16.8 C
New York
Thursday, May 9, 2024
spot_img

পিঠার গল্প রেস্তোরাঁ


-রুহানা আক্তার বৃষ্টি

হালকা শীতের সকালে মেহেরিন পার্কে বসে কারো জন্য অপেক্ষা করছে। বারবার হাতঘড়িতে সময় দেখছে আর
পথের দিকে তাকিয়ে আছে। একটুপর পেছন থেকে রুদ্র এসে দুহাত দিয়ে মেহেরিন এর চোখ ঢেকে ধরে।
মেহেরিন বুঝতে পেরে বলে , আমি জানি এটা তুমি।

  • আমি কে?
  • রুদ্র দ্য গ্রেট লেট লতিফ।
  • কিভাবে বুঝলে?
  • না বোঝার কী আছে? লেট লতিফ কে যেদিন তাড়াতাড়ি আসতে বলি , সেদিনই সে দেরি করবে। তোমার কি
    কখনো সময়জ্ঞান হবে না?
  • সরি, ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে। আর এত সকালে কেউ দেখা করতে বলে ? আমার ঘুমটা কম হয়ে গেল।
  • তাই বুঝি? সকাল ১০ টা বাজে এখন। তোমার ঠিক কতক্ষণ ঘুমালে ঘুম বেশি হতো? বলো শুনি।
  • এই মনে করো ১২ টা পর্যন্ত।
  • ওও আচ্ছা! তাহলে আমার জন্য ঘুম কম হয়ে গেল। যাও বাসায় গিয়ে আবার ঘুম দেও। তোমাকে আর কখনো
    দেখা করতে বলবো না। (রাগ করে বলে)
  • আরে এইটুকু তে রাগ করছো কেন? আমিতো দুষ্টুমি করেছি তোমার সাথে। তুমি দেখা করতে বললে আমি না
    করতে পারি? সে হোক দিন অথবা রাত। যদিও আসতে একটু লেট করে ফেলি । এগেইন সরি।
  • কানে ধরে সরি বলো।
    রুদ্র মেহেরিন এর কাছে এসে তার দুই কান ধরে বলে ,
  • সরি।
  • আরে! আমার কান ধরলে কেন? তোমার কান ধরতে বলেছি।
  • ওহ! আমি ভেবেছি তোমার কান ধরতে বলেছো।
  • তুমি দিন দিন অনেক দুষ্ট হয়ে যাচ্ছো।
  • তবে দুষ্টুমি শুধু তোমার সাথেই করি। আর কারো সাথে নয়। এটা তোমাকে বুঝতে হবে।
  • আচ্ছা বুঝলাম। এবার শোন , তোমার জন্য কী এনেছি দেখো। ( ব্যাগ থেকে একটি টিফিন বক্স বের করে রুদ্র
    কে দেয় )
    -রুদ্র বক্স খুলে দেখতে পায় পাটিসাপটা পিঠা।
    (খুশি হয়ে বলে) আরে পাটিসাপটা পিঠা! আমার খুব পছন্দের।
  • তাইতো এনেছি। আম্মু বানিয়েছিল । তাই ভাবলাম , ভার্সিটি যাবার পথে তোমাকে দিয়ে যাই।
  • (পিঠা খেতে খেতে বলে) হুম…ভালো কাজ করেছো। শীতের সকালে পিঠা খেতে দারুন লাগে।
  • আর একটা জিনিস এনেছি তোমার জন্য।
  • (একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে) কী এনেছো?
  • (একটি চিরকুট রুদ্রকে দিয়ে বলে) তোমার জন্য লেখা কবিতা।
  • (এবার ইমোশনাল হয়ে বলে) এটা নিয়ে আমার কাছে ১০২ নাম্বার কবিতা হলো। তোমার লেখা কবিতা আমার
    ভীষণ ভালো লাগে।
  • হুম। তোমার সাথে আমার যতবার দেখা হবেৎ, একটি করে কবিতা তোমাকে উপহার দেব। কবিতাগুলো জমিয়ে
    রাখবে।
  • হুম রাখবো।
  • আর তোমাকে যে গল্পগুলো দিয়েছিলাম , সেগুলো আছে তো?
  • হুম… যত্ন করে রেখে দিয়েছি।
    তোমার ভার্সিটির সময় হয়ে যাচ্ছে , যাবে কখন?
  • এইতো এখনি যাবো।
  • চলো আমি পৌঁছে দেই।
  • (খুশি হয়ে বলে) চলো।
    পথে যেতে যেতে যখন রাস্তা পার হবে তখন রুদ্র মেহেরিনের হাত ধরে রাস্তা পার করে দেয়। রাস্তা পার হওয়ার
    সময় মেহেরিন রুদ্রের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আর বলে ,
  • তোমার এই ছোট ছোট কেয়ারিং আমার ভালো লাগে।
  • অভিনন্দন তোমাকে!
  • হঠাৎ অভিনন্দন কেন?
  • ভবিষ্যতে একজন কেয়ারিং হাজবেন্ড পাবে।
  • (হেসে বলে) শুধু কেয়ারিং না। অনেকটা দুষ্ট। আচ্ছা পৌঁছে গেছি। তুমি সাবধানে বাসায় যাবা।
  • ঠিক আছে ম্যাডাম।

মেহেরিনকে পৌঁছে দিয়ে রুদ্র নিজের বাসায় ফিরে। বাসার দরজায় কলিং বেল প্রেস করে। তার মা দরজা খুলে।

  • কীরে? সকালে কোথায় গিয়েছিলি?
  • (ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলে) ঐ এক বন্ধুর সাথে জরুরি দেখা করতে গিয়েছিলাম।
  • বন্ধু- বান্ধবদের সাথে দেখা করা , আড্ডা , ঘুরাফেরা এগুলো করেই দিন পার করছিস। চাকরির তো কোন খোঁজ
    খবর দেখছি না। বলি এবার একটা চাকরির খোঁজ কর।
  • মা , তোমাকে আমি আগেও বলেছি। ওসব চাকরি আমাকে দিয়ে হবে না। আমি বিজনেস করতে চাই। বাবাকে বলো
    কিছু টাকা দিতে। বিজনেস শুরু করি।
  • তুই বিজনেস শুরু করলে লস ছাড়া লাভ হবে না।
    তার থেকে ভালো একটা ছোট খাটো হলেও চাকরি কর বাবা।
  • চাকরি আমি করবো না।
  • তাহলে কী ঘরে বসে বাপের টাকায় খাবি আর ঘুমাবি? এই যে কয়দিন পর পর বিয়ের কথা বলিস। লজ্জা করে না
    বলতে? চাকরি না করলে পরে বিয়ে করে বউকে খাওয়াবি কী?
  • বউয়ের রিজিক উপরওয়ালার তরফ থেকে নির্ধারণ করে দেয়া আছে‌। আমার চাকরির জন্য তার ভরণপোষণ
    আটকে থাকবে না।
  • এত কথা শুনতে চাই না। তোর বাবা বলে দিয়েছে ,আগামী ১ বছরের মধ্যে চাকরি খুঁজতে। চাকরি না পেলে তোকে
    বিয়ে করাবে না।
  • ধূর! তোমরা আমার বিষয়টা বুঝতেই চাচ্ছো না।
    একথা বলে রুদ্র নিজের রুমে চলে যায় , পিসিতে গান ছেড়ে হেডফোন লাগিয়ে শুনতে থাকে।

রুদ্র অনেকটা ডোন্ট কেয়ার স্বভাবের। নিজের যা কিছু করতে ভালো লাগে তাই করবে। কে কী বললো কানে নেয়
না। তবে মেহেরিন কিছু করতে বললে , সেটা নিয়ে ভেবে দেখে। করার চেষ্টা করে। কারণ , রুদ্রের কাছের
মানুষগুলোর মধ্যে মেহেরিন রুদ্রকে ভালো বোঝে।

কয়েকদিন পর…..রুদ্র মন খারাপ করে পার্কে বসে আছে , মেহেরিন এসে তার পাশে বসে , কাঁধে হাত রেখে বলে ,

  • কী ব্যাপার? এমন মুড অফ করে বসে আছো? কি হয়েছে?
  • মা-বাবা চাকরি করার জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু আমি চাকরি করতে চাই না , এটা তারা বুঝতে চাচ্ছে না।
    দিনরাত কথা শোনায় এটা নিয়ে। বাসায় বসে নাকি বাবার টাকা নষ্ট করছি।
    -আচ্ছা বুঝলাম। চাকরি করতে চাও না ঠিক আছে , সমস্যা নেই। তবে একটা ইনকাম সোর্স তো তৈরি করতে
    হবে।
  • এজন্যই আমি বিজনেস করতে চাই। ভালো আইডিয়া আছে আমার মাথায়। তবে টাকা প্রয়োজন। বাবা সেই
    টাকাটা দিবে না।
  • আচ্ছা! কী বিজনেস আইডিয়া আছে? আমার সাথে শেয়ার করো।
  • আমি একটা রেস্টুরেন্ট দিতে চাই। ইউনিক একটা রেস্টুরেন্ট হবে , যেটা আগে কেউ করেনি।
    তুমিতো জানো পিঠা আমার খুব পছন্দের খাবার।
    আমি এমন একটা রেস্টুরেন্ট দিতে চাই যেখানে অন্যান্য আইটেমের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পিঠাও থাকবে।
    ১২ মাস মানুষ পিঠা খেতে পারবে। আর এর সাথে আমি একটা বুকসেলফ রাখবো , যেখানে তোমার গল্প ,
    কবিতাগুলো ডায়েরিতে লেখা থাকবে। সেগুলো সবাই ফ্রিতে পড়তে পারবে। রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র ডিজাইন আমি
    এমনভাবে করতে চাই , দেয়ালে দেয়ালে সাহিত্যের ছোঁয়া মিশে থাকবে।
  • বাহ্! খুব ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। শোন না , আমি তোমার রেস্টুরেন্টের নাম দিতে চাই।
  • হ্যাঁ অবশ্যই। বলো কী নাম দেবে?
  • তোমার রেস্টুরেন্টের নাম হবে “পিঠার গল্প রেস্তোরাঁ”।
  • আমিও এমনি একটা নাম ভাবছিলাম। দেখো তোমার আর আমার ভাবনায় কতটা মিল!
  • আচ্ছা! এখন তুমি রেস্টুরেন্ট টা দিবে কীভাবে?
  • সেটাই ভাবছি।
  • (কিছুক্ষণ ভেবে বলে) শোন , আমার কিছু জমানো টাকা আছে। বাবার দেয়া পকেট মানি থেকে টুকটাক জমিয়েছি।
    সেটা তোমাকে দিতে চাই। আর বাকিটা তোমার বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে ধার করে দেখো কিছু করতে পারো
    কিনা।
    -মাথা খারাপ? তোমার টাকা আমি নিতে পারবো না। ওটা তোমার অনেক কাজে লাগবে। রেখে দাও।
  • আমার কথাটা ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখো। অল্প পুঁজিতে তুমি অল্প পরিসরে শুরু করবে। এখন তো শীতকাল ,
    আপাতত তুমি একটা ছোট দোকান ভাড়া করে ২-৩ জন সহকর্মী নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা দিয়ে শুরু করবে।
    ধীরে ধীরে যখন তোমার প্রফিট হবে , তখন রেস্টুরেন্ট দেয়ার চিন্তা ভাবনা করবে। “বিন্দু থেকেই তো সিন্ধু
    হয়”।
  • তোমার আইডিয়া ভালো । তবে টাকাটা আমি তোমার কাছ থেকে এভাবে নিতে পারবো না।
  • আচ্ছা , এমনি এমনি নিতে হবে না। ধার হিসেবে দিলে নেবে? পরে শোধ করে দিও।
  • হ্যাঁ , ধার হিসেবে নিতে পারি। ১ বছরের মধ্যে শোধ করে দেবো।
  • সে তুমি যখন ইচ্ছে শোধ করো , তাতে সমস্যা নেই।
  • মেহেরিন, তুমি আমাকে কিছুটা চাপ মুক্ত করলে ।
    চলো দুজনে মিলে টংয়ের দোকানে ২ কাপ চা খাই।
  • হুম..এই ওয়েদারে চা খাওয়া প্রয়োজন। চলো।
    দুজনে মিলে টংয়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছে। মুখে কোন কথা নেই। দুজনে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে আর চোখে
    চোখে ভাব বিনিময় হচ্ছে।

সন্ধ্যায় রুদ্র বাসায় ফিরে দেখে দরজা খোলা আছে। রুদ্র একটু অবাক হয়। দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দরজা
লাগিয়ে দেয়। রুদ্রর বাবা ড্রইং রুমে সোফায় বসা। তাকে ডাক দেয় ,

  • রুদ্র , এদিকে এসো।
  • (সামনে গিয়ে বলে) জী আব্বু। কিছু বলবে?
  • কোথায় ছিলে?
    -একটু হাঁটতে বের হয়েছিলাম।
  • ভালো কথা , সারাদিন তো গাঁয়ে হাওয়া-বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াও। চাকরির কী খবর?
  • কোন খবর নেই।
  • খবর নেই মানে? তুমি কি ঠিক করে নিয়েছো চাকরি করবে না? নিজের যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াবে?
  • আব্বু , আমি আগেও তোমাকে বলেছি , আমি বিজনেস করতে চাই।
  • বিজনেস করা মুখের কথা না। ভালো অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। বিজনেস তুমি সামলাতে পারবে না। তার থেকে ভালো
    হয় চাকরি খোঁজো। এতদূর লেখাপড়া করিয়েছি কি বাসায় বসে থাকার জন্য?
  • দেখি কী করা যায়। একথা বলে রুদ্র নিজের রুমে চলে যায়।
    রুমে গিয়ে ল্যাপটপে বিজনেস আইডিয়া সংক্রান্ত তথ্য সার্চ করে।

অন্যদিকে মেহেরিন বাসায় ফেরার পর তার মা জিজ্ঞেস করে ,

  • কীরে? আজ বাসায় ফিরতে সন্ধ্যা হলো কেন? তোকে তোর বাবা কতবার বলেছে, যেখানেই থাকিস সন্ধ্যার
    আগে বাসায় ফিরতে।
  • এক ফ্রেন্ডের সাথে অনেক দিন পর দেখা। গল্প করতে করতে দেরি হয়ে গেল।
  • আচ্ছা যাই হোক , তোর চাচা কল করেছিল। তোর দাদার অবস্থা বেশি ভালো না। আগামী সপ্তাহে গ্রামে যেতে
    হবে। তোর ভার্সিটিও বন্ধ আছে। আশা করি তোর যেতে সমস্যা হবে না।
  • না , না সমস্যা নেই। তাছাড়া , গ্রামে যাওয়া হয় না কয়েক বছর হলো।
  • ঠিক আছে। হাত মুখ ধুয়ে ঘরে যা। নাস্তা দিচ্ছি।
  • আচ্ছা।

পরের সপ্তাহে…. মেহেরিন হাতে একটি খাম নিয়ে পার্কে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে রুদ্র আসবে বলে।
কিছুক্ষণ পর রুদ্র আসে।

  • কী ব্যাপার? আজ সকাল ৯ টায় এতো জরুরি তলব?
  • আমি জানিতো এখন বলবে , তোমার কাঁচা ঘুম ভেঙে গেছে।
  • আরে না , সেটা কোন ব্যাপার না। বললাম , যেভাবে দ্রুত দেখা করতে বললে। কোন কিছু হয়েছে কিনা?
  • হয়েছে তো। আমার দাদা অসুস্থ। তাই জরুরিভাবে গ্রামে যেতে হবে। ১ মাসের মতো সেখানে থাকা হবে। তোমাকে
    আর প্রতিদিন সকালে কাঁচা ঘুম ভেঙে আসতে হবে না।
  • (একটু দুষ্টুমি করে বলে) যাক আগামী এক মাস শান্তিতে ঘুমাতে পারবো। কেউ আমাকে সকাল সকাল প্যারা
    দিবে না।
  • (অভিমান করে বলে) আমি জানতাম, তুমি এমন কিছু বলবে। আমি চলে গেলে তো আমাকে একটুও মনে পড়বে না
    তোমার। অথচ তোমাকে আমি অনেক মিস করবো।
  • শোন , যখন দুটো মানুষের মন এক সুতোয় বাঁধা পড়ে যায় , তখন মুখ ফুটে ব্যক্ত করতে হয় না অনুভূতির কথা।
    চোখে চোখ রেখেই মন পড়ে ফেলা যায়। আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি , তোমার চোখ দেখে মনের
    অবস্থা আমি বুঝতে পারি , যখন অভিমান করো , তোমার কথা বলার ধরণে অভিমানের সুর খুঁজে পাই। আর আমি
    অনুভূতি প্রকাশে ভীষণ আনাড়ি। তুমি তো জানো। তোমার মতো করে আমি সরাসরি মনের ভাব ব্যক্ত করতে পারি
    না। আমি নিরবে তোমাকে ভালোবাসি , নিরবে তোমার কথা ভাবি। যদি কখনো আমার ভালোবাসা নিয়ে তোমার
    মাঝে দ্বিধা কাজ করে , তখন একটাবার মনোযোগ দিয়ে আমার তীর্যক চোখে তোমার কোমল দুচোখ রাখবে। সব
    উত্তর পেয়ে যাবে।
  • ভাইরে ভাই! এতো দেখছি কাব্য , সাহিত্য সবকিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এই তুমি তো উপন্যাস লিখা
    শুরু করতে পারো। ভালো লেখক হতে পারবে গ্যারান্টি দিচ্ছি।
  • বাংলা একাডেমীর উচিত ভাই শব্দটা কে অভিধান থেকে বাদ দেয়া। আর নাহলে এই শব্দটির ব্যবহারের
    ক্ষেত্রে শর্তাবলী আরোপ করা দরকার। কে কাকে ভাই , ভাইয়া বলে সম্বোধন করতে পারবে আর কে কাকে
    সম্বোধন করতে পারবে না।
  • কেন?
  • কেউ একটু আগে ভাইরে ভাই বলে কাকে যেন সম্বোধন করলো।
    -আরে ওটা তো কথার কথা। তোমাকে বলিনি।
  • ওহ্! আমি ভাবলাম আমাকে বললে।
  • হি হি হি…করে মেহেরিন এক গাল হাসে।
    রুদ্র লক্ষ্য করে , মেহেরিন হাসলে ডানদিকের গালে হালকা টোল পড়ে। রুদ্রের কাছে হাস্যোজ্জ্বল মেহেরিনকে
    দেখতে ভীষণ মিষ্টি লাগে। মেহেরিনের হাসি থামলে রুদ্র বলে ,
  • শোন লেখালেখি তুমি করো , ওটা তোমার কাজ। লেখালেখি আমার দ্বারা হবে না। আমার লেখা পড়তেই ভালো
    লাগে।
  • আচ্ছা ঠিক আছে। এই খামটা নেও। (রুদ্রকে খামটা হাতে দিয়ে বলে)
  • কী আছে এতে?
  • এখানে ৫০ হাজার টাকা আছে। এটা রাখো , আর তোমার ক্লোজ ফ্রেন্ডদের কাছ থেকে বাকিটা ম্যানেজ করার
    চেষ্টা করো। আশা করি ভালো কিছু হবে।
  • হুমায়ূন আহমেদের কোন একটি লেখা পড়েছিলাম যে , মেয়েদের কাছে কিছু লুকানো বা জমানো টাকা থাকে। আজ
    দেখলাম সত্যি!
    -হুম , থাকে। তবে সব মেয়েদের কাছে জমানো টাকা থাকেনা এটাও মাথায় রাখতে হবে। আর যাদের কাছে থাকে
    সেটা তারা কেন রাখে এটা পড়নি কোথাও?
    -কেন রাখে এটা তো কোথাও লেখা পাইনি।
  • সবকিছু যদি গল্প , উপন্যাসে লেখা থাকতো তাহলে মানুষের জীবনে বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পারা ,
    বুঝতে পারার বিষয়টি থাকতো না।
    -মেয়েরা টুকটাক কিছু টাকা জমিয়ে রাখে তাদের কাছের মানুষদের প্রয়োজনে হেল্প করার জন্য। বিশেষ করে
    মেয়েরা তাদের পার্টনার কে সাপোর্ট দিতে কিছু টাকা জমিয়ে রাখে। কারণ তারা তাদের পার্টনার কে অসুবিধার
    মধ্যে থাকা , মন খারাপ , দুশ্চিন্তায় থাকা দেখতে পারে না। পার্টনারের চাকরি চলে গেলে পরবর্তীতে সংসারের
    খরচ চালাতে যেন হিমশিম খেতে না হয় সেজন্য সাময়িক সাপোর্ট দেয়ার মতো এইটুকু সামর্থ্য সংসারি মেয়েদের
    আছে। এখন আমার এইটুকু সাপোর্টে যদি তুমি চিন্তা মুক্ত হও , এতেই আমার প্রাপ্তি।
  • মেহেরিন , তোমাকে যে কী বলে ধন্যবাদ দেবো।
  • ধন্যবাদ দিতে হবে না। বিয়ের পর শাড়ি , চুড়ি গিফট করবা , ঘুরতে নিয়ে যাবা , ফুচকা , চকলেট , আইসক্রিম
    খাওয়াবা , আর অনেক অনেক ভালোবাসবা আমাকে তাহলেই হবে।
  • আর কিছু?
  • না , আর কিছু না। বেশি বলে ফেললাম নাকি?
  • না , ঠিক আছে।
  • আচ্ছা এখন আমি যাই।
    -যাই বলতে নেই। বলো আসি।
  • ঠিক আছে আসি। তুমি ভালো থাকবা , আর ভুলেও স্মোক করবা না বলে দিচ্ছি।
  • ঠিক আছে , করবো না।
  • সত্যি?
  • হুম , সত্যি। সাবধানে যাবা , নিজের খেয়াল রাখবা।
  • আচ্ছা।
    মেহেরিন চলে যায় , আর রুদ্র দূর থেকে চেয়ে রয় মেহেরিনের দিকে। ভাবতে থাকে , একটা মেয়ে ঠিক কতটা
    ভালোবাসতে পারলে একটা ছেলের জন্য এতোটা এফোর্ট দিতে পারে তা আমার জানা নেই। তবে আমি শুধু আমার
    মেহেরিনকে দেখেছি, নতুন করে চিনেছি ওকেৎ, জেনেছি ও আমায় ঠিক কতটা ভালোবাসে , আমাকে নিয়ে কতটা
    ভাবে, আমার ভালো থাকা নিয়ে চিন্তা করে , মাঝে মধ্যে প্রয়োজনে শাসনও করে।

দাদার বাড়ি যাওয়ার পথে মেহেরিন বাসের জানালার পাশে বসে আছে। পাশের সিটে তার মা বসা। মেহেরিন জানালা
দিয়ে তাকিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছে। বেপরোয়াভাবে আসা একটি ট্রাকের সাথে বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
মেহেরিনের মা-বাবা অল্প আহত হয়, হাত পা ছিলে যায়। তবে মেহেরিন মারাত্মকভাবে আহত হয়। তাকে
আই.সি.ইউ তে ভর্তি করা হয়। জানালার কাঁচে মাথায় জখম হয়। মেহেরিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে , মাথায়
ব্যান্ডেজ।

অপরদিকে, ৩ বন্ধু মিলে চা খাচ্ছে… রুদ্র , তুহিন , রাইয়ান

  • রুদ্র তার বন্ধুদের উদ্দেশ্য করে বলে , তোদের একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই।
    তুহিন- হ্যাঁ , বল।
  • আমার কাছে একটা চমৎকার বিজনেস আইডিয়া আছে।
    রাইয়ান- শেয়ার কর।
  • আমি একটা ইউনিক রেস্টুরেন্ট দিতে চাই। নাম হবে” পিঠার গল্প রেস্তোরাঁ”। সেখানে অন্যান্য খাবারের
    আইটেমের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পিঠা থাকবে। আর রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র ডিজাইনে একটা সাহিত্যিক
    ভাব থাকবে যেটা দেখে কাস্টমার মুগ্ধ হবে।
    রাইয়ান- দারুন আইডিয়া!
  • হ্যাঁ। তবে আমার এর জন্য টাকা প্রয়োজন। অল্প পরিসরে শুরু করার জন্যেও পর্যাপ্ত টাকা আমার কাছে
    নেই। তোরা যদি কোনভাবে হেল্প করতে পারিস তাহলে ভালো হতো।
    তুহিন- আচ্ছা শোন , আমরা ৩ জন মিলে শেয়ারে কাজ টা শুরু করি। কী বলিস রাইয়ান?

রাইয়ান- হ্যাঁ , করা যায়।
তুহিন- রুদ্র তোর কাছে কত টাকা আছে?

  • ৫০ হাজার।
    তুহিন- ঠিক আছে , তাহলে আমি আর রাইয়ান মিলে আর দেড় লাখ ম্যানেজ করে দিচ্ছি। তুই তোর প্ল্যান
    অনুযায়ী কাজ শুরু কর।
  • তোদের অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার পাশে থাকার জন্য।
    তুহিন- আরে ধন্যবাদ দিতে হবে না। চা খা , আরেকটা বিস্কুট নে।

অতঃপর কিছু দিন বাদে শহরের ব্যস্ততম একটি এলাকায় ছোট একটি দোকান রেস্টুরেন্ট হিসেবে সাজানোর
কাজ করছে কিছু লোক। আর রুদ্র দাঁড়িয়ে থেকে ডিরেকশন দিচ্ছ , এটা এভাবে করো , ওটা ঐদিকে রাখো ,
টেবিলগুলো এভাবে সাজাও।
যেহেতু পুঁজি কম , রেস্টুরেন্টের ভিতরের দেয়ালগুলোর সাহিত্যিক লিখন , রুদ্র নিজেই লিখে। একটা বুকসেলফ
কিনে সেখানে মেহেরিনের লেখাগুলো ডায়েরিতে লিখে সাজিয়ে রাখে। এভাবে টুকটাক কাজ করে আপাতত
রেস্টুরেন্ট টা উদ্বোধন করে ২ সপ্তাহের মধ্যেই। ধীরে ধীরে মানুষজন আসা শুরু করে। যেহেতু শীতকাল তাই
আপাতত পিঠা , চা , কফি , মোমো এই আইটেম গুলোই রাখা হয়। কাস্টমার আসে পিঠা খেতে খেতে বুক সেলফের
ডায়েরিতে লেখা কবিতা , গল্প পড়ে।
তো এমনি একজন মেয়ে কাস্টমার একদিন বলে ,

  • আপনাদের রেস্টুরেন্ট টা ছোট হলেও খুব ইউনিক। আচ্ছা , এই ডায়েরির লেখাগুলো কি আপনার?
  • না , আমার প্রিয় মানুষটার। মূলত এই রেস্টুরেন্টের নামটা ওর দেয়া।
  • বাহ্! ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। বেস্ট অফ লাক ফর ইওর বিজনেস।
  • ধন্যবাদ , ম্যাম।
    তো রাতে রুদ্র রেস্টুরেন্ট অফ করে বাসায় আসে। বাসায় ফিরতে রাত ১১ টা বাজে। বাসায় ঢুকার সময় তার বাবা
    জিজ্ঞেস করে ,
  • কী ব্যাপার রুদ্র? আজকাল এতো রাত করে বাসায় ফিরছো। ১১টা বেজে গেছে। কী করো সারাদিন বাইরে?
  • কাজ করি। আমি একটা রেস্টুরেন্ট দিয়েছি।
  • (অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে) রেস্টুরেন্ট? টাকা কোথায় পেলে?
  • বন্ধুদের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।
  • রেস্টুরেন্ট দিয়েছো ভালো কথা। জানাও নি কেন?
  • জানালে কী হতো? আমাকে তো সবসময় বলেছো বিজনেস আমি বুঝবো না। আমার কাজ আমি আমার মতো করে
    করছি। শুধু দোয়া করো আমার জন্য।
    একথা বলে রুদ্র নিজের রুমে চলে যায়। রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসে। এমন সময় মেহেরিনের কথা
    মনে পড়ে। রুদ্র মনে মনে বলে , ১ মাস হতে চললো মেহেরিনের কোন খোঁজ খবর পাচ্ছি না। মেয়েটা তো আমাকে
    কল ও করছে না। ঠিক ঠাক আছে তো? কাজের ব্যস্ততায় কল দিতে পারিনি। একবার কল করে দেখি।
    রুদ্র ফোন হাতে নিয়ে কল করে , মেহেরিনের ফোন বন্ধ দেখায়। যতবার কল করে একই অবস্থা। রুদ্র মনে মনে
    ভাবে , গ্রামে আছে হয়তো নেটওয়ার্কের সমস্যা। নয়তো ফোনে চার্জ নেই। ঢাকায় ফিরলে ও নিজেই যোগাযোগ
    করবে।
    এরপর রুদ্র খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
    অন্যদিকে , প্রায় একমাস হয়ে গেল অথচ মেহেরিন এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়নি। তার মা আক্ষেপ করে বলে ,
    -১ মাস হয়ে গেলো , মেয়েটা সুস্থ হচ্ছে না।
    কথা বলছে না। শুধু তাকিয়ে থাকে। হাত-পা নাড়াচাড়া করতে পারে না। কী হয়ে গেল আমার মেয়েটার (কেঁদে কেঁদে
    বলে)।
    মেহেরিনের বাবা সান্তনা দিয়ে বলে ,
  • চিন্তা করোনা। ঠিক হয়ে যাবে । মাথায় বেশি আঘাত পেয়েছে। ডাক্তার বলেছে ঠিক হতে কমপক্ষে ৭-৮ মাস
    লাগবে।
  • আল্লাহ আমার মেয়েটাকে দ্রুত সুস্থ করে দাও।

এদিকে রুদ্র কাস্টমার দের সার্ভিস দিতে ব্যস্ত , সাথে ওর দুই ফ্রেন্ড তুহিন ও রাইয়ান কাজ করছে।
রেস্টুরেন্ট ছোট হলেও এর বিশেষত্বের কারণে ভীড় লেগেই থাকে। চারপাশে ধীরে ধীরে পরিচিতি পেতে থাকে”
পিঠার গল্প রেস্তোরাঁ” নামে একটা রেস্টুরেন্ট হয়েছে।
এভাবে আরো ৩-৪ মাস পার হয়ে যায়। এবার রুদ্র একটু চিন্তায় পড়ে যায় মেহেরিনকে নিয়ে। একদিন
রেস্টুরেন্টে একটি টেবিলে চিন্তায় মগ্ন হয়ে বসে আছে। এমন সময় তুহিন বিষয়টা খেয়াল করে রুদ্রের কাছে
আসে।

  • রুদ্র , কোন বিষয় নিয়ে কি তুই চিন্তিত?
  • হ্যাঁ রে। প্রায় ৫ মাস হতে চললো , মেহেরিনের কোন খোঁজ পাচ্ছি না। লাস্ট ওর গ্রামে যাবার দিন দেখা হয়।
    বলেছিল ১ মাস পর ফিরবে। এরপর আর ওর সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। ফোন বন্ধ দেখায়।
  • ওর কোন ফ্রেন্ডের ফোন নাম্বার আছে তোর কাছে?
  • না , এটাইতো সমস্যা। ওর ফ্রেন্ডদের কাউকেই চিনিনা।
  • আচ্ছা , চিন্তা করিস না। আমাকে বলতো ও কোন মাসে গেছে?
  • ডিসেম্বর মাসে।
  • ওর গ্রামের বাড়ি কোথায়?
  • রাজশাহী।
  • (একটু ভেবে বলে) দোস্ত , ডিসেম্বর মাসে তো রাজশাহী গামী একটি বাসের এক্সিডেন্ট হয়। তুই খবর দেখোস
    নাই?
  • দেখছি , তো কী হইছে?
  • ঐ বাসে মেহেরিন ছিল না তো?
  • কীসব আছে বাজে কথা বলছিস?
  • দোস্ত , কিছু মনে করিস না। অনেকেই মারা গেছে ঐ ঘটনায়।
  • এই তুই যা তো এখন। আমার কিছু ভালো লাগছে না।

অপরদিকে , মেহেরিন আগের থেকে এখন কিছুটা সুস্থ হয়েছে , অল্প অল্প কথা বলতে পারে , হাত-পা নাড়াচাড়া
করতে পারে।
(মেহেরিনের বাবা ও ডাক্তারের কথোপকথন)

  • আমার মেয়ের কন্ডিশন কেমন এখন?
  • চিন্তা করবেন না , আর ২-৩ মাসে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে।
    ৩ মাস পর…

কলিং বেলের শব্দে মেহেরিনের মা দরজা খোলে। খুলে দেখতে পায় মেহেরিনের বান্ধবী তৃষা এসেছে।

  • আসসালামু আলাইকুম , আন্টি।
  • ওয়ালাইকুম আসসালাম। ভেতরে এসো মা।
  • (ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে) আন্টি কোথায় ছিলেন আপনারা? আমি অনেক বার কল করেছি , কল করেও
    পাচ্ছিলাম না। বাসায় এসেছিলাম এর আগেও , দেখি তালা দেয়া। মেহেরিনের ফোন বন্ধ দেখায়। আপনারা সবাই
    ভালো আছেন তো?
    -এইতো আছি আলহামদুলিল্লাহ। বসো , সব বলছি। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন ,ডিসেম্বর মাসে মেহেরিনের
    দাদার বাড়ি যাওয়ার পথে আমাদের বাস এক্সিডেন্ট হয়। তাতে আমি আর তোমার আঙ্কেল কিছুটা আহত হই ,
    তবে আল্লাহর রহমতে ভালো হয়ে যাই। মেহেরিন মারাত্মকভাবে আহত হয়। ওর মাথায় ভীষণ চোট পায়।
    হাসপাতালে রাখতে হয় ৮ মাস। এইতো কিছুদিন হলো হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে এসেছি।
  • এখন কী অবস্থা ওর? আমি কি ওর সাথে দেখা করতে পারি?
  • অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো। তবে কাউকে চিনতে একটু সময় লাগছে। সাথে সাথেই চিনতে পারছে না।
    ওর রুমে এসো , কথাবার্তা বলো ধীরে চিনতে পারবে।

তৃষা মেহেরিনের রুমে গিয়ে দেখে মেহেরিন শুয়ে আছে।
মেহেরিনের মা বলে ,

  • মেহেরিন , মা দেখ কে এসেছে।
  • কে এসেছে?
  • তৃষা , তোর বান্ধবী।
    তৃষা মেহেরিনের পাশে গিয়ে বসে , মেহেরিন কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে মনে করার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর
    চিনতে পারে।
  • মেহেরিন , আমাকে চিনতে পারছিস?
  • হ্যাঁ , পেরেছি।
  • এখন কেমন আছিস?
  • ভালো। (মেহেরিন উঠে বসে)
  • আন্টি , হাসপাতাল থেকে ফেরার পর ওকে খোলামেলা কোন পরিবেশে নিয়ে গেছেন?
  • না , নিয়ে যাওয়া হয় নি।
  • ওতো এই কয়েকমাস একটা ট্রমার মধ্যে ছিল। আপনি যদি কিছু মনে না করেন , আমি কি ওকে নিয়ে একটু বের
    হতে পারি? আশা করি বাহিরের আলো বাতাসে হাঁটতে চলতে ওর ভালো লাগবে।
  • হ্যাঁ , সমস্যা নেই। তবে একটু সাবধানে দেখে শুনে রেখো। আর সন্ধ্যার আগে ফিরে এসো।
  • আচ্ছা , আন্টি । চিন্তা করবেন না।
    মেহেরিন রেডি হয়ে নে , বের হবো।
  • ঠিক আছে।

( মেহেরিন ও তৃষা চলন্ত রিকশায়)

  • অনেক মাস পর বাহিরের আলো , বাতাসে ভালো লাগছে। আচ্ছা তৃষা , আমরা কোথায় যাচ্ছি?
  • তুই তো ফাষ্টফুড লাভার , একটা নতুন রেস্টুরেন্টে তোকে নিয়ে যাচ্ছি।
  • নারে , ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার খেতে ডাক্তার বারণ করেছে।
  • আচ্ছা তাহলে ফাষ্ট ফুড না। তোকে পিঠা খাওয়াবো।
  • রেস্টুরেন্টে পিঠা পাওয়া যায়? ইন্টারেস্টিং ব্যাপার!
  • হুম , খুব ইউনিক রেস্টুরেন্ট। পিঠা খেতে খেতে গল্পের বই ও পড়তে পারবি। তুই তো বই পড়তে পছন্দ করিস।
  • সেখানে গল্পের বই ও আছে?
  • হুম। গল্প , কবিতা , উপন্যাস সব আছে।
    আচ্ছা , এসে পড়েছি। মামা রিকশা থামান(রিকশাওয়ালা কে বলে)।

এরপর তৃষা মেহেরিনকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের ভিতরে ঢুকে। মেহেরিন দেখতে পায় রেস্টুরেন্টের নাম লিখা ” পিঠার
গল্প রেস্তোরাঁ”। মেহেরিন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে এই নাম তো তার পরিচিত। এভাবে থাকতে দেখে
তৃষা জিজ্ঞেস করে।

  • মেহেরিন , দাঁড়িয়ে আছিস কেন? চল বসি।
  • শোন না , রেস্টুরেন্টের নামটা আমার পরিচিত লাগছে।
  • তোর কীভাবে পরিচিত লাগছে?
    -রেস্টুরেন্ট টা তৈরি হয়েছে ৭ মাস হলো। তুই তো এই কয় মাস হাসপাতালে ছিলি।
  • বুঝতে পারছি না। আমার মনে হচ্ছে , এই নাম আমি আগে থেকে জানি।
  • আচ্ছা শোন , তুই দীর্ঘ দিন ট্রমার মধ্যে ছিলি। এখন এটা নিয়ে আর ভাবিস না , মাথায় চাপ পড়বে।
    এখনো পুরোপুরি সুস্থ হসনি। আমি পিঠা অর্ডার করছি। আর তোকে একটা দারুন কবিতার বই দিচ্ছি। পড়ে দেখ ,
    ভালো লাগবে।
    একথা বলে বুক সেলফ থেকে মেহেরিনের লেখা কবিতার বই ই তৃষা মেহেরিন কে দেয়। আর ওয়েটারকে ডেকে দুটো
    পাটিসাপটা পিঠা অর্ডার করে। এদিকে মেহেরিন কবিতা পড়তে শুরু করে। ৩ টা কবিতা পড়ার পর , বইয়ের পৃষ্ঠা
    ওলটপালট করে দেখে এগুলো ওর ভীষণ চেনা কবিতা। এরপর বইয়ের ৩৩ নাম্বার কবিতাটি পড়তে গিয়ে
    মেহেরিনের মনে পড়ে এগুলো ওর লেখা কবিতা। যেগুলো ও রুদ্র কে দিয়েছিল। ৩৩ নাম্বার কবিতাটি ছিল ” রুদ্র
    তোমার জন্য”। মেহেরিন তৎক্ষণাৎ বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। এরপর তৃষা জিজ্ঞেস করে-
  • উঠে পড়লি কেন? খারাপ লাগছে?
  • এই রেস্টুরেন্টের ওনার কে?
  • কেন?
  • আমি তার সাথে দেখা করতে চাই।
  • কিন্তু কেন?
  • কেন সেটা এখন বলতে পারবো না। আমার তার সাথে দেখা করা জরুরি। তুই প্লিজ দেখ না।
    -আচ্ছা , তুই বস। আমি দেখছি কাউকে জিজ্ঞেস করে।

এরপর তৃষা রিসিপশনে গিয়ে জিজ্ঞেস করে , রিসিপশনিস্ট ওনারকে কল করে। কিছুক্ষণ পর রুদ্র আসে।

  • কী ব্যাপার? কিছু হয়েছে?

রিসিপশনিস্ট- স্যার , একজন ম্যাম আপনার সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন। খুব জরুরি নাকি ।

  • কোথায় সে?

রিসিপশনিস্ট- ভেতরে বসে আছেন।

  • ওকে।
    রুদ্র ভেতরে গিয়ে বলে ,
  • হ্যালো ম্যাম!
  • মেহেরিন পিছনে ফিরে রুদ্রের দিকে তাকায়। আর চমকে যায়!
    -রুদ্র ও চমকে গিয়ে বলে , মেহেরিন! তুমি? কোথায় ছিলে এতদিন? আমি তোমাকে কত বার কল করেছি ,
    কোনভাবেই তোমার খোঁজ পাইনি। এতো গুলো মাস ধরে আমি শুধু তোমাকে খুঁজে গেছি। এভাবে কেউ উধাও হয়ে
    যায়?
  • রুদ্রের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কোন কথা বলে না।
  • কী হলো? কিছু বলো। নাকি নতুন কাউকে পেয়ে আমাকে ভুলে গেছো?
  • রুদ্র , আমার এক্সিডেন্ট হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। মাঝখানে এতগুলো মাস কীভাবে চলে গেল টের
    পাইনি।
    তৃষা- হ্যাঁ , ভাইয়া। ওর মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছিল। আমরাও ওকে কোনভাবে রিচ করতে পারিনি এতো
    দিন। হাসপাতাল থেকে কিছুদিন আগে ওকে রিলিজ করা হয়েছে। ঘরবন্দি ছিল এতোদিন ।তাই আজ ওকে নিয়ে বের
    হলাম। আর দেখুন , আপনার সাথেও ওর দেখা হয়ে গেল।
  • আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি ওকে না নিয়ে আসলে ওকে খুঁজে পাওয়া আমার জন্য কষ্টকর হয়ে যেত।
  • ঠিক আছে , আমি তাহলে আসি। প্রিয় মানুষটাকে অনেক দিন পর খুঁজে পেয়েছেন। এবার মান-অভিমানের হিসেব
    নিকেশ করুন।(তৃষা হেসে বলে)
  • এখনি চলে যাচ্ছেন? বসুন পিঠা খেয়ে তারপর যাবেন।
  • এখানকার পিঠা আমি অনেক খেয়েছি। আমি জানতাম না যে আমার বান্ধবীর প্রিয় মানুষটা এই রেস্টুরেন্টের
    ওনার। আবার অন্যদিন আসবো। আর হ্যাঁ , মেহেরিন কে সাবধানে বাসায় পৌঁছে দেবেন। (একথা বলে তৃষা চলে
    যায়)
  • ঠিক আছে।

এবার রুদ্র মেহেরিনের কাছাকাছি এসে ওর হাত দুটো ধরে বলে ,

  • তোমার দেয়া রেস্টুরেন্টের নাম , বুকসেলফে সাজানো তোমার লেখা কবিতা , গল্প। এতো কিছু করার পর তুমিই
    হারিয়ে গেলে। ( ইমোশনাল হয়ে বলে)
  • আমি কি ইচ্ছে করে হারিয়েছি বলো? হারিয়ে যাওয়ার পেছনে তো আমার হাত ছিল না। সবটাই প্রতিকূল
    পরিস্থিতির কারণে হয়েছে।
    তবে আমার ভীষণ ভালো লাগছে তোমাকে এস্টাবলিশড হতে দেখে। অবশেষে তুমি তোমার আইডিয়া অনুযায়ী
    বিজনেস একটা ভালো পজিশনে আনতে পেরেছো।
  • সবটাই তোমার অনুপ্রেরণায় হয়েছে।
  • উঁহু , তোমার পরিশ্রমের ফলাফলে এটা হয়েছে।
  • উঁহু , তুমি পাশে না থাকলে , সাপোর্ট না দিলে কিছুই হতো না। তুমি আমার লাইফে ব্লেসিং।
  • আচ্ছা ঠিক আছে , বুঝলাম।
  • এদিকে এসো , (মেহেরিনের হাত ধরে এক পাশে রাখা চেয়ারে বসায়)। এই টেবিল-চেয়ার স্পেশালি তোমার জন্য
    সাজিয়ে রেখে দিয়েছিলাম। এক মিনিট বসো , আমি আসছি।
    এই বলে রুদ্র ২ কাপ কফি আর ২ টো পাটিসাপটা পিঠা নিয়ে এসে মেহেরিনের উল্টো দিকের চেয়ারে বসে বলে ,
    -জানো , আমার মনে হচ্ছে কত বছর ধরে তোমাকে দেখি না , হাজার বছর ধরে তোমার সাথে গল্প করিনা , মন
    খারাপ , দুশ্চিন্তাগুলো শেয়ার করিনা। খুব কষ্টে মাসগুলো পার করেছি।
  • অথচ আমার কাছে মনে হচ্ছে , এইতো সেদিন তোমার থেকে বিদায় নিয়ে দাদা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
    আবার তোমার কাছেই ফিরে এলাম। মাঝের সময়টুকুর হিসেব পেলাম না।
  • হুম , তোমাকে খুব বেশি মিস করেছি। অপেক্ষার প্রহর গুনে গুনে দিন , সপ্তাহ , মাস পার করেছি।
  • এইতো আমি এখন এসে পড়েছি। একদম তোমার কাছে যত্ন করে রেখে দিবা যেন হারিয়ে যেতে না পারি।
    বুঝেছো? কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। খাও।
  • হুম। এই কয়মাসে তোমার কাছ থেকে না পাওয়া অনেক গুলো কবিতা জমে আছে। কবে দিবা? ( কফি খেতে খেতে
    বলে)
  • তুমি চাইলেই তো আমি সাথে সাথেই লিখতে পারি ১০১ কবিতা।
    বলো তুমি কখন চাও?
  • আচ্ছা , পড়ে চেয়ে নিবো।
    আপাতত তোমার জন্য আমি দুই লাইন কবিতা শোনাই ,

তুমি আমার রুদ্রাণী , তুমি আমার নিহারিকা
তুমি হবে আমার রাজ্যের রানী , তুমিই যে আমার প্রহেলিকা।

  • বাহ্! রুদ্র দ্য গ্রেট লেট লতিফ থেকে গ্রেট পয়েট হয়ে গেল! আচ্ছা , রুদ্রাণী শব্দের অর্থ কী?
  • রুদ্রের হবু বউ।
  • আসলেই তাই?(অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে)
  • আসলে এর অর্থ মূলত রুদ্র নামক ব্যক্তির স্ত্রী কে রুদ্রাণী বলে সম্বোধন করা যায়। তুমি তো এখনো
    আমার বউ হওনি, তাই হবু বউ বললাম। এটি একটি স্ত্রীবাচক শব্দ। তুমি এটার একটি নির্দিষ্ট অর্থ কোথাও
    খুঁজে পাবে না। যে যেভাবে ইচ্ছে , স্ত্রীবাচক শব্দ হিসেবে উপমা অর্থে ব্যবহার করতে পারে। তবে হ্যাঁ , আমার
    মতে শব্দটির মধ্যে কাব্যিক , সাহিত্যিক অনুভূতি মিশে আছে। আর তুমিই তো আমার কবিতা , আমার
    সাহিত্যিকা।
  • রুদ্র! ইট ইজ ভেরি ইম্প্রেসিভ! আমি তো তোমার সাথে যত কথা বলছি , তত অবাক হচ্ছি।
    -কেন? অবাক হওয়ার হওয়ার মতো কিছু বললাম?
    -এই যে , একটা শব্দের ব্যাখ্যা তুমি কত সুন্দর করে ব্যক্ত করলে।
    -সবটাই তোমার সান্নিধ্যে থাকতে থাকতে হয়েছে। সো ক্রেডিট গোজ টু মাই রুদ্রাণী।
  • আচ্ছা!! যখনি তোমার কোন বিষয় নিয়ে প্রশংসা করি , ক্রেডিট আমার দিকে ট্রান্সফার করে দাও!
  • আর প্রতি বার তুমি ক্রেডিট এক্সেপ্ট করতে চাও না। কেন বলোতো? সত্যি বলতে আমার দ্বিধা নেই যে ,
    তুমি না থাকলে আজ আমি এতো দূর আসতে পারতাম না। তোমার অনুপ্রেরণায় অগোছালো ছেলেটা আজ
    প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে।
  • আচ্ছা ঠিক আছে। ক্রেডিট এক্সেপ্ট করলাম। এখন বলো , হবু বউ থেকে তোমার পারমানেন্ট বউ কবে হবো?
    মেহেরিনের একথা শুনে রুদ্র একটু লজ্জা পায়। লাজুক হয়ে মুচকি হাসে। তখন মেহেরিন বলে ,
    -একি! ছেলে দেখি বিয়ের কথা শুনে লজ্জা পাচ্ছে।
  • আরে না। লজ্জা পাবো কেন? আমি হাসলাম কারণ , বিয়ের বিষয়ে আমি বলার আগেই তুমি বলে ফেললে। তোমার
    এই ডিরেক্ট কথা বলার ধরণ আমার ভালো লাগে।
  • ছেলে বড় হয়েছে সেই কবে! বলতে হবে না বিয়ের কথা? তোমার বাবা-মাকে আমার কথা জানাবা। তারপর মিষ্টি
    নিয়ে আমাদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবা।
  • জী ম্যাডাম , আসবো। তবে এখন না। আপনি কিছুদিন হলো একটা ট্রমার মধ্য থেকে বের হয়েছেন।
    পুরোপুরি সুস্থ হন , তাছাড়া আপনার একাডেমিক লাইফ শেষ করেন। তারপর আস্তে ধীরে আমরা বিয়ের বিষয়ে
    এগোবো , কেমন?
  • ঠিক আছে। তবে একটা কথা বলে রাখি, আমাকে রেখে নতুন কারো প্রতি আবার মুগ্ধ হয়োনা , তাহলে তোমার
    খবর আছে।
  • কী বলো? নতুন কেউ আসবে কোথা থেকে? আমিতো সেই বুঝ হওয়ার পর থেকে আমার মেহেরিনের সাথেই
    পরিচিত , একমাত্র তাকেই চিনি।
  • নতুন কেউ নেই ঠিক আছে , তবে আসতে কতক্ষণ বলো? এখন তো শহরের নামকরা ইউনিক রেস্টুরেন্টের
    ওনার তুমি। ফেমাস পারসন ইন টাউন।
    শত সুন্দরীদের ভীরে আমাকে যদি পরে আর তোমার ভালো না লাগে?
  • হুম , বুঝতে পেরেছি। আমাকে নিয়ে এখন তোমার ইনসিকিউর ফিল হচ্ছে। ওভার থিংকিং বাদ দাও , এতো ওভার
    থিংকিং করলে মাথায় পেইন হবে ম্যাডাম। আমার আসেপাশে যতই সুন্দরী থাকুক , সৌন্দর্য আমাকে টানে না।
    আমাকে শুধু মেহেরিন টানে। আশা করি বোঝাতে পেরেছি।
  • হুম , সো সুইট অফ মাই রুদ্র।
  • আচ্ছা , সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তোমাকে তো বাসায় পৌঁছে দিতে হবে। চলো।
  • হ্যাঁ , আরেকটু দেরি হলে মা চিন্তা করবে। চলো।
    মেহেরিনকে নিয়ে রুদ্র রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়।
    রিকশায় করে বাসার গেটে পৌঁছে দেয়। এমন সময় মেহেরিন নেমে চলে যাচ্ছিল তখন রুদ্র পেছন থেকে ডাক দেয় ,
  • মেহেরিন
  • হ্যাঁ বলো।
  • একা একা ভেতরে চলে যাচ্ছো? আমাকে ভেতরে যেতে বললে না যে?
    -কেন বলবো? কে হও তুমি আমার?
  • একি! মাথায় ইনজুরি হয়ে এখন আবার স্মৃতি শক্তি হারিয়ে গেল নাকি?(কনফিউজড হয়ে জিজ্ঞেস করে)
  • আচ্ছা , তোমার নামটা যেন কী?(দুষ্টুমি করে বলে)
    -মেহেরিনের হবু জামাই ওরফে রুদ্র।
  • ওহ্ হ্যাঁ আমি তোমাকে স্বপ্নে দেখেছিলাম।

আমার স্মৃতি শক্তি ঠিক আছে।

  • তাহলে?
  • ঐ যে একবারে মিষ্টি নিয়ে , তোমার বাবা-মাকে নিয়ে বিয়ের প্রস্তাব সহ আসবে। তখন ভেতরে ঢুকতে দেবো।
  • আচ্ছা ঠিক আছে , একবারে প্রস্তুতি নিয়েই আসবো।
    বাসায় গিয়ে রেস্ট নেও।
  • তুমি কি এখন আবার রেস্টুরেন্টে যাবে?
  • হ্যাঁ , এখন তো দিন-রাত আমার একটাই ডিউটি।
  • হুম , সাবধানে যেও।
    অতঃপর রুদ্র রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
Facebook Comments Box
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনিhttps://protiddhonii.com
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।

বিষয় ভিত্তিক পোস্ট

শহীদুল ইসলামspot_img

সাম্প্রতিক পোস্ট