ভেড়ামারা নামকরণের গল্প

ভেড়ামারা কুষ্টিয়া জেলার একটি উপজেলা। এখানে রয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র সহ আরও গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়। কিন্তু অনেকেই জানতে চান এই ভেড়ামারা নামটি কিভাবে আসলো? সেই কৌতুহল মেটাতেই আজকের এই লেখাটি। আমরা জানবো ভেড়ামারা নামকরণের সেই দারুণ গল্প।

0
506
ভেড়ামারা রেলওয়ে স্টেশন
ভেড়ামারা রেলওয়ে স্টেশন

শীতের দিন দেখতে দেখতে সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়। ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই মনে হয় সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে। তবে যতই শীত পড়ুক না কেন অন্যরা ঘুমিয়ে থাকলেও তিনি কখনো নিয়মের বত্যয় ঘটান না। রোজ সন্ধ্যার পর পরই রাতের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ হাঁটাহাটি করে তারপর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। এমন ভর সন্ধ্যায় পৃথিবীর আর কেউ ঘুমায় কিনা কেউ জানে না। কিন্তু তিনি ঘুমান।

তিনি সবার থেকে আলাদা। সবার আগে তিনি ঘুমাতে যান আবার সবার আগেই ঘুম থেকে ওঠেন। তিনি যখন ঘুম থেকে ওঠেন তখন পৃথিবীর অনেকেই ঘুমাতে যায়। বছরের পর বছর ধরে এই নিয়মে চলছেন। রাত তিনটার সময় তিনি ঘুম থেকে ওঠেন। তারপর লেখার টেবিলে বসে যান। তাকে দুই হাত খুলে লিখতে হয়। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।  

অনেক দিন থেকে বৌ ঠাকুরন বলছে দামোদর বিলে ঘুরতে নিয়ে যেতে কিন্তু লেখালেখি আর জমিদারি শামলে সময় করে উঠতে পারছেন না। রোজই কোনো না কোনো কাজ থাকেই। পৌষের মাঝামাঝি সময়ে এক ছুটির দিন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন আজ নৌ বিহারে বের হবেন। দুপুরের খাবার খেয়ে বৌ ঠাকুরন সহ পরিবারের কয়েকজনকে নিয়ে তিনি বেরিয়ে পড়লেন।

সন্ধ্যা নামার অগপযর্ন্ত ঘুরবেন দামোদর বিলে। কেউ কেউ এটাকে নদীও বলে থাকে। দামোদর বিল থেকে নৌবিহার শেষ করে তিনি পরিবার সহ ফিরছিলেন। পালকীতে করে ফেরার পথে তিনি এক জায়গায় থামলে। পালকির বেহারাদের কাছে জানতে চাইলেন এই জায়গাটির নাম কী? তারা জানালো এই জায়গার কোনো নাম নেই।

তবে এই এলাকায় প্রচুর বন্য ভেড়া দেখা যায়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তিনি আবার পালকীতে চড়ে বসলেন। যেতে যেতে দেখলেন অসংখ্য ভেড়া  ঘুরে বেড়াচ্ছে। রোগাক্রান্ত হয়ে কোথাও কোথাও একটা দুটো ভেড়া মরে পড়ে আছে। আবার কোথাও কোথাও চিতা বাঘের শিকার হতে হয়েছে। যাদের দেহের কিছু অংশ অবশিষ্ট আছে।

পালকীর সামনে চারজন বন্ধুকধারী পাহারাদার আছে আর পেছনে দুজন। যেন বন্য চিতা আক্রমন করলে তারা প্রতিহত করতে পারে। পালকীতে বসেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাথায় ওই জায়গাটার নাম ঘুরপাক খেতে লাগলো। তিনি বললেন এখন থেকে এই জায়গাটার নাম হোক ভেড়ামারা। সেই থেকে জায়গাটির নাম হয়ে গেলো ভেড়ামারা।

Facebook Comments Box
SOURCEপ্রতিধ্বনি
Previous articleরোজা রাখার আনন্দ
Next articleএকদিন এসো যখন পলাশের শাখা
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here