ইয়াজ রহমান
জবা ও রুপা জমজ দুই বোন। জবা বড় ও রুপা ছোট। তাতে কী হয়েছে? বুদ্ধি তো আর
বয়স দেখে হয় না। জবা ছিল বোকা ও রুপা ছিল বুদ্ধিমতী।এরই পরিণামই বুঝি দিতে হয়েছিল জবাকে।
১৯৭১ সালের ২২শে জুন। প্রতিদিনের মতো খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে জবা ও রুপা চলে যায় তাদের মিশন পরিচালনা করতে নাসির চাচার বাড়িতে। নাসির চাচাকে সবাই রাজাকার বললেও এ শব্দটা খুবই ভারী মনে হয় তাদের কাছে। তাই তারা নাসির আলীকে চাচা বলে ডাকে। রুপা নাসির আলীর বাড়ির সামনে এসে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তার বাড়ির চারপাশে মাইন পুতে রাখে।কিন্তু বিপত্তিটা ঘটলো জবার সেখান থেকে ফিরে আসার সময়।
নাসির আলীর কাজের মেয়ে রুবা বেশ খানিকটা আমের আচার করেছিল খাবে বলে। রুপা আচার রান্নাঘরে রেখে অন্যকাজ করতে বাড়ির ভিতরে যায়।এদিকে জবা সেই কাচাঁ আমের লোভ সামলাতে না পেরে, যখনি জবা খেতে বসে, খানিকক্ষণ পরেই রুবা দৌড়ে আসে এবং তাকে দেখে চিৎকার করতে থাকে। কোন কিছু বোঝার আগেই জবা দৌড় দিতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পরে যায়। আর তখনই মাইন বিস্ফোরণ ঘটে। বাহিরে এসে রুপা দেখে জবা এখনো আসেনি। তার আর কিছু বুঝতে বাকি থাকে না। জল খাওয়ার নাম করে রান্নাঘরে গিয়ে জবা যে সর্ব নাশ ডেকে আনবে তা কে জানতো? ২ মাস আগে তাদের বাবাকেও একই পরিণতির শিকার হতে হয়েছিল। সেবার মিলিটারিরা বেঁচে গেলেও ধরা পড়ে যায় তাদের বাবা।মিলিটারিরা তাদের ক্যাম্পে বন্দী করে রাখে এবং মাইন বিস্ফোরণে আগুনে পুড়ে মারা যায় তাদের বাবা। অপূর্ণতার বেদনায় প্রকৃতি বোধহয় গুমরে মরতে না পেরে জবাকেও বানায় সে একই পথের পথিক। চোখের কান্না থামিয়ে রুপা লাল -সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে চিৎকার করে স্লোগান দিয়ে ওঠে,” জয় বাংলা। “
