ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির আদর্শিক অভিভাবক আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান নেতা মোহন ভাগবত গত সপ্তাহে বলেছেন, মুসলিমদের শ্রেষ্ঠত্ববাদী মানসিকতা বিসর্জন দিতে হবে। মাস দুয়েক আগে গত নভেম্বরে বলেছেন, বৃহত্তর ভারতবর্ষে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যাক্তিই সত্যিকার অর্থে হিন্দু।
আরও দুই মাস পিছিয়ে যান, গত আগস্টে ভারতের স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, অচিরেই বাংলাদেশ সহ আরও কয়েকটি আঞ্চলিক ভূখণ্ডকে একত্র করে “অখণ্ড ভারত” নামে একটি সার্বভৌম হিন্দুরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। মোহন ভাগবতের নেতৃত্বে আরএসএস সেই নতুন দেশের সংবিধানও ইতিমধ্যে রচনা করে ফেলেছে যেখানে বলা হয়েছে মুসলমানদের কোন ভোটাধিকার থাকবেনা।
এই অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার জন্য মোহন ভাগবত একটি সময়সীমাও ঘোষণা করেছেন। নরেন্দ্র মোদির বিজেপি’কে সাথে নিয়ে পরবর্তী পঁচিশ বছরের মধ্যেই তিনি ও তার দল আরএসএস এই কাজ শেষ করতে চান।
“পঁচিশ বছর” সময়টা এখানে লক্ষ্যণীয়। কেন? সেকথা বলার জন্যই আজকের এই কন্টেন্ট।
আজকে যারা আমাদের দেশের মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী আগামী পঁচিশ বছর পরে এদের বয়স হবে ৩৫ থেকে ৪০ এর আশেপাশে। কৈশোর আর তারুণ্য পেরিয়ে যৌবনের সেই পারফেক্ট বয়সে তারা উপনীত হবে যেই বয়সে মেধা, শক্তি ও কার্যক্ষমতা দিয়ে সমাজের ব্যপক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
এখন বুঝতে পারছেন মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকে কোন উদ্দেশ্যে মোঘল শাসকদের খলনায়ক হিসেবে দেখানো হয়েছে?
এখন বুঝতে পারছেন ……
(i) কোন প্রোগ্রেসিভ সেকুলারদেরকে খুশী করতে;
(ii) কোন অ্যাগ্রেসিভ ন্যারেটিভকে গ্রহনযোগ্যতা দিতে; আর
(iii) কোন রিগ্রেসিভ এজেন্ডাকে বাস্তবায়ন করতে
এমন রেটোরিক প্রোপাগান্ডায় ভরপুর একটা কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়েছে যেখানে সুলতানি শাসনামলের এডভান্সড সিভিলাইজেশনের চেয়ে আর্য সভ্যতা, বৈদিক সংস্কৃতি, মৌর্য সাম্রাজ্য, পাল ও সেন রাজবংশকে মহিমান্বিত করে উপস্থাপন করা হয়েছে?
আমি কিন্তু বুঝতে পারছিনা।
আমি এটাও বুঝতে পারছিনা, এই পাঠ্যপুস্তক প্রবর্তন করেছে বাংলাদেশের National Curriculum & Textbook Board, Bangladesh নাকি ভারতের National Council of Educational Research and Training – NCERT।
আপনারা বুঝলে আমাকে জানাবেন।