কবিতার প্রতিধ্বনি – কবিতার এক পাতা
প্রতিধ্বনির সাপ্তাহিক আয়োজন
০৯/০৫/২০২৫ ||শুক্রবার
লেখা পাঠাতে নিচে ক্লিক করুন-
লিখেছেন যারা-
- মনির বিন মোবারক
- আইনুন নাঈমা
- সৈয়দ রেজা পারভেজ
- জান্নাতুল মাওয়া (রিফাত)
- মোহাম্মদ শাহজামান শুভ
- নুজহাত তাবাসসুম ইপ্সিতা
- এস এ বিপ্লব
- মোহাম্মদ ফয়সাল
- অথই মিষ্টি
- রওশন মতিন
- বি এম মিজানুর রহমান
- মাহমুদুজ্জামান জামী
- আসাদুজ্জামান খান মুকুল
- সাব্বির হাসান নিরব
- সোলায়মান বাদশা
ই-পেপার পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন অথবা এই পাতা থেকেই পড়ুন
জীবন
মনির বিন মোবারক
জন্ম থেকে মরণ অব্দি
দীর্ঘ হায়াত পেলে,
জীবন যে যায় সুখে-দুখে
কভু হেসে খেলে।
শৈশব কৈশোর যৌবন বৃদ্ধ
বিভক্ত চার কালে,
কেউ জানে না কী যে লেখা
আছে কাহার ভালে।
ছোট সময় না বুঝে যায়
বিনোদনে ভরা,
শোর্যবীর্যের যৌবন কালটা
ভালো কর্মে খরা।
যৌবনেতে সবাই দেখো
সুখ সাগরে ভাসে,
আগে-পিছে নাহি ভেবে
রঙ-তামাশায় হাসে।
জোয়ান কালে পেশির বলে
কাটায় সময় সুখে,
বৃদ্ধ সময় কাটাতে হয়
না জানি কোন দুখে।
প্রতীক্ষা
আইনুন নাঈমা
এমন বৃষ্টি মুখর একটি দিন
তোমার আমার হোক।
সময় থামবে ঘড়ির কাটায় ;
আবছা আলোর মরীচিকায় ।
লেপ্টে যাওয়া খুচরো চুলে
গড়িয়ে পড়বে জল –
থরো থরো কাঁপবে তোমার
গোলাপ রাঙা অধর ।
অর্ক হারা ধরার ঠোঁটে
থেমে যাবে সব কোলাহল ।
কাক ভেঁজা এক কাঁকতাড়ুয়া
অবাক চোখে দেখবে তোমায় –
মেঘ গালিচা গলে গলে যায়
তোমার আবেশ সিক্ত চুমায় ।
বৃষ্টি ভেঁজা চপল পায়ে ,
আঁচল ডালায় ফুল কুঁড়িয়ে
উড়িয়ে দেবে আকাশ পানে ।
অনামিকা আঁকড়ে ধরে
ঘূর্ণি দিবে ,উড়বে আঁচল ।
দৃষ্টি সীমায় বৃষ্টি নামে
পৃথিবীটাই ঝাপসা লাগে ।
বিরাম যে নেই থামার ;
বৃষ্টি মুখর একটি দিন
শুধুই হলো আমার।
জীবন
সৈয়দ রেজা পারভেজ
কবিতার অষ্টম লাইনে একটা শিউলি ফোটে আছে।
তুমি আট লাইন পার হয়ে ফুলটি নিজের খোঁপায় গুঁজে নিলে।
কবিতার আরও আট লাইন পরে তুমি তোমার প্রেমিকের দেখা পাবে ।
তারপর আরও আট লাইন শেষ হলে তোমার বিয়ে হয়ে যাবে ।
এখন তুমি দুয়ারে বসে গালে হাত রেখে ভাবছো-
ফের পেছন থেকে কবিতা শুরুর অভিমুখে আট লাইন পাড়ি দিতে পারলে তুমি তোমার প্রেমিকের কাছে ফিরে যেতে পারবে ।
তারপর আরও আট লাইন পাড়ি দিতে পারলে
তুমি তোমার কৈশোরে ফেলে আসা সেই শিউলি ফুলের কাছে ফিরে যেতে পারবে,
তারপর কল্পনায় এতদূর পাড়ি দেওয়ার পর তোমার মনে পড়বে-
কবিতার ওপর হেঁটে পেছনর থেকে অতদ‚র সামনে আসা গেলেও,
জীবনের ওপর হেঁটে পেছন থেকে ততদূর সামনে আসা যায় না!
তোমার নামে ঝড় আসে
জান্নাতুল মাওয়া (রিফাত)
জানো তো আমার জীবন টা
এলোমেলো হয়ে গিয়েছে!
যখন তোমার আগমন ঘটছে!
চলে যাবার বেলায়,
মনে হয় না ঝড় উঠবে
কেননা হৃদয় আগেই বিধ্বস্ত হয়ে রয়েছে।
তোমার প্রস্থানে আমার কল্যাণ ছিলো
তোমার আগমনে আমার ধ্বংস এলো
তোমার অবস্থান আমায় তোলপাড় করলো
আমার বিচ্যুতি ঘটিয়ে তোমার ইতি টানলো।
ঘামে গাঁথা গৌরব
মোহাম্মদ শাহজামান শুভ
মানুষ চেনা যায় কাজে,
তাকওয়া যার হৃদরাজে।
ধন-বংশে হয় না মান,
নৈতিকতায় সবার স্থান।
শ্রমিকেরই হাতে গড়া,
জীবন-নৌকা ভাসে ধরা।
ঘামে ভেজে যাঁর যে গা,
তাঁরেই চায় এই দুনিয়া।
সত্য পথে, সৎ উপার্জন,
তাই তো শ্রেষ্ঠ—এটাই বরণ।
ইচ্ছা-নিষ্ঠা যেথায় জাগে,
আল্লাহ তায়ালা সদা লাগে।
চাষা, মজুর, কারিগর,
সম্মান পায় মহাসমর।
কেউ নয় নিচু, কেউ নয় বড়,
তাকওয়ার দীপ্তি যার অন্তর।
ইসলাম তাই শেখায় পথ,
শ্রমেই আছে কল্যাণ রথ।
সবার পেশায় আছে দাম,
শ্রমই সেবা, শ্রমই নাম।
অভিশপ্ত জীবন
নুজহাত তাবাসসুম ইপ্সিতা
অভিশপ্ত জীবন আমার!
সুখ খুঁজতে গিয়ে
কপালে দুঃখই যেন জোটে বারবার।
শেষ কবে হেসেছিলাম
খোঁজ নেই তার।
কিন্তু, শেষ কখন কেঁদেছি,
খেয়াল আছে তার।
অভিশাপের কারণে,
আমার জীবন অন্ধকারে ঘেরা।
আলোর অভাবে দেখতে পাই না
ভবিষ্যৎ যাত্রা।
জ্বর,বসন্ত ও অসুখে
যখন আমি কাতর,
তখন কেউ এসে করে না আমায়
একটুখানি হাত।
না ঘুমিয়ে জেগে থাকি সারারাত।
কখন মা এসে ধরবে,
আমার ছোট্ট দুটি হাত?
ওরা বলে
এস এ বিপ্লব
ওরা বলে,
আমি না কি ভুলে গেছি তোমায়।
ওরা বলে,
আমাকে না কি দেখা যায় না
মসজিদের বারান্দায়।
ওরা বলে,
আমি না কি ভালোবাসি জীবন কে।
ওরা বলে,
আমি ভয় পাই না মরণ কে?
তুমি বল তো,
বিধী তোমায় কি ভুলে থাকা যায়।
তুমি বল তো,
তোমার ঘর মসজিদে না গিয়ে
কারো আছে কি উপায়।
আমরা যে ঋণী তোমার সৃষ্টির কৃপায়।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলা
মোহাম্মদ ফয়সাল
বাংলাদেশ আমার মা, তুমি ছড়িয়ে আছো প্রান্তে,
চুয়াডাঙ্গা থেকে তেঁতুলিয়া, একই ভালোবাসার কান্তে।
জেলাগুলো তোমার অঙ্গ, তুমি তাদের প্রাণ,
আসো তবে নাম ধরি, গাই সুখ–দুঃখের গান।
ঢাকা তুমি রাজধানী, বুকে নেয় ইতিহাস,
নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জে চলে কর্মের আভাস।
গাজীপুরে কলকারখানা, মানিকগঞ্জে নদীর ঢেউ,
মুন্সীগঞ্জে পদ্মা হাসে, কিশোরগঞ্জে সুরের বেউ।
টাঙ্গাইলের চিতই পিঠা, ময়মনসিংহে শিক্ষা ঘেরা,
জামালপুরের মাঠে বাজে কৃষকের সুরেরা।
নেত্রকোনা, শেরপুর—সবুজে মোড়া স্বপ্নের রঙ,
ভালুকার বনে আজও বুনোপ্রাণের ঢঙ।
চট্টগ্রাম পাহাড়, সাগর, বন্দর আর প্রেম,
কক্সবাজারে বিশ্বদীর্ঘ সমুদ্রের টান যেন চিরন্তন ঋণ।
বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ির ডাকে,
জুমচাষির হাসি লেগে রয় কপালে চাঁদের আঁকে।
নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর—মাটির ঘ্রাণে মোহিত প্রাণ,
ফেনীর বাঁকে বাজে বিজয়ের গান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর—রক্তে-ঘামে জ্বলে,
কুমিল্লায় ইতিহাস ঘুমায় ময়নামতীর তলে।
সিলেট চার ছায়ায় ঘেরা—তামাবিল থেকে রাতারগুল,
মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জে চায়ের বাগান ফুল।
মেহেরপুরে স্বাধীনতা, কুষ্টিয়ায় লালনের গান,
ঝিনাইদহে বাউলের প্রাণ, চুয়াডাঙ্গায় হৃদয়ের জান।
নড়াইলের প্রতিভা, মাগুরার ক্রীড়া,
যশোরের পথে প্রথম পত্রিকা ভীড়া।
খুলনা, বাগেরহাট—সুন্দরবনের ছায়া,
সাতক্ষীরায় নদীর হাসি, চিংড়িতে খুঁজে পাওয়া মায়া।
রাজশাহী আমের দেশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রসে,
নওগাঁর খেত, নাটোরে রাজবাড়ি জগৎ বসে।
পাবনায় সাহিত্য, সিরাজগঞ্জে পদ্মা বাজায় বাঁশি,
বগুড়ার মহাস্থানগড়ে দাঁড়িয়ে ইতিহাস হাসি।
রংপুরে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুরের ধান,
পঞ্চগড়ের চায়ে ভরে সকালের প্রাণ।
নীলফামারী, কুড়িগ্রাম—দূরের মাঠের আলো,
লালমনিরহাটে সীমান্ত বেয়ে উঠে ভালোবাসার পালো।
বরিশাল পায়রা বন্দর, ঝালকাঠির চুইঝাল,
পটুয়াখালীতে কুয়াকাটা, ভোলায় নদীর জাল।
পিরোজপুরের পাট, বরগুনার ঢেউ,
সব মিলিয়ে আমার দেশ—শোভা, গৌরব, শ্রুতি-স্নেহ।
গাইবান্ধা থেকে ফরিদপুর, সবই এক হৃদয়,
মাদারীপুর, শরীয়তপুর—সবুজ ছায়ার পরিচয়।
রাজবাড়ি, গোপালগঞ্জ—বঙ্গবন্ধুর ঠিকানা,
জয়পুরহাটের স্তব্ধ দুপুর—মাটির গন্ধে খাজানা।
একেক জেলা একেক রঙ, অথচ গাঁথা এক বন্ধনে,
লাল-সবুজের পতাকা তলে মিলেছি এক আনন্দে।
বাংলাদেশ, আমার দেশ—তুমি ছয় চুয়াল্লিশ প্রাণ,
তোমার নামে লিখে যাই, প্রেমমাখা কবিতার গান।
মোরা শ্রমিক
অথই মিষ্টি
শ্রমিক মোরা, সবার সেরা
পাইনা হে তার সম্মান
সকল কাজে, সকাল সাঝে
লাগিয়ে দেই মোদের প্রান।
ঘাম ঝরিয়ে, সময় ফুরিয়ে
খেটে যাই দিন রাত
ঘামে ভেসে, মুখে হেসে
দিন শেষে খাবো বলে ডাল-ভাত।
তুষার দ্বীপের কাছে
রওশন মতিন
তুষার দ্বীপের কাছে যাব
ঝরাপাতার গৈরিক নিঃশ্বাস হয়ে
বুকের তিমিরে এক টুকরো আগুন জ্বেলে
মেরু-মরিচিকা,পথের সীমানা পায়ে দলে
উদ্দাম উত্তাল ঘূর্ণির মত ভেসে ভেসে,যাবোই-যাব
হিম কাননে, শুভ্র বসনা অনন্যা সেই রুপসীর কাছে।
হিমাংকের নীচে,হিম-শীতল নিবিড় আলিঙ্গনে
নিবিড়ঘন ভালোবাসায় গাথা শুভ্র তুষ-মুকুট-
তুষার -গোলাপ ফোটে থরে থরে ,শীত নিদ্রায়
নিজের শেকড়ে বেড়ে ওঠে অপরুপ নিখাদ শুভ্রতায়
সরল নিস্পৃহতায় নিজেকে আঁকড়ে থাকে অবিচল মৌনতায় ;
কেউ কেউ আঁচড় কাটে তুষার -গোলাপের আত্বমগ্ন পবিত্র ধ্যানে,
যদি ও মিথ্যার প্রতিলিপি মুহুর্তেই ধুয়ে-মুছে যায়
শুভ্র-সুন্দর গোলাপের গানে।
সেতুবন্ধ, বসন্তের দূত- তুহীন-তুষার হিমকণা শীত,
গায় আগমনী বার্তা – যৌবনের উদ্দাম বন্দনা গীত।
নিজের হাতে
বি এম মিজানুর রহমান
হতাশাতে ডুবে ছিলাম
তুললে নিজের হাতে,
বৈঠা বেয়ে জীবনতরী
চলছে তোমার সাথে।
সাথে সাথে থাকতে থাকতে
আস্থা পেলাম আমি,
আমার কাছে তুমি প্রিয়
অনেক বেশি দামি।
দামি বুঝি জীবন আমার
প্রিয় জনের কাছে,
ভালোবেসে সকল মানুষ
ভবের মাঝে বাঁচে।
বাঁচতে তুমি শেখালে তাই
তোমায় বাসি ভালো,
জলে ভাসা দুই নয়নে
জ্বাললে তুমি আলো।
নিজের হাতে দিকের সন্ধান
দেখিয়ে যেই দিলে,
সেই থেকে মোর শ্রদ্ধা ভক্তি
অর্জন করে নিলে।
স্মৃতির ফুল আমার টেবিলে
মাহমুদুজ্জামান জামী
এখানে অনেক ঘাস,
ফুলের গাছ আর
আলো ছিলো,
অজস্র পাতার ফাঁকে
রোদ এসে
পড়তো টেবিলে,
জানালায় যত দূর দেখা যায়–
বিস্তৃত সবুজ,
মাটি কেমন
অবাক উর্বর!
সুদীর্ঘ একাকী সরু পথ,
আবার কখনো
একটি বড় বট গাছের
বিস্তীর্ণ ছায়া পথের মাঝে–
এসব দৃষ্টিকে
আচ্ছন্ন করতো।
মন নির্জন দুপুরে
জানালায় চেয়ে থেকে দূরে…
হারাতো একাকী কত আপন সুরে!
প্রতিক্ষাতে
আসাদুজ্জামান খান মুকুল
দক্ষিণা বায় দোল দিয়ে যায়
আসে কতো ফুলের ঘ্রাণ,
শিহরিত হয় যে তনু
উথালপাথাল আমার প্রাণ!
ফাগুন গেলো চৈত্র এলো
প্রেম রসিয়া নাইরে ঘর।
কোন প্রেয়সীর নাগাল পেয়ে
সখা আমায় করলে পর?
নিঝুম রাতে চাঁদের জ্যোৎস্না
ধরার ভালে দেয় যে চুম,
বিরহতে এই অভাগীর
চোখের মাঝে নাই রে ঘুম !
প্রতিক্ষাতে থেকে থেকে
জীবন যৌবন করলাম শেষ,
কাছে এসে বলো প্রিয়
আমার প্রতি কীসের রেষ?
বিনয় সুরে তোমায় বলি
একবার এসে দেখে যাও!
যৌবন অন্তে মনের ঘরে
বইবে না আর দক্ষিণ বাও!
জাগরণের জুলাই
সাব্বির হাসান নিরব
জেগে উঠেছিল জাতি আবারো নতুন এক শপথে,
ভেঙে চুরে ফেলেছিল অন্যায়, শৃঙ্খল, সকল অন্ধ পথে।
সহজ ছিল না সে পথ, ছিল না কোনো শান্তি,
রক্ত আর অশ্রু বেয়ে এসেছিল বিজয়ের প্রাপ্তি।
ছাত্রসমাজ ছিল অগ্রভাগে, দৃপ্ত ছিল তাদের কণ্ঠ,
পিছনে ছিল জনতার ঢল, বুকে আগুন, হাতে অঙ্গীকার অন্তর।
শত মেধাবী ঝরেছে, হারিয়েছে জীবন দীপ্ত,
কাঁদিয়েছে একটি জাতি, রেখে গেছে আলো জ্বালানো চিত্ত।
এক হাতে খেলে বেড়ানো শিশু, বয়স মাত্র ছয়,
আজ শহীদের তালিকায় তার নাম, কষ্টে কাঁদে হৃদয়।
সদ্য বিবাহিত সে মানুষটা, স্বপ্নে ভরা চোখ,
বউয়ের চুড়ি এখনও বাজে, যেন শুনতে পায় শোক।
আবু সাইদের সাহস যেন বজ্রের তেজে ভরা,
মীর মুগ্ধ হেসে শহীদ, প্রভাতের দিকে ধরা।
হাসির মাঝে জ্বলছিল যে নিঃস্ব প্রেমের দীপ্তি,
ইতিহাসের পাতায় পাতায় গাঁথা রবে সেই স্মৃতি।
চট্টগ্রামের চোখ ভেজানো সেই সকালটা আজও ভাসে,
ওয়াসিম আকরামের প্রাণ গেল, তবুও মাথা ছিল উঁচু আকাশে।
তার রক্তে লেখা হলো, আরেকটি বীরত্বের গল্প,
বুকের মাঝে রেখেছে জাতি, লুকানো অশ্রু অল্পস্বল্প।
এই বিপ্লব শুধুই লড়াই নয়, এটা জাতির জাগরণ,
এই রক্ত, এই আত্মত্যাগ, নতুন চেতনার কান্না-হাসির কারণ।
জুলাই শুধু মাস নয় আর, এক পবিত্র প্রতিজ্ঞা,
জেগে থাকো বাংলাদেশ, এ তোমার নতুন দিগন্তরেখা।
সুরভিত গোলাপ
সোলায়মান বাদশা
আরাধ্য পাথরের পানে,
তৃষিত নয়নের শুধু অনন্ত চেয়ে থাকা।
পাথর কিছু কয় না, কিছুই কয় না—
শুধু তাকে ঘিরে পাক খেতে থাকি
এক জনম জমে-যাওয়া কথা।
দলে দলে, কত বর্ণিল বর্ণমালার উদ্ধত পদযাত্রা—
হৃদয়হীন, এই যাত্রায় কিছু নেই।
শুধু
গর্জে ওঠে একটা ভয়ংকর শব্দ,
যার ভেতর,
ভয়ে-ভয়ে আমিও ঢুকে যাই,
আর পাক খেতে থাকি…
যেতে যেতে, পাক খেতে খেতে ক্লান্ত চোখে পড়লে তুমি—
নিজেকে চেনালে অন্য জাতে, অন্য ধর্মে।
অথচ, আমি দেখতে পেলাম—
তুমি, সুরভিত গোলাপ।