কৃষক রাজা

0
91

গাজী আবু হানিফ

এক.

গাঁয়ের নাম নয়নপুর।কৃষি প্রধান একটি গ্রাম। যে গ্রামের মাঠের বুক চিরিয়া এঁকেবেঁকে বহিছে ভারত হইতে আসা সালদা নদী।আছে সুবিশাল ধানের মাঠ। সবুজ replica watches বনবনানী, আর পুকুর দীঘি। প্রতি বছর ফসল তুলিবার পর বসে নদীর ঘাটে বিরাট এক গ্রাম্যমেলা।যা ভুলিবার মত নয়।সারা দেশের মানুষ এই মেলার কথা জানে।আর বছর শেষ হইয়া নববর্ষ আসিতেই মন ও চোখ পড়িয়া থাকে বাজারের মেলার পানে।

গ্রামে আছে বড় বড় কৃষাণ বাড়ি।যাহাদের আঙিনায় বড় বড় খড়ের কুঞ্জি। আর বাড়ির রাস্তায়,উঠোনে, ছাদে ধানের ছড়াছড়ি। অনেকে ধান কাটিছে,আবার কাঠের replica watches uk গুঁড়িতে মুঠ মুঠ ধানের শিস বাইড়াইয়াও (মানে পিটিয়ে) ধান ছাটিছে।কেউ কতগুলো গরু একসাথে বাঁধিয়া মলন দিয়া ধান ছাটিছে,কেউ ধানের বস্তা মাথায় করে আনিছে,কেউ সিদ্ধ করিছে,কেউ শুকাইছে।কেউ ঢেঁকিতে ধান ভানিছে।দস্তুর পুরো বাড়ি জুড়িয়া এক বিরাট আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশ। উঠানে, রাস্তার পাশে ধান পড়িয়া চারাও হইয়া গিয়াছে। হাঁস মোরগ সে ধান আনন্দে চঞ্চু দিয়া দলবেঁধে খাইতেছে। সকাল বেলায় সূর্যের আলো পড়িলেই গ্রামখানি ঝলমল করিয়া হাসিয়া উঠে।পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আর গাছপালা বনবনানী সবুজ রঙিন হাসিতে মনের মাঝে সুখের রঙ আঁকিয়া দেয়।নয়ন জুড়ানো গ্রাম বলেই নাম হইয়াছে নয়নপুর।হয়তো কোন শিক্ষিত লোক এই নাম দিয়াছে।

মাঠ থাইকা ধানকাটা শেষে বাড়িতে আইসা বউকে perfect fake Breitling ডাক পাড়ছে, মিয়া বাড়ির ছেলে ছলিম মিয়া ।
কই গো,সফুরচাঁন।
আমারে হুক্কাটা সাজাইয়া আইনা দাও।বড় তিরাস লাগছে,একগ্লাস পানি দাও।
সফুরচাঁন গ্লাসটা ভালো করে ধুইয়া টিউবওয়েল চাপিয়া তাজা এক গ্লাস পানি এনে দিলো।
সফুরচাঁন -এই ধরেন
ছলিম মিয়া হাত বাড়াইয়া গ্লাস ধরিল।
পানি খাইয়া বলছে, হুক্কাটায় তামাক সাজাইয়া আন।
সফুরচাঁন: হুক্কাটা- আনতাছি।
সফুরচাঁন হুক্কা আর একটি তালপাতার পাখা নিয়া আইছে।
ছলিম মিয়া হুক্কা টানিছে আর সফুরচাঁন বাতাস করছে।
আর বড় বড় মেহনতি লাল চোখে বউয়ের মুখের দিকে তাকায়, গতর দিয়া ঘাম বাইয়া পড়ছে,কাঁপতে কাঁপতে গামছা দিয়া মুখ ও কপাল,গার মুইছা দিছে,সফুরচাঁন ।রোদে পোড়া শরীর,ঘামে চিকচিক করছে।
তামাক টানতে টানতে মিয়ার বেটা ছলিম মিয়া হাঁক পাড়ছে।আর উঠানের কোনায় একটা বেতের চেয়ারে বসে চারদিকে তাকাচ্ছে, লোকজনের কামকাইজ দেখছে।পরনে লুঙ্গি, গতরে সাদা হাফহাতা সুতি গেঞ্জি। মাথায় ছোট পাতলা।মুখভর্তি কালো কুচকুচে দাঁড়ি।সফুরচাঁনের চেহারা দোহারা গোছের। টান টান কর্মঠ শক্তিশালী ভাব।লম্বা চুল আঁচড়াইয়া খোঁপা বাঁধা।আর শাড়ী কাপড়ের আঁচল দিয়ে ঘোমটা দেওয়া। শ্যামলা বর্ণ।মুখে শত কষ্টের মাঝেও একটা হাসির ছাপ লেগে থাকে।কেউ বুঝতেও পারবে না, এই নারীর কোনো দুঃখকষ্ট আছে।দুই ছেলে দুই মেয়ে। ছোট ছেলে বাবলুকে স্কুলে পাঠায়।তাকে যে শিক্ষিত করতে হবে।মিয়া বাড়ির মান রাখতে হবে।

মিয়া সাহেব, হঠাৎ বলে উঠে,দুই গ্লাস দুধ নিয়া আস,বাবলুর মা।
দুই গ্লাস কেন্?এখানে তো আর কোন লোক নাই।
আরে, নিয়া আস।
সফুরচাঁন কথামত নিয়া আসে-
হাতের কাছে দিতেই বলে- এই এক গ্লাস তুমি খাও। না,পরে খামো,ভালোবাসা উথলাইয়া উঠছে,বুইড়া মিনসের কুইড়া তাল।
আরে,চুপচাপ খাওতো।এত কথা বল কেন্।এসব তুমি বুঝবা না।এইটা আমার দাদাজান শিখাইছে।
আমার সামনে বইসা খাও।
না,এইটা কি কইতাছেন?
ধমকের স্বরে ছলিম মিয়া বলছে: খাও বলছি-
একটু থতমত হইয়া ধীরে ধীরে আঁচলে মুখটা ঢাকিয়া বসে বসে দুধটা খাইল।
শোন: আমার ছেলেমেয়েদেরকেও এমন সমান সমান খানা দিবা।কোনো টেরবেটের করবা না।মাইয়া মানুষ না থাকলে আমি কি আমার মাকে পাইতাম? ও বউ, কথা কও?
জ্বি,এখন থেকে সবাইকে এই শিক্ষা দিবা।লেখাপড়ার জন্য সবাইকে বলবা।আমাদেরকে আর এমন থাকলে অইব না।শিক্ষিত অইয়া ফসল ফলাইতে অইব।এতে ফসল বাড়িবে।দেশ উন্নত অইব।মানুষ সুখে শান্তিতে থাকব।আমাদের মত এমন কষ্ট করতে অইব না।

  • ও সফুরচাঁন : গঞ্জের মেলায় এবার আমার রাজার বেশ পইড়া অভিনয় করতে অইব,আর তুমি হইবা রাণি।আমি কৃষক রাজা,তুমি কৃষক রাণি।অনেক পুরস্কারও পাওয়া যাইবে।ঘোড়ার গাড়িতে ঠকঠক কইরা সারা গ্রাম ঘুরব,বুঝলে।খুব আনন্দ লাগবে আমাদের। গ্রামের লোক বাহবা দিবে,মেয়েরা ধানের গীত গাইবে,একটু পর পর ফুল ছিটাইয়া দিবে, আর বলবে কৃষক রাজার জয় হোক,কৃষক জাতির জয় হোক।

কৃষক বাঁচলে,বাঁচবে দেশ,
সবাই করবে আরাম আয়েস।

থুর, এইটা কি কইতাছেন,আপনি হইলেন,পুরুষ মানুষ, আমি হইলাম, মাইয়া মানুষ।
-এবার কমিটির এই সিদ্ধান্ত হইছে।কোনো আমতাটামতা নাই। আমার মিয়া বাড়ির মান রাখতে অইব।গেল বছর করছে ভুইয়া বাড়ির লোক।এবার আমাদের নাম পড়ছে।এটা লটারি দিয়া হয়,বুঝলে?
-মাইনসে কি কইব?

  • মাইনসের কথা শুনলে অইব না।না করলে সরকার বাড়ির তারা পাইব।এইটা আমাদের গঞ্জের মেলার রেওয়াজ।
    আচ্ছা, আপনে যা বুঝেন।
  • একটু সুন্দর টুন্দর কইরা কতা কইবা?
    আরে ডর পাইবা না।
    গত বছর না তুমি ঐ জব্বার ভুইয়া আর তার বউকে দেখছ।কি সুন্দর সাজ সাজিছে,বেশ চমৎকার লাগছিল। মনে হয় বিয়ার সাজন।
    ভালা একখান শাড়ি পাইবা।শাড়িটা কমিটির টাকায় কেনা।আমরাতো চাঁদা দিছি।অনেক লোক মেলা দেখতে আইব।দশ গেরামের মানুষ থাকব।চেয়ারম্যান মেম্বার সবাই থাকব।
    বুঝলে?
  • আচ্ছা –

দুই দিনের জন্য মেলা বসে গঞ্জের। প্রথম দিন থেকেই পুতুল নাচ শুরু হয়।সকাল বিকাল রাত এই তিন সময় দেড় ঘন্টা করে নাচ দেখানো হয়।রাতে থাকে বাউল গান।আর মুড়ি মোয়া, কদমা, জিলেপী ও খেলনা সহ কত খাবার ।বটগাছের তলার পাশে থাকে সাপ খেলা।আর ঢেঁকিতে চাল,চিঁড়া তৈরি হয় এক জায়গায়।গাইল ছেহাইট দিয়েও চালকাড়া,চিঁড়া দুকা হয়।আরও থাকে বাঁশের বেতের জিনিসপত্র,মাটির হাঁড়ি পাতিল কলস,বাসনকোসন ।মেলা দেখলে মন ভইরা যায়।

মেলায় ঘুরলে মনে হবে গোয়ালভরা গরু আর গোলাভরা ধানের কথা।বাঙালি জাতির আদিম ঐতিহ্য ও সম্পদের কথা,রাজা-বাদশার কথা।গ্রামের আউল বাউল পালাগান, যাত্রাপালার কথা। পুথিপাঠের কথা।
ছেলেমেয়েদের পেঁ পো বাঁশির সুর আর আমাদের নকশি পাখা, নকশি রুমালের কথা। গ্রামের মানুষের গ্রামীণ জনপদের কথা।গরুর গাড়ি, মুইশালের কথা।

পরদিন সকালে হবে লাঠিখেলা আর বিকেল দুইটা থেকে সাজানো হবে কৃষক রাজা ও রাণিকে। থাকবে পালকীর ব্যবস্থাও।তিনহাল গরুকে সাজিয়ে আনা হয়।লাঙল জোয়াল গুলোও।তিনজন চাষি হাল চাষ করে আসবে পান্তা মরিচ আর লাল মরিচের ভর্তা এবং গুঁড়া মাছ দিয়ে পীড়িতে বসে মাটির সানকিতে ভাত খেতে।আবার থাকবে বইচা বা ইছা শুকটী ভাজা।যা আমাদের পুর্বপুরুষেরা খেত।নয়া গাঙের পানির গুড়া মাছ আর কাচা আমের ডাল। যা খাইতে জিহ্বা টসটস করে উঠে।

একটু বৃষ্টি হলেই জেলে ও কৃষাণেরা জাল লয়ে নদীতে নেমে পড়ে।মাছ ধরার জমে আরেক মেলা।কেউ জলে নামে,কেউ নামে না।বিভিন্ন প্রকার জাল দিয়ে তারা মাছ ধরে।

আটপৌরে সংসার।যৌথ পরিবারে থাকতে হতো বাপের সবগুলো ছেলেমেয়ে ও পুত্রবধূদেরকে। বড় হাঁড়িতে হতো ভাত তরকারি রান্না।বেশির ভাগ সময় একসাথে খাওয়া হতো।এত বড় সংসারে থাকত নানা সুখদুঃখের কাহিনি।যিনি ভাত বাড়িয়া দিতেন,কোনো কোনোদিন তার বেলায় শেষে ভাত তরকারি থাকত না।আধাপেট খেয়ে রাত্রিযাপন করতে হত।বিদ্যুৎ ছিল না।মাটির তেলের বাতি আর হারিকেনের আলোতে সন্ধ্যা ও রাত কাটত।এ বাড়ি হতে ও বাড়িতে গেলে মশালের মত পাটকাঠিতে আগুন জ্বালিয়ে যেত।পাকা রাস্তা ছিল না।থাকত খালের উপরে বাঁশের সাঁকো।

হেঁটে লাই (লাই- বেতের তৈরি টুকরির মত) নিয়ে দূর গ্রামের হাট থেকে খরচাপাতি আনতে হত।রাস্তাঘাটের বালাই ছিল না। ছিল না যানবাহন।দলবেঁধে লোকেরা হাটে যেত,হাট থেকে ফিরত।পথে ক্লান্ত হয়ে গাছের তলায় বা রাস্তার মাথায় বসে একটু ক্লান্তি সরাত আর সংসারের কথা বলত।তারপর আবার হেঁটে হেঁটে বাড়িতে চলে আসত।বাড়ির গাডায় ( গাডা মানে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথ) চোখ রাখত,কখন ‘তাইন’ আসে। আসতে দেখলেই ছোটে গিয়ে লাইটা নামাইয়া ধরাধরি করে ঘরের পিছদরে ( পিছদর হলো অন্দর ঘরের সামনা,যেখানে রান্নাবান্না করার ছোট ঘর থাকে) আনত।

দুই.

গঞ্জের মেলার এবারের সভাপতি আবদুল মালেক মাস্টার। বায়েক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। খুব নামী ও গুণী শিক্ষক। দশ গ্রামের লোক তাকে একবাক্যে চিনে ও মান্যি করে। আর সেক্রেটারি হইল বাচ্চু মেম্বার। এবার চেয়ারম্যান আবু তাহের সরকার থাকিবেন প্রধান অতিথি। আর উনার তত্ত্বাবধানেই পুরো মেলাটি সুন্দর ভাবে করা হয়।তাহার অদূরে কসবায় বিজনা তীরের বিরাট মুসলেম গঞ্জের গরুর বাজারও রহিয়াছে ।সেখানেও মাসব্যপী কাঠের মেলা, চার গাছ বসানো হইত।এখনও সে ধারাবাহিকতায় বসে কাঠের মেলা।

কিন্তু কথা থাকে মেলার রাজা-রানিকে সাজিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে মেলাপ্রাঙ্গণ সহ সারাগ্রাম ঘুরানো হইবে।গত বছর রাজাকে কাপড়ের মাঝে পাকাধানের শিস দিয়া মুকুট বানাইয়া ছিলো। আর রাণিকেও অনুরূপ সাজানো হইয়াছিল। রাজার পায়ে ছিলো খরম,হাতে বেতের লাঠি,পরনে সাদা লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি, মাথায় গামছার পাগড়ি।পাঞ্জাবির উপরে দেওয়া হয়ে ছিল সুতায় গেঁথে ধানের শিস।রাণিকেও অনুরূপ সাজানো হইয়াছিল। এবার একটু ভিন্ন রকম হইতে পারে।মাথার মুকুট গামছায় হইবে না।হইবে পাতলায় সাজানো। হাতে থাকিবে কাঁচি, আর গাড়ীতে লাঙ্গল জোয়াল,পিছনে দুইটি বলদও রঙিন কাপড়ে সাজিয়ে হাঁটানো হইবে।

সব পরিকল্পনা আর উপকরণ চেয়ারম্যান সাহেবকে জানানো হইল,চেয়ারম্যান সাহেবও খুশি হইল।বল্ল : অনুষ্ঠান যেন সুন্দর হয়।আর বাজারে বাজারে ঢাকঢোল পিটায়ে দেড়ি দিয়া দিবা।আগামী পইলা বৈশাখ আমাদের এই মেলা শুরু হইবে।ভালো করিয়া দেড়ি দিবা।

দু’পাড়ের লোকজনের জন্য আছে গুণটানা নবুমাঝির বড় নৌকা। এপাড় হইতে ওপাড়ে লোকজন দড়ি টানিয়া স্রোত ঠেলিয়া যাত্রী পারাপার হইতো।তা এখন হইয়াছে বড় ব্রিজ। সেই মাঝির আর কে খবর রাখে? হয়তো মরিয়া গিয়াছে, নয়তো দূর কোনো এলাকায় অন্য পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করিয়াছে।
সালদার ঘাট নৌকায় ভরিয়া গেল।পাশে বড় গোডাউনটিতেও মাঝিমাল্লারা মালামাল আনানেওয়া করিত।এপারে নয়নপুর ওপাড়ে বাগড়া বাজার।দুইগ্রামের এক চমৎকার মেলবন্ধন। যা এই সালদার ঘাটকে খ্যাতি দিয়েছে। কেনা জানে এই নয়নপুরের গরুর হাটের কথা।
অদূরেই আছে ত্রিপুরা সীমান্ত। সেখান হইতেই সালদা তরতর করিয়া বহিয়া আসিয়াছে।দুপাড়ের বাসিন্দাদের মাছে ভাতে,ধানে আর ফুল ফসলে সুশোভিত করিয়াছে। নদীর ঘোলা জলে আছে উর্বরা শক্তি। যা ফসলের ফলন ভালো করে। দুই পাড় দিয়াই রহিয়াছে কাঁচা রাস্তা। হাঁটিতে হাঁটিতে মন আকুলিত ব্যাকুলিত হইয়া এক সময় বিমুগ্ধ হইয়া চায়ের দোকানে বসিয়া চায়ের পসরা তোলে।আর বৈশাখের অল্প জলে তিরতির বইয়ে চলে ছোট নদী সালদা।তার বুকে বাঁধা থাকে বালি আর ডিঙি নৌকা।

এখানের লোকজন বেশ আন্তরিক। মানুষকে খাতির করা যাদের স্বভাব। সহজ সরল মনা। চাকুরীজীবি,প্রবাসী আর ব্যবসা বাণিজ্যে তারা বেশ অনেক কাল আগে হইতেই মিশিয়া আছে।বলা যায়, এ ধারাবাহিকতা আমাদের কত কালের কে জানে? হিন্দু মুসলিম বসবাস করে। দুই সম্প্রদায় আপন ধর্মের কৃষ্টি আর সংস্কৃতিতে মুখরিত করিয়া রাখে তার প্রাণ।
পরস্পর পরস্পরের সাথে যুগ জন্ম মিলিয়া মিশিয়া একে অপরের অনুষ্ঠানে অতিথি হইয়া কাজ সম্পাদন করে। এক দোকানে বসিয়া চা পান করিতে করিতে মনের কথা বলে।সালদা নদী গ্যাসক্ষেত্র,আর কুল্লাপাথর শহীদ সমাধী দেশ ব্যাপী এই স্থানটিকে বিশেষ পরিচিতি দিয়াছে। যা ইতিহাসের সোনার পাতায় লেখা হইয়াছে। সালদা নদীর ট্রাজেডিপূর্ণ সম্মুখ মুক্তিযুদ্ধের কথা কে না জানে,যা কৈখলা ঐতিহ্যবাহী ভুইয়া বাড়ির সামনে স্মৃতির আকর হইয়া আছে।ওপারে রেল ঘেষিয়া আসিয়াছে ত্রিপুরা সীমান্ত।সালদানদী রেলস্টেশন এক চমকপ্রদ প্রাকৃতিক লীলা নিকেতনের সদন।
কালের খেয়া পেরিয়ে বাজার দুটি এখন আধুনিক দালানকোঠা, মার্কেট আর দৃস্টিনন্দন বিল্ডিং এ আভিজাত্যের সে পুরোনো ছাপ স্মৃতি ইতিহাসকে প্রাণে ধারণ করিয়াছে। দেখিলে মন ও নয়ন জুরাইয়া যায়।কালের শোভায় আরও কতোনা সুশোভিত হইবে,কে জানে? প্রযুক্তি আমাদেরকে সালদার জলের গতিময় স্রোতে অমন করিয়া টানিয়া টানিয়া আরও দূরে নিয়া যাইতেছে।তুলিতেছে আকাশের দিকে। সুন্দর পোশাক চালচলনে সাজসজ্জিত করিয়া রাখিতেছে।

শীত গিয়াছে। বসন্তের উষ্ণ আমেজে মাতোয়ারা প্রকৃতি। কোকিলের কুহুতানে মন আনচান করে।বসন্ত কৃষ্ণচূড়া,পলাশ,শিমুল ফুলে আর কচি সবুজ পাতায় বনবনানীকে মধুময় রঙিন করিয়া শিল্পীর মতো ছবি আঁকিয়াছে। এ শিল্পীকে আমরা দেখিতে পাইনা।কিন্তু তার শিল্পকর্ম দেখিয়া অবাক ও হতবিহ্বল হইয়া যাই।ফাল্গুন শেষে চৈত্র আসে। চৈত্রে তীব্র তাপদাহে বৃষ্টির জন্য মন ব্যাকুল হইয়া এক ভরা তৃষ্ণা মনের মাঝে শুকনো দীঘি করিয়া রাখে। ফুটিফাটা মাঠ ঘাট।ছেলেমেয়েরা বাড়ি বাড়ি বৃষ্টি মাগে।বদনার জলে ব্যাঙ ভরিয়া রাখে আর কুলায় ধানদুব্বো সাজিয়ে সকলেই জটলা করিয়া বাড়ি বাড়ি ফিরে। উঠানে কলস হইতে কলাপাতা মাথায় জল ঢালিয়া আউল্যারে ভাই, জাউল্যারে ভাই বলিয়া গীত গাহিয়া কাদায় গড়াগড়ি করে।কৃষাণ বধুরা তাহাদেরকে চাউল বকসিস দিয়া বিদায় করে। এভাবেই চৈত্র বিদায় হয় বৃষ্টির আরাধনা মাগিয়া।মসজিদে মন্দিরে করা হয় বৃষ্টির প্রার্থণা।

চৈত্র কাটিয়া গেল।আর মাত্র দুইদিন বাকী।সব উপকরণ প্রস্তুত হইয়া গেছে। মেলা আজ থেকেই বসিয়া গেছে। দোকানগুলিও সুসজ্জিত হইয়া নতুন রূপে সাজিয়া উঠিয়াছে। এলাকার মানুষের চোখ এখন গঞ্জের পানে। সকালবিকাল আড্ডায় লোকজনে জাঁকজমকপূর্ণ হইয়া উঠিতেছে।বৈশাখের সুখদুখমাখা এক আবেশ মনের মাঝে গাথা। আজ এ অনুষ্ঠান উপভোগ করিয়া কিছুটা হালকা করা যাইবে।মনে করা যাইবে হারানো দিনগুলোকে।পুরাতন কষ্ট ভুলিয়া গাইবে নববর্ষের গান।বৈশাখ এল রে-
এসো হে বৈশাখ, এসো – এসো-

তিন:
চৈত্র পেরিয়ে কালবৈশাখীর ঝড় বৃষ্টি আর আম পড়ার কথা সকলের মনে দোলা দিচ্ছে। আসিয়াছে নতুন বছর পহেলা বৈশাখ। বাঙালি তথা বাংলাভাষাবাসীর আবহমান ধারার এক ঐকতান এক উৎসব সন পইলা দিন।পুরাতন হিসাবনিকাশ ঝাড়িয়া দোকানিরা করিবে নতুন হালখাতা আর টাকা কালেকশনের জন্য করিবে শুভ হালখাতা উৎসব।

এ বাজারও তার ব্যতিক্রম নয়।গরু বাজার মাঠে করা হইল মেলা উৎসব,মেলা মঞ্চ । কমিটির সিদ্ধান্ত সমেত সাজানো হইল পুরো মেলাকে।মেলা উৎসব উদ্বোধন করিবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাহেব।আর তিনি পুরো মেলাটা ঘোরে ঘোরে দেখিবেন।বাউল গান গাইবে আঞ্চলিক শিল্পীগণ।

ধানের বীজ প্রদানের মধ্যে দিয়ে আর ধানের শিসের মালা পরিয়ে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি আর মেলা উদ্ বোধক সাহেবদের বরন করা হইল।উদ্বোধনী বক্তৃতায় কৃষকদের সরকারি সহযোগিতার বিশেষ কথা শোনানো হইলো।তাহাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়া চাষবাস আর ফসলের বাম্পার ফলন পাওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হইল। প্রত্যেককে কৃষি কার্ড করিবারও পরামর্শ দিল।সার আর বীজ প্রদান করা হইবে বেশি পরিমাণে। ইহাতে কৃষি অফিস আর চেয়ারম্যান মেম্বার সাহেবগণ বিশেষ দায়িত্ব পালন করিবেন।
সভায় সকল মান্যগণ্য ব্যক্তিগণ বসার পর সভার
সামনে একদল হাইস্কুল ও কলেজের ছেলেমেয়েরা খালি গলায় ধানের গান ধরিল:

ধানের গান:

আমরা ধান লাগাইরে
জমি করি চাষ,
রইদে পুইড়া, বৃষ্টি ভিজ্জা
কাটাই বারমাস।
আমরা ধান লাগাই রে।।

বীজ ফেলে চারা বানাই
বিশেষ পঁচিশ দিনে,
সেই বীজ জমিতে লাগাই
কাদামাটির সিনে
গোবর সার নিড়ি দিয়ে
ফেলি আগাছারই ঘাস।
আমরা ধান লাগাই রে।।

ধান পাকলে ধান কেটে
ধান আবার ছাটি,
সিদ্ধ করে রোদে শুকাই
চাল করি নাটি
নব অন্ন খেয়ে আমরা
পুরাই মনের আশ।
আমরা ধান লাগাই রে।।

গান শুনিয়া সকলে আবেগিত হইয়া গেল।
শুরু হইল মালা দেবার পালা।
একেক জনের গলায় মালা দিতেই লোকজন হাততালি দিয়া আনন্দ মুখর করিল সভাকে।চেয়ারম্যান সাহেবও তার সহযোগিতা ও কৃষক বান্ধব হইবার জন্য সকলকে উৎসাহিত করিল।

আর বল্ল,কৃষকই দেশের প্রাণ। আমাদের মাঠে প্রচুর সোনা পড়ে রয়েছে, কেবল তা কুড়িয়ে আনতে হবে যত্নসহকারে চাষবাস করে।আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বললেন নির্বাহী কর্মকর্তা। কৃষি অফিসার সাহেবও তার কথায় কৃষক দেশের জীবিকার মেরুদণ্ড বলে, সবাইকে উৎসাহিত করলেন,আর তারা সম্মানী ও দামী পেশায় যুক্ত।রোদ বৃষ্টি তে পোড়লেও এটি স্বাধীন পেশা।কারোর অধীন নয়। নেই কেউ কিছু বলার।তাই কৃষককে রাজা বললেন তিনি।কৃষকই শ্রেষ্ঠ, কৃষকই পারে দেশের অর্থনীতি আর পর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে।দেশের জিনিস দেশে উৎপাদন করে ব্যবহার করতে পারলে বিদেশ থেকে কিছুই আমদানি করতে হবে না।

অতিথিরা দলবেঁধে মেলার বিভিন্ন স্টল আর দৃশ্য দেখিয়া চলে গেল।শুরু হলো আকর্ষণীয় পুতুল নাচ আর কল্পিত গল্প এবং লোকছড়া বলা।যিনি পুতুল নাচান তিনিই এ কাজটি করে থাকেন।এতে বেশ আনন্দ পাওয়া যায় এবং অজানা কথা কাহিনি শুনতে পাওয়া যায়।যা শুনলে মনের মাঝে একটা নতুন ভাব তরঙ্গের উদয় হয়।লোকজন এইসব মজার কথা আর পুতুল নাচের আনন্দ মুখর নাচ দেখতে স্থানটিতে ভীড় করে থাকে।পুরুষের সাথে মেয়েরাও বোরকা পড়ে মেলায় আসে।এতেতে মেলাটি একটি সুন্দর ও প্রাণবন্ত পরিবেশে পরিণত হয়েছে।
দলে দলে লোক আসতেছে আবার চলে যাইতেছে। সকাল থেকে বিকেলে লোকজন আসে বেশি।বাজারটি লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।কেনাকাটার পড়ে ধুম।মাছ মাংস শাকসবজি কোনটাই বাকী রইল না।দুই পাড়েই নদীর পাড়ে পাড়ে মেলার স্টল বসেছে।নদীটি পূর্ব হতে পশ্চিম দিকে এঁকেবেঁকে বইয়া গেছে। আর পশ্চিমে সমতলের সাথে অন্য কোন ছোট নদীর সাথে মিলে গেছে।

৪.
পহেলা বৈশাখ এমন আনন্দ মুখর পরিবেশে কাটিয়া গেল।লোকজন মেলার তারিফ করিতে লাগিল।যেন সারা দেশটা ঘুম হইতে জাগিয়া গিয়াছে। রাতে পূর্ণিমার আলো ঝলমল করিতেছে।অনেক রাত পর্যন্ত ছলিম মিয়া চেয়ারম্যান মেম্বার আর মাতবরদের সাথে আড্ডা দিয়াছে।বেশ রাতও হইয়া গিয়াছে। তাই, জলিল,রহিম,মালেককে ডাকিয়া সঙ্গে লইয়া বাড়িতে ফিরিল।পরদিন তার পালা।
সবাই যার যার ঘরে চলিয়া গেল।ছলিম মিয়া ভাত খাইয়া বিছানায় শুইল।সফুরচাঁন পাখা দিয়া বাতাস করিতে লাগিল।কিন্তু তার দুই চোখের পাতা এক হইতে পারিতেছে না।ঘুম আসিতেছে না।মনটা ছটফট করিতেছে।অনেকক্ষণ পর শরীর ঠান্ডা হইয়া কখন যে ঘুমাইয়া গেল তা আর টের পাইল না।

মসজিদে আজান পড়িয়াছে।এক জাতীয় টিনের বোমা দিয়া আজান দেয়।কখনও চিকন গলায় জোরে জোরে আওয়াজ করে।ইহাতে বেশি দূর শব্দ যাইবে।পাখিরা কিচিরমিচির করিয়া ডাকিতেছে।এই কাঁচা ভোরেই ঘুম ভাঙিয়া গেল ছলিম মিয়া ও সফুরচাঁনের।

বেলা উঠিতেই একদল লোক ঢাকঢোল পিটিয়ে পথে পথে ঘুরিতে আসিল আর গ্রামবাসীকে আনন্দ দিতে লাগিল।বলিল: আজ আটটা থেকে লাঠিখেলা হইবে।টাঙ্গাইল থেকে লাঠিয়াল ভাড়া করা হইয়াছে। চমৎকার খেলা হইবে।
সবাই যার যার বাড়ির কাজ আর গরুগুলিকে খড়কুটো ও ঘাস দিয়া মেলায় যাইতে প্রস্তুত হইয়া গেল।ছলিম মিয়াও আর দেরি করিল না।সফুরচাঁনকে চাইট্টা ভাত ভাড়িতে বলিল।তাকেও তাড়াতাড়ি খাইয়া প্রস্তুত হইতে বলিল।

ভাত খাইয়া দেরি করিল না ছলিম দম্পতি। মেলায় চলিয়া গেল,রাজা-রানি সাজিতে হইবে।
কইগো,সফুরচাঁন, তাড়াতাড়ি চল,আর দেরি করা যাইবে না।দুপুরের খানা অইব বাজারের ভাতের হোটেলে। চল-

সফুরচাঁন তড়িঘড়ি করিয়া পানের বাটা লইয়া বাহির হইয়া পড়িল।

ছলিম মিয়া আগে হাটে আর সফুরচাঁন পিছে পিছে।পথে দুইজনে ফিসফিস কথা বলে আর মনে আনন্দ ঢেউ খেলে আবার একটু ভয় ভয়ও করে। কি জানি হয়?

লিখুন প্রতিধ্বনিতেলিখুন প্রতিধ্বনিতে

গিয়া দেখে ঘোড়ার গাড়ি আসিয়া গিয়াছে। ঘোড়া আর গাড়িটাকে সুন্দর করিয়া সাজানো হইয়াছে। ঘোড়া গুলিকে খাওয়াইতাছে কোচওয়ান। তাহারা কমিটির ঘরে চলিয়া গেল।আর তাহাদেরকে নাস্তা খাইয়া একটি ঘরে গিয়া সাজিতে বলা হইল।পোশাক ভাড়া আনা হইছে।পাতলাটিকে ধানের শিস দিয়া ফুলের দোকান হইতে সাজাইয়া আনা হইছে।কোচওয়ানকেও গামছা মাথায় হাতে লাঠি আর রাজবাড়ির রাজ পোশাক পরায়ে সাজানো হইছে।ঢুলিরা ও পালকীর চার বেহারা অনুরূপ সাজিয়াছে। রাজকীয় মানে রাজকীয়ই।কৃষক রাজা ও রানি সাজানোর পর ছেলেরা ছবি ও ভিডিও করিছে।চমৎকার লাগিছে তাহাদের। কেউ মজা করিয়া বলিছে-
তোমাদেরকে নতুন বউ জামাইর মত লাগিছে। বিয়ের সময়ওতো এমন সাজ করিতে পারো নাই। স্বেচ্ছাসেবক গণও জার্সি পরিয়াছে।
বিয়ের কথা মনে করিতেই বিয়ের সব আয়োজনের কথা মনে পড়িল তাহাদের। এ যাত্রায়ও ঘোড়ার গাড়িতে ওঠানোর আগে ধানদুব্বো আর হাতে আদা ও হলুদের মালা এবং বনফুলের মালা গলায় পরানো হইবে।

৫.
সব প্রস্তুত হইয়া গিয়াছে।সময়ও গড়িয়া চলিয়াছে। দুপুরের খানা শেষ করিয়া রাজা-রানিকে ঘোড়ার গাড়িতে ওঠানোর জন্য শ্লোগানে শ্লোগানে স্বেচ্ছাসেবকদল ও মেলা কমিটি তাহাদেরকে অভ্যর্থনা জানাইতেছে।ছলিম মিয়া সফুরচাঁনের দিকে তাকাইয়া মৃদু হাসে।সফুরচাঁন চুপচাপ। মুখ দিয়া কোন কথা আজ বাহির হইছে না।তবু মুখে একটু হাসির ভাব আনিবার ভেতর থেকে জোরচাপ করিল।

আস্তে আস্তে হাঁটিয়া ঘোড়ার গাড়িতে উঠিল।শ্লোগানে করতালিতে আর ঢোলের বাজনায় মেলাপ্রাঙ্গণকে মুখরিত করিয়া তুলিল।কোচওয়ান ছুট ছুট করিয়া ঘোড়া গুলিকে লাঠি দিয়া খোঁচা দিতেই ওরা হাঁটিতে লাগিল।তিনহাল গরুকেও অনুরূপ তিনজন কৃষক এরূপ পিছু পিছু হাঁটাইতেছে।

পুরো মেলার পথে ঘোরা দিয়া ছুটিল গাঁয়ের মাটির পথে।পূর্ব হইতে রেললাইন অবধি ঘুরিয়া আসিল আর লোকজন বাড়ি হইতে পথের মাথায় জড়ো করিয়া দাঁড়াইয়া রহিয়াছে এই দৃশ্য দেখার জন্য। কেউ কেউ বকসিসও দিল।

একটু পরপর বাদ্য বাজে।আর ছেলেমেয়েরা নাচিয়া নাচিয়া ছোটে।এরূপে পুরো গ্রামখানা ঘুরিয়া আসিতে আসিতে আছরের আজান পড়িল।তারপর বাজারে ফিরিল।বাজারে আসিয়া পুণরায় বাজারটিকে আবার ঘুরিল।কি যে আনন্দ! আর খুশি লাগিছে তা না দেখিলে কেউ বুঝিতে পারে? সন্ধ্যার আগেই এই পর্ব শেষ হইল।ছলিম মিয়া আর সফুরচাঁনকে পালকীতে করিয়া বাড়িতে আনিয়া দিয়া গেল।

Previous articleচাটুয্যে মশাই 
Next articleমা’কে নিয়ে একগুচ্ছ কবিতা
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here