6.7 C
New York
Friday, March 29, 2024
spot_img

দ্য লেস ইউ নো দ্য বেটার ইউ স্লিপ

সময়টা ১৯৯২ সালের দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন তখন আর নাই ১৫ দেশ ভাগ হয়ে গেছে আমার নিজের চোখে দেখা সেই সময়ের সাথে আজকের বাংলাদেশ কে এক্টু মিলিয়ে দেখতে পারেন।

দ্য লেস ইউ নো, দ্য বেটার ইউ স্লিপ: রাশিয়ার রোড টু টেরর অ্যান্ড ডিক্টেটরশিপের অধীনে ইয়েলতসিন এবং পুতিনের শাসন কালকে ডেভিড স্যাটারের বলেছিলেন।আসুন এক্টু দেখি

ইয়েলৎসিনের সংস্কারের শুরুর তারিখটি ২রা জানুয়ারী, ১৯৯২ এই দিনে, ইয়েগর গাইদার, ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী ছিলেন তার ভবিষ্যদ্বাণী ছিল যে দাম তিন থেকে পাঁচ গুণের মধ্যে বাড়বে।

কিন্তু পরবর্তী দশ মাসের মধ্যে, দাম প্রায় ত্রিশগুন বেড়েছে।

এর ফলাফল হল যে সাধারন মানুষের সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কয়েক দশক ধরে ব্যাংকে জমানো সংরক্ষিত অর্থ কার্যত রাতারাতি উধাও হয়ে যায়।

প্রতিটি মানুষ ই কিছু কিছু করে তার অর্থ জমানোর চেস্টাকরে। সহজ ভাবে ব্যাখা করি আপনি ৫০ হাজার রুবল জমিয়েছেন একসময়আপনি এই ৫০ হাজার রুবল দিয়ে দুটি Lada জিপ গাড়ি কিনতে পারতেন এখন আপনি ঐ ৫০হাজারে গাড়ির একটি চাকা কিনতে পারেন।টাকাটা কিন্তু আপনার ১০বছরের মেহনতের ফসল । আরো উদারন দেই ৫০ হাজারের বিনিময়ে ব্যাংক আপনাকে ১বছরে ৫হাজার রুবল লাভ দেয় তা দিয়ে আপনি ছুটি কাটাতে পাহাড় বা সমুদ্র যাবেন পুরু পরিবার নিয়ে এখন ঐ ৫হাজারে অর্থাৎ এক বছরের টাকায় বড় জোর ২টি মুরগি কিনে খেতে পারবেন।

এই সুযোগে যা হয়ঃ

একটি অপরাধী শ্রেণীর লোকজন বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জনের জন্য একটি নিখুঁত পরিবেশ হওয়ার কারণে হাইপারইনফ্লেশনের অতিরিক্ত প্রভাব এই শ্রেনি টা পুরাই কাজে লাগায় ।মুদ্রাস্ফীতির ফলে টার্নওভারের মূলধনের ঘাটতির কারণে উৎপাদন অচল হয়ে পড়ে।

সরকার তখন এক্টা উদ্যগ নেয় ১০ থেকে ২৫% হারে সরকারী ঋণ প্রদান করার ।কলকারখানা এবং নানা প্রতিস্ঠান কে।

কলকারখানা গুলির শ্রমিকদের বেতন দিতে ব্যবহার করার পরিবর্তে, যদিও, সেগুলি ব্যাঙ্কে জমা করা হয়েছিল এবং ব্যাঙ্কের কর্মকর্তা এবং কারখানার পরিচালকরা লাভকে ভাগ করে নিয়েছিলেন।

যেমন অমি এক্টা উদাহর দেই আমি কিয়েভের মেট্র নিভকি কাছে থাকতাম সেখানে একটি গালানটেরিয়া অর্থাৎ সুইসুতা কাপর ইত্যাদির দোকান ছিল সেখানের কয়েক জন কর্মচারির সাথে সখ্যতা হয় তাদের কাছথেকে জানতে পেরেছি দোকানটির ম্যানেজার ম্যানেজ করে নিজের নামে বরাদ্ধনিয়ে নেয়।কারন চলছিল রাস্ট্রর মালিকানা থেকে ব্যাক্তি মালিকানায় হস্তান্তর ।

১৯৯২/৯৩ কথা তখন তাদের বেতন ছিল ১০/১৫ ডলারের মত ।২০২০ সালের কোভিড ছড়ানোর কিছু আগে গিয়ে ছিলাম তাদের বেতন এখন ২০০ডলার। সাধারন মানুষ যেই তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে।

কেউ কেউ সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে নিজেদের রপ্তানি লাইসেন্স পেয়েছিলেন, রুবেলে কাঁচামাল কিনেছিলেন এবং তারপর ডলারে অর্থাৎ বিপুল লাভে বিদেশে বিক্রি করেছিলেন, এই প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছিলেন।

অন্যরা ১৯৯১ সালে দুর্ভিক্ষের ভয়ে সরকার তাদের প্রতিস্ঠান বিক্রি শুরু করার পর নানা ধরনের আমদানি পারমিট দেয়া শুরু করে।

খাদ্যপণ্য তাদের প্রকৃত মূল্যের ১% হারে আমদানি করা হয়, বাকি খরচ পশ্চিমা পণ্য ক্রেডিট দ্বারা ভর্তুকি দেওয়া হয় এবং ব্যবসায়ীদের একটি ছোট দল প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। এটি থেকে: ১৯৯২ সালে, আমদানি ভর্তুকি জিডিপির ১৫%ছিল।

আমাদের কি হলো দেখেন ৮০ টাকার ডলার অলরেডি সরকারি হিসাবেই ১০৮ আপনার জমানো ২৩% অলরেডি শেষ।আপনি ব্যাংকে ১লাখ রেখে বছরে পেয়েছেন ৮হাজার কিন্তু মুলধন হারিয়েছেন ২৩হাজার।

এই পদক্ষেপগুলি, স্পষ্টতই রাশিয়ান অর্থনীতির পতনের দিকে পরিচালিত করেছিল।

১৯৯২ এবং ১৯৯৮সালের মধ্যে রাশিয়ার জিডিপি ৫০%কমেছে।

আপনাদের যদি মনে থাকে গ্রেট ডিপ্রেশনের কথা,এটি গ্রেট ডিপ্রেশনের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে পতনের সম্মুখীন হয়েছিল তার চেয়েও খারাপ ছিল।

একই সময়ে, শিল্প উত্পাদন ৫৬%কমেছে। বেশির ভাগই রাশিয়ার সরকারি হিসাব কিতাব পরিসংখ্যান অনুমান নির্ভর ।

বিশ্বব্যাংক বলছে যে এই পরিসংখ্যানগুলি বিভ্রান্তিকর: শিল্প বিনিয়োগের অভাব এবং অব্যবহৃত পণ্যের উৎপাদন বন্ধের কারণে এই চিত্রটি বিকৃত করা হতে পারে।

ক্রনি পুঁজিবাদ এবং অপরাধী চক্র এবং ভ্লাদিমির পুতিনের কল্যানে রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ-তৃতীয় দুর্নীতিগ্রস্ত দেশে হিসাবেই রয়ে গেছে: ২০১৮ সালের হিসাবে, ১৮০ থেকে ১৩৮ উঠেছে ।

দুর্নীতি রাশিয়ান প্রশাসনের সমস্ত দিককে প্রভাবিত করে, এবং এটি যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে এটি ‘বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অবৈধ বিচ্ছুরণের আলো দুর্নীতির সাথে মিলে গেছে।

রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ডলার ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে জমাহয়েছে ।

সাল নাগাদ, গড় ঘুষ লেনদেন ২০০৮ সালে মাত্র ৯হাজার থেকে ২লাখ৩৬ হাজার রুবেলে বেড়েছে, একই তিন বছরের সময়কালে মুদ্রাস্ফীতির হারের অনেক গুণ।

রাশিয়ায় কোন সঠিক অর্থ নীতির হিসাব কিতাব নাই তাতো আগেই বলেছি ।

রাশিয়ার বিখ্যাত ‘ছায়া অর্থনীতি’ দ্বারা বিচার করা এই দুর্নীতির অনুমান, জিডিপির পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিকে কতটা ব্যয় করতে হয়েছে, রাশিয়ান সরকারের বিচার অনুসারে ৩.৫-৭%থেকে,

বিশ্বব্যাংকের বিচার অনুসারে ৪৮%পর্যন্ত।

এটা ঠিক: বিশ্বব্যাংকের মতে রাশিয়ার জিডিপির প্রায় অর্ধেক ছায়া অর্থনীতিতে আটকা পড়ে।

এই অর্থনীতি, যা সরকারী কর্মকর্তাদের ঘুষের মাধ্যমে কাজ করে শুধুমাত্র সঠিক উপায়ে ভোট দেওয়ার জন্য নয় বরং প্রথম স্থানে তাদের কাজগুলি করার জন্য।

এটি সম্ভব হয় অপ্রকাশিত বেতন কাঠামো এবং কর ফাঁকির জ্যোতির্বিদ্যা দ্বারা।

ক্ষমতা গ্রহণের পর, ইয়েলৎসিন পুঁজিবাদী, সোভিয়েত-পরবর্তী সংস্কারের যে বাস্তবায়ন করেন তা ছিল রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্পদের বিশাল অংশকে বেসরকারীকরণ ।

সোভিয়েত ইউনিয়নের সৃষ্টির পর থেকে এই প্রথমবারের মতো সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় শিল্প, জ্বালানি এবং আর্থিক খাতের বড় অংশ বিক্রির জোয়ারে ভেসে গিয়েছিল।

রাশিয়ায় ব্যাপক বেসরকারীকরণ ২টি প্রভাব সৃষ্টি করেছে।

প্রথমত, বৈষম্য তীব্রভাবে বেড়েছে, জিডিপির পতন এবং শিল্প উৎপাদনে পতন।

দ্বিতীয়ত, রাশিয়ান এন্টারপ্রাইজগুলির ক্রমহ্রাসমান সম্পদের বেশিরভাগই কিছু ধনী ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়েছিল – অলিগার্ক নামে চিনি – যারা আরও ধনী হয়ে উঠেছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলির এবং কোম্পানির স্টকগুলি অপরাধী গ্যাং এবং মাফিয়া বসদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা রাশিয়ার সাধারন নাগরিক।

রাশিয়ান জনগণের হৃদয় জয় করতে সক্ষম একজন ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তি হিসাবে ইয়েলৎসিনের খ্যাতি সত্ত্বেও, তিনি সফলভাবে বাজার অর্থনীতি চালাতে সক্ষম হননি এবং ১৯৯সাল নাগাদ তার জনপ্রিয়তা এতটাই জন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল যে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। অভ্যন্তরীণ চাপে।

কিভাবে এত সব ভুল হয়ে গেল?

Facebook Comments Box
শহীদুল ইসলাম
শহীদুল ইসলামhttps://protiddhonii.com
একজন প্রবাসী বাংলাদেশী লেখক ও গবেষক। দীর্ঘদিন ইতালিতে বসবাস শেষে বর্তমানে বামিংহামে পরিবার সহ বসবাস করছেন। ঘুরতে ভালোবাসেন আর ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতি রয়েছে প্রবল আগ্রহ।

বিষয় ভিত্তিক পোস্ট

শহীদুল ইসলামspot_img

সাম্প্রতিক পোস্ট