আকাশলীনা

0
171

মায়িশা আবসারী আদীবা 

তাকে আমি আকাশলীনা‌ বলে ডাকি। প্রকাশ্যে নয় , গোপনে। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম,আমায় একজন বন্ধু দিন, আমার শুন্যতা দূর করুন।তার মাস কয়েক পর ক্যাম্পাসে হঠাৎ একজন বললো” তুমি কোন ডিপার্টমেন্ট?”
ব্যস। তারপর চললো ঘন্টা খানেকের আড্ডা । বুঝলাম আমার প্রার্থনা বিফল হয়নি। অবশ্য , পুরোপুরি নিশ্চিত তখনো ছিলাম না। তারপর কেটেছে দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী। অনিশ্চয়তাও কেটেছে সেই সাথে । একদিন ক্যাম্পাস থেকে বাড়ি ফিরছি একসাথে। হঠাৎ বাস নামিয়ে দিল পলাশী মোড়ে। আর যাবে না। কি ভয়ংকর অবস্থা। কিচ্ছু চিনি না ‌। তবে আরো কিছু দূর গেলে বাকিটা হয়তো চিনে যেতে পারবো এই ভরসায় আমরা রিকশায় উঠলাম। কিন্তু দুর্ভোগের মাত্রা সেদিন কিছুটা বেশি ছিল বোধ হয়‌। রিকশা আমাদের নামিয়ে দিল অন্যপথে।
আমি কিছুই চিনতে পারছি না ।তবে আকাশলীনা এবার খানিকটা চিনেছে। কিছু অভিজ্ঞতা, কিছু অনুমানকে সঙ্গ করে আমায় আমার গন্তব্যে পৌঁছে দিল‌‌ সে। আমি জীবনের পথও ঠিক এমনি করে মাঝে মাঝে হারিয়ে ফেলি। দ্বিধায় পড়ি। তখন আকাশলীনা কে মনের অজান্তেই হয়তো খুঁজি। কিন্তু আঁধার অরণ্যে আমায় যে একাই হাঁটতে হবে।এইতো নিয়ম ।তাই সেই অরণ্যের হদিস সে পায় না কখনো।
যাকগে সেসব কথা, এবার আসি আকাশলীনা নামের প্রসঙ্গে। জীবনানন্দ আমার কাছে চিরকালই দুর্বুদ্ধ ‌। তবে কেউ কেউ বলে আকাশলীনা হলো আকাশের বিস্তার আর মুক্তির প্রতীক। আবার কেউ বলে এটা ভিনদেশী শব্দ যার অর্থ তারা। এইসব অলংকরণ তো তাকেই মানায়। আমার একাকীত্বের আঁধারে এই তারাটাই তো জ্বলে উঠেছিল সেদিন। যে তারা কে দূর থেকে ক্ষুদ্র একটি কণা বলে ভ্রম হয় অথচ কাছে এলে তার বিশালতায় বিস্ময় জাগে।

লিখুন প্রতিধ্বনিতেলিখুন প্রতিধ্বনিতে

দিনলিপি লেখার এই পর্যায়ে হঠাৎ থামলাম‌। আর লিখতে ইচ্ছে করছে না ‌। হাত বাড়িয়ে এলিনা ফেরান্তের my brilliant friend উপন্যাসটা পড়তে শুরু করলাম ‌। উপন্যাসের সাথে আমার জীবনের কোনো মিল নেই । এলেনা আর রাফায়েলার সাথেও আমার এবং আকাশলীনার অনেক পার্থক্য। তবু ও কেন যেন মনে হলো অনুভূতির আদ্রতায় যে নদীর জন্ম সে সাগরে গিয়ে দূরের কোনো এক অজানা নদীর সাথে মিশে গেছে। এ তো গেল উপন্যাসের কথা। আরো কত গল্প দেখি চারিপাশে। ভিন্ন আঙ্গিকে সেই একই পুরোনো গল্প, সেই একই অনুভূতি।
আমি আবার দিনলিপি লিখতে বসলাম । পাতা উল্টে লিখলাম,” আকাশলীনা, তুমি কে? অনুভূতির ডাকনাম?”

Previous articleহাসনাহেনার ঐশী
Next articleভণ্ড বন্ধু 
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here