তুমি যবে এসেছিলে আমার জীবনে
আমার হৃদয় মরুর বুকে তখন নেমেছিল প্রস্রবন ধারা
সেই ঝর্ণাধারার মাঝে আমি নিত্য অবগাহন করতাম
আর তুমি করতে জলকেলি।
ভালই চলছিল দিনগুলো মোদের
যেন মোরা আরজনমে হংস মিথুন ছিলাম
তোমার উপস্থিতিতে আমি জোছনাকে
নতুন করে উপলব্ধি করতে শিখলাম
তোমার স্পর্শে জোছনা আমাকে ভাসিয়ে নিল প্রনয়ের হাওড়ে।
টিনের চালে বৃষ্টির রিমঝিম
শব্দ যে এতো ব্যঞ্জনা ও দ্যোতনাময়
শুনলে অবাক হবে,সেটাও বুঝলাম
তোমাকে দেখার পর
তুমি যখন বলতে আজ কি হয়েছিল আসেননি যে!
তখন আমি জীবনানন্দে বিলীন হয়ে যেতাম
মনে হতো ঘর্মক্লান্ত কবির সামনে তার
প্রেয়সী বনলতা বসে আছে।
তোমাকে পাবার পর যমুনা,ব্রহ্মপুত্র,ধনাগোদা
আমাকে শেখালো আপন বেগে প্রবাহের সার্থকতা
তোমার দিঘল কালো চুলের বুনো হাওয়ায়
আমি আবিস্কার করলাম মেঘের সৌন্দর্য্য
তোমার আখির গভীরে
আমি খুজলাম জীবনের মানে একান্তই নিজের মত করে
শরতের ফুটন্ত কাশফুল যে সাদা তা জানতাম
কিন্ত এত শুভ্র ও পবিত্রময় সেটা দেখলাম তোমার
দেবীর মত নিষ্কলঙ্ক মুখের দিকে তাকিয়ে
শীতের দীর্ঘ কুয়াশায় আবৃত্ত রজনী
আমাকে বানালো সুরের ইন্দ্রজাল স্রষ্টা
এভাবে ক্রমাগত আমার অস্তিত্ব তোমাতে
বিলীন হলো।
তারপর হৃদয়ে নেমে এলো হিমালয়ের হিমবাহ
থেকে গড়িয়ে ধেয়ে আসা প্লাবন
সেই প্লাবনে প্লাবিত হয়ে শস্যশূন্য হলো হৃদয়।
নুহের প্লাবনে ধরিত্রী পঙ্কিল মুক্ত হয়েছিল কিন্ত
হিমালয়ের প্লাবনে রিক্ত নিঃস্ব হলো এ বুক
এরপর থেকেই জীবনের বৈচিত্রতা হারালো
ক্লান্ত শ্রান্ত এ জীবনে নামলো সন্ধ্যা
অবসাদগ্রস্থ মাংসপিন্ডটাকে অনেক ঘুরাঘুরির
পর ঠাই দিলাম নীড়ে
যদিও প্লাবনে মৃত্যু হয়েছে মনের,এখন শুধু দেহটাকে
বয়ে বেড়ানোর বিড়ম্বনা
এখন কেবলই অপেক্ষা দেবদূত যমরাজের জন্য।
প্রণয় আখ্যান
Facebook Comments Box