Thursday, November 21, 2024
Homeবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিদৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে বিজ্ঞানের সঠিক ব্যবহার মানব সভ্যতাকে সহজ করে এসেছে। বর্তমান সময়ে একদিন দিন তো দূরের কথা এক মুহূর্তও বিজ্ঞান ছাড়া অচল। প্রাকৃতিক দূর্যোগ হোক কিংবা মারণ অসুখ সব ক্ষেত্রেই বিজ্ঞান মানবজাতির মঙ্গলে রুখে দাঁড়িয়েছে। এই নিয়েই আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান.

ভূমিকা:

পৃথিবীতে যেইদিন থেকে মানবজাতির পথ চলা শুরু হয়েছে সেই দিন থেকেই মানুষের প্রতিদিনকার জীবনে বিজ্ঞান অনস্বীকার্য প্রভাব রেখে গিয়েছে। মানুষ তার উন্নত বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানকে প্রতিনিয়ত প্রয়োগ করেছে জীবনের নানা ক্ষেত্রে। সুকৌশলে বানানো প্রস্তর যুগের অস্ত্রাদি থেকে শুরু করে মানবসভ্যতায় বিপ্লব ঘটিয়ে দেওয়া আগুন; সবকিছুই বিজ্ঞানের দান।

এই বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়েই মানুষ আবিষ্কার করেছে চাকা, অট্টালিকা তথা উন্নত নিকাশি ব্যবস্থা নির্মাণের কৌশল আয়ত্ত করেছে। উন্নত বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে প্রয়োগমূলক বিজ্ঞানের সিঁড়ির ওপর ভর করেই মানুষ আজ সভ্যতার শিখরচুড়ায় অধিষ্ঠান করছে। আজকের এই আধুনিক বিজ্ঞানের সূচনাকাল হিসেবে বিদ্যুৎ আবিষ্কারের পরবর্তী পর্বকে মোটামুটি চিহ্নিত করা যায়।

আজকের দিনে বিজ্ঞানের নতুন নতুন আশ্চর্যকর আবিষ্কার মানুষের জীবনধারাকে প্রতিনিয়ত বদলে দিচ্ছে, বদলে দিচ্ছে মানসিকতাকেও। অসুস্থ মানুষ আজ আর রোগ নিরাময়ের জন্যে ওঝার কাছে ছুটে যায়না। প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মন্দিরে মাথা ঠোকেনা। বিজ্ঞানের দানে আজ ভগবানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন চিকিৎসক। রাত্রির কালো অন্ধকারে আর মানুষ পথ হারায় না, রাত্রি এখন আলোকজ্জ্বল। প্রতিদিনের জীবনে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সমস্ত কিছুর মধ্যেই রয়েছে বিজ্ঞানের অবদান।

বিজ্ঞানের উৎস:

বিজ্ঞান শব্দটির অর্থ হল বিশেষ জ্ঞান। অর্থাৎ নামের ব্যাখ্যা থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে পৃথিবীতে বিজ্ঞান অলৌকিক ইন্দ্রজাল কিংবা ভোজবাজির খেলা নয়। এ হলো বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর মধ্যে স্থিত বিভিন্ন উপাদানকে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা।

বিজ্ঞানের দান হিসেবে যে সমস্ত আবিষ্কার আমাদের প্রতিদিনকার জীবনের নিয়ত সরলীকরণ করে চলেছে তার পেছনে রয়েছে মানুষের প্রখর বুদ্ধিমত্তা এবং নানান প্রাকৃতিক উপাদানের মেলবন্ধন। এই দুইই বিজ্ঞানের প্রকৃত উৎস। মানব সভ্যতায় বিজ্ঞানের জয়যাত্রা শুরু পাথরে পাথর ঘষে সেই আগুন আবিষ্কার থেকে। তারপর থেকেই মানবজগৎ তথা সমগ্র পৃথিবীর জীবকুল বিজ্ঞানের খারাপ-ভালো উভয়প্রকার ফল ভোগ করে আসছে।

রোজকার জীবনে বিজ্ঞানের বিবর্তন:

সেই প্রাচীন কাল থেকেই মানুষের প্রতিদিনকার জীবনে বিজ্ঞান অনস্বীকার্য অবদান রেখে চলেছে। সেই সময় প্রতিদিনকার খাবার সংগ্রহ থেকে শুরু করে আত্মরক্ষা আশ্রয় সবকিছুর জন্যই মানুষ সাধারণ বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের উপর নির্ভর করত। সময় যত এগিয়েছে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ততই পরিবর্তন ঘটেছে। খাদ্য সংগ্রহ কথা আশ্রয়ের মত প্রাথমিক প্রয়োজন মিটিয়ে মানুষ বিজ্ঞানকে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে জীবনের আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে।

আজকের যুগে মানুষ সেই প্রচেষ্টারই বহুমুখী পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে মাত্র। আজ আধুনিক জীবনের চরম উৎকর্ষের এবং অফুরন্ত ঐশ্বর্যের মূলে রয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের অবদানে আমাদের জীবন আজ পরিপূর্ণ। প্রতিদিনকার জীবনে আধুনিক বিজ্ঞানের এই ব্যবহারিক প্রয়োগ আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস তথা মননকেও আমূল বদলে দিচ্ছে। কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হলে আমাদের জীবন অচল হয়ে পড়ে।

শহর অঞ্চলের মানুষেরা মুহূর্তের জন্য নিজেদের জীবনকে ইন্টারনেটবিহীন ভাবতে পারে না। স্মার্ট ফোন এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়া মানুষ আজকাল নিজেকে অসহায় বলে মনে করে। তার খুব স্বাভাবিক কারণ হলো মানুষের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি তথা সভ্যতা এই আধুনিক বৈজ্ঞানিক উপাদানগুলির উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। প্রযুক্তি বিজ্ঞানের নিত্যনতুন আবিষ্কার আমাদের জীবনকে কোন ধারায় নিয়ে চলেছে তা বলে শেষ করার মতো নয়।

বিজ্ঞানের দৈনন্দিন প্রভাব:

সকালে ঘুম ভাঙ্গানোর অ্যালার্ম, বিছানা ছেড়ে টুথ পেস্ট,গ্যাস জ্বালিয়ে রান্না , অফিস যাওয়ার গাড়ী, কম্পিউটার, ক্যালকুলেটর, মোবাইল, টেলিভিশন, বাস, ট্রেন, এরোপ্লেন সবকিছুর সাথেই জড়িয়ে রয়েছে বিজ্ঞান। আমাদের জীবনকে সহজ থেকে আরো সহজতর এবং দ্রুত থেকে আরো দ্রুততর করে তোলার পথে বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। বিজ্ঞানহীন হয়ে মানব সভ্যতার অগ্রগতি এমনকি অস্তিত্ব রক্ষা; কোনটাই সম্ভব নয়। 

প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে সহজ সরল আরামদায়ক করে তুলেছে। অসহ্য গরমে তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, মানুষের সুবিদার্থে বিজ্ঞানীরা ঘুরিয়ে দিয়েছেন নদীর গতিপথ, উষ্ণ মরুকে তা করেছে শস্য শ্যামল। হাড় ভাঙা পরিশ্রমকে বিজ্ঞান অনেক সহজ করে দিয়েছে। আজকের কর্মব্যস্ত মানুষ বিজ্ঞান ছাড়া একপাও এগোতে পারে না।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান:

সভ্যতার সেই শুরুর দিন থেকেই চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান তার অবদান রেখে চলেছে। আর আজ প্রযুক্তি বিজ্ঞানের দানে চিকিৎসা ব্যবস্থায় চূড়ান্ত উন্নতি সাধিত হয়েছে। স্বভাবতই মানুষের গড় আয়ু আগের তুলনায় অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগের প্রতিকারের জন্য মানুষ আজ ওঝার কাছে না দৌড়িয়ে হাসপাতালমুখী হয়েছে।

প্রতিনিয়ত গভীর গবেষণালব্ধ বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধ মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে কৃত্রিম অক্সিজেন, ভেন্টিলেটরের মতো বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি আপৎকালীন মুহূর্তে মানুষের জীবন বাঁচিয়ে চলেছে। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ফলস্বরুপ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ভ্যাকসিন নানাবিধ রোগকে পৃথিবী থেকে নির্মূল করতে সাহায্য করেছে। সর্বোপরি রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ব্যাপক ব্যবহার চিকিৎসা ব্যবস্থাকে অনেক বেশি সহজ এবং যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিজ্ঞান এবং তথ্য প্রযুক্তি:

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব আলোচনায় তথ্যপ্রযুক্তির উল্লেখ থাকবে না, এমনটা হতেই পারে না। বর্তমান সময়ে বিজ্ঞানের সম্ভবত সবচেয়ে যুগান্তকারী দানটি হল তথ্যপ্রযুক্তি। তথ্যপ্রযুক্তি মানুষের প্রতিদিনকার জীবনকে আমূল বদলে দিয়েছে। মানুষের সামাজিক, পারিবারিক তথা প্রশাসনিক জীবন সহ সর্বক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।

আর এই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা গড়ে ওঠার পিছনে রয়েছে বিজ্ঞানের দুই উল্লেখযোগ্য ফসল: কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবস্থা। জীবনধারণে অভ্যাসের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি তথা মননের ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তাছাড়া এই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবস্থা লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে।

অন্যান্য ক্ষেত্রে বিজ্ঞান:

মানুষের জীবনে বিজ্ঞানের অবদান বলে শেষ করার মত নয়। পূর্ব উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলি তার অতি সামান্য কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। ওই উদাহরণগুলি বাদ দিয়ে মানুষ আজও খাদ্য উৎপাদনের জন্য কৃষিক্ষেত্রে যেমন বিজ্ঞানের প্রয়োগ করে থাকে, তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য শিল্প ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রয়োগ হয়ে থাকে।

অন্যদিকে শিক্ষাও আজ সম্পূর্ণ বিজ্ঞানভিত্তিক হয়ে উঠেছে। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার ব্যাপক প্রচার ও প্রসার সম্ভব হয়েছে। অনেক জটিল প্রক্রিয়ার অত্যন্ত সহজ সমাধান মানুষ করে ফেলছে শুধুমাত্র বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে। বিজ্ঞান আজ দূরকে করেছে নিকট, সমগ্র বিশ্বকে বন্দী করেছে হাতের মুঠোয়। বিজ্ঞানের দানে আঙ্গুলের একটিমাত্র ছোঁয়ায় পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের তথ্যও এক নিমেষে ভেসে উঠছে মানুষের চোখের সামনে।

বিজ্ঞান বনাম মানুষ:

তবে বিজ্ঞানের প্রভাবে মানুষ আজ যন্ত্রমানবে পরিণত হয়েছে, তাকে অনুসরণ করে যন্ত্র নিয়ন্ত্রিত হয় না বরং যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সময়ের মানুষ চালিত হয়। জীবনকে সহজ ও সুখের করে তোলার জন্য মানুষের সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা তাকে নতুন নতুন আবিষ্কার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। পনেরোই যন্ত্রভিত্তিক জীবন আজ যান্ত্রিক জীবনে পরিণত হয়েছে।

ইলেকট্রনিকস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মেলবন্ধনে রোবট ও কম্পিউটারের আবিষ্কার মানুষের জীবনধারার পটচিত্রকে আমুল বদলে দিয়েছে। ফলস্বরূপ প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ পরিণত হয়েছে যন্ত্রের আজ্ঞাবহ দাসানুদাসে। এক মুহুর্ত আধুনিক প্রযুক্তির প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া মানুষ আজ অত্যন্ত অসহায়, নিরুপায় বোধ করে।

প্রযুক্তি বিজ্ঞান ও দারিদ্র:

প্রযুক্তি বিজ্ঞান মানুষের জীবনকে সহজ ও সুখের করে তুলেছে এব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে এমন সমূহ অগ্রগতি সত্ত্বেও বিজ্ঞান আজও পৃথিবী থেকে অভিশাপরূপি দারিদ্র্যকে নির্মূল করতে পারেনি। কিছু ক্ষেত্রে দারিদ্র্য থেকে উত্তরণে সহায়তা করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিজ্ঞান ধনী-দরিদ্র্যের আর্থিক বৈষম্যের ব্যবধানকে বহুমাত্রায় বাড়িয়ে তুলেছে।

তাছাড়া প্রযুক্তি বিজ্ঞানের নানান অভিনব আবিষ্কার উপভোগ করতে প্রয়োজন অর্থনৈতিক সচ্ছলতা। যেখানে আমাদের দেশের বহু মানুষ দারিদ্র সমস্যায় জর্জরিত সেখানে প্রযুক্তিগত এইসব অভিনব উপাদানের ব্যবহার, বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রযুক্তি বিজ্ঞানের নানান সুবিধা গুলো যেদিন গরীব মানুষদের কাছেও পৌঁছে যাবে সেদিনই আধুনিক বিজ্ঞানের দানে সভ্যতা সার্থক হয়ে উঠবে।

বিজ্ঞানের অপকারিতা:

পৃথিবীতে সকল জিনিসেরই খারাপ ভালো উভয় দিকই বর্তমান। যন্ত্রের উপর নির্ভর করতে গিয়ে আজ মানুষ দিনদিন শ্রমবিমুখ হয়ে পড়ছে, ক্রমশ কমে যাচ্ছে মানুষের স্বনির্ভরতা। ফলে শরীরে নানান রোগ এসে বাসা বাঁধছে।

বিজ্ঞান হল বর্তমান মানুষের হাতিয়ার। এই হাতিয়ারকে সৎ অসৎ যেকোনো কাজেই ব্যবহার করা সম্ভব। বিজ্ঞানের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে প্রয়োগ কর্তার উপর। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, পরমাণু শক্তি যেমন ব্যাপক মানবকল্যাণে ব্যবহৃত হতে পারে, তেমনই এক মুহূর্তে ধ্বংস করে দিতে পারে সম্পূর্ণ পৃথিবীর জীবজগৎকে।

বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচানো যেমন সম্ভব, তেমনি সেই বিজ্ঞানেরই দানে কেবলমাত্র একটি বোতাম টিপে এক সম্পূর্ণ জনপদ নিশ্চিহ্ন করে দেওয়াও সম্ভব। মানুষের লোভ, হিংসা তথা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য দিনদিন বিজ্ঞান নানান খারাপ কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উপসংহার:

বিজ্ঞানের প্রাথমিক অবদানগুলি আজও সর্বস্তরের মানুষের কাছে সমান ভাবে পৌঁছায়নি। দারিদ্রতার কারনে কোটি কোটি মানুষের জীবন আজও বিজ্ঞানের আশীর্বাদশুন্য রয়ে গিয়েছে। যদিও প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার, ভালো রাস্তা বানিয়ে গ্রাম গুলির যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটানোর, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উন্নয়নের।

কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, প্রয়োজনের তুলনায় এই প্রচেষ্টা নিতান্তই অপ্রতুল এবং তা সারা পৃথিবী জুড়েই সত্য। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সর্বস্তরে সার্বিক প্রচেষ্টা। আত্মরক্ষার প্রয়োজনে অস্ত্র তৈরি কিংবা মহাকাশ গবেষণার হেতু অন্তরীক্ষে কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণের প্রয়োজন যেমন রয়েছে তেমনই প্রয়োজন রয়েছে মানুষের জীবনকে তৃণমূল স্তর থেকে বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে তোলার।

বুদ্ধিমত্তার ইন্দ্রজাল এই বিজ্ঞান যেদিন ধ্বংসযজ্ঞকে পাশ কাটিয়ে সমগ্র মানবজাতির সার্বিক মানোন্নয়নে নিয়োজিত হবে সেই দিনই মানুষ লাভ করবে তার সভ্যতার পরম সার্থকতা।

Facebook Comments Box
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনিhttps://protiddhonii.com
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments