14.5 C
New York
Friday, April 26, 2024
spot_img

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজুর কবিতা গুচ্ছ

প্রেরণার সেতু ভেঙে – ১০২

তুলতুলে নরম কোমল মসৃণ অপরূপ তোমার গাল,

রুদ্ররশ্নির আনন্দে আত্মাহারা

শিশিরস্নাত লাবণ্যময় কুয়াশায় ঘেরা,

চমৎকার এক সকাল।

অন্তহীন বেদনা কাতর বুকে দাঁড়িয়ে দেখেছি,

কতদিন অনেক পথ এগিয়ে পিছু হটেছি

উতালপাতাল তোমার মিষ্টি হাসির রেখা ধরে ছুটেছি।

রঙমাখা প্রত্যুষে উড়ছে দেখো জলবিন্দু শিশির কণা রঙবেরঙের ফানুস,

বেঁচে থাকার পুনরাবৃত্তির কিছু স্মৃতিজাগানি

উজ্জ্বল জীবনের উত্থানগল্পের কিছু কাহিনি

ঐতিহ্যমুখো ভগ্নজনপদে কোনো এক অভিমানীনি

নিজের চৈতন্যে ফিরতে হাটঁছে সাথে তারুণ্যেদীপ্ত কিছু মানুষ।

কি যে ভুলা মন আজকাল!

প্রেরণার সেতু ভেঙে আবেগ যেন কোথায় হারিয়ে গেল ,

কতসব ছেলেমানুষী বিকেল।

জীবনের এই ফিকে সন্ধ্যায়

আবারো কি তীব্র তুমুল হুলুস্থুলে!

তোলপাড় করা তৃষ্ণায়

দক্ষিণা দুয়ার খুলে

ভেসে যাবো পদ্মা কিংবা প্রেম যমুনায়?

নিশিডাকা স্লোগান মুখর কোনো এক জোছনা ধোঁয়া পূর্ণিমায়।

 

কেবল স্পর্শ মিলে -১০০

সময়টা যতই এগিয়ে চলেছে ভারছে দেহের ওজন উষ্ণতা ,

ঘ্রাণ ও সৌরভ চিহ্ণিত করেছে ইন্দ্রিয়ক্ষুধার অনিবার্যতা,

আমার সবটুকু আনন্দ চতুর্দোলায়

দৃষ্টির পর খোলা জানালা জোছনাস্নাত সময় ।

ভাবছো আলো বাতাস সোহাগ করে কোলে নিবে অবাক হয়ে পাশে শুবে,

দেহের ঘ্রাণ দেয়াল জুড়ে আরশিতে ঝরে পড়বে,

অনিমেষ দৃষ্টির বলয় থেকে সবুজের নির্জাস ঢেলে দিবে।

খরতাপের ইতিহাস বলে চোখের ছায়ায় সম্মোহনে

কিছুই মনে থাকে না ইন্দ্রিয় ক্ষুধার ঘোর লাগা ঘ্রাণে,

ভাবছো চোখের সামনে তোমার মধুপূর্ণিমা রাতে

অজস্র জোছনার সদৃশ্য পেখম মেলে আছে বিনম্র ইশারা ঈঙ্গিতে,

এসবই আসলে ক্যামেরা সেশন

নশতো প্রচারপ্রবনমনের হ্যালুসিনেশন।

যা-কিছু ঝলঝলে দৃষ্টির টার্গেট বন্দি হলে

সবকিছুই আজ প্রচার কৌশলে,

হোক না চরিত্রহীন দক্ষ অভিনেতা হলেই কেবল স্পর্শ মিলে।

 

 

 

সত্যি কি তুমিময়? ৯৯

ভূতের গলিতে থাকি আমার পছন্দ না

মা বলতো কেন নামটা আসলে সুন্দর না?

চোখে মুখে স্বপ্ন ধরে প্রায় লোকেই হাসে

হৃদয়জয়ী গন্ধে সকলেই ভাসে

কেউ কেউ ছুটে চলে সবুজ অরণ্যে নবীন বয়সে।

দুষ্ট লোকের মুখ থেকে শুনতে হয় এসবই –

আজে বাজে একই গল্প -কাহিনি,

জীবন উত্থানের কথা লিখেরেখেছে ক জন

আমরা কি তা জানি?।

অন্তরঙ্গ অতীত এসে কেড়ে নিচ্ছে লজ্জা আতংক ভয় সে কি অবাস্তবতা নয়!

এ শহর আমার মনোবাসনা হৃদয় মনোকষ্ট ব্যথাগুলো বুকের ভিতর আপন করে লয়,

বিধ্বস্ত গ্রামের দিকে ফিরে যেতে কারোই কি ইচ্ছে হয়?

কিছু হিসাব নিকাশ পোস্ট করতে পারি এখনো,

মহাখালী ধানমন্ডি থেকে ভালোবাসার অনুভব অনেক অনেক পুরোনো।

যতটা শুকিয়ে ছিল ধানক্ষেত পশ্চিম দিকটা অর্ধেক উপকূলীয়,

তোমার লেখা খামে ভরা চিঠি এখনো যা লুকোনো, সত্যি কি তুমিময় নির্দলীয়?

 

 

 

আসলেই আলুথালু -৯৮

য়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

মাঝরাতের স্বপ্নটা আসলেই আলুথালু

আনন্দের গন্ধ শাড়ী খুলে লণ্ঠনের পর লুটিয়ে পড়লো

খুঁজে চলেছি তোমাকে হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা ইচ্ছের ভিতর, পূর্ণিমা নয় ঝাঁঝালো আলো সেই শৈশব থেকেই আশেপাশের চারদিক ছুটোছুটি করছে,

মনভেজানো হাওয়া এখানে বসিয়ে রেখেছে।

ভালোবাসতে পারলে শত অনশনের মধ্যেও মিষ্টতার ছুোঁয়া মিলে,

আজ ভাবতে বড়ে অবাক লাগে কি করে যে পালিয়ে ছিলাম বয়ফ্রেন্ডকে সাথে করে শীত শেষের বসন্তকাল বৈশাখের এক সকালে।

আমাদের অনন্ত কামনার ঢেউ আলোর দুয়ারে তুমুল আগুন লুটোপুটি খায় প্রেম এলো যেদিন শিমুল কৃষ্ণচুড়ার- মগডাল

ভালোবাসাবাসির কথা বলাবলি করছিল!

এভাবেই প্রেম এলো

ভারীহয়ে উঠলো

ঝম্ ঝম্ শব্দে হৃদয়ের সীমান্তরেখা

প্রাণময়তার যুগসৃষ্টিকরে আমাকে রেখে একা

অধরার ফাঁক গলে দূরে সরে চলে গেলো

অসার এই দেহের পরিনাম এমনটাই হওয়ার কথা ছিল।

 

 

 

ভদ্র প্রকৃতির স্বপ্ন খুঁজে -৯৭

উন্মুক্ত স্তনবৃন্তের উন্মাদনায়

যুগল দৃষ্টি সব কেঁপে কেঁপে উঠছে

পালতোলা ডিঙিনৌকার মতো, উঁচু নীচু জলের বিছানায়।

আলিশান বিচ জুড়ে দিনরাত বসে আছে ওত পেতে,

সুদূর অতীত থেকে আসছে যারা লিলাচ্ছলে দৃষ্টিসঙ্গম উপভোগ করতে,

আনন্দের ঘ্রাণে উন্মাতাল সময় ঠুকরে খাওয়া গভীর প্ররোচনার ঝুঁঝকো রাতে।

আবছায়া স্মৃতির স্পর্শে অপ্সরীদের পায়ের তলায়,

উন্মাদনার ছন্দে দেখে নৃত্যানন্দে অপুর্ব এক দৃশ্য সুর ছড়াচ্ছে ঝুমুর ঝুমুর ঘুঙুর দৃষ্টির পর সুখ ছড়ায়।

ওষ্ঠ উন্মোচনে সুশীল দৃষ্টি উদাসী সাজে

রৌদ্রময় সমুদ্র তীর জুড়ে ভদ্র প্রকৃতির স্বপ্ন খুঁজে।

 

 

 

8Nagorik Amra, Rubel Suprobhat and 6 others

1 comment

Like

Comment

Share

পলাশ বন ৯৬

– রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;;

আবার ফিরে আসছে ফাগুনের আকাশ থেকে ঝরে পরা উতলা বাতাস স্বপ্নগন্ধে মাতার করা মন রঙ্গিন

যেখানেই যাই উৎসব মুখর উদ্দীপনায় ঘেরা সীমাহীন- প্রশান্তি আনন্দের ঘ্রাণে, সুবাসিত মনোবন জনারণ্য ঝলমলে দিন।

কোকিলের ডাক শুনে

মন প্রাণ কেমন আননে মাতাল বনে

দৃষ্টির অতল থেকে আনন্দলোক

দীর্ঘ অপরাহ্নের দিকে চালিত চোখ মুখ বুক

জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুগন্ধ ফুলের কুচকাওয়াজ

প্রীতির রহস্যে ঘেরা সবুজ প্রান্তর যেন পুরোটাই আজ দৃষ্টিনন্দন প্রাণ খোলা কেমন বেশরম নিলাজ।

ফাগুন নিশিত রাতে একাকি গোপনে

নির্জন খোলা মাঠে তোমার মাতায় মুকুট জোনাকির , ফুঁটে আছে রক্ত কমল পৃথিবির উঠানে উঠানে

পলাশ বন বসন্তদিনের।

 

 

 

2Md Serajul Houge Monju and Md Ripon Ahmed

মূল পথের বন্ধন -৯৫

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;;

সাল তারিখ হিসেব রাখিনি তবে একদিন খুব সকালে জীবন থেকে বহু দূরে অন্য এক পৃথিবী চোখের পর ভাসছিলো

সে- কি ভালোবাসা সামান্য ছোঁয়াতেই পুরো দেহ গলে গলে ঝরে পড়ছিলো।

ভাবতে এখনো বড়ো অবাক লাগে অনন্ত কামনার ঢেউ

দেহের আগুন দেখে মনান্দে শাড়ী খুলে

এই পথেই হঠাৎ একদিন চুপিসারে এসেছিলো,

বুঝতে না বুঝতেই ভালোবাসি বলে

ধরা- অধরা’ র ফাঁক গলে উল্কার মতো মিলিয়ে গেলো।

ওমা! ডানে বামে তাকিয়ে দেখি পরিস্কার আকাশও দৃষ্টির দাবানল শেষে কালো হয়ে সামনে এলো!

কিছুই স্বপ্ন নয় সময়ের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে নিজেকেই খুঁজে পেতে বেলা – অবেলায় জানালায় দাঁড়াই।

ছিঁড়ে গেছে মূল পথের বন্ধন

এবার চোখ তুলে রাখার পালা খুব সাবধান!

 

 

 

3Md Serajul Houge Monju, Md. Bablu and 1 other

অনুসাশন টপকে -৯৪

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

অবৈধ সঙ্গম দৃশ্যের অনুসাশন টপকে

কথা মনে রাখার সামর্থ্য দেখে

এই লোকালয় ঘুরে গৃহস্থ বাড়ির পার্থিব জীবন

দৃষ্টি মেখে সারাদিন

উঠোনে বিছিয়ে রাখলাম শরীরের ঘাম গন্ধ,

কেউ কাওকে ছুঁতে পারছি না, দুজনেরই অন্তর্গত আগুনে দৃষ্টি হারা অন্ধ।

দেহ পেতে বসে আছি দেখা পাবো ভেবে নিভৃতে একা ,

আমার আদর্শ শুভ প্রয়াস তোকে নিয়ে বেঁচে থাকা,

দিবানিশির অনুপম দৃষ্টির ভিতর জলাশয় উপত্যকা জলমগ্ন জীবন থেকে সরে এসে

একদিন না একদিন জড়িয়ে ধরে ভালোবেসে

বললোই বলবো দুজনের একান্ত মনের কথা।

 

 

 

4MD Billal Khan, Md Sohel Rana and 2 others

বুক ভরা এখন তুই -৯৩

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

আমার ইন্দ্রিয় সকল অনুভূতিমালার সবগুলো ছিদ্রপথ রেখেছো অনুপ্রাণিত করে

শরতের সন্ধ্যার আকাশ তোমার মনোপ্রান্তর জুড়ে,

ওষ্ঠাদয় নাভিমূলে দৃষ্টির চলাচল অস্থির করে ঝর্ণার নব তরঙ্গের কল্লোল ঝুঁকে পড়ে।

এইভাবে কূপেকাঘাতে!

মেঘের নগ্নতা সুগন্ধ শোভা শিশিরে মুক্তোর দ্যুতি এক দল পতঙ্গের সাথে ফেলে দিলে পৌষের শীতে বাড়ির পাশেই সরিষা ক্ষেতে,

পথের অপেক্ষা দিগন্ত ছুঁয়েছে কোনো এক বসন্তের রাতে।

জীবনান্দের মতো বিস্ময়ের ব্যপারটা

এই সঙ্কিত সময়ে এসেও বুঝতে পারছি না এতোটা

তৃপ্ত পায়ে হেঁটে হেঁটে মানবিকতার ঐশ্বর্য বিলিয়ে দিয়ে তোকে নিপুণ ভাবে তৈরি করে নিজস্ব একটা লোকালয়ে,

নিয়ে যেতে চাই

বুক ভরা এখন তুই।

 

 

 

3Md Sohel Rana, Md Ripon Ahmed and 1 other

পুরোনো পরিহাসের মতো -৯২

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

রহস্যময় সৌন্দর্যের সীমান্ত খুলে দেয়

হেমন্ত শেষের কুয়াশা নিজের ভিতর রূপকথার জগৎ বানিয়ে নিলে-

নগ্নতা কিংবা সুদর্শন প্রকৃতি ফসলের মাঠ কুমারী চরাঞ্চল ছলছল জল-নদীর দৃষ্টির জোয়ারে ভাসতে ভাসতে উষ্ণতার দিগন্ত ছূ্ঁয়

তখন যৌবন খুঁজে পেতে গেলে-

দুই পাশের বনজঙ্গল পাশকেটে এগুতে হতো,

স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে মান-অপমানবোধ আদালত পর্যন্ত যেতো।

মনের কথা কিছু কেউ বলতে পারলে নিজেরে ধন্য মনে করতো

দেখে ফেললে কেউ শারীরিক যন্ত্রণা সইতে হতো

আজকাল ঐসব পুরনো পরিহাসের মতো।

প্রেমে পাগল মন আজকালকার গার্লফ্রেন্ড এর মতন,যেখানে সেখানে সংঘাত

গ্ল্যামারের গল্প বাজিমাত নয়তো অশ্রুপাত,

মূল কথা হচ্ছে কাহিনী বিস্তারে সে কি উন্মাদনা!

সম্পর্কের মধ্যে যৌনগন্ধি মিলনের দ্বন্ধ কিছুতেই আটকানো যাচ্ছেনা,

অবৈধ সঙ্গমের দৃশ্যে নীল ছবির মতো

শয্যা দৃশ্যের জন্য চিত্তাকর্ষক মসৃণ সব বিছানা পত্ত।

বারবনিতার নগ্নতা দৃষ্টির আবরণ পাল্টে নেয়

রসচুঁয়ে পড়ছে তার দৃষ্টি বরাবর মুখোমুখি নেত্র উদয়।

 

 

 

 

2Md Sohel Rana and Md Ripon Ahmed

লাল আসমান গড়িয়ে পড়ছে -৯১

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

চোখের পর চোখ রেখে মনে হয়

শরীরের ভাঁজ ঘুরে ঘুরে নাচতে চাইছে

উপর থেকে নীচে অসম্ভব সাঁতরাতে হচ্ছে!

কামাতুর দৃষ্টিতে আসলেই উতলা হয় প্রনয়।

পরনে স্লিপলেস কামিজ মুগ্ধ করে রেখেছে

সব খানিই দেহ দৃষ্টি এনে দেয় স্পর্শের আদর

হৃদয়ে সারাদিন ধরে মেঘের গর্জন প্রলয়ঝড়,

বসন্ত অভিরাম ডেকে যাচ্ছে।

নিভৃত থেকে উঠে আসা স্বয়ং নিষেধের প্রস্তাবনা

খসে খসে ধসে পড়ছে শরীর ছেড়ে স্তনের ঠিকানা,

তোমার দেহে রাঙা ফুলের গন্ধ দৃষ্টির পাখনা খুলে দাঁড়ায়,

জানালার কাছে মৃগনয়না রোদের করোটিতে হেলান দেয় ।

রাস্তার মোড়ে যে পথ ঝুঁকির মুখে

সবকিছু ভূতুরে লাগে শ্মশান মুখো ঐদিকে

সীমানাহীনতার দিকে চলে যায় কণ্ঠস্বর নাভী শরীর

আদিকালথেকেই টেনে আনে প্রখর রোদ রাঙা ভোর।

তোমার সামনে থেকে নিজেেকে সাবধান করে দিয়েছে

আকণ্ঠ ভালোবাসার কথা সবাইকে জানাতে চাইছে,

ঝলমল করে উঠতে পারতো সূর্য রেখে পালিয়ে !

যখন লাল আসমান গড়িয়ে পড়ছে গায়ে।

 

 

 

 

4Md Tarik, Joynal Abedin and 2 others

1 comment

Like

Comment

Share

মর্মান্তিক দুঃখ লাজ – ৯০

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —;-

নিজের সর্বনাশ ঢেকে রেখে সত্যি বলাই আমার কাজ

ভালোবাসার মধ্যে কতোটাই আর সর্বনাশ মর্মান্তিক দুঃখ লাজ!

আমাদের অনন্ত কামনার ঢেউ বৃষ্টিজলে দৃষ্টি খোলে, সুবর্ণ নয়তো সফেদ আলো কৃষ্ণকালো কখনো দেহের পাটভাঙা মকমলে,

অনর্গল উল্টে পাল্টে দৃষ্টির প্রান্তে ছুটে চলে

অধরার ফাঁক গলে ঢাকায় কিংবা বরিশালে,

মাঝবয়সী রোমাঞ্চ গুলো গা ভাসিয়ে বোরকা খুলে।

বসন্ত রাতের সঘন স্বপ্ন সব চুরি গেলো নাকি ফাগুন হাওয়ায় উড়িয়ে নিলো?

যখন সে দৃষ্টির পর দাঁড়িয়ে ভালোবাসবে বলেছিলো।

আমার মধ্যে স্রোত আছে রুদ্র মেঘে সমানে সমান, শাখার ভিতর অষ্টপ্রহর হাসির রেখা ঠোঁটেইতা প্রমাণ

শ্যামসোহাগির দৃষ্টিজুড়ে উঠান থেকেই অন্য রকম

পান্তাভাত চুরি করে বয়ফ্রেন্ডকেও খাওয়াতাম।

যাকে ফেলে দেওয়া যায় না, ভিজতে থাকে বিদ্যাবুদ্ধি এতোকিছু হারানোর পর ও বলে কি না ভালোবাসবে সারাজীবন!!!

ঘৃণার স্রোতে দাবানল অপেক্ষমাণ,

সে যে সব তুচ্ছ করে চক্ষুম্লান বুভুক্ষের শুরু বন্যার ত্রাণ।

 

 

 

 

5Abdul Kadir, MD Ontor and 3 others

অসার জীবনের দরকার হলে? ৮৯

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

রোদ্দুরের মধ্যে হঠাৎ দেখি চোখ ফিরায়ে

চুপচাপ দুপাশে দু’ জন বেলকনির থাম ধরে দাঁড়িয়ে,

উদাস এবং ভয়ার্ত থমথমে উচ্চারণ শব্দ উঠছে নামছে ভিষণ কিছু তাদের যেন ছুঁয়ে গেছে।

অবশেষে জানা গেল কালরাত্রের টেলিফোনে ভাবমুর্তি বিষয়ক মন্ত্র দগ্ধ বিস্ফোরণ,

শোকগাথার বার্তা ক্ষণজন্মা ভুল যথার্থ ভুল অথবা মানুবিক ভুল, হতেপারে নতুনত্বের টান!

সবাই বলাবলি করছে বাতাসে ঝনঝন শব্দে পরিনত করছে কথার ঘোর পাক,

আসলে অর্কিড ক্যাকটাসের মতো দেখতে নিশ্চল নির্বাক,

ভয়ংকর এক মহরত শেষে বিশেষ রকমের ফতোয়ায় আপোষের পথে দুচোখ,

দু’ ধা’র এগিয়ে একঘেয়েমি কাটাতে দু’দিক থেকেই নিবিড়তায় মিশে আমরা সবাই দর্শক ।

নদীও যেতে -যেতে থেমে গেছে,

শূন্য থেকে মহাশূন্যে মিলেমিশে, অল্পস্বল্প অনুতাপ এসব তোর ভালো লেগেছে?

অন্য মেয়েদের কথা জানিনা

তোকে ছাড়া নিজেকেও বিশ্বাস করাতে পারছি না।

চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে আসছে জানলে,

সমস্ত দৃশ্যের কিছুই ফিরতে পারতো না ছিদ্র মুখে ডিল ছুড়লে!

এভাবে শরীরটা জীবন্ত করে মেলে ধরলে

এখন চোখের মনি অসার জীবনের দরকার হলে?

 

 

 

 

7MD Billal Khan, MD Ontor and 5 others

1 comment

Like

Comment

Share

প্রিয় ঠাই – ৮৮

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;—

অমন মর্মভেদী দৃষ্টির মুখ

বেঁধে রেখে অপার্থিব স্বপ্ন সুখ

সেই তুষার দেয়াল থেকে ফিরে মাতিয়ে ছিলে স্থাবর সংসার সংসার খেলায় –

ভালোবেসে ছিলাম আজীবন নিঃসংশয় ,

ভেবেছি সুন্দর সব মুগ্ধ মন তোর,

ভাবুক হৃদয় চারপাশে প্রিয় ঠাই তেপান্তর।

কেমন করে ঠেলে দিলে সুপ্তি তলায়

অতলান্তের তুষার এখন আমার অশ্রুভারে

প্রেমার্ত পুতুল দেহমন দিকভ্রান্ত চক্করে

দিন রাতের প্রাণগন্ধহীন সরলাতায়

শেষ পর্যন্ত হতে হলো নিরাশ্রয়!।

ছায়া নেই মায়া নেই বুকের পর ব্যথার অন্তঃপুর

পথচারী উঁবু হয়ে ধূলোময়লা ঝারে আমার নাক-বরাবর নিঃশ্বাস কবজা করে রেখেছে বেদনাময় স্পর্শের সুখ,

মহাকালের জীবন পুরোটাই ভাবের সাথে জড়ায়ে নিঃশেষে অন্তপ্রাণ অদ্ভুত সব লোক।

যেতে হবে ঐ ওখানেই

অলিখিত নির্দেশ পাথরে আগুন জ্বলে,

ভস্মরেণু বাতাসের উৎস থেকে অপুর্ব এক পৃথিবী তোমাকে তাড়িত করবেই

তারপরও বিরহে বিচ্ছেদ বুকের ব্যাথার বিস্তার রহস্য ঘেরা অনলে।

 

 

 

5Md Sohel Rana, Md. Bablu and 3 others

1 comment

Like

Comment

Share

দু’জনের হাত -৮৭

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;–

ছেলে বন্ধুর সাথে অধিকাংশ মেয়েই আজকাল

ঘরের একখোনে বসে-

হাউজ ফুল ছেড়ে এসি নয়তো টেবিল ফ্যানের বাতাসে

দূরন্তপনার সন্ধ্যাগুলো একলা একা নিরালায়, টেলিফোনে কথাবলে ঘন্টার পর ঘন্টা পাড় করেদেয় চুপিসারে বনবাদাড়ে ডেটিং করে লেকের পর ফুসকা খায় ,

মুখোমুখি গল্প করে দাঁড়িয়ে বয়ফ্রেন্ড এর পাশে।

অনেকে আবার নেশায় পড়ে দুপুর পর্যন্ত ঘুমায় বেঘোরে,

সারারাত নিজস্ব ফ্রেন্ডগ্রুপগুলোর সাথে মেসেঞ্জারে আড্ডা মেরে,

সি-ফুড প্রিয় খাবার তাদের

মাছ ভাত বাবা-মা বয়স্কদের।

পারিবারিক সম্পর্ক বিলুপ্ত প্রায় তাতো সবারই জানা

ঘটা করে বিয়ে না তা হবে না মেনে নেয়া যায় না

একদম পছন্দ হয় না,

কি রকম সেকেলে বাজে একটা ধ্যান- ধারণা!

কথার এক ফাঁকে একথাও বলতে শুনি কথা নয় মন বাসনা,

তোমার বুকে মাথা রেখেই নিলাম শপথ

চিরদিনের জন্য এক হলো দুজনের মত এবং পথ।

ঘুমুতে হবে রাখলাম আগামীকাল দেখা হবে

কলেজ গেইটে সকাক দশটায়,

মা ডাকছে রাখো বা বায়।

 

 

 

6Abdul Kadir, Joynal Abedin and 4 others

ধ্যান ভাঙ্গিয়ে

দিয়ে – ৮৬

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;–

পরম পাওয়ার তৃপ্তসুখে

সত্যি সত্যি আজকে আমি সবার চোখে

এই পৃথিবীর বুকে স্বপ্ন সুখের প্রতিধ্বনি

সারাক্ষণ হাসি আনন্দে ভরপুর চোখের মনি

আশপাশের সবাই বলাবলি করছে তুমি শুধু আমার

চেতনার গভীরে মন তোমার অনুভূতে মিশে একাকার।

আলো হাসির অচঞ্চল ধ্যানে মন তোমার অনুভূতির পরশ থেকে ছবি আঁকছিলো,

কেউ একজন হঠাৎ এসে লাউডস্পিকারে তর্ক জুড়ে ধ্যান ভাঙ্গিয়ে দিয়ে গেলো।

এক ঝলক ভালোলাগার কথাগুলো মেঘ আকাশের ছায়া পথের পাশে তৃষ্ণার দৃষ্টি ফেলছে,

চাঁদ সূর্যের আড়াল থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য দীর্ঘশ্বাসের ভিতর ফাঁকফোকর খুঁজছে বেড়াচ্ছে।

 

 

 

পরিত্যাক্ত সংসারের জন্য – ৮৫

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;–

আকাশে অসম্ভব সুন্দর চাঁদ চারপাশে থই থই জোছনা গলে গলে ঝরে পড়ছে

নিরভ নিঝুম নিঃস্তব্ধ নিশুতি রাত

পরম তৃপ্তিতে অনেকেই ঘুমিয়ে আছে

কোথাও হয়তো কেউ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে

পাশেই অচেনা পাখির ঝাঁক কিচির মিচির করছে

অচিরেই ফিরে আসছে হাস্যোউজ্জ্বল সুপ্রভাত।

তখনো মধ্য আকাশ থেকে ঝরে পড়তেছিলো

স্নিগ্ধ কোমল শিশির বিন্দু বন জোছনার জল ও ,

তোমার ঠোঁটের মতো ভিজতে ছিলো রাতের পরিবেশ এমন কি লজ্জাগুলোও।

সকাল হলে গলির মুখে গরম গরম ভাঁপাপিঠা বিক্রি করবে পাশের বাড়ির মিনহাজের মা’

কাঁইলে পিঁষে তারজন্য এই গভীর রাতে চাল গুড়ো করছে সাথে তারই মেয়ে বিধবা সায়মা।

কতকাজ তার হাতে

সব কিছু মুখ বুজে করে

কোনো কোনো সারা রতা ধরে

এখনো বাকি কোরানো নারকেল চাল গুড়োর সাথে সাদাচিনি সোটা হবে মিশাতে,

প্রেম ভালোবাসার কথা মুখ থেকে শুনিনি

এখনো সংসারের স্মৃতি ভুলেনি

বুক ভারকরা নিঃশ্বাস মাঝে মধ্যেই ফিরে পিছনে

চোখ বন্ধ করে তাকালেই যেন সব কিছু সামনে

পরিত্যাক্ত সংসারের জন্য এখনো মন প্রাণ টানে।

 

 

 

মন্ত্রবলে সবুজ উত্থান -৮৪

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;—

মানুষতো আমরা প্রকৃতিরই অংশ

দেবতা ও মানুষের ক্ল্পচ্ছবি দৃষ্টির অপভ্রংশ,

কেউ কিছুই দেখিনি,

ভুল তত্ত্ব ভুল বিদ্যায় আত্মস্থ হয়ে সহস্র বছর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যকরণ মাতৃভাষার

দৃষ্টির সামনে অবুঝের মতো দেখে ও ছুঁতেশিখিনি।

দূর আকাশ কালো মেঘে ঢাকা অলৌকিক কিছু ভেবে

ভয় আতংকে চিৎকার চেঁচামেচির জাদু মন্ত্র মুখস্ত করে বেঁচে আছি না মরে,

অক্লান্ত মন্ত্র কল্পনার অনুসরণে ডুবে।

হতাশা নিরাশা বিষন্নতা নিঃসঙ্গতা মহাশূন্যতার –

সাঁকো পেরিয়ে ভাঙা বুক চিরে

ছুটে চলে বিস্তীর্ণ জলাঞ্চল ভাবজগত জুড়ে

রঙবেরঙের আনন্দ আয়োজন সুখ ও প্রশান্তির মনমন্ডলির মাঝখানে কাঙ্ক্ষিত এক অলৌকিক শহর।

সন্ধ্যার সরোবরে জোছনার জলছবি

জীবনের মধ্যে ডুবে থাকা অস্তরবি,

সর্ষের হলদে রঙ মেখে গায়ের গন্ধে ভাসালে বেলা?

ফাল্গুনের ঝিরিঝিরি বাতাসে অবগুণ্ঠন খোলা,

একারণেই কিছুমানুষ নির্জনতায় পৌঁছাতে চায়

আমাদের সতেজ উত্থান মন্ত্রবলে সবুজ বর্ষায়!

 

 

 

তোমার কণ্ঠ জেগে উঠোক – ৮৩

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

সেই সন্ধ্যাগুলোয় কাকে তুমি করে এলে প্রপোজ

ওদিকে নাকি দিবাকে নিশাকে সবজায়গায় করতে বলেছো ইম্পোজ,

এরকম খবরে খুব জরুরি এখন শূণ্য থেকে শুরু করো যেমনটি ছিল প্রাত্যহিকতায়, রোজ! ।

দৃষ্টির গভীরতায় ডুব দিয়ে

কিভাবে ফেলে এলে একা করে! ওভারেই পড়ে আছে নিঃস্ব হয়ে,

ওটা তার হতাশার নিরাশায় ভাঙা বুক

ফেরার কথা ভাবে ঐতো তার কাজ উপর মুখো চোখ।

আরশির সামনে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন সাজায় মনে দৃষ্টির আনন্দে ভরপুর

আকাশ রঙের মোড়ে গ্রামের নাম মন্ডলপুর।

কেউ তাকে আদর করে তার সবুজ রংনিয়ে দাবানল জ্বালবে বলেছিলো,

সবকিছু তারদিক থেকে সরে বেঁকে গেছে দৃষ্টি এখন

জলাশয় গুলো।

সাদা কাগজ অথবা পৌষের আগুন দেখে আনন্দে কাঁদলো কতোশত লোক,

নিজেকে নিয়ে সকলের এখন ভিষণ রকম ভয় সবকিছুর মতো দৃষ্টিও তার পুরোপুরি ক্ষয়,

এই পথ বন জনারণ্য সবারই আকূল করা বুক

ফের বছর প্রজনন শেষে তোমার কণ্ঠ জেগে উঠোক।

 

 

 

r

মুগ্ধ গন্ধে -৮২

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;

তুমি ও দেখছি – আসন্ন অস্তগৌধূলীতে

নদীর উন্মাদ তীরে বসে জলস্রোতে

নগ্ন পা দুটি প্রাণগন্ধ ভরে আকর্ষণীয় করে তুলতে,

আকাশ পানের ধূসর ভাবনাগুলি নিজে নিজেই জলের পর ভাসছে

হাসছে কাঁপছে,

গোপনে চোখ বুঝে পিছিয়ে এসেছি।

চোখের উপরইতো কতকিছু পালটে যায় দেখছি

জনপদ নদীর বাঁক অঘোষিত দিন

মামুলি মানুষ গল্পের চিত্রনাট্য মুগ্ধ মধুর ক্ষণ

প্রেম -ভালোবাসা স্বপ্ন আশাও কল্পনা কানায় কানায় পূর্ণ হৃদয় মন।

দেখো না ফুরিয়ে আসছে মুগ্ধতার দৃষ্টিপাত

স্বপ্ন সব নেশার মতো আবেগ মাখিয়ে কাঁপিয়ে দিচ্ছে জল প্রপাত

অবশেষে জলমগ্ন প্রজনন ধারার ছল ছল ছন্দে

অপার থেকে ফিরায়ে রেখে এলাম মুগ্ধ গন্ধে।

 

 

পৃথিবীতে এখন সর্বপ্রাণই হুমকির মুখে

পদ্মা মেঘনায় জলজ উদ্ভিদও বিপন্ন লঞ্চ স্টিমার ভারি সব নৌযানের আঘাতে, আশ্বিন কার্তিকের শিউলি রমনার খোলা প্রান্তর জুড়ে তোরণ নির্মাণ করে বৈশাখে।

ফলাফল ভাগফল রহস্যপ্রিয় কুয়াশার কৃত্রিমস্রোতে,

আবাদি জমি বরাদ্দের সুবাদে বনফুল অকালবৃক্ষের শাখাতে,

অথচ আমরা এক বালিশে ভাবছি যৌথ নিঃশ্বাসে,

আকাশ কুসুম কল্পনার অনুভব ভালোবেসে।

 

বহুদিক দিয়েই আমার কাছে সে অনন্য এবং অদ্বিতীয়

ঐশ্বর্যময় হৃদয়,

সৌন্দর্যে কিংবা প্রাচুর্যে সবাইকে ছাড়িয়ে-

হৃদয়ে নিজস্বতা নির্মাণ করেছে মহত্বের অসীমতাকে হাতে তুলে নিয়ে,

একরাশ আশ্বিনি আলো তাঁর শরীরে গলির ভিতর থেকে নিজেই নেমে দল বেঁধে চলে-

এক সমু্দ্র মুক্ত গন্ধের উপকরণ মিশিয়ে শ্রদ্ধার্ঘের ভাবনাতলে!

দুষ্ট লোকের সমস্ত ভাবনা সব লুটিয়ে পড়লো তার চেতনার অন্তরালে।

চিনি তাঁকে ডাক নাম ধরে ডাকতে জানি

তার অবয়ব জুড়ে পুরোটাই আমার মা -জননী

বিস্ময়ের সব কিছু শিকড় গেঁড়ে বসে আছে লাস্যময়ি

আজকের এইদিনে এসেছেন তিনি ভূপৃষ্ঠে

ছন্দময় নৃত্যে আনন্দের গান গেয়ে

স্বপ্ন সুভাস অশ্রুপাতের ঝর্ণাতে আলোর দিশারি হয়ে।

 

না আর কিছু নয়

পরিচয় এখান থেকেই যেন হয়!

যেখানে জম্ম আমার মা বাবা যদিও অজানায়!

শুধু শুধু কি আর নিরবতা অনাদরে ঝরে পড়া লোকের মূল্য কোথায়?

ধর্ষিতা নারীর স্তম্ভিত হৃদয়

উন্মুক্ত প্রান্তরে এখন দিন কাটাতে হয়

ঘৃণার স্রোতের ভিতর অষ্টপ্রহর

নিঃসঙ্গতার গল্পগুলো অসার মূল্যবোধের!!!

এমনই একদিন ঝলমলে দুপুর রৌদ্রের পর দাঁড়িয়ে তুমি,

আনমনে ভাবতে ছিলাম ছায়ার মতো স্মৃতিময়ীএই আমি!

পবিত্র বৃক্ষ কিংবা জলাজমি,

স্মৃতি নয় প্রকৃতির এই সজীবতা সবুজ ভূমি।

আমার শরীরে জোছনার গন্ধ মাখা মিস্টি আলোর প্রপাত

দুচোঁখের শয্যায় আছড়ে পড়ছে চাঁদ,

চাঁদের আলোর চারপাশে নেমেছে আকাশ

নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে ঝলমলে শহর যেন এক জোড়া রাজ হাঁস!

চতুর্দিকের আলো এসে মহতী করে দিলো স্বপ্ন সব সুগন্ধি সুভাস।

সবসময় কি সবাই মন্দই বলবে লোকে

মন্দ কথা শুনে হাসতে ও শিখতে হবে তোকে,

ভাবনার দেয়াল জুড়ে ক্ষুধার জোরে আলসেমি করে

জীবন শূন্য করে লাভ কিরে?

ভূতুরে ভাবনা ধরে

প্রকৃতির জোয়ার ভাটার মতো

কার্তিকের মঙ্গা -খড়া এখন আর আগের মতো নেই অত!

সবুজ পত্রতুমি মহাপ্রাণ হিল্লোলীত বিমূর্ত রূপের আলোর উদ্ভাসন,

নারীও শাড়ির সবুজ পার বৈশাখী তুমি বাঙলার চরন ভূমি সবুজ প্রান্তরে খুলে দিলে অঙের উঠান

দীর্ঘদিনের চিত্রকর বন্ধু ছিলেন শাক সবজির গ্রাণ!

চৈত্রের শেষে মনের জানালায় বৈশাখ তুমি এতো যে! ঠক ঠক করো?

আনন্দের ছায়া দৃষ্টির পর দাঁড়িয়ে ধরো।

চারদিকে শুধু বড়ো বড়ো সব আনন্দের আয়োজন আনচান করে মন

বছর দুই পর আবার রমনায় তোমার শুভাগমন।

 

tছিপছিপে বৃষ্টির সঙ্গে নেমে আসা রৌদ্রেরঝাঁজ

নরম ঘাসের উপর দাঁড়িয়ে সবার সামনেই

বলাবলি করছে

হেমন্তের সবুজ মাঠ প্রেমিক বন্ধু এসে দখল করে নিয়েছে

যদিও ভোগের তাগিদ ভাবনার ভিতর দিনকে দিন বেড়েই চলেছে!

গলা নামিয়ে প্রেমের শত্রু বানিয়ে নিজেরে

ঐদ্ধত্যের উষ্ণতার খোঁজে পিছুটান ঘুরে দাঁড়িয়েছে?

অথচ তৃপ্তির উষ্ণতা দরজার সামনে থেকেই

আকাশ পানে তাকিয়ে

গত শতাব্দীকে ডেকে প্রেমের ইতিহাস উড়ানো শিখাতে চাইছে!

 

t

দুঃসহ স্মৃতির এপার ওপার -৮০

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;

ভ্রুভঙ্গির আমন্ত্রণে অর্থহীন দেহের বিসর্জন

তার মধ্যেই দেখেছি আমি আবেগ জড়ানো হৃদপিণ্ডে মনোমুগ্ধকর এক ঝলক নির্মল হাসির প্রজ্ঞাপন।

চুল খোলে চোখের তারার মাঝখান থেকে পিছনে, তাকাও, মনোযোগ ভেঙে যায় যাক,

দাঁড়িয়ে বলতে চাই তোমারই সামনে,

না সুখে না দুঃখে না লাজে, মুখ বুজে নদীও শুকায়

উঁচু উঁচু পাহাড় সব ভাঙছে তো ভাঙতে থাক।

তারপর কতদিন তোমার বুকে মাথা রাখিনি

আজকাল আর পালানোর মতো শক্তি পুষতে পারিনি

যে কথা বলা আমার সাজে না

সাঁকোটির কথা নিশ্চই মনে আছে তোমার?

সেপথে এখন আর নিশ্চয়ই স্নিগ্ধতার মনস্কাম ঝুটে না,

সেই সাঁকোটাই দুলছে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন কথার পর

দুঃসহ স্মৃতির এপার ওপার,

সত্যিই এইসব কথা আমার মুখে সাজে না।।

 

 

 

দূর- দূরাশার৮০!

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;

একফাঁকে দেখে নিও অদৃশ্য উল্লাসের মাঝে আলো- আধারে কতোটুকু ব্যবধান,

কি পেলে আর কি হারালে যৈবিক প্রেমের ভিতর তাকালে মিলবে এই প্রশ্নের সমাধান?

দুজনের মাঝেই থাকতে হয় তুলপার করা বসন্তদিনের আকুল আহবান।

শরীরের মোহ ফেলে আচানক দৃষ্টি অন্যত্র ফেরালে

আত্মহত্যার প্রবণতার দিকে মনপ্রাণ এরকম বাঝে ভাবে ফেলে দিলে ?

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ভার নিজ হাতে তুলে বাঁচার মন্ত্র উড়াও

মাথা নত না করে প্রাণপনে হাঙরের মুখোমুখি দাঁড়াও

বাঁচার প্রকৃত অর্থ জানতে দিকভ্রান্তের হাতথেকে নিজেকে ফিরাও,

স্বপ্ননির্মাণের পথে পা বাড়াও,

পিছন ফিরে উন্মত্ত ভাবনার ত্রিভুবন দৃষ্টির বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দাও

ফিরে এসে ঘুরে দাঁড়াও।

দৃষ্টি কি দো আঙুলের ফাঁক গলে ঝরে পরা জল?

মেঘ না দেখে কেন যে তোমরা দেখতে দাঁড়াও

হেমন্তের চুল খোলা বিকেল যখনই হয় উধাও

এখনো ছিটেফোঁটা লেগে আছে দেখো দৃষ্টির জল

দূর -দুরাশার স্বপ্ন আকূল।

 

 

 

প্রাণমন জুড়ানো –৭৯

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;

বন্ধুর মতো জীবনকে চেতনানাশক ভেবে গুলিয়ে ফেলেছিলো-

মুখোশবৃত্তির চুরান্ত অন্ধকার,

তমিস্রার ব্যবধানে ছড়িয়েছে তপ্তসুর প্রিয়তমার,

অকুস্থলেই সারারাত মুখর করে তুলেছিলো।

তোমার গমনাগমনে দিকভ্রান্ত পথিকের সুদীর্ঘ নিঃশ্বাস,

নিরাবরনের কথা উল্টে পাল্টে দেখায় শতভাগ সম্ভাবনা চোখের উপরই প্রাণনাশ।

শরীরের মোহ এখনো এতো হিংস্র!

অদৃশ্য উল্লাসে ভাসছে প্রেমিকের হাতে প্রস্তুতিমূলক নিঃসংশ

সমালোচনার ঝড় উঠাতে পারে বিশেষ করে পোশাক পাল্টে নিজেদের ভিতর থেকেই কেউ একজন চক্রান্তকারী বেশে,

যেখানে গমন পথে তোমার লেখা আছে আদিথেকে হাঁটার ভঙ্গির নির্বিশেষে।

আমি ঠিক এখনো বুঝতে পারিনি

মনোবিকারের দিনে পুনর্বার ভুলেও লুটোপুটি খাইনি!

কিভাবে যে চোখের অশ্রু দেখে সঙ্গমের বিছানায় দুলে,

আমার চাই উপযুক্ত উপলক্ষ যেখানে ভালোবাসার বাতাসে প্রাণমন জুড়ানো উৎস মিলে।

 

 

পরাজয় ঠেকাতে -৭৮

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

যন্ত্রণার আদিম জগত থেকে

একান্ত ভ্রমণ শেষে সুখ -দুঃখ সাথে রেখে

নতুন করে আবার বাঁচার তাগিদে নিজের চোখে

দেখে এলাম ঘুরে এলাম,

মনুষ্যত্বের দায় থেকে ফিরে এলাম।

মানুষের কাম প্রেম ভালোবাসা বৃক্ষ হত্যা ও ঘৃণাধারী

সভ্যতার আদিনিবাস স্মৃতিচিহ্নের উদ্বাস্তু নগরী।

বিস্ময় ধরে শুধু স্বপ্ন ও সম্ভাবনার এক জোড়া চোখ,

লোকজ বাসনারা আজ উৎসবমুখর আদিগন্ত দুঃখময় স্মৃতি ভুলে থাকা চিবুক।

প্রকারান্তরে দুঃখজয়ী অনেকেই খুঁজে

উল্লসিত চোখগুলি সব কপোলের ভাঁজে,

আমার প্রিয় নবনীতার সঙ্গে এই আশ্বিনের শীতে,

অবশেষে ফিরে আসছে তেপান্তরের পথ থেকে সামনে এগুনোর সেই বৃত্তটিতে।

এক সময়ের মধুর সম্পর্কগুলো আরাধনার যেকোনো রাতে নিঃসঙ্গতা কাটাতে,

নিজের গভীরে ডুব দিয়ে মুখোমুখি দাঁড়ায় পরাজয় ঠেকাতে।

ভালোবাসার লাল রঙ ৭৭

– রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;

নিরর্থক উল্লাসের তলদেশ থেকেই বিদ্রোহের লক্ষ্মণ

পরখ করে দেখছি প্রাচীণ সভ্যতার নিষ্ঠুর সব অবিনাশী বৃন্দাবন।

আগুনমুখো দৃষ্টির পর কেমন করে ফুলকি ঝরছে!

শুদ্ধপ্রেম বাতাসের গুঞ্জরণে কতটা মিশতে পারছে

প্রেমিক ভাবনার বহু কৌণিক দহন সারাক্ষণ

ভালোবাসার লাল রঙে রাঙানো ভ্রমণ পিপাসু মোক্ষম এক বৃন্দাবন।

আগুন ভয়ংকর সঙ্গমের অনুশীলনে গেঁথে

আত্মাহুতির লোভনীয় বিদ্রোহে সুশৃঙ্খল রাত্রিকে বিচরণ মুলুক তোমার দেহকে আশ্রয় করে রাখে।

আমার মন বলছে মনের নিভৃত এক সীমান্তে

দু’জনেই দাঁড়াতে চাই একান্তে

দৃষ্টির পুরোটা জুড়েই হাতের প্রদীপটা

যে কেউ দেখলে ভাববে তোমার চিবুকেরই একটা অংশ সামনের দিকটা।

 

 

 

সঞ্জীবনী প্রত্যয় -৭৬

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু

পিচ্ছিল পথ থেকে অন্ধকার বেয়ে নিঃসঙ্গ পথিক আমি এগিয়ে চলেছি প্রতিনিয়ত একা একা,

আজ হঠাৎ খাঁ খাঁ করা বুক কোমল উষ্ণতায় জন্মান্তরের সাধনার ধন সেই তোমার স্পর্শের পরশ মিলেছে দেখা।

পরাণের গহীনে রেখেছি যারে মিলনের মহা প্রান্তে,

কামনার ফুল ফুটেছে আজ নির্বাক ছিলো দৃষ্টি

অক্লান্ত মনোবাসনার সীমান্তে।

দুর্ভাগা কাতর থেকেছি যুগের পর যুগ

অঙ্কের খাতায় বৃষ্টির চিঠি দেখে মুখস্থ করেছি আবেগ,

প্রাণটি হাতে করে কেটে পড়া মানুষের স্বভাব,

সারাদিন এমনিতেই সারা শহরে ঘুরেছি সে শুধু তোমারই ঐতিহাসিক একটি মাত্র স্পর্শের অভাব

তোমার কন্ঠে কম্পিত হৃদয়

ঠোঁটে তোমার জেগে তুলেছে আবেগি নৃত্য নতুন এক সঞ্জীবনী প্রত্যয়।

 

 

 

নিজেরই আদলে -৭৫

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

অবশেষে কিন্তু ফিরে এলো স্মৃতিভান্ডারেরই জমকালো আয়োজনে,

অশুদ্ধ ব্যবহারের চোখগুলো অযথাই বদনাম ছড়াচ্ছিলো বিনা বেতনে।

গুনগুন প্রতিধ্বনি নার্সিংহোম ফ্যামেলিপ্লেনিংএর সুবন্দোবস্তের কথাও উঠেছিলো,

অনেকে আবার মানববন্ধন করার কথাও ভাবছিলো!

অনুল্লেখযোগ্য কথা নিয়েও কেউ কেউ ফেতনা বাঁধাতে একদল অকৃতজ্ঞ মানুষের ভূমিকায় সায় দিচ্ছিলো।

তীব্র ও হিংস্র স্রোতের বিপরিতে না দাঁড়িয়ে

ঘৃণা ও নিন্দার শ্রাবণধারায় ভেসে ডুবতে চেয়েছিলো!

পায়ের তলার মাটি সক্তছিলো বলেই নতুন করে ভালোবাসতে শিখে নিলো।

বুকের উপর দিয়ে ভেসে যেতে দাও কান কথার কানাকানি,

পর্বত চূড়ায় বিচরণ করার ইচ্ছে পোষণ করলে

পরাজয় থেকেই ডেকে নিবে পরম মমত্বের হাতছানি। আমাকে ডুবে যেতে হবে নির্বাণ লাভের ভূলে

ষ্টেশনে নামার শুরুতে শত্রুকে দেখে নিবে নিজেরই আদলে।

 

 

 

পাড়া মহল্লায় বসে – ৭৪

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;

কতদিন হয় বৃষ্টিতে ভিজিনা!

চুলখোলা বন জনারণ্যের মোহনা,

কৃষ্ণকালের ষ্টেশনে বসে কফোঁটা বৃষ্টি হাঁটতে দেখেছি,

রাতের ঠোঁটে গুঁড়ো গুঁড়ো মেঘগুলো ভাসছে।

খুব চেনা মনে হয় ধোঁয়াশার আবরণ থেকে প্রাণ খুলে কে যেন ডাকছে,

চারদিকের হিংস্রতা লুণ্ঠনের উল্লাস ধর্ষণের প্রমত্ততায় হৃদয়ের যত আনন্দের ঢেউ মনোবাসনার ইচ্ছেকে, নিঃসঙ্গতার সঙ্গে বেঁধে রাখার চেষ্টা করছি।

মানুষের বেঁচে থাকার সব কথার মধ্যেই ধোঁকা হলে!

কেরোসিনের প্রদীপ জ্বালিয়ে বাল্যশিক্ষা মুখস্থ করেছিলাম কেন তাহলে?

বহুদিন হয় ঝুমুর ঝুমুর বৃষ্টিব শব্দ শুনি না,

ছিঁটেফোঁটা বৃষ্টির আনাগোনা বেহুদা মাস্তানি একদম ভাল্লাগে না।

সেলুনে বাজারে পার্কে দেবালয়ে ফুটপাদে মহা সড়কে হাসির ফোয়ারা দেখতে পাওয়া যায়,

অথচ আ কথা কুঁকথার প্রমত্ততায় পাড়া মহল্লায় বসে চোখ কান খোলা রাখা বড়ো দায়।

 

 

 

 

দৃষ্টির রেশটুকু রেখেদিলাম -৭৩

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু- (১৯৭০-)

গত কাল ভালোবাসার নামে ভাগ হয়েছিল প্রতিবেশ- পরিবেশ,

আমি কিন্তু আনন্দেই ছিলাম লাগছিলোও বেশ!

উপহার ও পেয়েছি সাথে উষ্ণতার রেশ

চমৎকার ছিলো সত্যিই আনন্দের পরিবেশ।

অথচ আমরা দুঃশ্চিতার জমাট বাঁধিয়ে- জুড়ে দিয়েছি পথচলায় বিশাল দেয়াল

এই দিনে পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষের ভিতর ছিলো, কলকাকলি, মধুর কোলাহল।

পৃথিবী জুড়ে আনন্দ আলোর বৃষ্টি

আকাশ ছুঁয়েছে তরুণ-তরুণীর উল্লাস- উচ্ছ্বসিত দৃষ্টি।

 

 

মন ভুলানোর ছল

বাঁকা চোখের জল?

না সখি পাহাড়ে না

দৃষ্টিতে দেখা অনুপম, যাতনা না!

তোমার জন্য উদ্দীপ্ত মন

করি কি এখন?

 

দৃষ্টি পরে -৭২

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু(-১৯৭০)

কতবার ঘুরে দাঁড়িয়ে থেকেছি

অকারণে ফিরে তাকিয়েছি

শুধু একটি বার

প্রণয় পূর্ণদৃষ্টি ছিল তার ।

দু -গাছা চুল, লোমশ নিটোল –

খোলা পিঠ কি মস

এই যে দৃষ্টির পর দাঁড়িয়ে কুয়াশা ভেঁজা ভোর

কি নরম ঝলমলে সকালের আলো পথের পর!

তোমার হৃদয় থেকে স্বপ্ন সব ঝরে ঝরে পড়ছে বোধ হয়

রেলিঙের কোল ঘেঁষে থাকা মনের মতো স্পর্শ গুলো চোঁখের পর থেকেই ঘ্রাণ নিয়ে এগিয়ে যাবে

কোমলতার কাঙ্ক্ষিত মূহুর্তগুলি যখনই এগুবে!

যদিও সবাই বলে থাকে অন্য রকম কিছু

না না আমার কাছে সে শুধুই সুখানুভূতির আনন্দঘন ক্ষণেই সীমাবদ্ধ নয় সব কিছু

ভ্রমণ পিপাসু মনে ক্লান্তির মতোই সে সারাক্ষণ

ঘিরে রাখে শক্তআবরণে কুসুম যেমন!

সে কিছুই দিবেনা ভাবছে!

আসলে নিজেই নিজের ভিতর হারিয়ে ফেলেছে।

ভুলে থাকার তো প্রশ্নই উঠে না

সে-আমার আর জনমের একান্ত আরাধনা।

না না সে এসবের কিছুই হয়তো জানে না

জানাতেও চাই না!

ভুলভাল ভাবতে পারে! নয়তো অন্য রকম কিছু

না না প্রেম না,

এমনকি ভালোবাসার মতো ও না,

সে আমার অনন্ত সাধনার ধন বেঁচে থাকার প্রেরণা।

 

 

 

আজকাল তোমার কথা তেমন মনে পড়ে না,

বুকের ভেতর আগের মতো ব্যথায় কেঁপে কেঁপে ওঠে না,

পথে রিকশার শব্দে ঘুম রেখে আগের মতো আর এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ইচ্ছে অতো খানি জাগ্রত হয়ে দেখা দেয় না।

আমরা দু’জনেই একটু দূরে

বোধ হয় অন্য কিছু চাই

দুপুরে অশ্রু সব মুঠোয় পুরে রৌদ্র ছায়ায়

মনের আধার নামিয়ে দিয়েই

সুখ সুখ নিদ্রায়

ক্লান্তিহীন নিরবতায় ।

 

 

 

কিছু একটা হবে হয়তো?

মনে হয় বেদনারা হয়েছে পাথর

আনন্দ ফুর্তি কই ধৈর্য ধরে কণ্ঠ স্বর নিচু করে রাখেনি তো!

ছেঁড়া টুকরা বদলে যাওয়া সময়

গলির মুখেই সিঁড়ি গর ঠিকানায়

অচেনা কোনো নিবাস যার রঙের অর্থ বদলে এখন বারান

এই প্রথম অপ্সরীদের মনের পর বেজে ওঠে অপুর্ব এক ঘুঙুর

প্রজ্বলিত অগ্নিদুপুর

আধাঁর কাঁপানো মেঠোপথে

তখনও সুর খুঁজে বেড়ায় দৌলতপুর!

সূর্যের সুরভী মেখে রক্তবরণ প্রজনন ভোর

ফাগুন যে বাতাসে ডেকেছিলো সাগরের দিকে দাঁড়ানো প্রহর।

 

সেই – যে পথে বের হওয়া শুরু

ভাবছেন চোঁখ বুঁজে হাঁটছি মন উড়ু উড়ু!

মনের ভিতরের শক্তি টুকু আশার দুয়ারে ছায়া হয়ে পথ দেখাতে পেরে ছিলো ঠিকই,

ঝলমলে দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে লোকে এটাও একটা দেখার বিষয় থাকুক !

হয়তো ভাবছেন? ভাবনার শেষ এতোটাই!

আমাকে যে ভুলে যাবে এই পথের রেখায় স্পর্শের সুখ অদৃশ্য শক্তি এসে হানাদিবে অচিরেই আকুল করা বুক।

কোথায় ঘর বাতাসে ছিড়ে নিয়ে গেছে নক্ষত্র শহর

তারপর ডানে মোড় বিস্মৃতির কি যেন এক রকম জোর।

দুর কোনো গ্রামে একদিন

কেউ বলে দাবানল থেকে ঘরে ফেরা জরুরি এখন।

 

পুঁজিবাদ প্রকৃতি ও মানুষকে

বিক্রয় যোগ্য পণ্যে পরিণত করে

উন্মুক্ত প্রান্তর ধরে ছেড়ে দিয়েছে খোলা বাজারে,

আজও আমি বেঁচেআছি ভালোবেসে নিজেকে

নদীও নারীর মতো প্রাণপনে জড়িয়ে ধরে

প্রকৃতির অপার রূপ সৌন্দর্য প্রীতি -জগত বিক্ষ্যাত সব শিল্প ও সংস্কৃতি,

প্রেম ও উদারতা এবং প্রথা ভাঙ্গার রীতিনীতি।

আজকের মহা দূর্যোগ- দুর্মূল্যের বাজারে অর্থ কড়ি রঙের ফানুস

মর্জি মতো ইচ্ছে মাফিক রান্না করা মেগি নুডলস!

সব নদীর পানি ব্যবহারের অযোগ্য যেন চিটাগুড় নয়তো তেল মবিল

দুর্গন্ধে ঘিরে রেখেছে চারপাশ পুরো দস্তুর নষ্ট পঁচা দোকূল

বিশ্ব নেতৃত্বের মহৎ গুণাগুণ চরম উদাসিনতায় মানব জীবন সঙ্গীহীন

আধিপত্বের দাবানলে পুড়ে ধ্বংস স্তুপের বর্জ জনমন

জ্ঞানবৃক্ষের আয়ূসীমা বেড়ে মাথাপিছু ত্রিকাল চেঁপে বসে আছে বিশ্ব ব্যাংকে ঋণ।

 

ছলছল জলের শব্দের মতো টুকরো

টুকরো মেঘ গুলো মেয়েটির চোঁখের দিকে তাকিয়ে ছিল,

যখন সে ভ্রু কাঁপিয়ে চুল শাসন করতে কানের পাশে হাত বাড়ালো,

আবেগ থেকে কল্পনার বিভূতি যখনঝরে পড়ছে,

আমি তাকিয়ে দেখি আমার দুচোঁখ কতটুকু নির্যাষ মানিয়ে নিতে পারছে।

আমার দেহের নির্জন বারান্দায় দাঁড়িয়ে মন প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ভিতর মধুর স্বরে টুংটাং শব্দ করে বেহায়া দৃষ্টিকেই যেন মৃদু উৎসাহ দেখাচ্ছে !

বুকে তার কাঁধের উপর থেকে মুক্ত বেণির ঝুঁটি যখন ঢলে ঢলে পড়ছে।

 

আমরা কি আবার লুটতরাজ খুনোখুনির দুয়ার খুলে আগুনে পুড়ায়ে মাটিতে পুরে রাখার জন্য মেয়েদের প্রাকাশ্য রাস্তায় ইজ্জত লুট করতে ভয়ংকর সব মানুষদের সহায়তা দিচ্ছি?

শিক্ষিত ভদ্রতার পরিচয় কোথায় লুকচ্ছি?

এই যে! প্রচন্ড আগুনের বৃষ্টি দিনমান তামাশা দেখছিলাম

স্বভাবের দিক থেকে আমরা কি জাহান্নামে ফিরে গেলাম!

 

 

বড়ো উঠানের সামনে সল্পবসনা নারীর মুখোমুখি অন্যমনস্ক সময়ের ডগায়,

জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দা আমরা সবাই

অনু-পরমাণু উড়তে থাকে বাতাসে স্মারক নিশ্বাসের কৃত্রিম শব্দমালায়,

জয়তৃপ্ত মনীষীরা বর্ণপরিচয় এর অ আ শিখায়!

তোমার ক্ষুধা পেটের স্কুলে তার সঙ্গে বলতে শুনি

বুকের ভিতর নিরপরাধ মনের নিস্পাপ প্রতিধ্বনি।

নদীর জল সাদাসিধে বনের শাখা -প্রশাখায় পা ডুবিয়ে দেহের উপর ভর করে

আকাশ ছুঁতে উঠে পড়ে এগিয়ে যায়

দ্বীপ চর জেগে ওঠে থৈ থৈ শুভ দৃষ্টির করোণায়।

আড়াল -৭১

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

ভাবনাসূচির দুলুনিগুলি লাল-নীল শাড়ির ভাঁজ থেকে ঝরে পড়ছে,

সবাই বলাবলি করছে চুরি হয়েছে ,

ইচ্ছে ও শিহরণের বারান্দায় গুপ্তচর ছিলো

বদনামের ভয়ে কথাগুলি থমকে গেলো!

ঘরের মধ্যে বসন্তপূর্নিমার আসর বসতে কে দিয়েছিলো?

নির্জনতার রজতজয়ন্তী আজ

দূরের এক মনোভূমির মধ্যে আততায়ীর ভূরিভোজ,

লোকাচার বুঝতে ভাবনার সম্প্রচার স্বর্ণমৃগয়ার খপ্পরে

উত্তরের হাওয়া বনভূমিরই ত্রিভুবন জুড়ে।

তোমাকে তো চেনে সকলেই অরণ্যে সূর্যের ঘ্রাণ,

পুরোনো দিন গোপন করে রেখেছে কালোএক কার্বন

ভাবনার পাহাড় ভেঙে যদি নেমে আসে সময়ের ভার

ঈশারায় আড়াল করে নিজের ভিতরের আান্ধার।

 

 

 

প্রশ্ন করি কাকে – ৭০

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;

আমার এই নীলকণ্ঠ রৌদ্রতাপ ঘামথেকে,

শিহরণ জাগানিয়া মধুর স্বর

অবিশ্বাস্য আনন্দের সুর

নিজেকে ঢেকে রেখে উদাস চোখে ,

যে-ভাবে দুহাত ভরে দূর পৃথিবীর প্রতিরূপ দৃষ্টিপ্রবাহে,

কষ্টার্জিত মেধা ও শ্রম স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে ,

জীবন বাজির এই ছায়াপথ গ্রীষ্মের মধ্য দুপুরে,

প্রাচীরের মতো আচরণ ধ্বংসোন্মুখ মাটির দেহে ।

এরকম হতে হতে ক্রমশ সম্পর্ক হয়েউঠে স্পষ্ট সুমধুর,

পরিচিত চেনা – অচেনা লোকালয়ে বিশ্বাস ও আস্থার উপর

রক্তের ধারা ঈষৎ ভাসিয়ে

মানুষের স্বাভাবিক ইচ্ছের পর দাঁড়িয়ে।

জগতের সবাই বেঁচে থাকার নিরাপদ আশ্রয় চায়!

আরো অনেকেই দেখেছে তাকে নেকাব উঁচিয়ে এইমাত্র চুপিচুপি খুলতে গিয়ে, মুখের পর বাক্য আঁটকে যায়।

ফের দেখা আমাদের যাত্রাপথে তখন গ্রিস্মের আতংকিত ভোর

ভাগ্যের হাতে মার খেয়েছে প্রচুর

সেদিন ও সবাই বলাবলি করছিল

প্রশ্ন করি কাকে লোকটা সত্যিই কি ভিষণ ভালোছিলো?

 

 

গৃহ দেবতা – রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–৬৯

স্বপ্নের বাড়ি আমারই

ছাঁদের মাথায় চাঁদের থালা

কারো কারো মনের ভিতর মরচে পড়া জ্বালা,

লাল মাটির উঠান

দুপাশেই বাগান বিলাসী আসমান সমান।

গ্রামের পর মরা খাল- বিল, জলাধার পুকুর

ষ্টেশন পেরিয়ে ইমিগ্রেশন শিউলি গাছ পাঠশালার।

পাশের গ্রামে বনপাতার চারচালা ঘর জীর্ন এবং পুরাতন

ফ্ল্যাট বাড়ির সামনে দেখতে বস্তির মতন

পর পর দাঁড়িয়ে ফ্ল্যাটবাড়ি ঝকঝকে তকতক

নন্দর মা দুবেলা পরিস্কার করে ফ্ল্যাটের পিছনের বস্তিরই লোক।

দুই তিন ক্লাসের মধ্যেই লেখা পড়া শেষ ওরা বস্তিবাসী মেয়েলোক

ঘরথেকে বেরুলেই বলাবলি করে কিসের লেখা পড়া এইসব বাদ দিয়ে বড়ো লোকের ঘরে কাজে কর্মে দক্ষহোক,

দুইচার পয়সা ঘরে আসবে ভবিষ্যত হবে সুখ।

এই খানেই থাকি নিঃসঙ্গ চৈত্র বৈশাখ বারোমাস

ছেলে বিয়ে করে আলাদা হয়েছে গ্রীষ্ম বর্ষা পৃথকবাস।

তোমরা হয়তো বলবে এসবই আজগুবি মিথ্যা,

না আসলে আমরা সবাই এখন চিন্তা করি ভালোবাসার আর এক নাম স্বাধীনতা,

নয়তো উৎসবে মুখরিত গৃহদেবতা।

 

 

 

 

দেহ ভাবনার ত্রিভুবন জুড়ে

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;-৬৮

এ-যেন এক ভালোবাসার দিকদর্শন,

মৃত্তিকার বাতাসে ঝরে পড়ছে সপ্তর্ষিমন্ডল

নিদাঘ দুপুরপূর্ব রৌদ্রকরোজ্জল

অন্য রকম আলোর নিদর্শন,

হেমন্তের এক ঝলক কোমল -প্রশান্তিতে ঘেরা বাঁধভাঙা মিষ্টি আলোর সকাল।

দৃষ্টির পরতে পরতে রুদ্রের ঝলকানি,

যৌবন খুঁজে ফিরে বসন্তের তূর্যাগমনি

তুমি চোখ তুলে তাকাচ্ছিলে ঝুলে পড়ছে নিখুঁত আড় চোখের বন্ধনী।

গ্রিস্মের অসহনীয় উত্তাপ দেহ ভাবনার ত্রিভুবন জুড়ে,

মন হৃদয় ছারখার হয় অন্তর পুড়ে

শরীর থেকে তোমার যুগের সুগন্ধি ছড়াচ্ছে

ঈশ্বরের নাম ঝপ করে শত শত যুবক দৃষ্টির প্রান্তর পোড়াচ্ছে

ঘামের গন্ধে ডুব দিয়ে শান্তহতে চায় মন দেহের অভ্যন্তরে,

তোমাকে ভালোবাসার ইচ্ছে কাছে পেতে চায় বারেবারে।

 

 

 

মৌলিকতারই কৌতুহল -৬৭

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;-

বাসনার চুড়ায় চুড়ায় এইটুকু রেখে যেতে চাই

সময়ের ধাপে আর্যাবর্ত ভেঙে প্রবজ্যপ্রণয়নকরি তাই,

অবারিত দূর সময়ের ভার কোলাহল ছেড়ে নেমেএলে ধরো এই গ্রহে,

স্বপ্ন ও সরল হাতের স্পর্শে প্রকৃতির কাছেই বৃক্ষের প্রাণ, তৃষ্ণার সমারোহে।

আমার হৃদয়ের কার্নিশে বাসা বেঁধে ছিলো এক জোড়া দোয়েল পাখি,

অবিশ্রান্ত উড়তে উড়তে ডানা ভেঙে একটা পাখি সঙ্গীবিহীন শয্যাশায়ী এবং একাকী।

এইতো জীবন অক্লান্ত পর্বতমালায় নক্ষত্রখচিত বাসনার বিবরন,

কারাগার থেকে কারাগারে নির্বাণ লাভের ফল ছিন্ন হতচ্ছিন্ন জন্মের ঋণ।

এই দৃশ্য ভাসমান পরিসরে বর্ণালী চিত্রকলারই সুবিন্যস্ত সম্ভার,

নির্মল নিয়মের নদীগুলোও প্রকৃতিরই মহাস্থিতির বন্ধন স্থাপত্যকলার।

মায়া জড়ানো শেওলার মতো চলমান জল

এইসব সৃষ্টির মৌলিকতারই কৌতূহল।

 

 

 

বিবর্ণএক স্মৃতি লতার মতন -৬৬

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;

এটাকি ভুল?

নগ্নতার ডুবসাঁতার শেষে দৃষ্টি ছিল মশগুল,

আমাকে ডেকেছিলে আলোকচিত্রনের বিপরীতে

অরণ্যময় জলমগ্ন হ্রদে আঁচল খসার বেলা খুঁজতে খুঁজতে,

নিজের প্রয়োজনে আলো-আঁধারির গোধূলিকে সঙ্গে করে

তোমার চোখের উজ্জ্বল আলো যে নিসর্গের ভেতরে

লাবণ্য লতিকাকে নিখুঁতভাবে অন্বেষণ করে,

আমাকে পলাতক ভাবা কি ঠিক হবে তোমার?

কিছু ছায়া জলছাপ বুকের তিল খুঁজতে ধূসর রঙে ভাসালে জ্বলজ্যান্ত একটা দুপুর!

যদিও জানি একটা বাঁকা চোখ

আমাকে পায়না খুঁজে সবাই ভাবছে বিষয়টা অলৌকিক,

তুমিও কি নও গুপ্তধন বিবর্ণএক স্মৃতিলতার মতন

কোথায় কোথায় নিয়ে যায় ভাবছো সোনালী ক্ষণ!।

 

 

 

প্রমত্ত খেলায় -৬৫

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;;

আরাম কেদারায় শুয়ে নিশ্চয়ই অযান্ত্রিক বিগত দিনগুলোর কথা ভাবছো?

শালিক কিংবা মাছরাঙা ঘাসফড়িংয়ের ছবি মনে মনে আঁকছো,

ভোরবেলা দরজা খুলে সমুদ্রের পার হাঁটছো।

মনের দোকূলজুড়ে বাতাসের শূন্যতায় রঙিন প্রজাপতি উড়ছে

বুকের উপর দিয়ে ছলছল জল হৃদয়ের সবটুকু ভাসিয়ে নিয়ে ছুঠছে তো ছুটছে।

আমরা যেদিন থেকে নদী টপকে সমুদ্র প্রেমিক

আমার হৃদয়ের সবটুকু জুড়ে তোমার উল্লসিত চোখ,

যখন আকাশের বুক চিরে একটানা সমুদ্রের ঢেউ ঘর অবধি ছুটে এলো,

জলের শাখা প্রশাখা আরাম-ঘুম কেঁড়ে নিয়েছিলো,

ঝাঁকে ঝাঁকে জোনাকি জলের পর ভাসছিল

ব্যর্থতার কালোছায়া হাঁহাঁ করে ঘিরে ফেলেছিলো।

আজকাল ভাতখেতে বসলেও কে যেন মনের চারপাশে পাহারা বসিয়ে দেয়,

অযান্ত্রিক ছেলেবেলার ছায়াবাতাসের মুহুর্তগুলো বড়ো দুর্ভাবনায় ছুড়ে মারে নতুন এক প্রমত্ত খেলায়!

 

 

 

বন্ধনের

 বাঁধা ৬৪

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

ফল্স বাতাসের শূন্য পরিসরে

মন রঙিন পাখা মেলে যতই উড়ে

ওরা খুঁজেছে শরীরের সুগভীরে

উন্মাতাল অনুভূতির সবকিছু

গোপন আলোর স্পর্শ তখনও পিছু পিছু

আত্মউল্লাসে বাসনার স্বপ্ন ধরে

উষ্ণতার মধ্যে গড়াগড়ি করে,

সন্ধ্যা নেমে এলে দৃষ্টির গুঁড়োয়

লক্ষীপেঁচার ডাকশুনে বিছানায়।

মেয়েটি একপা একপা করে দ্রুত নেমে আসে বধূবেশে,

যেন গিরিতরঙ্গিনী জন্মালে আলুথালু চোখের পর ভাসে!

কোনটা তার পথ?

কাঁদা জল ভিঁজায়ে পায়ে

জলবসন্তে বিচ্ছিন্নতার গাঁয়ে,

কর্ণপটবিচ্ছিন্ন হতে হতে দৃষ্টি তফাত।

সংসারের চাপ কারাগার থেকে কারাগারে

বন্ধনের বাঁধাটা কোথায়

পরিচয় যথাযথ সমুদ্রসম অজস্র উন্মত্ততায়?

 

 

 

মুখোমুখি এসে – ৬৩

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;

সে-ই চেনাপথ কল্পনায় ঘেরা মনোরথ

তুমি আমি, কে কোথায় হারিয়ে গেছি!

স্মৃতি নয় এগুলো পুরোটাই বাস্তব আজও মনে হয় শিশিরে ভেঁজা প্রভাতের জগত।

অজপাড়া গাঁয়ে সন্ধ্যায় বর্ণিল আকাশ

সবুজ ঘাসের বিছানায় শুয়ে ডানে বামে তাকালে কি চমৎকার দেখাতো চারপাশ, গন্ধে ভরে উঠতো মন যেন বসন্তের টাটকা সুবাস।

আবছা হয়ে এসেছে বেলা যদিও আকাশ জুড়ে তারার ঢেউ,

আজকাল মুখোমুখি এসে দাঁড়ালেও হঠাৎ চিনবোনা কাউকে কেউ।

হাউরাইজ বিল্ডিং এটা আসলে ঢাকার শহরতলি,

কিছুই বুঝিনা আজকাল প্রথিতযশা বলা চলে চারপাশের গ্রামগুলি,

আগের মতো একদম নেই অবস্থা সম্পূর্ণ ডাকসাইটের গেরস্তবাড়ি,

চমকে দেওয়ার মতো অনেক কিছুই আছে শপিংমল বিউটি – মাসাজ পার্লার কোচিং সেন্টার আলতারাঙা লিপষ্টিক পরা নুপুর পায়ে বিবাহিত নারী বিলাশ বহুল অট্টালিকা পাঁচ -সাততলা দালান বাড়ি হাল ফ্যাশনের গাড়ি।

 

 

অবশ্যই মানহানি – ৬২

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;

অতিপ্রাচীন পুরোনো দিনের সামান্য এক মর্ম কথা,

বিষন্ন স্মৃতির ভিতর লুকিয়ে ছিল অসামান্য নিরবতা

দুঃখ খুঁজতে খুঁজতে ভিষণ ক্লান্ত আজ প্রত্যাশার মহাকাশ ,

ভাঙ্গনদৃশ্যে সম্পর্কের চতুরতায় প্রকৃতি বড্ড হতাশ!

অরক্ষিত ধূলো ঘূর্ণি তাড়া করে লতাগুল্ম মেঠোপথ,

ভূমিও রঙিন মুখোশ পরে গোত্রহীন উন্মাদ-

সবাই ভাবছে অকাইল্লা ঝড়েরই দাপট নষ্ট দ্রষ্টা দক্ষিণা স্রোত।

পাথর কণা সুর্কি দিয়ে ভরাট করার পরও

পাড় ভাঙ্গার আসল দোষী সত্যি সত্যিই কি নিয়তি?

এটাই এখন অশ্রুঝরার বাস্তবতা আঁকাবাঁকা পথের সরূপ এবং প্রকৃতি।

একটা কথা আমরা সবাই জানি

বেদনাময় ক্ষতের জন্ম অবশ্যই মানহানি!

 

 

 

গতির দিককেই – ৬১

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;

তোমার নগ্ন পা দিনের শুরুর রৌদ্রে দাঁড়াতে গায়ের খাপ খুলে

লালচে রঙের বাঁধভাঙ্গা এক অন্য রকম দেহের হিলোলে,

ভর দুপুর আজ নির্লজ্জ রকমের জমকালো

নিজেদের মধ্যেই সবাই বলাবলি করছিলো।

প্রদীপের নিচেই অন্ধকার

আমাদের চারপাশের প্রিয় ঠাই তেপান্তর

আগুন মুখা নদীর বুক চিরে

জলোচ্ছ্বাসের মতো অন্যায় রকম তোমার ব্যবহারে

প্রতিবেশির চরণতলে চিল্লির আগুন দাউদাউ করে জ্বলছিল।

হিংস্রখরস্রো শ্রাবণ ধারার মতো দিগন্তের দিকে বাতাসের তীব্রগতিবেগ,

অন্ধকার যতটা সম্ভব ভেদকরে তোমার আবেগ –

থামাতে, শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছিলো!

মেঘকালোজল উল্টো দিকে ছুটতে থাকে দিকবিদিকশুন্য গতির দিককেই এক সময় ভালোবেসেফেললো।

 

 

 

আজব আধারে এ যেন এক মহার্ঘ স্মৃতির সহবাস!

যতোখানি কর্মময় বাকিটা ইতিহাসেরই দাস,

দাবানলে পুড়ে খাচ্ছে অদৃশ্য অবকাশ ।

মধুর মতো মহাজন তাতানো তিন গুণ

খুঁজে খুঁজে পথের মানুষ উড়ু উড়ু মন উতলা ফাগুন

হৃদয়জয়ী গন্ধ এদিকে ওদিক নিজের মনে হয়

নবীন রোদের রোমান্টিসিজম বিধস্ত প্রায়!

আমার দিকে আর একটু চেয়ে চেয়ে থাক

না কি করে হয় ভাতের সঙ্গে তামাক!

তবে ফিরে তাকিয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি

আনন্দঘন নীলজলে স্বপ্নগুলি কোথায় লুকিয়ে রেখেছি।

 

লাবণ্যময়তার স্রোতে এ-কেমন রঙ মেশালে!

তৃষ্ণার্ত দৃষ্টির জল গড়াতে গড়াতে উপশহর পেরিয়ে আলোর দুয়ার পর্যন্ত চিনিয়ে দিলে!

সমস্ত শরীর কণ্ঠস্বরের সবগুলো ধাপসহ শব্দসঙ্গমের রক্তে ভেঁজাতে গেলে?

নিজেকে বিলীন করে বিশুদ্ধতার নদীগুলোয় রক্তের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে নিলে!

 

আমার এ -দূর অতীতের ভাব আর রাখবো না

সমস্ত সবুজ মুছে দেয়া রোদেমাখা দৃষ্টির সামনে আর দাঁড়াবো না,

জোড়া চোঁখের ভাসমান হৃদয়

প্রাণের মধ্যে তৃষ্ণার কথায়

ভিজবে না,

কোলাহল ছেড়ে জল নেমে এলে

আলো নিভে পাহাড় ভাঙে সময়ের ভার হারালে!

অপূর্ব এক অসাম্যের যোগফল আকূল

বাতাসের শূন্যে গেছে আকাশ গঙ্গার বেদিমূল,

নির্মূল নিয়মের অগণন অর্জন

সেপথ আমার নয় অক্লান্ত বিচরণ ।।

 

বড়ো উঠানের সামনে সল্পবসনা নারীর মুখোমুখি অন্যমনস্ক সময়ের ডগায়,

জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দা আমরা সবাই

অনু-পরমাণু উড়তে থাকে বাতাসে স্মারক নিশ্বাসের কৃত্রিম শব্দমালায়,

জয়তৃপ্ত মনীষীরা বর্ণপরিচয় এর অ আ শিখায়!

তোমার ক্ষুধা পেটের স্কুলে তার সঙ্গে বলতে শুনি

বুকের ভিতর নিরপরাধ মনের নিস্পাপ প্রতিধ্বনি।

নদীর জল সাদাসিধে বনের শাখা -প্রশাখায় পা ডুবিয়ে দেহের উপর ভর করে

আকাশ ছুঁতে উঠে পড়ে এগিয়ে যায়

দ্বীপ চর জেগে ওঠে থৈ থৈ শুভ দৃষ্টির করোণায়।

খরতাপের আছর কেটে আজ হঠা ভারি মেঘের গর্জন শোনা যাচ্ছে

কোথাও কোথাও হয়তো বৃষ্টি ঝরছে

রাত্রি অন্ধকার লোকালয় ভিঁজে একাকার হচ্ছে,

বাতাসে শীতল পরশ স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলা দেথছে  ।

 

নাকে নোলক গলায় হার

সে- কি অপরূপ তার রূপের বাহার!

মুছেফেলো অচেনা সব সমাচার

আঁকড়ে ধরো নিস্তব্ধ প্রহরে

তোমার প্রিয় মানুষটারে,

যদি মেঘ খোঁজ পায়

দৃষ্টির অগোচরে

রূপের বাহার তার ঢেকে দিয়ে যায়!

 

 

যে ছন্দে মেয়েটি হেঁটে যাচ্ছে কল্পনায় লুট করে নিতে চায় চোঁখে মুখে,

প্রখর দৃষ্টির সীমানা ছুটছে কথা বলার ভঙ্গির দিকে নিঃশ্বাস ফেলে দৃশ্যটা হজম করার চেষ্টা চলছে!

সে চায় সবাই ব্যাখ্যা করুক ভার্চ্যুয়াল লুকে,

বৃক্ষের সাথে হেলান দিয়ে মধ্য পর্ব গুনতে হয়তো কেউ এগিয়ে আসতে চাইছে।

 

 

চাই ভুলে যেতে –৬০

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —;

বেদনাময় স্মৃতির পর দাঁড়িয়ে দুঃসহ অতীত

চাই ভুলে যেতে

স্বর্ণকণ্ঠীর পিছু ছুটতে

দৃষ্টির বৃষ্টি টগবগে তরুণ দিশেহারা থেকে

নিরুদ্বেগ রেখে,

সেই কুয়াশা ঘেরা পৃথিবীই আপাত;ভূত

ব্যাখ্যার মধ্যে উদাসীন নিয়তি,

যখন তখন উড়ে বেড়াতো ফুল থেকে ফলে

সকলেই ব্যস্ত বেশুমার কাশফুল মাথায় দোলে!

ভুলে যেতে চাই ছোট ছোট সব উড়ন্ত সাদা প্রজাপতি।

নিজেকে খুলে রেখে প্রাচীন অনুবাদ মুখস্থ দেখি

সীমিত চাওয়ার মধ্যে মহাকাল নিষেধের বেড়াজালে আটকে রাখি

ঈর্ষাকাতর মানবীকে ঝেড়ে ঝুড়ে সবটুকু আঁকি

ভুলে যেতে চাই ষড়যন্ত্রের অংকশিখি

ডিগবাজির উপনিবেশ তোমার স্মৃতি শব্দে মাখি।

 

 

দৃষ্টির প্লাবন- ৫৯

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু

বিস্মিত চোঁখের দৃষ্টিতে অতল সত্তার তুমুল তোলপাড়

দৃষ্টির প্লাবন ভাঙা আয়নায় দেহের বজ্রপুর,

বিরামহীন বিরতির পর আবিরের উৎসব শেষে

কলের জল থলেসহ বসন্ত ঋতুর চারপাশে।

হালকা সবুজ পাতার আকাশে চাঁদ ভাসছে

জোছনার জলছবি ছিপ নোকায় ঝুঁকে পড়ছে,

প্রকৃতি কি অপরূপ সাজে সেজে আছেে

আকাশে বক পাখি উড়ছে পাখা নড়ছে

কেউ কাউকে আদর করছে?

কানপেতে মনে হলো দীর্ঘশ্বাস আসলে বৃষ্টি হচ্ছে

সুদীর্ঘ দৃষ্টির হিল্লোলে ক্রমাগত দিকবিদিক হেলে পড়ছে।

জল ও জনপদ – ৫৮

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —-;

সময় বড়োই নির্দয়

নিরাপদ আশ্রয়টুকু মানুষের নিষ্ঠুর তান্ডবে শূন্যতায় কেমন বিলীন হয়ে যায়!

সত্যিই প্রকৃতির কাছে আজও মানুষ বড়ো অসহায়।

ধ্বংসোন্মুখ খরতাপ একদুপুরে বানেভাসা বিভ্রান্ত এক স্বজনকে

জিজ্ঞেস করি কিভাবে আঁকড়ে ছিলে সন্ত্রস্তসত্তাকে?

ওভাবে আরতো কেউ বসে নেই!

নেকাব উড়িয়ে হলেও দায়ছিলো সাঁতরানোই।

আচরণে সম্পর্ক সব আড়াল করে

বলেছিল অনেকটাই হেলেদুলে

আগামী দিকটা পুরোটাই রৌদ্রেপোড়া যাত্রীদলে

বানভাসি অসহায় সব মানুষের অসামর্থ্যের বেড়াঝালে।

আপনার সচ্ছ চোঁখদিয়ে মেনে নিতে নিশ্চয়ই কষ্ট হয়?

বিভান্ত আমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে বলেই এমনটা হয়!

 

 

 

মন ও দেহ – রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –৫৭

সচ্ছ চোঁখ দিয়ে মেনে নিতে হবে

কখন দু’হাতে তুমি দৃশ্যহীন শূন্যতায় উঠে দাঁড়াবে,

ঘরের হুরমুরু স্বভাব নিজেই নিজেকে পিছনে ফেরাবে

নশ্বর দেহের আচরণ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাব গতির প্রতিক্রিয়া নিষ্ঠুর তান্ডবে মাতাবে?

আলোকিত প্রাচীর দৃশ্যমান যেন ঘাতকের জীবন

দৃষ্টির কাছাকাছি স্তম্ভিত মন দেহে মর্তবাসি সরূপ ধরণ – ধারণ,

পরাজয় নেই ব্যাতিক্রম শুধু উলঙ্গ উম্মুল

মধ্যরাত শেয়ার করা অনাথিনীর চোঁখ ঘিট দিয়ে রেখেছিল

মসৃণতা পর্যন্ত পুরোটারিই  মিশ্রমিল।

দরজা খুলে স্বপ্নের স্রোতের মতো

ডান-বামের নিজেরে বাঁচানোর কৌশল যত

উন্মাদনাময় উন্মুক্ত করে রাখা দো-স্তনের মতো।

দৃষ্টিতে ফেরা -৫৬

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –;

বাসনার গন্ধ দৃষ্টিতে ধরে কখনো কখার ভিরে দেখার আনন্দ খুঁজতে গেলে হোঁচট খাবেই,

দূর-দূরান্ত ভেঙে এসে মুখোমুখি দাঁড়াবার সময় নেই এখন আর কারো হাতেই,

মধ্যযুগ আছন্ন করে আছে হৃদয় অনেকেরই।

খুব খারাপ লাগে মনে বদহজম হলে

এলোমেলো দৃষ্টি ধরে টেনে হিঁচড়ে প্রাচীন সব অনুবাদের দিকে নিয়ে গেলে,

এখন আমার পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠজুড়ে অস্পষ্টতার আনাগোণা মহাকালের অচঞ্চল গতি প্রবাহ

বেশুমার কাশফুল মাথার উপর দোলে

উদাসীনতার সুরও সংগীত ভালো হতো জোছনা উৎসব গ্রহণ করে নিলে।

আমিতো দেখছি জোছনা গলে গলে ভিন্ন ভিন্ন আর্দ্রতায় কাঁদাজলে মিলে

ঋতু বদলের অদ্ভুত এক তৃষ্ণার্তমন ভেঙে দিলে!

মাঝ পথ -৫৫

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –

সময় স্পষ্ট মনে পড়ছে না

কখন থেকে মাঝ পথে দুজন হলাম!

হয়তো সে নিজেও জানেনা।

প্রশ্ন করি কাকে?

তারপর কতো কতো দিন

আমাদের চারপাশে হারিয়ে গেলো

আচরণ সম্পর্কে নির্বোধই ছিলাম,

হঠাৎ হঠাৎ ভিতর থেকে কে যেন ডাকে!

অবিশ্বাস্য আনন্দের অন্য রকম এক সুর

সম্মোহিতের মতো কানপেতে অগণিত মানুষ বিত্তহীন দারিদ্র বেকার,

আমরা সবাই ভাগ্যের হাতে মার খেয়েছি প্রচুর।

আমার মতো এভাবে কেউ বসে নেই

তোমাদের সবার স্বাভাবিক জীবন যাপন রয়েছে এগিয়ে চলার ছান্দিক গতি তাতে কোনো সন্দেহ নাই।

পথের মাঝে কে যেন আমাকে   এমনি ভাবে

আছন্ন করে রেখেছে, কোন নশ্বর জগতের লোভে?

প্রতিচ্ছবি -৫৪

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —

তিতকুটে নয় বিষাদময় হয় আবছায়ায় আহত প্রায় ধূলো ময়লা ঘেরা অবসাদগ্রস্ত মনও হৃদয়,

স্মৃতিকথার আরএক নাম ভাবনার দরিয়া মুখোমুখি এসে দৃষ্টি ফেরায়

এইসব সত্য টের পায় আলুথালু সময়

জীবনের বাঁকে বাঁকে যখনই থমকে দাঁড়ায়।

গ্রামের নাম সৌরমণ্ডল

শ্যাওলা জমে আছে বুকের উপত্যকায় অনিদ্রার যেখানে আশ্রয় স্থল

এআমার শৈশব স্মৃতির প্রতিচ্ছবি হৃদয়ের উপকূল,

নিঃশব্দে ছেড়ে আসা নিসর্গ ঘেরা সবুজ পাহাড়

অবিরাম জ্বলে থাকা বুকের মধ্যের ফেলে আসা যৌবনের তোলপার।

 

তৃষ্ণা -রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -৫৩

তৃষ্ণায় তাড়িত হয়ে খুঁজতে খুঁজতে ব্যবধান বেড়ে শেষ পর্যন্ত প্রেরণায় এসে বসন্তঋতুর দেখা পেল দেহ মন,

আজ রক্তের চেয়েও টগবগে প্রেরণার বন্যা আনন্দ ভূবণ।

অবিরাম বৃষ্টির শব্দটা আজ বহুকৌণিক

যেন আটলান্টিকের তলদেশ থেকে ভ্রমণে বেড়িয়ে মধুময় প্রেমের ভাবনাগুলোকে,

চন্দ্রিমা রাত্রির উপযুক্ত করে

তৃষ্ণাকে ব্যবহারিক দীর্ঘশ্বাস থেকে রেখেছে দূরে ।

দু’ঠোটে ভেসে ওঠেছে চুম্বনের মতো বসন্ত বরণ

সহজ হাসিতে ঝরে পড়ছে দুজনের কাছথেকেই আনন্দ আয়োজনের সতস্ফুর্ত বিদ্যায়াত

ভাবনার অন্তর্গত – ৫২

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —-

মানবিক বিপর্যয়ের কাহিনি পরাজয় ঐতিহ্য ধ্বংসের অনুজ্জ্বল গল্পনিয়ে ভাবতে বসার সময় নেই এখন আমার,

হাস্যকর যেকোনো উছিলায় ঘুমন্ত নদীর বুকে ঝাপিয়ে পড়ার মতো বেয়াকুব নই বোধ হয় জীবনটাইতো পাহাড় সমান পরাজয়ের।

অতীত মস্তএক তামাশার ভাবনায় গাথা

আজ যখন আকাশ নিয়েও ঝগড়া মনভাঙা রঙবেরঙের যত্যসব আদিখ্যেতা।

নতুন পুতুল কানের দুল সে আর এক হুলুস্থুল!

কাঁচের দেয়াল ঘেঁষে জঙ্গলের চাঁদ পুড়ে ছাইহয়ে গেছে;

শিশির তাতানো আগুন নাকি হৃদয় ঝমকালো ভুল মশগুল!

রঙ্গরসে ভরা এইজীবনেও ভাবনার ফাঁকফোকর

খুঁজে খুঁজে পথের মানুষ ও পথরেখা ধরে হাঁটে দুশ্চিন্তা ত্রিকালব্যাপি পারিবারিক কেচাল দৃষ্টিতে ধুধু বালুচর

মন যমুনার বুকে জড়িয়ে আছে সমুদ্রের দুকূল।

 

 

ছুটে চলা – ৫১

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ‘–

মানুষ বলাবলি করছিলো

দীর্ঘদিনের বিতর্ক অনুজ্জ্বল গল্পকথার মিডিয়া থেকে দূরে সময়ের সঙ্গিকরে লোক মুখের বদনামগুলো,

অপরাজয় সুন্দর এবং তারুণ্যের দিকে

ছুটছে তো ছুটছেই

মন ভাঙা চাপা কথার সব গন্ধ ঢেকে রেখে ।

অনেকেরই আবার মনের বারান্দা ভর্তি হয়ে গেছে

কানকথার স্মৃতি গাঁথা আগলেরাখা যার স্বভাবে রয়েছে,

আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে গোপনে ফিরতে হয়তো পারছে

পরকীয়া চর্চা কেন এ-তো এ-তো ভারছে!

সে কথাও কাজকর্মের ফাঁকে সংসারের

মোটাতাজা করে প্রচার করছে

তোমার চোখের তরঙ্গে স্বপ্নের তীর বেয়ে

আগামীর ইচ্ছেরা সব ছুটছে এবং ছুটছে।

 

 

অবস্থাটা মোটেও স্বাভাবিক না! ৫০

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

শাহবাগের কথা থেকেই ফিরতি পথের যাত্রীরা বিশ্রাম নিচ্ছিলেন

একতলার ঘরে বসে সে-জন্যই কিছু দিনের সময় চেয়ে নিলেন!

সবিস্তারে ব্যক্ত করবেন

ছন্দক শারীরিক উন্নতির সাহায্যে একটা সোর্স স্কাইপের মাধ্যমে পপুলেশনের ব্যপার সেপার,

রিফর্মেশনের মতোই নম্র ভদ্র কৃতজ্ঞতার আধার।

গোল্লাছুট হাডুডু এক্কাদোক্কা ভোরের আলোয় ফুটক

কানা মামার ইলুমিনেটিং উচ্ছ্বাস কতক,

অনুরাগবিরাগ বিসয়ক।

 

 

ঝলমলে পুর্নিমার জোছনা দেহের প্রতিটি শিকোনো এক বিকেল -;-

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –৪৯

এমনি করে কোনো এক বিকেল অথবা সন্ধ্যা তারার আকাশ

পদ্মদিঘির ঘাটে এসে পাশে বসে

তোমাকে ভালোবাসলেই কেবল স্পর্শ বুঝতে পারি

জীবন বোধের নিঃশব্দ নিরবতা স্বপ্নময় অহর্নিশ !

প্রত্যাশার মধ্যে দাঁড়িয়ে সমস্ত রাত্রির অন্তর জুড়ে উছলে পড়ি।

তারপর দুজনেই চুপচাপ

চারপাশ নিসর্গের চিত্রালয় দৃষ্টির মাধুরি মিশিয়ে প্রান্তের কাছাকাছি স্বপ্নদীপ,

কিছুতেই বুঝেনা সময় প্রত্যাশার চেয়েও আনন্দময়

সুখমতীর নদীর ধার ইচ্ছে করেই যেন বুকে জড়িয়ে লয়।

তোমার শরীরের লাবণ্যে স্নান ঘরের নির্জনতায়

আমার হৃদয় মর্মমূলে প্রার্থনার পবিত্রতায়

আশ্চর্য এক উৎসব ছড়িয়ে উদ্ভাসিত আলোয়

রায় শিরায়।

 

 

মাছরাঙা বিকেল! ৪৮

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –

জীবনবোধের সবকথাই জানো তুমি

আমি ছিলাম শিকড় ছাড়া অকর্মাএক কুঁড়ে, মাথা ভর্তি পুরোটায়-ই সার গোবর জলাজমি,

মন রোমান্স কি বুঝেনি তখনও

বৃক্ষহীন প্রান্তর দৃষ্টির সীমানা জুড়ে

বন্ধুরা অনেকেই বলতো আঁট খুরো নিকষ এক ভূতূড়ে!

তুমিই প্রথম প্রেমের স্পর্শে ভালোবাসা শিখালে

জীবনের রঙে নিসর্গের মাধুরী মিশিয়ে দেখালে

আস্ত এক মহৎ হৃদয় খুলে।

একটা দুপুর মুখ বুজে দোদ্রে বুকে গা ভাসিয়ে তোমার পিছু নিলাম জলের পর মাছরাঙা আকাশ

তখন যৌবন খুঁজেফিরে গ্রীস্মের তরতাজা বাতাস।

তোমার হৃদয়ের অভ্যন্তরে লুকানো আবেগ কামনার কণ্ঠস্বরের মস্তিষ্কে নিউরনের অনুরণন

আঙুলে আঙুল কথার ভাবধারা ছন্দে ছন্দে শব্দধারার মতন,

সেদিন থেকেই তোমারে জেনেছি মনের দর্পন।

শুধু শুধু মিছে মিছি নয়

জীবনের পুরোটাই প্রেম পূর্ণ হৃদয়।

 

 

দৃষ্টিকেমন বেসুরে বাজে!৪৭

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —

নদী যেমন বুক পেতে সহস্র আঘাত সইয়ে সইয়েই ছুটে চলে ঐ দূর পথে অজানায়,

ভালোবাসলেও অনেক কিছু মেনে নিতে হয়

সূর্যের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে সে আবার মেঘেরই!

চারপাশ ডেকে ফেলে মেঘ যতই চিৎকার চেঁচামেচি করে তা করুক, বৃষ্টি টগবগ করে এক সময় ঝরে পড়বেই।

তোমরা হয়তো বলবে এসবই আজগুবি চিন্তা

সাগর কতো বড়ো তাকালেই কেঁপে ওঠে ভিতরটা কেমন সাদা সাদা নীল জল বিষাদে ভরা নোনতা।

 

 

পথ -৪৬

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —

সত্যি সত্যিই লজ্জিত আমি

আমি কি তার সবটুকু জানি?

বয়সীরা অনেকেই পারিবারিক মন্ত্র উচ্চারণে

নিজেরে ভাবে সারাক্ষণ উচ্চ শ্রেণী!

এজন্যই মাথা নিচুকরে নিজেরে বোঝাই

ঐকথাটা কোনোকিছু নাভেবে বলেফেলেছি অজথাই।

বন্দনার মাঠ জুড়ে স্পর্শ পেতে খুলে দাও দক্ষিণ দুয়ার

আমিতো ভেঙ্গে ফেলেছি ছেলেমানুষী সব বিকেল স্বপ্নের মশক চোখের পর।

শরীরের বাঁক ধরে ঐপথ

খসখসে ইচ্ছের প্রান্তটা আজ মৃত!

 

 

অর্ধেকের বেশি৪৫

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -+

প্রয়োজনে রেললাইনের পাশে একেঅপরের সাথে বিবাদে জড়াবো

বস্তির শিশুদের সাথে রসিকতায় মিশবো

মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দেখে কোনো এক ছোট্ট কুঠুরিতে আশ্রয় নিবো, সঙ্গী তাদেরই হবো!

জীবনের দিকে আক্রমণ আসলে সাহস জাগাবো

ভালোবাসায় বুক বেঁধে তাদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুনে দেখাবো

তবুও হৃদয়ে তোমার বাড়াবো না কষ্টের ভার

এমনেতেই গাদাগাদি করে রেখেছো প্রণয় পুরে দুশ্চিন্তার

ঝিরিঝিরি বাতাসে পাহাড়ের চুড়ায় বসে সযত্নে জোছনার আলো মুঠোয় পুরে উড়াবো।

বলেছিলে সুখ দুঃখ অর্ধেক তোমার অর্ধেক আমার

অথচ দুঃখেরা অর্ধেকের বেশি কপালে আমার।

মানব শিখর -৪৪

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

পাইনি কোথাও মর্ত্যলোকের, পুবে পশ্চিমে

বাস্তবতার ফানুস উড়ানোই সার, কোথায় খুঁজিনি আমি? মাতাল পুর ত্রিবেদী সঙ্গমে।

এই সবুজ গাস সরোবর সবজি চাষ অসীম আকাশ

কোথাও নেই আর ত্রিভূবণ জুড়ে বন্দনা মুখর আনন্দ উচ্ছ্বাস!

সবুজ গালিচা শস্যভূমি এমনটা কোথাও খুঁজে পাইনি আমি

সর্বংসহা শুশ্রূষা কামিনী অস্তিত্বের নেশার মতো আমার জন্ম দাত্রীনী তুমি জন্মভূমি।

পাখিডাকা ভোর মাছরাঙা বসন্তপুর

সকল প্রত্যাশার মধ্যেই চিরসুন্দর মনোহর

অখণ্ড জীবনবোধ আজম্ম লালিত স্বপ্ন মানব শিখর।

 

 

ছে দৃষ্টিহীন চোখ।ষ্টিহীন চোখ –

– রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -৪৩

দৃষ্টিহীন চোখগুলোও মাঝে মধ্যে ঝলসে ওঠে

অন্যায্য ব্যবহারে

অন্ধকার যতটা বোঝে আলোর ঝলকানি

শব্দের ভীরে কেঁপে কেঁপে দুমরে মুচড়ে আলোর বিপরীতে

তীব্র হিংস্র মনের ষ্টেশন গুলো গুনতে গুনতে।

আগ্নেয়ঝড় মঙ্গায় পীড়িত প্রিয় মুখ পরাস্ত করে অন্তহীন আগুন মুখা নদীর বুক

যেন অপচ্ছায়া দৃষ্টির সামনে ঘুরে ফিরে ঊধর্বশ্বাসের উসখুস অন্ধকারে পড়ে আ

 

 

 

এ আমার অতি দূর!৪২

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —

কতো দূর আজ আর মনে নেই মরচে পড়া কাঁচের টুকরো বিমর্ষ এক কালো ছায়ায়!

সমস্ত সবুজ মুছে কালো কার্বণে ডাকা পরেগেছে পাথরের উপর পুরনো সব কথার গন্ধের মতো

অতিদূর চাঁদ ডুবে যাওয়া সন্ধ্যা ঘনীভূত হয়,

স্বপ্ন নয় সময়ের ভার গাদাগাদি করে দৃষ্টির পর রেখে দেয়।

নাগরিক জীবনের কোলাহল ছেড়ে এখনো দু-চোখ চলে যায়,

অতিদূর শান্ত সবুজ তরঙ্গিণীর খোলা মাঠে যেখানে মন গড়াগড়ি খায়

কাঁচা সোনারোদ মেঠো পথ ধরে সবুজ সমুদ্রের প্রান্তসীমায়,

বুকের ভিতর আকুল করা হীমসন্ধ্যার ডানায় ডানায়।

জীবন সুখ সখা ব্লাকহোল নীরব শূন্যতার কাছেই যথাযথ পরিচয় প্রতিসাম্যের,

সময়ের সোপানে গেঁথে রেখেছি অক্লান্ত বিচরণ স্থিতিস্থাপকতার।

 

 

কোনো এক সন্ধ্যার বাঁকে- ৪১

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —

জন্মে ছিলাম এই শহরেরই কোনো এক জলমগ্ন প্রান্তসীমায়, সন্ধ্যার বাঁকে

দিকচিহ্নহীন নির্জনতায় প্রকাশ থাকে

অন্ধকারে জমেথাকে চতুর্মুখী স্রোত শৈবাল লতাপাতা,

তাল গাছ মাথার উপর দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করে তাপগন্ধ রোদ্রদেবতা,

পথের শেষে তোমার কণ্ঠের বাঁধভাঙ্গা কল্লোল সে এক অন্য রকম সাহসী প্রত্যয়।

অক্লান্ত মন পর্বত মালার বাতাসে বসন্তপূর্ণিমা

আলোর মিছিল শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে জীবননৃত্য মনের গহীন কাঁপে সন্ধ্যার মত্ততায়।

 

 

স্টেশন –

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-৪০

তোমায় ঘিরে বেঁচেথাকার স্টেশন গুলো চোখের পর ধরে কেমন যেন বেশুমার এক প্রতিধবনি শুনি

মাঝপথে একাএকা ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটতেও জানি,

ফুটপাতের টংদোকান আড়াল করে ভালোবাসায় অংকিত দহন শেষের এই দেহখানি।

আমি একা হঠাৎ হাওয়ার অন্যআলো

হিমালয় থেকে নীলকুঠি জীবনের জয়গান গাইতে হলো!

 

 

অচেনা প্রহরে -৩৯

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;’

সৌন্দর্য বৃদ্ধির রঙে অর্থ বদলে যায় পথের

সবকিছুতেই কেমন একটা অচেনা আনাগোনা মূলশব্দের পোশাক ওড়নায় বার্ণিশ করা মুখ

দৃষ্টির সৌষ্ঠব আলাদা পুরোপুরি থুতনি বরাবর

কোমল একজোড়া চোখ, অরণ্যে দাঁড়িয়ে বিলের জল

প্রতিচ্ছবি হই দিশেহারা চতুরঙ্গ আকাশ,

সনাতন পথরেখা এযেন এক নতুন প্রাণ সুখলতার ইতিহাস।

আমার দুচোখ আয়ত্ত পূর্ণমাত্রায়

স্বজন পড়শী ছেড়ে অনন্তশূণ্যতায়,

ভালোবাসার ভাব দেনার দায়ে নিরুদ্দেশ চর্চায়।

 

 

সাঁতার -৩৮

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –

ঝলমলে সূর্যের গভীর অরণ্যে দাঁড়িয়ে

সবুজ করোটির পর একমাত্র একা তুমি নিজে কেমন করে এতো আলো যাও বিলিয়ে!

উপশহর থেকে ঝরা পাতার দুপুরে

ফিরে এসে প্রস্ফুটিত শিমুল ছায়ার ভীরে।

সিঁথির মতো তোমার মেঠোপথ ধরে মনে পড়ে কোনো এক সাঁতার কাটা সন্ধ্যায় হাঁটতে ছিলাম স্মৃতির পাড় উল্টো করে,

চৈত্রের রৌদ্রে সমস্ত শরীর স্মৃতির মোহরে মোড়ে।

 

 

হেমন্ত অথবা পৌষ!

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;৩৭

বিস্ময়ের কোনো সীমারেখা নেই

একটুকরো মিস্ট্রি বাতাস অথবা পৌষের নিথর সেই – নিঃশ্বাসে একটুখানি চাহনী, যেতে যেতে উপরে তাকায়,

অগোছালো বিস্ময়ের সঙ্গে হয়তো প্রকৃতি মাতায়!

নবপ্রভাতের দিকে

মাঝে মধ্যে শব্দ করে ডালে ডালে পাতায় পাতায় কোমর জড়ায়ে সৌন্দয্যের অন্তরাল রেখে

কেউ একজন দুপুর বেলার আয়োজনে পৃথিবীর বুক দেখে।

অদলবদল মন জেগেউঠে যখন

গুণ গুণ করে ফেরত গেলে বুকের নাচন?

এই বেলা সৌন্দর্যের ডাকে ফিরে তাকালে

শব্দের ভিতর থেকে সমতলে

একে একে হেমন্ত অথবা পৌষের কাছাকাছি

কোনো এক গভীরতায় হয়তো চিনে রেখেছি।

 

 

 

চোখের পর ৩৬

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

পরিনামহীন দিনগতক্ষণ প্রহর

পাল্টেযায় যখনই দৃষ্টি পড়ে কারো চোখের পর,

প্রেমিক নয় ভাবুক মন দোটানায় দুলে

দৃষ্টিভঙ্গির দোলাচলে

সম্পর্ক বদল হয় আশ্চর্য রঙের।

ধূসর ওপার থেকে

নিজের মধ্যে অপার বিস্তার দেখো

আত্মকথায় চাপা সুরের তুষার বুকে

ছাড়ো স্মৃতির আলিঙ্গন

ভালোবেসে বাতাসের দিগন্ত উড়ছে যখন!

 

 

জল সমাচার -;- ৩৫

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –

যদি মেঘ খুঁজ পায় নিস্তব্ধ কোনো প্রহরে

অগ্নিমুখ মূল শব্দথেকে ফাঁক গলিয়ে

পিপাসাকূল জলস্থল রৌদ্রস্নানে স্পর্শের পোশাক পড়িয়ে,

বুকে জমে স্বর্ণের মতো জ্বলজ্বলে রঙ

দৃষ্টি দেহের অন্ধকারে

সুনির্মিত সৌষ্ঠব বড়ো চকচকে

নুতন অনুভূতির তন্দ্রা অমর্যাদায় ফুর্তি করে

রঙ্গিন জল বিষাদময় লবণ পানিতে ছেঁকে!

 

 

বর্ণালী চিত্র সম্ভার -৩৪

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –

অসাম্য প্রকৃতির অপূর্ব অভিন্নতায় অগনণন এই অর্জন

ফুলে ফুলে প্রজাতি লুটিয়ে পড়ে মধু পান করে স্বপ্ন বুনে নিজের মনে রঙিন রঙিন!

সবুজ গাসের ডগায় শিশির জমে নির্মল এক নিয়মে

চকচকে সোনারোদ শূন্যে উড়ে দৃষ্টির উপর দিয়ে ।

আমার কল্পনায় উড়ন্ত ডানা মেলে তোমার চোখ

শূণ্যতার অসীম আকাশ

ফুল পাখী স্বপনীল রাজহাঁস

হৃদয় জুড়ে সবুজ ফ্রেমে বেঁধে রাখি

সোনালী প্রলেপ মাখা চতুর্দিক

দৃষ্টির উপকূলে সারাক্ষণ নির্ভয় তোমায় দেখি।

 

 

সময়ের ধাপ ৩৩

– রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;—

উধর্বগামী;আগামী সময়ের ধাপ বেয়ে উঠছিতো উঠছি, বেড়ে উঠছি

অচেতন থেকে সেরে উঠছি

হৃতচিত্তের আবছায়ায় ডুবছি- জেগে উঠছি

অভিজ্ঞতার হাতে মাঝে মধ্যে ধরাও পড়ছি

নিজেরে নিজের ভিতর হারিয়ে ফেলছি।

জলের পর দৃষ্টির দিগন্ত উড়ছে দেখছি

জল রঙের আনাগোনা

হৃদয়ের আশপাশে কিছু মানুষের মুক্ত অবয়ব জুড়ে মলিনতার গন্ধ পাচ্ছি।

ওগো জন্ম ওগো মন স্মৃতি ভ্রমো অতলে বিস্মরণ

অধরখোলা সাধনার ধন মনোমোহন!

মন কেমন এখন সময়ের সঙ্গের অভিযাত্রী

অসীম থেকে কালান্তর উধর্বমূখী হাঁটছে

রূপসী রাত সময়ের ধাপে ধাপে দিনাতিপাত করছে।

শ্রাবন কার্তিক – ৩২

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

সব সময় কি ভালোই বলবে লোকে

মাঝে মধ্যে মন্দ কিছু শুনতেই হবে তোকে,

মুখটা না হয় বাঁকাকরেই সগৌরবে বলছে

দুঃখের সাগরে পুর্বপুরুষ সারাজীবন এমনি করেই চলছে! ।

জোয়ার ভাটা জীবন সবার

সকাল দুপুর সন্ধ্যা,

রাতনিশিতে জোছনা ঝরে ভাবছো আমরা সবাই আন্ধা,

অবিশ্বাস্য প্রকৃতির ভিতর বেঁচে থাকা আস্তো একটা মহাধান্ধা।

শিশিরের জল সতেজ করে ফসল শস্য শ্যামল

লতাগুল্মের ব্যাকূল করা নরম কোমল বুক

চাষির মুখের হাসি সুশীতল দৃষ্টির ছোঁয়ায় হৃদয়ে পরম সুখ।

ঐশ্বর্যের সৌন্দর্য সব ঘিরে স্বপ্ন আনন্দময়

পথের মাঝেই দাঁড়িয়ে আছি, তোমার আমার পরিচয়।

এমন পুর্নাঙ্গ কীর্তি একজনই পারে সে কৃষক- শ্রমিক

গোধূলী লগ্নের প্রোমোদকানন প্রিয় ঋতু শ্রাবণ কার্তিক।

 

 

 

আনন্দের ঘ্রাণ -৩১

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

ধৈর্যের পাহাড় থেকে নেমে অফুরন্ত দৃষ্টির খোলা জানালায়,

জল কেলির হাওয়ার দোলায়

মুক্ত জলরাশী রূপালী আলোর ঝলকানির দিকে অবিরাম ছুটে চলা মনের প্রান্তর ছুঁয়ে দিয়ে নিজস্ব স্বপ্ন ধারায়।

বিলাসী অনুভব ঘুমপাড়িয়ে রেখেসিছ বহুকাল

তিব্র তীক্ষ আকাঙ্ক্ষা বিষাদের ভিতর দুমড়ে মুচড়ে করে তুলেছিলে হাপিত্যেশের আশ্রয় স্থল,

চোরাগোপ্তা হামলার অনুসারীর ন্যায় ত্রাসের পূজারী করে রেখেছো ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছিলো অন্তরমম দৃষ্টির খেয়াল।

জনবহুল নির্ভেজাল স্থলস্থান প্রশান্তির আহবানে টেনেআনে উন্মুক্ত দৃষ্টির তীক্ষ আনন্দের ঘ্রাণে,

একফালি সাদামেঘ মুগ্ধতার মোহজাল আকাশ পানের মধ্যখানে।

 

 

 

নির্জনতার দখলে ৩০

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

হাওয়ার চাদরে মুড়ে নিজেকে

ছেড়ে দিয়েছি নির্জনতার দখলে

সপ্তশূণ্যের মতোই,

গ্রামের পাশে তৃষ্ণার্তের আহরিত জলের আশ্ররস্থল খরস্রোতা নদী লেজগুটিয়ে রেখেছে শীত আসার আগেই। সেই ভয়ে নিজেকে বিলীন করতে আজ স্মৃতির জন্য বর্ণাট্য শিবিরে সঞ্চয়ের দিকে নিয়ে যাই।

রোদ্রের নীচে সবুজের মধ্যে শব্দময় সংগীতের বিশুদ্ধ কণ্ঠস্বর

ঝলমলে মৃত্তিকার আলো গহীন অরণ্য থেকে বেরিয়ে এসে চৈত্রের জমিনের মতো তেল চিড়চিড়,

বাহির পানে তাকালে চোখ কেমন প্রার্থনায় ভরে ভবিষ্যতে গান গায়

একা নির্জনতার দখলে বসে বিস্মৃত দিন বদলের নেশায় ।

 

 

 

দু’জন – ২৯

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

নিশ্চিত ভাবেই কি বলা যায় দুজন ভালোবেসেছিলো?

জ্ঞানের সকল শাখায় খোঁজ নিয়ে জানাগেলো

লিফটে আলোচনার বিষয় উত্তর আধুনিক না মর্ডাণীজমে বাস্তবজ্ঞান!

আত্মসাংস্কৃতিক মাপকাঠি জানিয়ে দিলো,

মন ঘুরিয়ে নিয়ে উল্টো পথের দুজন এক হলো

যুক্তির নিরিখে অজস্র গবেষণা থেকে তা-ই জানালো।

খালি চোখে দেখলে দুজনই আলাভোলা

জগতে ওরিয়েন্টালিজমের মূল বক্তব্য আধিপত্যের শিকার,

দৃষ্টির কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যেও মনের সহচর তৃতীয় সত্তার।

সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার দৃষ্টিতে সর্বদাই উপস্থিত হীনমন্যতার

মনের অন্দরে পৌঁছাতে পারলেই প্রেমিকরূপে সমঝদার, নান্দনিক মন শিল্পকর্মে বরাবরই নির্লোভ

শিল্পকলাকে নিজের করে রেখে মনোজগতের পরিবর্তন অবশ্যই বহুমুখী সৃকৃতি স্বরূপ

নিজেকে দাঁড় করাতে হবে সম্পূর্ণ উত্তরাধুনিক

হয়তো কিছুটা মৌলিক এবং সৌন্দর্য বর্ণিক।

উপশহর -২৮

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —

একদিন রাতে শীতলক্ষ্যার উপকূলে বাসে চড়ে নরসিংদী টু ঢাকা,

এতোদিন পরও তোমার দামনে দাঁড়িয়ে বলতে হচ্ছে আমি আসলেই একদম একা,

সকালের সব স্বপ্ন যেন চুরিহয়ে গেলো!

চারপাশে তাকিয়ে দেখি স্মৃতির দুয়ার কেমন এলোমেলো।

ধিরে ধিরে বহু দিন ধরেই ভাবছি নিজের সঙ্গে একটা রফা করে নিলে কেমন হয়

বালুনদী শীতলক্ষ্যার কোলঘেঁষে যার পরিচয়

শুনলাম নতুন ব্রিজ তারপর ও যানজট আগের চেয়ে একটু বেশিই হয়!।

চারলেনের মহাসড়ক উড়াল সেতু ডেমরা বাসির কিখবর?

উন্নয়ন সব শহরমুখী উপশহর যানজট মুক্ত হবে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর

একথাই শুনে আসছি বছরের পর বছর।

 

 

 

কোনো এক বসন্তের রাতে-২৭

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

তৃষ্ণাচ্ছাদিত বুকের নিঃশ্বাস গাও গ্রামের হাস্যপুস্পঅধর দৃষ্টি জুড়ে,

ইচ্ছে জাগানিয়া স্বপ্ন শস্যের বীজ থেকে প্রাণ ধরে,

রুদ্রকরুজ্জল ছিমছাম নীলাকাশে সাদা মেঘ থরে থরে।

শরৎ শেষে শীতের কথা মনে আসছে

তুষার বুকে আমরা দু’জন হেঁটে হেঁটে ছায়া রৌদ্রের পাতাঝরা পথে প্রাণে প্রাণে মনের রঙ ফিরে আসছে।

গ্রিস্মের খরতাপে জৈষ্ঠ্যেরশেষে ঝর্ণা তলের শীতল জলে

বুক ঝেড়ে নিঃশ্বাস ফেলে

তুমি এসে যখনই পাশে দাঁড়ালে,

পারিতো উত্তেজনায় দাঁড়ায়ে জড়িয়ে ধরে বুকে

তুমি হয়তো ভাববে এখনই উঠেছি ঘুমথেকে

আশ্চর্য এক উৎসবে মেতে

শীত শেষের কোনো এক বসন্তের রাতে।

 

 

 

 

মর্ডানিজম ২৬

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

বিয়ে করে ছেলে আলাদা হয়ে যাচ্ছে

বউ রান্না ঘরে যেতে চাচ্ছে না,

এখন আর বাপমা”র কথা ভাবনায় আসে না,

মা’য়ের হাতের রান্নায় আগের সেই যশ খুঁজলে মিলছে না

পুত্রএখন মস্তবড়ো মর্ডানিজম আধুনিক মনা।

চালা ঘরে যাত্রা পালা

কপাল ছুঁয়েছে ভাতের থালা!

জানালা দরজায় বেরসিক সব গাছের ঝাপটা এটা কি আর খড়ের চালা?

মন আগের মতো কেন ভাবছেন খসখসে সারাশরীর

পান্তাভাত গুড় মুরি চাদের আলো একচালা টিনের ঘর।

ফুলের ঝাড়ু ফ্র্যাট বাড়ি

মাটি ফুঁড়ে দেয়াল গড়ি,

বড়ো বড়ো টবের পর নদর এবং সুন্দর ফুলের যত্ন নিজ হাতে করি।

আলট্রা মর্ডান ডয়িংকরা ছোফার উপর বিশ্বাস যত মজুত করি,

নীচুহয়ে আসছে আকাশ কাঁপছে ভূখন্ড

নষ্টকরার মতো নেই সময় ক্লান্তির নামে আয়েশ করবো দুদণ্ড

মেঘলা দিন২৫

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;—

শুরুতে আকাশ পরিস্কারই চিলো

হঠাৎ কেমন ঘনকালো অন্ধকারে চারদিক ঘিরে দাঁড়ালো,

সারাদিন গুড়িগুড়ি বৃষ্টি কাঁদাজলে পিচ্ছিল পথ ভীরুপায়ে হেঁটে হেঁটে ফসকে গেলো পা পরের সন্ধ্যায় কথাছিলো তোমার আমার

জোছনালোকিত আকাশে তাঁরা দেখার

মেঘলা মন সব আনন্দ মাটি করে দিলো ধূসর কায়াহীন, ছেঁড়া ছেঁড়া বৃষ্টির লাবণ্যে অালস্যের সোনালী একটা দিন,

নির্জন বিষন্নতায় সজ্জিত এক দুঃখের বিষয়

যাতনার উৎসব এলোমেলো জলজ নিশ্চল নির্দয়, বায়ুর গুরুগম্ভীর ঘুর্ণি নিসর্গের একান্ত বুকের ভিতরকার নিজস্ব নারীও নগরীর বিপুল বাসনার

অশ্রু টলটল স্মৃতির ঢেউয়ে জলের খুনোখুনি তিতকুটে নুনে ভাজা বাসনার বিদায়

বিস্ময় ধরেই আকার বিদীর্ণ করে বৃষ্টি হয়!

শীতলক্ষ্যা নদী টপকে আস্তানা উপত্যকায়

দূর – ২৪

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

দূর আরো বহু দূর

দৃষ্টির সীমা ছেড়ে অনন্ত পুর,

দৃষ্টির উপর ধরে তুলে শুধু শূন্য ধূ ধূ,

সে কি অমরাবতীর মধু?

প্রাণ করে অঙ্গার জানালার দ্বার

মৃদুমন্দ হাওয়া নিবিড় কৃষ্ণ বায়ূর

স্থীর শূন্যতায় ভাসা গর্জনচক্রের পাহাড়।

দেখে নাও স্নানের ঘর

উৎসাহ পেয়ে যাবে সঙ্গে কণ্ঠ বহর,

চুক্তি অথবা বশ্যতা ক্রমেই ধুকছে ওষ্ঠাধর

শ্রেয়বুদ্ধির পূর্ণপ্রয়োগ এমাসেই এগারো তারিখ বুধবার।

বাক্যলাপের ব্যবস্থা সম্ভব নয়

প্রত্যাবর্তন ন্যুইয়র্কথেকেই ফেরাতে তারবার্তা পঠিত হয়, বিশদদৃষ্টিতে জগত দেখতে চৈতন্যের অতীত

ডলারের লোভ বক্তৃতায় সীমিত

পন্ডিতজীকে দুর্যোগ ঠেলে স্থিতধীর কড়জোড়

ভ্রমণের তথ্য সতন্ত্র ঘরে আরও দূর।

 

 

 

 

মন নড়েচড়ে -২৩

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –;

তখনই মনে ছুঁয় এক চিলতে কালো মেঘ

সূর্য মাথার উপর থেকে পড়শীর মতো যখন দাঁড়ায় ছায়ার আড়ালে

সময়টা দিন ঘুরাবার পাককালে।

আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ

চিন্তার মধ্যে নিম্ন গামী

দৌড় ঝাপ কিছুই বুঝিনা আমি

আধা ডাঙায় জলে দেহের উপরী ভাগ।

রৌদ্রের আলো রোজ সকালে

সরাসরি বুকের পর বসে আমার

নিদ্রভাঙ্গার এটা একটা উপযুক্ত কারণ ধারণা আমার আম্মার,

লজ্জাহীন সূর্য দুপুর পর্যন্ত নগ্ন দেহের স্থানে স্থানে হানাদেয় দেহের আনাচে কানাচে

শরীর কেমন জালা করে যেন বৈশাখের খরতাপে দৃষ্টি নাচে সূর্য হাসে

শেষ পর্যন্ত তলিয়ে যায় পশ্চিম আকাশে।

 

 

 

কোলাহল –

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;–২২

নাগরিক জীবন অর্থের মিল অমিল হিসাব নিকাশ অর্ধেক জীবন ধরে ঢের বোঝে,

কোলাহল ছেড়ে মন চায় নিরিবিলি প্রকৃতিক ছায়া খুঁজে

দেহের আলো নিভে গেলে

দুর্নীতির পর ঘুষ ছেড়ে পাগড়ি পরে তবজি হাতে মুখে দুরুদ মিলে ! ।

চাঁদমুখ মায়ার ফাঁদে

দ্বীনদুঃখী পথের ভিখারি অসহায় কতশত নারী

প্রতিরাতে দুঃস্বপ্নের মধ্য থেকে আর্তনাদ করে কাঁদে,

নিজস্ব গোপন আলোয় সন্ধ্যা নেমে এলে

বিষাদের কালো ছায়া হাত বাড়িয়ে কোলে তুলে নিলে!

আগুন মুখো জীবন

নাভীর নীচ তৃষ্ণার নদী ডুবসাঁতার খেলে

অপাপবিদ্ধ আলোয় ভাসিয়ে নীল জলে,

সেদিনের কথা ভেবে জোর মন্ত্র উচ্চারণ

স্বপ্ন নয় প্রতিদিনকার মুক্তি কামি মন

স্টেশনে বিকেল নামে

বসন্ত পূর্নিমা তুমুল ভাবনা সূচির দরদামে।

তাকেতো চেনো সকলেই

উদ্যম যেন হাসির মুকুট ধরেই

ণির্বাণ লাভের মহাজাগতিক

কবিতার পঙক্তি স্রোতের আয়োজক! ।

ভাবনায় ফিরে ” ২১

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —

ভাবনার তীরে নিরব তোমার অতীত

যখনই সামনে এলো

লোকে বলাবলি করছিলো,

অগ্নিয়রসের ফাঁদে পড়ে গেল

তা নয় কিন্তু আসলে দাবানল ছিল।

পৌষ- ফাগুনের স্থলে

সন তারিখ উন্মোচন করে নিলো,

ঘৃণার স্রোতে প্রতিবেশীর বিপরীতে

উদ্বৃত্তের সময় কোথায় উন্মুক্ত দৃষ্টি পাতে?

এশহরেরই বিশেষ এক স্থানে নিরবে দুঃখের ছায়া হৃদয়ে ভাসে অবিরত

আমি যে এ শহরেই থাকি নিঃসঙ্গ চোখের মতো,

দূর প্রান্তবাসি বধ্যভূমির কাছাকাছি

রক্তবিন্দু জমে আছে দুর্যোগে সব হারিয়েছি।

দেখে বড়ো ভালো লাগে

শিল্পালয়ের উপরিভাগে

ধর্ষিতা নারীর ছবি,

সত্যি মানতে হলো! ভালোবাসা কাকে বলে

দেখাতে পেরেছি

কবিরা আসলেই কি উদাসী?

জীবনানন্দ প্রকৃতি বিষয়ক কবি?

 

 

 

কল্পনায় জমানো ভুল -২০

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু

বিকল্পএক নেশার ভিতর নিজের সর্বনাশ ভরে

তোমার কল্পনায় মাতোয়ারা

ধূলার ঝড়ে চোখমুছে ভুলগুলো কেবলই কাঁদে,

তোমার গভীর প্ররোচনার লীলাচ্ছলে বিছানার ফাঁদে।

তারপরও আবার মন সীমাহীনতার দিকে

ক্যাটরিনা’র সাজে উড়ছে আজ সকাল থেকে,

শরীরে তার ঘুরে ঘুরে নাচছে আনন্দ নির্ভেজাল

দেহ ধরে ধরে গড়িয়ে পড়ছে মহাকাল।

আমি চোখ তুলে তাকাচ্ছি নিভৃতের রেখা ধরে ঐদিগন্তের

ঝলমল করে উঠছে হৃদয়ের প্রবেশ দ্বার,

আমার ভালোবাসার মধ্যে রঙের সুর

প্রেমের ভাবনাগুলোর

নীলজলের ডেক্সে মুখ দেখা যায়,

সে পথ বড়ো ঝুঁকির পথ ভাসা ভাসা কল্পনায়,

চেনাবে মুগ্ধ গন্ধ ডুবসাঁতার

নিজেকে ভালোবাসা সোনার মতো ভার।

 

 

 

অতীত থেকে ফিরে-;—১৯

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;

ডাকনাম ডালিয়া থেকে, এখন ডেসি

আমরা সবাই গ্রাম থেকে ফিরে –

আধুনিক হতে ভালোবাসি

নিজেরে আধুনিক করে উড়তে দেখেছি,

অতীত থেকে ফিরে পাড়া গায়ের সমস্ত সবুজ

মোবাইল ফোনে প্রোফাইল পিকচার করেছি!

দিনের আলো কখন জ্বলে কখন নীভে

কে খবর রাখে তার,

সমুদ্রের ধারে ও ঝলমলে বৈদ্যুতিক আলো সূর্য কখন উঠে- ডুবে, জানার ইচ্ছে নাই এখন কারো আর

পৃথিবী জুড়ে বন্দনা আধুনিকতা ও খোলামেলার।

অতকিছু কি আর মনে রাখা যায় শুনেছি মা বলতেন

সন্ধ্যে নেমে এলে দাদী নানিরা পিদিম জ্বালাতেন,

আমরা এখন ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখি বৃষ্টির গুঁড়োর মতো ভাসছে আকাশ,

কে তাকিয়ে দেখে কখন সন্ধ্যা নামলো কোথায় ভাবনার অবকাশ?

অনুতাপের মধ্যে গড়াগড়ি খাওয়া ভাঙাকাঁচ বিমর্ষ বিরাগ, অতীত ভেবে ফেলে রেখেছি স্মৃতি কথার পাহাড়

হাতের মুঠোয় পুরোপৃথিবী ফেসবুক ফ্যান্ট সবাই আমরা নতুন চমক উপহার এখন সেলফি তুলার।

দিনের শুরু বদলে দিতে ইন্টারনেট যথেষ্ট ভালো

কোথাও যাওয়ার দরকার নেই চিন্তা সব মুখস্থ হলো।

এই নিরাবলম্ব আবেগ আশ্রয়হীন দৃষ্টির বিভীষিকা

বিমর্ষ নির্জনের রক্তাক্ত ক্রন্দনে সবুজ মুছা বহুসংস্কৃতির বড়ো অর্জনের প্রবেশিকা

নির্জন গায়ের পথে -১৮

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;

অতীত হয়ে এলো সেই নির্জন দুপুর

যেখানে সবাই বিদায় জানিয়ে তোমার দৃষ্টির পর

দাঁড়করিয়ে দিয়ে ফিরে গেলো,

থমথমে আকাশ চারপাশ অন্ধকারে ঢেকে দিলো

ভয় আতঙ্কে বুক কাঁপছে শরীরের বাঁক হাড়গোড় যতো,

দেহের কাছে আকুল দৃষ্টিতে টেনে নিচ্ছিলে তুমি হিংস্র বাঘের মতো ।

একটু ও প্রস্তুত ছিলাম না অমন আকর্ষীক ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলার জন্য

তোমার হাতের স্পর্শ আমার ঠোঁটে ছোয়াতেই অতলে তলিয়ে যাচ্ছিলাম প্রাণপণে আকঁড়ে ধরে তোমার বুকে মাথা লুকাই দৃষ্টিথেকে নিজেকে রক্ষা করার ঐ-ই ছিলো একমাত্র উপায়, অনন্য।

আমরা দু’জন একই শহরে থাকি

শপথ করেছিলাম নাকি?

অকে অন্যের, খবরাখবর একেবারেই যেন না রাখি!

দৃষ্টি ফিরালে আগুন জ্বলে উঠে বিছানায়

যদিও দৃষ্টির বৃষ্টি আগের মতোই অঝোর ধারায়

আসল কথা কি জানো?

সেই নির্জন দুপুর ভুলতে পারিনি এখনো

খোলা প্রান্তর এক চিলতে সবুজ অরণ্য

তীর্থ ক্ষেত্রের ন্যায় ডাকছে ছুটে চলার জন্য।

ন্দে ব্যাকূল-১৭

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

এই দৃষ্টির মধ্যেই ছিল আনন্দে ফেরা

ছন্দে ব্যাকূল ওষ্ঠাধরে হাসির ফোয়ারা

আমার মধ্যের ঝুমকো রাত তোমার প্রেমে মাতোয়ারা

কেমন একটা চেনা গন্ধের টানে হৃদয় আজ দিশেহারা।

কামাতুর দৃষ্টির লীলাচ্ছলে উত্তাল প্রণয়োপকূল

যুগ-যুগান্তর ধরে চোখ তুলে তাকিয়ে আছি আকাশ নয় তোমার দিকে চাঁদোয়ার বুক চিড়ে সপ্তরঙের রেখায়

কপালের উপর ছড়িয়ে আছে রেশমি কোমল চুল।

আর ঢেলে দিয়েছিলাম নিজেকে ও

ভিষণ আলোয় ভাঙতে ভাঙতে দিগন্তের মুগ্ধতায় অশ্রু হয়ে মিশে তোমার উপযোগী হয়ে উঠছি আরও।

বসন্ত আসছে জানলে কিশলয়ে উঁকি দেয় সোঁদাগন্ধমাখা নিশুতিও।

আর একটু বাঁক আর একটু নারাঙ্গি বাতাস

মেঘ আসছে ছেয়ে

সুপারী বাগান ঘিরে মগডালে মেঘ গজরায় লোকে ভাবছে অলক্ষুণে মেয়ে

বয়স হয়েছে এখনো কেন দাওনা বিয়ে?

এটা পুরোটাই রূপ লাবণ্যের ঝুঁকি থেকে

মাথা তুলে দেখে শেষ বার দিব্যী করে রেখেছি আবেগময় অনুরাগের আবাস!

আরও খানিকটা আহলাদ স্বাদ কিভাবে যেন হারিয়েছি।

 

 

 

 

উন্মাদ রোগের সাথে – ১৬

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

আশ্বিন কার্তিক শেষে ঘাস ফুল মৌমাছিদের মহাউৎসব

রূপচমকের লাবণ্যে দৃষ্টির দুয়ার খুলে

সুবিশাল পৃথিবীর বুক থেকে চুষে মধু তুলে,

রেখা আর রঙের মোড়ে অনায়াসে যখনি দাঁড়ায়

ভেঁজা ভেঁজা খেতের ফসল দুহাতে মাড়ায়

খেলনা পুরনো দিগন্তের মুগ্ধতায় নিজেকে হারায়

জৈষ্ঠ্যআষাঢ় মেঘমল্লার অগ্রহায়ণ মাসে দিগন্ত উড়ে বেড়ায়।

আমি দূর থেকে অনুভব মাত্র উচ্চারণের সুরে

ভোজ সেরে নিয়ে বাজনা বাজিয়ে চলছে

গ্রামবাংলার চোখের শক্তি দৃষ্টির দুদিক ভেসে যাচ্ছে

ঘুমের ঔষধ লোকাল হাতের স্পর্শে বুকের পাশে থেকে তৃষ্ণার কথা ভুলাতে পারছে

গেলাস ভর্তি নিঃশ্বাস কবজা করে।

ঘাসের শরীর পিষে দিতে দিতে লম্বাচওড়া মাঠের আকাশ

কি হবে সুখ খুঁজে ঘনচৈত্রের বসন্তে সঘন পলাশ!

শিশুরা সব সর্ষের আল মাড়িয়ে ঘুড়ির পিছনে ছুটতে থাকে যখন,

লাটাই হাতে দৌড়ে পালাতে থাকে উন্মাদ রোগের জোনাকির মতন।

 

 

 

খোলা জানালা ১৫

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

কোনো এক মুহূর্তের চিত্রায়ন আলোর দুয়ার বন্ধকরে অপ্রাপ্তির জানালা খোলা

অনন্ত কামনার স্বপ্নে বিকেল কাশফুলের মেলা,

আগাছায় ঢাকা তুমুল আগুন পাথর চাপা নতুন প্রেমে

সহস্রাব্দের মধ্যে ডাকনামের নির্ভরতা যেতে পারে থেমে!

সোজা চার কিঃ মিঃমেটোপথ নির্বিকার

ছলকে উঠুক এগিয়ে চলার উল্লাস

নির্জনে পড়ে টিলার পাশে বাঁশঝাড় হাটুর সমান বুনো ঘাস,

সুবিশাল দৃষ্টির উঠান জুড়ে উত্তরে ডুবার ধার।

সুখ -দুঃখ আহলাদ স্বাদ জোনাাকীর মুকুট

ঘরবাড়ি সাম্রাজ্য ছেড়ে নয়নের মতো ছুট!

আনন্দের অতল থেকে

অশ্রু অগ্নিও বায়ুর বিসর্জন রেখে

নবদৃষ্টির চুমুকে চুমুকে উল্লাস এবং সুখ

খোলা জানালা দিয়ে খবর রাখিস

সবাই চমকে উঠুক,

ঈশ্বর সহ আনন্দলোক

নইলে সবাই বলবে চোখ গুলমেলে ছেলে মানুষ।

 

 

 

প্রলয়ঝড়- ১৪

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –

অমোঘ ছায়ার স্বপ্ন অন্তরে চাপা রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মন,

গ্রামথেকে প্রাণান্তকর গ্রীষ্মরাগ দৃষ্টিমোচন

মাটির গন্ধ ঢেকে রাখতে চেয়েছিলো

চোখের স্বপন।

তোমারতো আর বারান্দায় বেরিয়ে কাজ নেই

খুন জখমের শহর আহ্লাদের স্বরে উন্মাদ করে প্রসাদী শরীর পিষে দিতেও দ্বিধা নেই কারোর’ই।

আমার প্রথম – শেষ অনুভব চারপাশে তোমার মুখ হাসছে,

তোমার কথাই মন ভাবছে।

ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক আমার গোলমেলে

আসলে লোকে দূর থেকে বলাবলি করে

প্রবলেমটা কি জানতে আসে না অন্তরে কে আগুন জ্বালে!

প্রলয়ঝড়ে জীবনের ভিতর সমস্তটা উঠলপালট করে।

গতির রশি কারহাতে

নিশিদিন প্রভাতে

ছেড়া সূতোর রেশটা ঝুলছে কার হাতে?

রাজার বেশ নিঃস্ব দাবানল নয়তো বজ্রপাতে।

 

 

 

মিষ্টি মুখ মুখোমুখি ১৩

– রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –

রূপ কথার সূর্যের চেয়েও টগবগে এক নিটোল মিষ্টিমুখ

অঙ্গের কথা কি আর বলবো অস্থির চাহনীর সাথে তোলপাড় করা বুক।

সফেদ সরল স্পর্শে দৃষ্টির পর মহাস্রোত

কপল জুড়ে প্রলুব্ধরূপ থেকে রূপান্তরিত প্রপাত

সশব্দ উচ্চারণে শব্দের ডগায় লাবণময় স্মৃতির সূতো

মিষ্টি মুখ মুখোমুখি প্রথম সূর্য দাক্ষিণাত্যের মতো!

এবেলা ওবেলার জয়দৃপ্ত খোয়াব

ভালোবাসার দ্বীপচর বরাবর পুরোটাই তোমার অবয়ব।

দ্বীপচর জলে – রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -১২

সেই সুপ্রাচীন রঙ্গ- তরঙ্গের মুহূর্ত এসব অলজ্জিত তোমার সাহচর্যে দোলনচাঁপা দোলে…..

প্রিয়তম বলতে মনে হলো চুপিসারে ডুব দিলে

ছায়া সবুজের প্রাণোচ্ছল ভাষাঞ্চলে

নিজেকে আটকে রেখেছো নিজস্ব ভূমন্ডলে,

প্রতিমুহূর্তের জলবিন্দু আঁজলা ভরে

নিঃস্বকরে নিজেরে

দৃষ্টির পর আনন্দমুখর রঙবেরঙের স্বপ্ন ধরে।

পুকুর ঘাট জলধারায় ঘনশ্রাবণ

ভাবনায় উদোম শরীর যুবতী স্নান

আনন্দ জাগায় শুভদৃষ্টির ঐকতান,

নিস্পাপ কিশোরী আজ সত্যিই বড়ো যত্নবান।

বৃষ্টির গুঁড়ো অথৈজল অস্থির শব্দের হৈচৈ

শব্দের উপর ভরকরে দ্বীপ চরজলে ভেসে ডুব্বেই।

 

 

 

চলো একদিন ১১

– রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;–

চলো একদিন শহর ছেড়ে অনাদরে বেড়ে ওঠা কোনো এক গ্রাম থেকে ঘুরে আসি

কাশফুল গাংচিল দেখে আসি,

সবুজ অরণ্য থেকে টাটকা ঘ্রাণ শরীরে মেখে আসি

নদীর তীরে দাঁড়িয়ে হাতের পর স্পর্শ রোমান্টিকতার

সূর্যের আলোয় চিকচিক করা মিষ্টি বাতাস শীতলতার

ছৈ নৌকায় ভাসি

দুজন এক হয়ে মিশে থাকি

স্বপ্নবুনে দিগন্তের মুগ্ধতায় দৃষ্টি রাখি,

চলো একদিন ঘুরে আসি

সরু রাস্তার পাশে ছোট্ট পুকুর বনের ধারে ঘাসফুল দেখে আসি।

গোধূলির আকাশে উড়ে বেড়ায় ঘরমুখো হরেক রকম পাখি

কূলবধূর জানালার ফাঁক গলা আকুল দৃষ্টি

বড়ো উঠানের সামনে কর্মরত কৃষাণীর সন্দেহ প্রবন উঁকি ঝুঁকি।

মন উতলাহয়ে উঠে আবেগে মাতোয়ারা বড়ো নদীর জল ছলছল

নদীজলে ঢেউ তুলে এলোমেলো হাওয়া ভাবনা অবিচল

মন সারাক্ষণ আনমনা দৃষ্টি দিশেহারা

প্রজাপতি উড়ছে আজ আনন্দ মুখর দিনে আলোর ফোয়ারা।

 

 

 

 

আঁচল! ১০

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;—

অনুভবে ছায়ার সঙ্গে সকালটা ভালোই কাটছিলো

হঠাৎ রোদ্রের আলোয় আঁচল ভিঁজেগেলো

আমার শরীরে গড়িয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগলো,

স্মৃতির ভূবন থেকে কে যেন উচ্চস্বরে ডাকতেছিলো।

চারদিকে কলরোল

সবুজে সোনারঙ ভালোবাসার আদল

এই অনন্ত আকাশ তলে

দেহের বাতাসে উৎসব মিলে?

দুচোখের স্পর্শে দৃষ্টির অববাহিকায়

মনের ভিতর মিশেথাকা মানুষ কোথায়

সন্ধ্যা নেমে আসার আগেই

স্মৃতির আরশিতে উঁকি মারতে চায় সবাই,

প্রাণখুলে উড়িয়ে আঁচল যখনই

বসন্তদিনের বাতাসে পৃথিবীটা দেখতে চাই।

 

 

 

 

অবশেষে

-রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;৯

আমি খুব অবাক হয়ে বাতাসে কানপেতে নিজের দিকে, শেন দৃষ্টিতে তাকালাম-

বজ্রবিদ্যুতের আলোতে,

ঘোরঅমাবস্যার অন্ধকার ঝড়বৃষ্টির রাতে

অসীম শূন্যের অভিমুখে-

অবিচ্ছিন্ন যত্ন ও স্নেহের বন্ধন ছিন্ন করে

অপরিচিতের হাত ধরে কেন বেড়িয়ে এলাম!

তবে কি একাকিত্ব আর নিঃসঙ্গতার মধ্যে ডুবে ছিলাম?

এখন দেখছি বুকের ক্ষত থেকে আমার চোখে মুখে ক্ষণে ক্ষণে কেবলই রক্ত ছড়িয়ে ছিটকে পড়ছে অবশেষে স্বপ্নময় ছায়া সুনিবিড় ফেলে আসা

নিজ গৃহের কথাই মনে পড়ছে।

জীবনের দূরাগত কল্লোল

আর্যাবর্তের পূণ্যবতী শিহরণ থেকে বলাবলি করছিল

সুস্পষ্ট জোছনার বসন্ত মধুর হাওয়ায়

বুক ঝলসানো বিরহ ব্যথা এখন কোথায় লুকায়!

 

 

 

এই চরাচরে -৮

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;-

বিপুল এই চরাচরে

তোমার দেখা পাবো না জানি

যতই এগোই মন পবনের নায়ে প্রেমের পথ ধরে,

চোখে মুখে দৃষ্টির সীমানা জুড়ে-

কোনো খানে আমি নেই তাও মানি।

এই যে বিরহ কাল ঝরা পাতার শব্দ বাতাসে

তবুও তুমিই মিশে আছো নিঃস্বাসের সুদীর্ঘ- দীর্ঘস্বাশ্বে

তুমি হারিয়ে গেছো ভাবতেই অশ্রু পাতের ভিতর, ভালোবাসার ইচ্ছে গুলো তোথা থেকে এসে যেন জড়িয়ে ধরে মধুর স্পর্শ সান্তনার।

পাথরের মতো স্তব্ধ জীবন

নিরবে একা কোথাও না কোথাও দাঁড়িয়ে থাকি নিঃসঙ্গ সারাক্ষণ,

মন – চোখের জানালায় স্মৃতির ভূবণ থেকে অন্তরের দিকে তাকিয়ে যেটুকু জানতে পারলাম

অনন্ত আকাশ তলে আমি যেন তলিয়ে যেতে পথ হারালাম!

চারপাশে জীবনের কতশত আয়োজন

আমি কেন তবে বদনাম সঙ্গে করে নির্জন –

এই চরাচরে তোমায় খুঁজে পেতে

দুঃখের সঙ্গ বেঁছে নিতে

অপমানের দিকে হাত বাড়ালাম!

অপরাধ এইতো ভালোবেসে কাছে চেয়েছিলাম।

 

 

উঠানে দুপুরের রোদ! ৭

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –

অন্ধকারের মতো উদ্বাস্তু ঢেউয়ে

অধিকারের দৃষ্টিতে ভাসিয়ে

অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে গিয়ে

সম্পদশালী করে হৃদয়, নিজেরে সঙ সাজিয়ে

আকাশ কুসুম কল্পনায়

কেউ কেউ মাতোয়ারা হয়

জ্ঞান শূন্যতার অতিমাত্রায় খামখেয়ালির পথ ধরে

উঠানে দুপুরের রোদ কতক্ষণ আর! চিকচিক করে?

রৌদ্রের নীচের স্বপ্নহীনতার মাঝে কতটা গভীর,

একা একা সেই নির্জন ক্ষণ হিম্মত লাগে পর্যবেক্ষণ করবার

ছায়াকে পোষ মানাতে পারলেই জীবন অমলিন!

এই যে সামান্য সকালের শিশিরের জল সেও যেকোনো মূহুর্তে তোমায় করে দিতে পারে আপাদমস্তক বিলীন।

 

 

 

 

t

ঘাড়ে তুলে ৬

– রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু – ;-

সে শুনেনি আমার কথা

আলোর মিছিল থেকে ফিরে

অস্বীকার করে বসে আছে সকল প্রকার সম্পর্ক- আত্মীয়তা,

বিবেক বুদ্ধি ছেড়ে দিয়ে আত্মস্ত করেছে

প্রতিহিংসার স্বীকৃতি

শুরুবন্দনার আসক্তপ্রীতি

সহচর এখন নিষ্কাম সন্ত্রাসবাদের কর্মনীতি।

ফুল পাখি গান

প্রেমের জন্য বিলিয়ে দিবে মহামূল্য জীবন প্রাণ

এতোটা বেয়াকুব সে-নয়

তার জীবন এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একেবারে চুড়ায়

আমাদের মতো নগন্য মানুষ থেকে অদৃশ্যপ্রায়

সেকি আর চাইবে ফিরে এই ধূলো ময়লায়!।

এইভাবে নিশ্চিত মনে একা দাঁড়িয়ে অকল্যাণের পথে অপেক্ষা করে

সত্যদিন পাবে খুঁজ? তাও আবার দুঃসময়ের হাত ধরে পিছুটান সব দূরে সরায়ে

স্বেচ্ছায় দুর্গতি সব ঘাড়ে তুলে নিয়ে।

 

 

 

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু —৫

স্মৃতির প্রাণ ধরে আজ তোমার সামনে মেলে নিজেকে

ভোরের কুসুম ধিরে ধিরে প্রস্ফুটিত পদ্ম ভাবতে শিখেছে সহাস্য মুখে।

জলপদ্মের সারা শরীর থেকে মুখের উপর আকাশ কেঁপে কেঁপে সোনালী আগুন ফুলকির মতো ফুলে ফেঁপে উঠছে,

রৌদ্র স্নান শেষে আদিবাসী যুবতীরা যেন অভিরাম উল্লাসে ভাসছে,

দৃষ্টির কানায় কানায় নৃত্যছন্দে ধাই ধা ই করে লাফাচ্ছে।

সাঁওতালী মাদলে উৎসবের আলোড়ন রুদ্রঝড়

ফোঁটা ফোঁটা আনন্দাশ্রু বুকের ভিতর ভালোবাসার আর এক নাম

দরজার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিজের চিন্তার মতো নতমুখী প্রনাম।

আমাকে বুকে করে তুলে নিয়ে কে যেন সেদিন

নাট্যশালার সব আসন-

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;—৪

যে রাতে তোমার শাড়ি খুলে অলস্কিন ভিঁজতে দিলো বৃষ্টির প্রহর মুদিখানাও তখন বন্ধ করে নিলো

ভিজতে থাকে নাট্যশালার সব আসন।

নিরভই ছিলো তোমার ঐ উন্মোচন !

পুঞ্জীভুত ঘৃণা দৃষ্টির উপর সারাক্ষণ

একঘেয়ে আটপৌরে জীবন বন্দী শালার মতন

হিংসা ও অবহেলার আগুনে পুড়ে বেদনার ফাঁক গলে

দৃষ্টির ডানাদুটি একেবারে ছাই করে ফেলে

মন যখন উন্মুক্ত সরোবরে

অনন্ত কামনার স্বপ্ন এখন প্রাপ্তির দুয়ারে

টলটলে জলে

রাতারাতি নিজেরে বদলে নিলে!

এমনটাই হওয়ার কথা তোমার দক্ষতাই বুঝিয়ে দিলো

কি একটা মধ্য বয়সি ভাবনায় যেন জীবনের পুর্ণাঙ্গ সর্বনাশ আঁকড়ে ধরে ছিলো।

স্মৃতির শহরে যে থাকে সে কি সত্যিই তোমার ভিষণ পরিচিত এবং প্রিয় ছিলো?

অধরার সামনেই একদিন ভালোবাসি বলে ডেকে এনে পাশের টেবিল থেকে মুখোমুখি বসালো,

ইচ্ছেছিলো ভালোবাসতে পারলে ভালোই হতো

ঢাকায় ফিরতে রেলগাড়ী নক্ষত্রের রাতে স্পর্শ পেতো।

 

 

 

 

কল্পনায় স্বপ্ন মাঁখা- ৩

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু ;–

দূর দিগন্তের মুগ্ধতার পরশে

পাথর কুচির মতো বিন্দু বিন্দু অণু- পরমাণুর কণা

দুপুরের মধ্য আকাশে

এমন নির্জনতা সৃষ্ট করে

যেন দূর সমুদ্র থেকে ভেসে ভেসে

জেঁকে বসে

অষ্পষ্ট হয়ে আসা উঠোনজুড়ে,

ঝরাপাতার শব্দেও হৃদয় কেমন হঠাৎ নড়েচড়ে

শরীরের শিরা-উপশিরায় রক্ত হীম হয়ে নুয়ে পড়ে,

চারপাশের নির্জনতা অন্ধনাবিকের মতো আঁকড়ে ধরে।

অথচ দিনশেষে ঘুমের গভীরে আমাকে নিয়ে তোমার উচ্ছ্বাস কতো বুকের পর মাথা রাখো

হরহামেশাই নিজেকে মাতিয়ে কল্পনায় স্বপ্ন মাখোঁ।

তারার আকাশ তলে নতুন ভাবনার টানে

আমাকে বুকে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ো ত্বকের ঘ্রাণে।

অগ্নিতপ্ত ভূগল সহায়ক –

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু –২

ভর দুপুর

আকর্ষিক দৃষ্টির অবয়ব জুড়ে

নাব্যতায় টাপুরটুপুর

জাঁকজমক-পূর্ণ আকাশ কুসুম সভ্যতার দুয়ারে

বিশাল বিশাল সব আয়োজন

বাস্তুবিটা বিক্রি করে হতে ছুটলাম মহাজন!

প্রত্যেকের চোখে মুখে নিজস্ব সবুজ,

লাবণ্যময়তার ফ্রেমে আঁকা সুনীল কারুকাজ। ক্লান্তিহীন ছুটে যাচ্ছি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ উদ্ধারে

ইস্টিমার অথবা উড়ু জাহাজ চড়ে এ্যান্টারটিকা শহরে, আটলান্টিক পেরিয়ে সানফ্রান্সিসকো

বিগত জীবন সব স্বপ্ন ছুড়ে

উন্মূল পথে অনিশ্চয়তার শরীরে

ঝোঁকের মতো উচ্চাকাঙ্খার রক্তখেকো।

সুখের শিকলে বাঁধা যুগ- যুগান্তরের মায়ার জাল ভেদ করে

নীল জল উদ্ভট ঘামের গন্ধে ডুব মেরে

ছুটছি তো ছুটছি বেগার খাটতে অনাত্মীয় প্রহরে ।

নিখাঁদ ছায়াহীন রোদ অগ্নিতপ্ত ভূগল সহায়ক

একমাত্র পরিচয় নির্বোধ উদ্বাস্তু ভুখা শ্রমিক ।

তৃষ্ণা কাতর দৃষ্টি – ১

রিয়াজ রহমান ভূঁইয়া ইজু -;–

ক্ষুধার্ত গাছপালা ছায়া খুঁজে নিমগ্ন হবে কিভাবে

সুখের মিশ্র অনুভবে

সূর্য আর মেঘের প্রজনন ক্ষণে

তোমার শরীরের সুগন্ধ লেপ্টে আছে প্রকৃতির মধ্যেখানে

এটাইতো সময় গোপন নয় প্রকাশ্যেই প্রকৃতি প্রয়োজনেই কাছে টানে,

তোমার মুগ্ধতা মুঠোভর্তি করে নবমীর উৎসবে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম

দিনগুলো ঠিক দিনের মতো আনন্দঘন ক্ষণগুলির সাথে আঠার মতো নিজের করে নিলাম।

হয়তো এটাই তৃষ্ণা কাতর দৃষ্টির জোনাকি মিছিল,

মেঘের শরীর কতটুকু ছুঁতে পারে আর! প্রান্তরবিবাগি আকাশ পথিক শঙ্খচিল।

Facebook Comments Box

বিষয় ভিত্তিক পোস্ট

শহীদুল ইসলামspot_img

সাম্প্রতিক পোস্ট