১.
কল্পচিত্র
সাজ্জাদ সাদিক
বিকেলের রোদ নিভে যায় হিজলের ছায়ায়
সফেন সমুদ্রের ঢেউ দৃষ্টি যতদূর যায়
ভেসে যায় —
অবসন্ন শরীরে দক্ষিণের হাওয়া মেখে
একা বসে আজ নিঃসঙ্গ নিঃসীম মায়ায়,
কল্পনায় যেন কার যাপিত জীবন-বাস্তবতার
দুঃখ। স্মৃতি। মায়া । অনটন । অপ্রেম।
কলুষিত প্রেম। অবিনাশী ভালোবাসা।
২.
ধূ্ুলিধূসর স্মৃতিপট
সাজ্জাদ সাদিক
বুকের ভেতর জমে আছে আমার
পুরনো ভালোবাসা প্রথম যৌবনের,
প্রাচীন বসন্তের পুরনো প্রেম,
প্রেমিকার চোখের মায়া,
বৃষ্টিভেজা চুল তার ষোড়শ শ্রাবণের
ঠোঁটে তার কৃষ্ণচূড়ার লাল বসন্ত
কেমন অযতনে পড়ে আছে আমার স্মৃতি জুড়ে,
শিশিরভেজা ঘাসের মতো ছড়িয়ে আছে
বুকের মানচিত্র জুড়ে
শতাব্দীর পুরনো দালান হয়ে, যার উপর
আজ শেওলারা পরজীবী হয়ে বাস করছে
আর ঠুকরে ঠুকরে খাচ্ছে অতীত।
৩.
বিনয়ী প্রার্থনা
সাজ্জাদ হোসেন
চোখের নিচে আমার নির্ঘুম রাতের চিহ্ন
আঁখিদ্বয়ে চৈত্র মাসিক খরান শুষ্কতা
অশ্রুর কোনো ফোঁটা নেই অবশিষ্ট
চারপাশে মনে হয় নীল অপরাজিতা আছে ফোটা।
গোলাপের কাঁটা ফুটেছে দেখো
গালের অশ্রু মুছা এ আদরের হাতে
কপালের টিপ কিংবা চুলের বেণি
যে হাতের কাছে করতো বিনয়ী প্রার্থনা।
৪.
নির্জন জীবন
সাজ্জাদ সাদিক
একটিবার ছুটেছিলাম পেছন পেছন
আলোর খুুঁজে গিয়েছিলাম বিরান বনের পথটি ধরে
এখন আমি একলা একা, ম্লান জোনাকিরে হয় না দেখা
ফিরবো আমি জীবন মাঝে কেমন করে?
একটি তারা কষে পড়ুক ফেরার পথে
জোনাকিটা হারিয়ে গেছে আলো ফুরিয়ে গহীন বনে
ঘোর আঁধারে জীবন একা, খুঁজে পাই না পথের রেখা
কেমন করে জীবন কাটাই এই নির্জনে?
৫.
পুরনো ধ্রুপদি
সাজ্জাদ সাদিক
ব্যথা পেয়ে আর্দ্র বালিশে কারো দুটো চোখ
নিশি-নিভৃতে ছলছল করে,
কিংবা বিনিদ্র রজনীর সংগ্রামী নক্ষত্রেরা
ভোরের হাসিতে সন্ধ্যামালতীর মতো ঝরে।
দুঃখ মেখে খুব গোপনে কারো বিধ্বস্ত বুক
ঢেউ তুলে কােনো স্রোতস্বিনীর,
স্মৃতির ফুল মলিন হয়ে নক্ষত্রের মতো কষে
ভুলে যায় কেউ হারানো সুর পুরনো ধ্রুপদির।