জেরিন হাওলাদার
তখন চলে ডিসেম্বর মাস।বার্ষিক পরীক্ষা শেষ।প্রিয়ার জন্মদিন।প্রতিবারের মতো এবারও প্রিয়ার মা প্রিয়ার পছন্দের খাবার রান্না করলেন।প্রতিবছরই এ দিনটিতে মুষলধারে বৃষ্টি হয়, এবার ও তার ব্যাতিক্রম হয় নি।প্রিয়ার জন্মদিনের আগে প্রিয়া গান ধরত ,
“বাদল- দিনের প্রথম কদম ফুল করেছো দান ,
আমি দিতে এসেছি শ্রাবণ এর গান “||
কবিগুরুর এইগানটি ছিল তার সবচেয়ে প্রিয় গান। প্রতিবছর এ দিনে সে এই গানটি গাইত। কিন্তু আজ তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। পাশের বাসার কাকিও আজ এসে প্রিয়ার মাকে এসে বলছে না যে ,”কই গো প্রিয়ার মা আজ প্রিয়া তার গান শোনাবে না?”আর প্রিয়ার মা উত্তরে বলছে না যে,”কাকির কথা প্রিয়া কখনো ফেলতে পারে?”আজ এমন সময় হঠাৎ প্রিয়ার মা প্রিয়াকে ডাকতে ডাকতে প্রিয়ার ঘরে গেলেন। কিন্তু প্রিয়া ঘরে নেই। শূন্য হয়ে পড়ে আছে প্রিয়ার ঘর। প্রিয়ার বাবা এসে বললেন,”কেন বারবার একই ভুল করো তুমি? কত বছর কেটে গেল যে প্রিয়া নেই!”বলে প্রিয়ার বাবার চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পরল। প্রকৃতপক্ষে, আজ প্রিয়ার ২২ তম জন্মদিন এবং তার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। আজ থেকে চার বছর আগে ঠিক এই দিনে প্রিয়া শ্বাসকষ্টে মারা যায়। তবুও প্রতিবছর এই দিনে প্রিয়ার মা প্রিয়ার জন্য পায়েশ রান্না করেন। তারপর প্রিয়াকে ডাকতে তার ঘরে গিয়ে দুঃখ পান। প্রিয়ার মা জেনেও কোনদিন প্রিয়ার মৃত্যু মানতে পারেননি।। হয়তো ভবিষ্যতেও পারবেন না।
জন্মদিন
Facebook Comments Box
RELATED ARTICLES