স্মৃতির পলক

0
114

খাদিজা আক্তার

অবশেষে চলে যেতে হয়। সময়ের শেষ বিকেলে সূর্য যখন গোধুলিতে রক্তিম যথাসম্ভব রসদ নিয়ে চলে যেতে হয় নতুন গন্তব্যে। ছাত্রীজীবনের স্মৃতির পলক।সুখ-দুঃখের দিনরাত্রি। এটাই চিরসত্য ও চিরবেদনার। ছাত্রীজীবনের সেই আনন্দঘন দিনগুলো, ফেলে আসা স্মৃতিগুলো আমাদের বুকে শূল হয়ে বিধছে। মনের অজান্তেই ভাবছি কোনো নতুন অজুহাত কিংবা অনিয়মে যদি আবারও শুরু করা যেতো এই জীবনের হালখাতা, হয়তো জীবনটা আরো পরিপাটি হতো, ভুলগুলো, শোধরানো যেত। কিন্তু হায়! এ যে অসম্ভবেরই আহ্বান। সময় একবার চলে গেলে তা কি আর ফিরে কোন দিন! তবে নিশ্চিত এই রেখে যাওয়া দিনগুলো আমাদের পেছনে ছায়া হয়ে ঘুরবে অনেককাল, হয়তো অজীবন।

            "হাসি খুশি মাখা
             হৃদয় পটে আঁকা
            সেই সোনালি দিন।
                মনে পড়ে যায় 
                মন কুড়ে খায় 
                বিষাদের বীণ"।

সেই সোনালি দিনগুলো এখন শুধুই স্মৃতিকথন। নিরবে নিবৃতে চোখের কোনায় দোল দিবে আমরণ। অসংখ্য উপাখ্যানের খেরোখাতা আমাদের তাড়িত করবে। দৃষ্টির সীমায় ছড়িয়ে থাকবে বিচরণ করা মাদ্রাসায় কাটানো মুহূর্তগুলো। তার ইটের গাঁথুনিতে লেগে থাকা স্মৃতির কথকতা। মনের বিশাল জায়গা জুড়ে থাকবে আলোর দিশারী প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষীকাগণ, তাদের আদর ও শাসন। আমাদের পেছনে অনুক্ষন তাদের-নিখাদ নিস্পাপ শ্রম আমাদের বেধেছে ঋণের বাঁধনে। কি করে হালকা করবো এই ঋণের বোঝা! তাদের আশার ছিটেফোটাও যদি বাস্তবায়ন করতে পারি এই শেষ আস ভরসা। মনে পড়ে, সেই আঙিনার বিস্তৃত মাঠ জুড়ে দৌড়াদৌড়ি, হৈ হল্লোর, কানামাছি, খেলার মুহূর্তগুলো। ক্লাসে প্রবেশের পর থাকতো পড়াশোনার প্রতিযোগীতা, থাকতো মন কালা – কালি,কতো শত অভিযোগ আরো কতো কি। মাথার মধ্যে সারাক্ষণ ঘুরপাক খেতো নভেম্বর-ডিসেম্বর এর পরীক্ষার চিন্তা। সেও ছিলো এক বৈচিত্র্য।

লিখুন প্রতিধ্বনিতেলিখুন প্রতিধ্বনিতে

একসাথে পড়াশোনা,, খেলাধুলা , পাশাপাশি বসা। এতো শত স্মৃতি কিভাবে ভুলি! কখনোই ভুলতে পারবোনা সেই চিরচেনা মুখগুলো। আমাদের সারাবেলা একই সুত্রে গাঁথা ছিলো। একজনের শোক আমাদের সবাইকে ব্যথিত করতো, আর আনন্দ স্পর্শ করতো সবাইকে। আমরা বেড়ে উঠেছি একই বাগানে, একই সঙ্গে, যেনো আমরা একই অঙ্কুর থেকে জন্মানো শত লতাগুল্ম। এখন সেই প্রিয়মুখলোগুলো খুব মনে পড়ে, মনে হচ্ছে জীবনের বড় একটা অংশ হারিয়ে গেছে। এখন সেই চেহারাগুলো মনে মনে দেখছি আর ভাবছি কোথায় লিখে রাখি ঐ প্রিয় নাম যারা একদা পাশা-পাশি ছিলাম।

            "কোথায় সে চিরচেনা 
            এতো প্রিয় মুখ
             যাদের জুড়ে ছিলো 
            হৃদয়ের অকপটে 
            একমুঠো সুখ"।
Previous articlePoem by Ivan Pozzoni || ইতালির কবির কবিতা
Next articleজীবনগাথা 
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here