Thursday, November 21, 2024

ক্ষুধাতুর শিশু

মো: সানি

পড়ন্ত বিকেলে সেদিন রাস্তার এক ধার ধরে হেঁটে যাচ্ছিলাম। চারিপাশে বেশ কোলাহল। এক মহা ব্যস্ততার মধ্যে ডুবে আছে সবাই। কেউ হয়তো অফিস থেকে বাড়ি ফিরছে, কেউ হয়তো তার প্রিয়তমাকে নিয়ে একটু সময় পারের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে কিংবা কেউ আরো কিছু টাকার আশায় নিজের রিকশাটা নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
এই সকল কিছুর মাঝে অকস্মাৎ আমি দেখতে পেলাম রাস্তার ও ধারের জামে মসজিদটার একটুখানি পাশে এক মহিলা প্রায় চিৎকার করে কি যেন বলে এক ছোট মেয়েকে মারছে।
বলাই বাহুল্য,খানিকটা কৌতুহল নিয়েই আমি রাস্তার ওধারে এগিয়ে যাই। কতকটা যেতেই শুনতে পেলাম, মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে মহিলাটা রক্তচক্ষু করে বলছে, ❝অ্যাঁ…খালি খাই খাই আর খাই খাই!❞
সম্ভবত মহিলাটি মেয়েটির মা। মারের সঙ্গে সঙ্গেই মেয়েটিও তৎক্ষণাৎ বুকফাটা কান্না শুরু করে দিল।
এই অসহায় সম্বলহীনদের এরূপ করুণ দশা দেখে আমার চোখ ছল ছল করে উঠলো।আমি শার্টের হাতার এক অংশে চোখ মুছেই দেখলাম ওই মেয়েটি ধীরে ধীরে আমার কাছে আসছে। সে তার ডান হাতটা বাড়িয়ে বেশ কাঁদো কাঁদো গলায় বলল,❝ছার,একটু ভিক্কা দেন।সকালে কিচ্ছু খাইতে পাই নাই।❞
আমি নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মেয়েটির মলিন চেহারা দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম হয়তো দু-একদিনের ভালো কোন আহার জোটেনি। এসব কিছু উপলব্ধি করে আমি মনে কিসের যেন ব্যথা অনুভব করলাম। এরপর নিজেকে আর একটু সামলে নিয়ে বললাম,❝আমার কাছে তো টাকা নেই!❞
দেখলাম মেয়েটি প্রায় নিরাশ হয়েই ফিরে যাচ্ছে। আমিও বাসার দিকে রওনা হলাম। যেতে যেতে আপন মনে শপথ করলাম —❝এদের জন্য একদিন আমি কিছু করবোই!ইনশাআল্লাহ। ❞

Facebook Comments Box
Previous article
Next article
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনিhttps://protiddhonii.com
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments