য ।

চাতক হয়ে আছি গো,
কোন এক বর্ষায়, আউশে ভরা মাঠে, তোমায় নিয়ে নৌকা ভাসাবার জন্য।
কোন এক বৈশাখের রাতে, সদ্য মাথা তোলা পাটের ক্ষেতে, তোমার হাত ধরে হাঁটবার জন্য।
কোন এক পৌষের সকালে, শিশিরে সিক্ত ঘাসে, তোমার সাথে পা ধোয়ার জন্য।

চাতক হয়ে আছি গো,
কোন এক পূর্ণিমায়, মেহগনি পাতার ফাঁকে উঁকি দেওয়া চাঁদের পানে চেয়ে,
 তোমার কোলে মাথা রাখবার জন্য।
কোন এক অমাবস্যার রাতে, তোমায় নিয়ে জোনাকির সাথে লুকোচুরি খেলবার জন্য।
কোন এক নিস্তব্ধ দুপুরে, তোমার সাথে বন্য পাখির গান শুনবার জন্য।

চাতক হয়ে আছি গো,
কোন এক নিস্পন্দ সন্ধ্যায়, শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির হাটে,
 তোমার সাথে হারিয়ে যাবার জন্য।
কোন এক মেঘাচ্ছন্ন ভোরে, গঙ্গামতির চরে তোমার হাতে হাত মেলে,
 প্রথম সূর্যকে স্বাগতম জানাবার জন্য।
কোন এক কর্মোদ্যম সকালে, পরিকল্পনা ছাড়াই তোমার কাজের ক্ষতি করে,
 নিরুদ্দেশ হবার জন্য।

চাতক হয়ে আছি গো,
কোন একদিন নয়, আমৃত্যু তোমার মুখে প্রণয়ের কথা শুনবার জন্য।
কোন এক বিশেষ ক্ষণে নয়, সর্বদা তোমার মুখে হাসি দেখবার জন্য।
কোন এক মুহূর্ত নয়, সর্বক্ষণ তোমার পাশে থাকবার জন্য।

চাতক হয়ে আছি গো,
কোনো একদিন নয়, আজীবন তোমার জন্য চাতক হয়ে থাকবার জন্য।

২৯ মে, ২০২১, শনিবার
কোর্ট হাউস স্ট্রীট, ঢাকা-১১০০।

সোহাগ কুমার ঘোষ,
গন্তি বিভাগ,২য় বর্ষ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

---------------------------------------------------------------------------
।।   শীতল শীত  ।।
কবিঃ আখতারুল ইসলাম খোন্দকার 
********************
শীত আসে কুয়াশার চাদরে ঢেকে
বিকেলে হেমান্তের অবসনে,
উৎসবে মেতে উঠে বাঙ্গালীরা
নানান রকম পিঠার আয়োজনে।
ফল ও টাটকা শাক-সবজির সমারোহ
সকাল বেলা মিষ্টি খেজুরের রস,
আর ধোঁয়া উঠা গরম ভাঁপা পিঠা
গুঁড়ের পাটালি খেতেও কত জস।
হাটখোলার মোড়ে মেলার পরসা বসে
হরেক মিষ্টি - মিষ্ঠান্ন জিলাপি,
রঙ লেগে থাকে ঠোঁটে মুখের কোনে
লাঠির হাওয়ায় মিঠাই গোলাপি।
হয় শিশির ভেজা রাতে শীতল শীতে
যাত্রাপালা, পুতুল নাচের আসর,
ধুম পড়ে যায় বিয়ে গ্রাম-গঞ্জের ঘরে
খুশিতে নব - দম্পত্তির বাসর।
গাছ পালা প্রকৃতির নিজের জীর্নতা
পুরাতনকে ঝরিয়ে ফেলে দেয়,
সাজ সজ্জার জন্য নতুন রুপে মেতে
কঁচি পাতাই সজ্জিত করে নেয়।
   *****-*****-----**********
আখতারুল ইসলাম খোন্দকার 
গ্রামঃ- দিদির পুর, পোস্টঃ বসন্ত কেদার, উপঃ মোহন পুর, জেলাঃ- রাজশাহী। 

---------------------------------------------------------------------------
পূনর্জন্ম
কবিঃ রাফায়েল পূর্ণ
********************
পরের জন্মে না হয়,
তোমার চোখের কাজল হব।
খুব যতনে চোখের কোণে ,
লেপ্টে রব। 

কিংবা না হয়,
আকাশ হব।
ড্যাব ড্যাবিয়ে তোমার পানে
তাকিয়ে রব।

পরের জন্মে না হয়,
এক পশলা বৃষ্টি হব।
যখন খুশি তোমায় এসে
ভিজিয়ে দেব।

কিংবা না হয়, 
হলাম ধর দমকা হাওয়া।
আচমকা এসে ঝাঁপিয়ে পড়ব
তোমার চুলে।

পরের জন্মে না হয়,
শীতের সকালের
উষ্ণ রোদ হব।
আমার উষ্ণতার চাদরে
তোমায় জড়িয়ে নেব।
তোমাকে না পাওয়ার আক্ষেপটা না হয়,
পরের জন্মে পুষিয়ে নেব।
---------------------------------------------------------------------------
সিগারেট 
কবিঃ ইমদাদ সুমন
********************
আমি মৃত্যুকে সঙ্গী করে ঘুরে বেড়াই
বিশুদ্ধ বাতাসে বিষবাষ্প ছড়াই
আমি পদধূলিত করে দেই সব স্বপ্ন 
আমি অন্ধকার,দুরাশা, তিরস্কার
পুড়ে সব ছাড়খার,জীবন দুর্বিসহ।


নামঃ ইমদাদ সুমন 
ঠিকানাঃ চরফ্যাশন, ভোলা
----------------------------------------------------------------------
দশটি হাইকু
- টি এইচ মাহির।

•শাপলা ফোটে
 শান্ত নদীর জলে,
 রূপশ্রী ঠোঁটে।

•শূণ্য দুপুর
 ঘুম উধাও চোখে
 যেন কর্পূর।

•মন হারাই
 উড়ে ঘুড়ি দিগন্তে
 যাদু নাটাই।

•ইলিশ ঝোল
 সরষের রসনা
 মাছের কোল।

•রজনী শেষ
 কুয়াশা ডাকা ভোর
 পুলকে কেশ।

•নব বসন্ত
 কৃষ্ণচূড়া উল্লাস
 নীল দিগন্ত।

•রাত গভীর
‌ দু্র্দশা কেটে যায়
‌ প্রভাতে তীর।

•পিরামিড সে,
 যে নিশিতে তান্ডব।
 নূর সকাশে।

•সাম্পান বাঁকে,
 ঢেউ উঠে তরঙ্গে।
 রহিম রাখে।

•কুয়াশা নীর,
 পিঠাপুলি উৎসব
 চিত‌ই ক্ষীর।

[হাইকু একধরণের জাপানি ৫/৭/৫ মাত্রার কবিতা।]

_________________

পত্র
- টি এইচ মাহির।

ভাবুক মন হাতে চিবুক,
লোহদগ্ধ যান তবে থামুক।
বাহাস হোক মনের রণে
সিকিম ছূড়ায় মেঘের বানে।

তোমার হৃদে খরস্রোতা নদ
মাঝি আমি,ঢেউরাশি বধ।
কেমনে পাবো মাঝির পদ?

[এটি মুখরা কবিতা।প্রতি চরণের প্রথম অক্ষর গুলো ক্রমান্বয়ে সাজিয়ে দেখুন।এক্রোস্টিক কবিতা বা মুখরা কবিতা হলো সেসব কবিতা যার সব গুলো পঙক্তির আদ্যক্ষর মিলে একটি নাম বা অর্থবোধক শব্দ বা বাক্য তৈরি হয়।]
___________________



লিখা: টি এইচ মাহির।
ঠিকানা: চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।

Facebook Comments Box
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনিhttps://protiddhonii.com
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments