১.
আতশীর অশ্রুপাত / জাকির আলম
তোমার একটি ফোন কলের আশায়
নিদ্রাহীন কেটে গেছে অমানিশা রাত।
নির্জন নিরালায় তোমার কথা ভেবে
নিরন্তর করেছি শুধুই অশ্রুপাত।
সৃষ্টির আদি থেকে মহাকাল অবধি
শুধু তোমাকেই বেসেছি নিঃসীম ভালো।
জীবনের গিটারে আজ বাজে না সুর ;
দেখিনা প্রভাতের রৌদ্র দিনের আলো।
স্বপ্নের ভুবন থেকে এলেনাতো তুমি,
কভুও বাড়ালেনা হাত তোমার রূপসী।
অনুভবে শুনলে না রিক্ত হাহাকার
ত্রিভুবনের অশান্ত রূপের সরসী।
ফিরে এসো একবার জীবনের বাঁকে
অভিমান ভুলে ওগো প্রাণের রোহিণী।
কতোকাল কেটে গেল একাকী ভুবনে,
চোখ মেলে একবার তোমাকে দেখিনি।
তৃষিত হৃদয়ের মুকুলিত ফাগুনে
এলোকেশী হয়ে এসো নিশীথিনী রাতে।
পাশাপাশি বসে তক্ত কফি খেতে খেতে
হাত রাখবো প্রাণের মাঝে একসাথে।
ফিরবার কালে মায়াবী অশ্রুনয়নে
বেঁধে দিও লাল শালু কপালে তোমার।
এজীবন সৈকতে কতো জোয়ার আসো,
গহিনে মিশে যেও অগোচরে আমার।
২.
একাত্তরের দামাল / জাকির আলম
একাত্তরের দামাল আমি রণাঙ্গনের ত্রাস
সমীরণের চিতায় কাঁদে বীরাঙ্গনার লাশ।
বিগ্রহের দানব আমি মাতাল বাঁশির সুর
হানাদারের শিবির প্রাতে সমরবাদী ঘুর।
মরুভূমির নিদাঘ আমি শ্মশানের অনল
সমরাস্ত্রের হিংস্র থাবায় মাখা তীব্র গরল।
নিশীথ রাতের উল্কা আমি কঠিন যুদ্ধবাজ
নৃশংসতার উৎপীড়নে ধ্বংস রাজাধিরাজ।
সাম্যবাদের সৈনিক আমি সন্ত্রাসীর নিরোধ
ঝড়ের বেগে নির্গমনে প্রতিহিংসার বিরোধ।
জল পথের নাবিক আমি নিরুদ্দেশে গমন
অনাদিকাল দ্রোহের মাঝে কণিকার সমন।
দুর্বিনীত দঙ্গল আমি অক্ষরেখার নবিস
আগমনী গানের সুরে বিশ্বামিত্রের কুর্নিশ।
নীতিবোধের উন্মেষ আমি রাজমালীর হাসি
একাত্তরের আগুন দিনে বজ্রের মতো আসি।
বায়ান্নর ভাষা আমি লাল-সবুজের ঝিমান
প্রবহমান কালের স্রোতে সুতপার ধীমান।
জ্বালাময়ী ভাষণ আমি ধান শালিকের ক্ষিতি
মানবতার উজ্জীবনে বাঁচার নেশায় মাতি।
৩.
হৃদয়ের প্রতিধ্বনি / জাকির আলম
তোমাকে ভাবতে গেলে-
ভালোবাসার বীণা হৃদয়ে বাজে।
তোমার হাসির সুরভি মেখে ফুলে ফুলে পৃথিবী সাজে।
তোমার ছোঁয়া পেলে-
শিহরণে বুক কাঁপে।
চাঁদনি মুখের আলো আভায় মিশে যাই উত্তাপে।
তোমাকে পেতে গেলে-
বারংবার হারিয়ে ফেলি।
এক জনমে তুমি আমার লক্ষ প্রাণের শেলী।
তোমার কথা মনে হলে-
মেঘের বুকে ছবি আঁকি।
আনমনে তোমার চোখে ভালোবাসার স্বর্গ দেখি।
তোমার দীঘল চুলে-
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ি।
তোমার বুকের পাঁজর ঘেঁষে ভাসাবো আমার প্রেমের তরী।
৪.
তোর সুখেই আমি সুখী / জাকির আলম
তুই সুখে থাকলে শত কষ্টের মাঝেও আমার হাসি পায়।
তুই কষ্টে থাকলে শত সুখের মাঝেও আমার কান্না পায়।
তোকে আমার জীবন থেকে হারানোর পর
কোনোদিন আমি সুখী হতে চাইনি।
শুধু চেয়েছি আমার পৃথিবীর সমস্ত সুখ যেন
তোর পৃথিবীর দোসর হয়।
তোকে আমি পাগলের মতো ভালোবাসিরে বোষ্টুমী !
তুইহীন জীবন আমার নিঃসঙ্গ জানিস,
তবুও ভাবিস না তুই তোকে হারিয়ে
আমি কোনো কষ্টে আছি।
বরং তুই ভেবে নিস-
তোর সুখেই আমি সুখী,
তোর কষ্টে আমি দুখী।
তোর হাসিতে আমি হাসি
তোর কষ্টে আমি ভাসি।
তোকে আমি প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।
তুই সুখী হলেই আমিও তোর সুখে সুখী।
তুই যেখানেই থাকিস ভালো থাকিস,
নিজেকে তোর যতনে রাখিস,
ইচ্ছে হলে ছুটে আসিস,
আমাকে যদি ভালোবাসিস।
মরার আগে একবার তুই তোর ওই বুকে টেনে নিয়ে
আমাকে একটু জায়গা দিস।