কবিতার প্রতিধ্বনি – কবিতার এক পাতা
প্রতিধ্বনির সাপ্তাহিক আয়োজন
২৮/০৩/২০২৫ ||শুক্রবার
লেখা পাঠাতে নিচে ক্লিক করুন-
লিখেছেন যারা-
- সুরাইয়া ইয়াসমিন সুমি
- শাকিলা নাছরিন পাপিয়া
- তিথি দাস
- সফিউল ইসলাম
- আবু রায়হান আল মিসবাহ
- মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্
- নার্গিস আক্তার
- রানা জামান
- জি কে শাফায়াত আলী
- বিলকিস নাহার মিতু
- মিনহাজ উদ্দিন শপথ
- রোজিনা খাতুন
- বাসুদেব সরকার
- বি এম মিজানুর রহমান
- সারমিন চৌধুরী
- আকাশ ইসলাম সাগর
- মোহাম্মদ শফিক
- অলোক আচার্য
- রকিবুল ইসলাম
- আইনুন নাঈমা
- রাকিবুল ইসলাম রাহান
ই-পেপার পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন অথবা এই পাতা থেকেই পড়ুন
ঈদের বার্তা
সুরাইয়া ইয়াসমিন সুমি
রমজান শেষে আসে ফিরে
খুশির দিন ঘরে ঘরে
সবার মাঝে বিরাজ করে
হাসি আর মধুর স্মৃতি।
সবার সাথে হবে দেখা
বিনিময় হবে যে মত
মনের সব ক্লান্তি ভুলে
ভাসবে যে সবাই
মায়া আর ভালোবাসায়।
হরেক রকম খাবার আর
বাহারি পোশাকের মাঝে
ফুটবে যে সবার মুখে
এক ছিটে ঝিলিক চোখে।
ভেদাভেদ ভুলে এক হবে
বন্ধনে যে বাঁধবে সবাইকে
ঈদের বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক
মুমিন মসলমানের দ্বারে দ্বারে।
শৃঙ্খল ভেঙ্গে ফিরবো
শাকিলা নাছরিন পাপিয়া
নিজের কাছে ফিরবো বলে সেই কবে থেকে
তাড়াহুড়া করছি, গুছিয়ে রাখছি সব।
এতো এতো সম্পর্ক, কাজের দায়
সবটা দুহাতে সরিয়ে
শুধুই নিজের জন্য বাঁচা, নিজের কাছে ফেরা
নিজেকেই ভালোবেসে প্রজাপতি বিকেলটা দেয়া।
একটা রাঙা ভোর, ঘুঘু ডাকা অলস দুপুর,
পাখির ডানায় নামা সন্ধ্যা
পূর্ণিমায় ভেসে যাওয়া রাতের পৃথিবী
কতোকাল ডাকছে আমায়।
আমি শুধু জড়াই তেল, নুন আর চালের দামে
ঋণের বোঝা, অন্যের অবাধ্যতার দায়
নানা সম্পর্কের মনোরঞ্জনে পার হয় সময়।
নিজের কাছে ফেরা হয় না
শৃঙ্খল জড়ায় পায় পায়।
একদিন সবকিছু পিছু ফেলে
হাজারটা শৃঙ্খল ভেঙ্গে
সম্পর্কের দায় অস্বীকার করে
ঠিক ফিরবো শুধুই নিজের কাছে।
স্যালুট তাদের
তিথি দাস
ধূলোকে যারা করেছে সাফ,
অঙ্গে লাগিয়ে ধূলো,
স্যালুট তাদের।
কষ্টকে যারা করেছে লাঘব,
কষ্টকেই সাথী করে,
স্যালুট তাদের।
সাতরঙে যারা জগৎ সাজালো,
স্বয়ং আঁধারে থেকে,
স্যালুট তাদের।
বিশ্বেকে যারা তুলে ধরেছে,
নিজকে রেখে নিম্নে,
স্যালুট তাদের।
ফিলিস্তিনের ক্রন্দন
সফিউল ইসলাম
বোমার আগুন, ধোঁয়ার কুন্ডলি,
রক্ত ঝরে, কাঁদে প্রতিটি গলি।
শিশুর চোখে দুঃখের রেখা,
মায়ের বুকে শূন্য দেখা।
মুয়াজ্জিনের ভারকন্ঠে মসজিদ কাঁদে,
জালিম বুকে তবু কি কান্না বিঁধে?
বোমা ছুঁড়ে বাজে আওয়াজ,
পাষাণ বুকে রক্তের সাজ।
দিন ফিরিবে ফিলিস্তিন শপথ লয়,
জুলুম কভু টিকিবে না হায়।
আসবে ভোর হাসবে চাঁদ,
ফিলিস্তিনের বুকে মিলবে শান্তি সাধ!
অপেক্ষার চার কাহন
আবু রায়হান আল মিসবাহ
আমি অপেক্ষা করছি জীবন দরিয়ায়
সুখের তরী ভাসাতে,
তুমি এসো,সুখের উড়াল ডানায় ভর করে।
আমি অপেক্ষা করছি গাছের সবুজ পাতার
ফাঁকে তাকিয়ে বিচিত্র অনুভূতি নিয়ে,
তুমিই হইয়ো আমার সমূহ অনুভূতির
শেষ সীমানা।
আমি অপেক্ষা করছি বেদনায় তৃষ্ণার্ত
মনের এক ফোঁটা জলের জন্য,
তুমি শ্রাবণের বারিধারা হয়ে মিটিয়ে দিও
তৃষ্ণা।
আমি অপেক্ষা করছি সঙ্গহিনতার আড়ালে
একটি পূরণীয় জীবনের,
তুমি সঙ্গশুন্যতা কাটিয়ে হইয়ো আমার জীবনের
অনাবিল আস্বাদ।
রূঢ়তার পায়ে বেড়ি
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্
কেবল একটা বিভৎস নিঃশ্বাস
কোবরার শরীরের মতো ঠাণ্ডা
ব্যাকুলতাকে বেদনাময় করেছে
বিস্ফোরক শব্দাবলী ছুঁড়তে ছুঁড়তে
ঔপনিবেশিক কলম ধেয়ে যায়।
কেউ যায়
কেউ আসে।
বিবর্ণ দেয়াল থেকে ঝরে পড়া চুনকামের মতো
পরভৃত অহংকার শুয়ে পড়েছে।
অভুক্ত সকালটা
বরাবরের মতোই ধানক্ষেত মাড়াতে লেগেছে।
বাঁক বদলের নদীতে তোলপাড়,
লেলিহান দাবানলের সামনে
অফুরন্ত আগ্রাসী মুখ
চেটে খায় আমজনতার কালশিটে রক্ত!
খোকা খুকু
নার্গিস আক্তার
খোকা খুকু আয় সোনা আয়।
বাবা গেছে নায়,
ভাত খেয়ে নে জলদি করে
ওই এলো বুঝি নাও।
ঈদের দিনে পড়বি তোরা
নতুন রঙিন জামা।
বাবা তোদের আরো দিবে
নতুন পা’জামা।
লেখাপড়া শিখে তোরা
অনেক বড়ো হবি।
হাঁস মুরগি বেঁচে কিনে দিব,
বই খাতা ব্যাগ নিবি।
মাছে ভরা গাঁয়ের পুকুর
রানা জামান
খেতে খেতে জিভ স্বাদের বেড়াল
ভাঁজ হয়ে লম্বা ব্যাঙের লুলুপে,
নতুন খাদ্যের ঘ্রাণে নাক টেনে
দূরে যেতে নেয় আসীন সুলুপে।
স্বপ্নে খেতে থেকে পোলাও ও কোর্মা
খাদ্যের নেশায় রাক্ষসের হাত,
ছিটেফোঁটা মাংসে চর্বি পর্দা খেয়ে
হাঁড়ের চিবুনি তীক্ষ্ণ করে দাঁত।
সিনার নরোম হাঁড়ের আস্বাদ
দৃষ্টি শকুনের ধারায় সিনানে
শেয়ালের লোভ সপ্তপদী পোকা
বিশ্রী মুখ ঢাকে নগন্য কিনানে।
কাঁচা পুঁটি খেয়ে আগ্রাসী স্বাদের
ব্যাঘ্র দৃষ্টি বড় মাংসের তালাশে,
সোজা পথে ব্যর্থ বাঁকা পথ ধরে
মাগুর গিলিয়া থাকে যে খালাসে।
বোয়ালের পেটে ঢুকে সোনা-দানা
গলা অব্দি লুটে ধোয়া তুল্সি পাতা,
বর্ধিত উদর অকাট্য প্রমাণ
যদিও রাবারে মুছে ফেলে খাতা।
আকাশের গায়ে ঘন থাক মেঘ
ঝরে যাক বৃষ্টি বেড়াল-কুকুর,
কোনো এক কালে সূর্যের প্রকাশ
মাছে ভরে যায় গাঁয়ের পুকুর।
বসন্ত ফাগুন
জি কে শাফায়াত আলী
চলছে এখন বসন্ত ফাগুন,
বহে শিতল হাওয়া।
ফেলে আসা সৃতিগুলো,
করছে আমায় ধাওয়া।।
চারিদিকে রংবেরং এর,
ফুটছে নানান ফুল।
মৃদু পবনে ছড়াচ্ছে সুবাস।
খাচ্ছে মাথা দুল।।
সুরেলা কণ্ঠে ডাকে কোকিল,
বসে শিমুল ডালে।
ইচ্ছে করছে আবার ফিরি,
আমার শৈশব কালে।।
সবুজ শ্যামল রং বাহারে,
পুলকিত মায়ের বুক।
এমন দেশে জন্ম নিতে,
পারে কয়জন লোক।
শান্তির আহ্বান
বিলকিস নাহার মিতু
রাহাজানি কেন হয়নি বন্ধ
ছড়াচ্ছে দাবানল?
কেন এখনও দুর্দিনে দেখি
পড়ছে চোখের জল।
ধ্বংসের মুখে পৃথিবীটা ভরা
বেড়েছে সবার ক্ষোভ,
সহানুভূতির বদলে সবার
বিবেক পাচ্ছে লোপ।
আহ্বান করি এক হও সবে
শান্তি আসুক ফিরে,
ভেদাভেদ ভুলে সবাই থাকুক
মায়া মমতায় ঘিরে।
শরৎকন্যা
মিনহাজ উদ্দিন শপথ
তার কাছে যাই ধ্যানে থাক্
আঁকি মুখ সুখ সুখ চেতনার ঘর
নিঃশ্বাসে সতেজ স্বর
বাতাসে সুমিষ্ট ঘ্রাণ।
ওগো শরৎকন্যা থেকো না আর মলিন
থেকো ভরপুর নন্দন সফেদ উদ্যান
আমাদের রাত বড় অসহায়
স্যাঁতস্যাঁতে বিছানো কালচে মেঘ
এ দিবস সন্দেহ প্রবল,
তুমিই ফোটাও রোদফুল।
চিরকাল সাদা হাসি থাকুক উঠানবাগ
কখন যে ছিঁড়ে যায় কার নিঃশ্বাসের সুতো
এ পথ আতঙ্কে নীল,
আমি এক কোমল পাথর মিনহাজ উদ্দিন শপথ।
নিস্তব্ধ আক্ষেপ
রোজিনা খাতুন
আকাশ কুসুম ভাবতে গিয়ে
পাইনা যে কোনো কূল,
শিকড় টা অনেক দূরে
অগভীরে গর্ত খুঁড়ে
খুঁজে পাওয়ার ভাবনাটা যে ভুল।
যেদিন তুমি জন্মালে ,
সেদিন থেকেই কেমন একটা অনীহা
আবারো কন্যা সন্তান বলেই ।
অসম্মানের প্রস্তুতি নিয়ে
জন্মানোর পরেই পরীক্ষায় বসা।
সীতার মতো অগ্নিপরীক্ষা দেবো বলে
আমার এই পৃথিবীতে আসা।
সদ্যজাত থেকে বার্ধক্যে
নয় কখনোই নিরাপদে।
শুধু কি ঘরের বাইরে ?
ঘরেতেও বিপদ প্রতিক্ষণে।
যোনি থাকা মানেই তুমি
ভোগ বিলাসের পাত্রী।
কখনও এর চরমতম শিকারে
হও তুমি মৃত্যু পথযাত্রী।
দেশের আইন কানুনকে
তুচ্ছ করে, উচ্চ গলায়, উচ্চ শিরে
বুকচিতিয়ে ঘোরে তারা
অপরাধী হয়েও ছাড় পেয়ে যায়
নাবালকের তকমা গায়ে।
ইচ্ছে হলেই আবার করবে তারা শিকার
নেইকো শাসন কিংবা বারণ
নেইকো কোনো শাস্তি।
উল্টিয়ে তোমারই পরিবারকে লজ্জিত হতে হয়, ঘটে যাওয়া ঘটনার জেরে।
বাইরে বেরোলেই চেনা চোখেদের
অচেনা চাওনি র ভিড়ে
ওলট পালট করে দেয় সব হিসেব নিকেষ।
আজ তুমি হাসপাতাল বেডে
ঘুমিয়ে রয়েছো অঘোরে।
সমস্ত লজ্জা, ঘৃণার বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে
হাজার হাজার মাইল দূরে
নিস্তব্ধতার বিচার চেয়ে
অমাবস্যার আঁধার কালোয়
এক শান্ত স্নিগ্ধ ভোরের অপেক্ষায়।
কদর রাতে
বাসুদেব সরকার
শবে কদর ফার্সি শব্দ
বাংলা ভাষায় আসে,
মর্যাদাময় রাত তার অর্থ
পাই তা রমজান মাসে।
রমজান মাসের শেষ দশকে
কদরের পাই দেখা,
পবিত্র এই কদর রাতে
ফেরে ভাগ্যরেখা।
সকল গুনাহ্ ক্ষমার সুযোগ
কদর রাতে আসে,
কদর রাতে তওবা করলে
সকল পাপতাপ নাশে।
কুরআন নাজিল হয়েছে যে
পবিত্র এই রাতে,
প্রার্থনায় আজ বিশ্বমুসলিম
পরম শ্রদ্ধার সাথে।
ফাগুনের কালে
বি এম মিজানুর রহমান
কোকিল ডাকছে কুহু কুহু সুরে
দূরের সবুজ বনে,
বন্ধুর লাগি পরান পুড়ছে
পড়ছে খুবই মনে।
ফাগুনের কালে পুষ্প ফুটছে
পলাশ শিমুল ডালে,
চারিদিকে এতো সুমধুর ঘ্রাণ
ফাগুনের এই কালে।
গুনগুন করে ভোমরা ছুটছে
ফুলের মধুর টানে,
বসন্তেরই উৎসব মাতে
নানান রকম গানে।
এই ফাগুনের সময় কাটছে
দেখে অপরূপ শোভা,
পিঠা ও পুলির আয়োজন হয়
সত্যিই সেই লোভা!
সমীরণ বহে শিহরণ জাগে
ফাগুনের কালে ভাই,
এমন সময় প্রাণের বন্ধু
তোমায় কাছে যে চাই।
স্বাধীনতা
সারমিন চৌধুরী
স্বাধীনতা মুক্ত পাখির
মিষ্টি সুরের গান,
স্বাধীনতা ফুল বাগানের
মনভুলানো ঘ্রাণ।
স্বাধীবতা খুকির আঁকা
বীর শহীদের ছবি,
স্বাধীনতা দিগন্তে উঠা
জ্যার্তিময় রবি। 
স্বাধীনতা দাদুর মুখের
যুদ্ধ জয়ের গল্প,
স্বাধীনতা মায়ের চোখের
আশার সংকল্প।
স্বাধীনতা রাজপথেরই
রক্ত মাখা ধুলি,
স্বাধীনতা দেশের জন্য
বুকে খাওয়া গুলি।
অতীতেই মুক্তি
আকাশ ইসলাম সাগর
যখনই দেখবে অন্ধকার
মনে মেঘের আস্তরন,
খুঁজে নিও মন ঘনঘটা থেকে
আওয়াজ তুলেছে
তরুন কবি আজন্মকাল ধরে।
এমনো ক্ষীণ প্রশ্ন যখনই দেহ মন ভরে
তখনই মানুষ তুমি, এবার দেখ পৃথিবী ঘুরে।
জানি আমার এ কথা বুঝার মতো মানুষ খুবই কম
তবে যেই বুঝতে পারে, সেই যাবে নতুন দিগন্তের দ্বারে।
আলোক উজ্জ্বল চারিধার, তবে আমিই মিটি মিটি আলো
আর আমার মতো ব্যতিত সবই অন্ধকার।
থেকো না তরুণ অন্ধকারে, পারলে একটু আলো দিও
আধুনিকতার অহমিকা থেকে নিজেকে কিঞ্চিত আড়াল কর।
ব্যস্ত সবই নিমিষেই অন্ধকার, তবে পাবে অতীত যাকে তুমিই বলবে চমৎকার।
তাইতো কবি ও লেখক মন বলে অতীতের মাধ্যমে মানবের মুক্তি।
হে তরুণ সব কিছুর যুক্তির সাথে করবেনা চুক্তি।
আলো আধার যেখানেই যাও অতীতকে আলিঙ্গন করে নাও।
গিরগিটির দর্শক
মোহাম্মদ শফিক
সময়ের হাওয়ায় কেউ গিরগিটি দেখে
কেউ আবার গিরগিটির সাথে মিশে যায়
আর আমি তাদের দিনলিপি লিখি ।
অস্তিত্বের সংকটে মানুষের শব্দ খুবলে খায়
এখন আমি এগিয়ে যাই নিয়তির প্রশ্নে
সাহায্যের অজুহাতে ।
মুখের শব্দদূষণে মগজের ক্ষয় হতে হতে
ফিরে যাই আয়নার কসাইখানায়।
নির্বাসনে
অলোক আচার্য
উড়ছে ফানুস; সেখানে
আটপৌঢ়ে বৃদ্ধার মুখ
আগুন দেখি না;
নদীর ভাঙা বুক!
নিজের ছায়াতেই খুঁজি
নিজের আশ্রয়
দূরে সরে যাচ্ছে নির্বাসিত সুখ!
নব স্বপনের জাল
রকিবুল ইসলাম
কিছু স্বপ্ন’রা শুধু স্বপ্ন হয়েই থাক।
অথবা পুড়ে খাক হয়ে যাক ভঙ্গের অনলে,
পাছে যদি কভু তা অধরা হয়ে রয়!
কিছু আশা শুধু আশা হয়েই থাক।
অথবা আহত হোক নিরাশার করাল গ্রাসে,
পাছে যদি কভু তা পূরণ না হয়!
কিছু আকাঙ্খা,ইচ্ছার পাখিরা উড়তে ভুলে যাক।
অথবা ছটফট করে মরুক উন্মুক্ত আকাশে উড়তে না পেরে,
পাছে যদি কভু তা শুধু আকঙ্খা আর ইচ্ছা’ই থেকে যায়!
কিছু খেদ,কিছু কষ্টরা অপ্রকাশিতই থাক।
অথবা গুমড়ে কেঁদে মরুক আত্মার অন্তরালে,
পাছে যদি কভু তা দূরীভূত না হয়!
কিছু ব্যথা বেদনারা অব্যক্ত’ই থাক।
অথবা আনমনে এঁকে যাক তার ছবি স্বীয় মানস পটে,
পাছে যদি কভু তার উপশম না হয়!
কিছু হতাশাগ্রস্থ মনন শুধু হা-হুতাশ করেই যাক।
অথবা ডুবে যাক বেলা ভূমির বিস্তীর্ণ বালুচরে,
পাছে যদি সে আশ কভু না মিটে হায়!
ব্যথা যাক রয়ে,কষ্টরা থেকে যাক!
মরুর বুকে উঠুক ঝড়,আশার প্রদীপ যাক নিভে,
পাছে যদি সে বেদনা দূরীভূত না হয়!
বছরের পর বছর,সুখের প্রতীক্ষায় জীবন যাক!
নব স্বপনের বুনুক জাল তবুও কিছু মানস আবার নতুন করে,
পাছে যদি সে স্বপন কভু অঙ্কুরিত না হয়!
নীল পদ্ম
আইনুন নাঈমা
হে নির্মল বায়ু
শুকিয়ে নাও
রোদসী ঝর্ণা।
অশ্রু বাষ্পে…….
পদ্ম ফুটুক তবে
হৃদয় সরোবরে
অগোচরে
নিভৃতে অপর্ণা।
আকুঞ্চ ঊর্ণাভ
নির্মেদ নিতম্ব
পরশে বিহ্বল ?
রাতের গাঢ়তায়
ডুবে গেছে নিশাচর।
সুডোল উপত্যকার মাঝে
দেড় ইঞ্চি গভীরে
সুপ্ত সরোবর।
পেলেনা খোঁজ ?
যে নিখোঁজ নীলোৎপল সরোবরে
সে তুমি নও।
আমার বাড়ির পুকুর
রাকিবুল ইসলাম রাহান
আমার বাড়ির পুকুরপাড়ে,
শাপলা ফুলের মেলা।
মাছের দলটা খেলতে আসে,
জলে দোলে ভেলা।
পাখিরা আসে জল খেতে,
কিচির-মিচির গান।
কচুরিপানার সবুজ পাতায়,
রোদের ঝিলিক দান।
বর্ষার জলে ঢেউটা নাচে,
পাড়ে লাগে ছায়া।
শীতে কুয়াশা মেখে থাকে,
নিস্তব্ধতার মায়া।
সকাল-বিকেল পাড়ে বসে,
জলের সাথে কথা।
আমার পুকুর হৃদয় জুড়ে,
স্মৃতির সুরের ব্যথা।