শাসনেই হয় সাধন

4
449

এম এম আর তাহমিদ 



১.
বেশ কদিন ধরেই পাড়ার মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলো ঘরটার সংস্কার কার্যক্রম চলছে। ভিতরের কিছু অংশ ভাঙা, আবার নতুন করে গড়া, স্টিলের সিঁড়িটা বদলানো, আবার এই একতলা পাকা পুরোনো বাংলোটির বাইরের অংশ নতুন রঙে রঞ্জিত করার চেষ্টাও চলছে। এ নিয়ে তাওসিফের মাঝে বেশ ভাবান্তর দেখা গেছে। ভ্রু কুঁচকে বলিরেখা টেনে কাটা কম্পাসের পেন্সিলের মতো সে চারপাশে ঘুরে ঘুরে বোঝার চেষ্টা করছে আসলে কী হচ্ছে?! কিন্তু সে আগা গোড়া কিছুই বুঝতে পারছেনা।
অবশেষে তার দুশ্চিন্তার অবসান হলো, আজ সকালে টাটা কোম্পানির বেশ লম্বা চওড়া একটা ট্রাক ঢুকেছে পাড়ায়। গৃহস্থালি অনেকগুলো আসবাব পত্র নিয়ে বেশ কয়েকবার আরব্য ঘোড়ার মতো দম্ভভরে দাপিয়ে ঢুকে লাগাম টেনে ধরেছে বাংলোটির সামনে। বন্ধুদের থেকে খবর নিয়ে তাওসিফ জানতে পারলো যে, এক সৌদি প্রবাসী পরিবার এই বাংলোটি কিনে এই পাড়ায় স্থায়ী নিবাস গড়ার মনস্থির করেছে । মাল পত্তর দেখেই বোঝা যাচ্ছে—বেশ খান্দানি পরিবার।
সে এগিয়ে গেল তাদের কারো সাথে পরিচিত হওযার জন্যে, দেখল প্রায় তার সমবয়সী একটা পুত্র সন্তান আছে বাংলাের বর্তমান মালিক নাহিদ সাহেবের,
একটু লম্বাটে মুখ, গায়ে জিন্সের শার্ট ও প্যান্ট।
তারা যে সৌদি থেকে এসেছে তার কোনো বিন্দুমাত্র লেশ পর্যন্ত নেই।
প্রথম আলাপেই তার সাথে ভাব জমে গেল তাওসিফের। তার নাম হলো আবিদ। বেশ মার্জিত কথা বার্তা কিন্তু কোথায় যেন একটু খামখেয়ালিপনা রয়েছে। বাংলোটা থেকে তাওসিফদের বাসা বেশি দূরে নয়—তিন চার বিল্ডিং পরেই তাদের বাসা। কয়েকদিনের মধ্যেই আবিদ আর তাওসিয়োর মাঝে বেশ সখ্যতা পরে কঠে। ভোরের মিষ্টি কিরণের আগে অর্থাৎ ফজরের সালাত থেকে শুরু করে রাতের মিষ্টি আভার চাঁদ বা এশার সালাত পর্যন্ত তারা প্রায় একসঙ্গেই চলাফেরা, উঠাবসা করে। শুধু তাওসিফ মাদরাসায় থাকাবস্থায় তাদের সাহচর্যে একটু ছেদ পড়ে। কিন্তু তাও ক্ষণিকের; কয়েকদিনের মাথায় আবিদও তাওসিফের মাদরাসায় একই ক্লাস—সেভেন ভর্তি হয়। এবার আর তাদের ঠেকায় কিসে! ।
দিবাযামি একসাথে গল্প-গুলতানি, ঠাট্টা-ইয়ারকি আর আড্ডাবাজি করে বেড়ায়।পুরো গ্রামে তাদের বন্ধুত্ব নিয়ে একটা হইচই পড়ে যায়।
আবিদের ভর্তি রোল হলো ৩৬ আর তাওসিফ তো আগের মাল—তার রোল ০১। কিন্তু এক বছরের মাথায়ই আবিদ ‘৬’টাকে লাথি মেরে ‘৩’ নিয়ে আসন গেঁড়ে বসে ক্লাসরুমে।মেধায় সে অতি ধুরন্ধর। কিন্তু পড়ালেখা খুব কম করে; সারাদিন টইটই করে বাইরে ঘুরে। তার পাল্লায় পরে তাওসিফও এখন সারাদিন বাইরে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু সে আবিদের ঠিক উল্টো; তার আবার কম পড়লে চলেনা। কিন্তু তাতে কি আসে যায়! সে এখন এমন একজন অতি ধনী- মেধাবী বন্ধু পেয়েছে, যার সাথে চললে খাওয়া কোনোদিনই মিস হবেনা, এর জন্যে যে আবার সে কৃতঘ্ন, তা কিন্তু নয়, সেও চেষ্টা করে আবিদের মুখে যথাসাধ্য আহার তুলে ধরার জন্য। কিন্তু সবসময় কি আর পারে?! তার বাবা মনির মাওলানা একটা মাদরাসায় সামান্য বেতনে চাকরি করে, তা দিয়েই তো সংসার চালাতে কষ্ট, আবার সাহেবী আবদার কীভাবে রাখবেন প্রতিদিন?!

এভাবেই ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টাতে থাকে, সময়ের বিশাল কাঁটাটা সব কিছু ছাড়িয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকে। এবার এইট থেকে নাইনে উঠার সময় তাওসিফের জীবনে এক মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে।তার এই সুদীর্ঘ ৮ বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম কেউ তাকে রোল ০১ থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে; সে আর কেউ নয়, তার প্রাণের বন্ধু, সর্বক্ষণের সাথী আবিদ। আবিদ তো আনন্দ আত্মহারা কিন্তু তাওসিফের গোলগাল ফর্সা মুখটা দুঃখে একদম বর্ষার মেঘের মতো ঘন কালো হয়ে গেল। তার মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল যেন বন্ধ হয়ে গেছে। বুক ফেটে, চোখ উল্টে কাঁদতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু কিভাবে কাঁদবে?! সে তো দুধের শিশু না যে, সে স্বর্গ মর্ত্য কাপিয়ে কান্না করবে। রেজাল্ট শিট হতে নিয়ে যে স্থাণুর মতো সটান দাঁড়িয়ে আছে। তাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আবিদ এগিয়ে এসে বললঃ —কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? বাসায় চল..
—বাবা শুনলে আমাকে একদম তুলাধুনা করে ফেলবে…
—আরে তুই এতো চিন্তা করিস কেন?! খেলায় যেমন হারজিত আছে পরীক্ষাতেও তেমন হারজিত আছে। এতে এতো ভেঙে পড়ার কী আছে ?! আর তোর তো রোল ০২ হয়েছে, বেশি তো পিছুয় নি…

—তুই যা আমি আসছি
—তোকে না নিয়ে আমি এক পাও নড়বোনা, দরকার হলে তোর মাকে বলে আসবো যেন তোকে বকা না দেয়…
—নারে… আমার খুব ভয় করছে…

আবিদ তার কাঁধে হাত দিয়ে বলল, “আরে এতো টেনশন কিসের! বাসায় গিয়ে দেখবি কিচ্ছু হবেনা”

২.
সব সময় আবিদের কথা সত্যি হলেও এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। মায়ের বকুনি আর বাবার পিটুনিতে তাওসিফের হাড় গোড় একদম যেন বালুর মতো গুঁড়াে গুঁড়াে হয়ে গেছে। “সারাদিন টইটই করে বাইরে ঘুরাঘুরি আর পড়াশোনার ধার ধারে না…
এ যে আমার সাথে সাহেবজাদা একেবারে… দেখেছিস ঐ ছেলেটা কেমন চালাক! তোকে আজে বাজে সব কাজে ব্যস্ত রেখে রোল ০১ টা সে কেমন সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে?!” —এ সব অজস্র সহস্র মহামূল্যবান বাণী তাকে শুনতে হয় পিটুনির তালে তালে; গানের মতো করে। এক হপ্তা তাকে ঘরবন্দি করে রাখা হলো। কিন্তু জামিন পাওয়ার পর যে লাউ সে কদু। আবার দিবাযামি এখানে সেখানে ঘুরাঘুরি গালগল্প, আড্ডাবাজি আর দুষ্টমিসহ আরো নানান কি! সাথে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা ফ্রি ফায়ার! মা-বাবার কারণে খুব বেশিদিন বাইরের ঘুরাঘুরি টিকল না তাদের, ফলে আলাদিনের চেরাগের সেই দৈত্যের মতো করে বেরিয়ে এলো এই রাস্তা। এখন সারাদিন রুমের দরজা বন্ধ করে মাথা গুঁজে তারা ফ্রি ফায়ার খেলে। ফলে যা হবার হয়েছে, বরং আরো শোচনীয়।
নাইন থেকে টেনে উঠার সময় এবার দুই এর আগের শূণ্যটা পরে এসে রীতিমতো তালগোল পাকিয়ে হুলুস্থূল কান্ড বাঁধিয়ে দিল। পুরো মাদরাসায় সাড়া পড়ে গেল। শিক্ষকদের একের পর এক ফোন কলে মনির মাওলানার ব্রহ্মতালু শুধু গরমই হয়নি বরং আগুনের কুণ্ডলীতে পরিণত হয়েছে। রাতে বাসায় ফিরে আসার সময় একটা লেবু গাছের ডাল কোত্থেকে নিয়ে এসেছেন। তা দিয়ে তাওসিফকে মেরে একদম রক্তাক্ত করে ফেললে বাধ্য হয়ে থামেন তাওসিফের মায়ের বাধায়। তাড়াতাড়ি করে তার মা তাকে স্থানীয় দাতব্য চিকিৎসালয়ে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে দিলে ডাক্তাররা তার পুরো শরীর সাদা ব্যান্ডেজ দিয়ে মুড়িয়ে দেয়। তখন তাকে একদম কার্টুনে দেখা মমির ভিতরে থাকা ডেডবডির মতো লাগছিল। একসপ্তাহ এক পক্ষ পরে বাসায় ফিরে সে।

৩.
“আর মানুষ তাই পায় যা সে চেষ্টা করে, আর নিশ্চয় তার প্রচেষ্টার ফল শিঘ্রই দেখা যাবে”

“আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি (আল্লাহর উপর নির্ভর করার ধরন প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করে) বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমি উট বেঁধে আল্লাহর উপর নির্ভর করব, নাকি উট ছেড়ে দিয়ে?’ উত্তরে মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “বরং তুমি উট বেঁধে আল্লাহর উপর ভরসা কর।” (তিরমিযী ২৫১৭নং)”

“সাধনার কাছে অসাধ্য বলে কিছু নেই”

-এমন কিছু কথা লিখে পড়ার টেবিলের সামনে টাঙিয়ে রেখেছে তাওসিফ। বাসা থেকে বের হওয়া একদম বন্ধ করে দিয়েছে সে। ফ্রি ফায়ার আনিস্টল করে মোবাইল মায়ের কাছে জমা দিয়ে দিয়েছে । খুব দরকার ছাড়া আবিদের সাথে সে এখন খুব একটা আলাপ করেনা। কোমরে গামছা বেঁধে সে নেমে পড়েছে সেই রক্তাক্ত যুদ্ধক্ষেত্রে, যে যুদ্ধক্ষেত্র তার রক্ত আর আবিদের আহ্লাদে পরিপূর্ণ। যে যুদ্ধে তাকে পাড়ি দিতে হবে জীবনের কঠিন কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এক সাগর—যার নাম দাখিল/এসএসসি পরীক্ষা। তার জীবন এখন শৃঙ্খলিত। কঠিন নিয়মের পিঞ্জরে আবদ্ধ, কারণ সে এক বইতে পড়েছে যে, “
সফলতার জন্যে নিয়ম শৃঙ্খলা অপরিহার্য”।
এখন সে এক মিনিট কেন এক ন্যানোসেকেন্ডও সময় নষ্ট করেনা। সারাদিন পড়ালেখা করে, এমনকি খাওয়া বা বাথরুমের সময়ও। তার চোখের নিচে কালি পড়ে চোখে, চুলগুলো সব এবড়ো থেবড়ো কিন্তু মনের ভিতর রয়েছে হিমালয় পাড়ি দেবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
সে প্রতিদিন সকালে ফজরের সালাতের প কুরআন তেলাওয়াত করো নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা পড়তে শুরু করে—

বল বীর,
বল উন্নত মম শির,
শির নেহারি আমরি নত শির ঐ শিখর হিমাদ্রীর,
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাঁড়ি…

তারপর হিংস্র সিংহের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে বইয়ের উপর। রাতদিন একাকার করে পড়ে সে। এভাবে সে প্রিটেস্ট পরীক্ষা দেয় এবং আবিদকে হটিয়ে আবার নিজের সিংহাসনে পাকা পোক্তভাবে আসন গ্রহণ করে। সে এ+ পায় কিন্তু আবিদ পায়নি। এতে আবিদের টনক নড়ে।
সেও শুরু করে দেয় গাধার মথে খাটা খাটুনি। আড্ডাবাজি বা ফ্রি ফায়ার সেও বন্ধ করে দেয়। এতে তাদের দুজনের যুদ্ধ চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়, দুজনেই জঘন্যরকমের পরিশ্রম করতে থাকে। প্রতিযোগিতা চলতে থাকে কে কার থেকে বেশি পড়বে বা পরিশ্রম করবে।ফলে টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোলে দেখা গেল—দুজনেই এ+ পেয়েছে এবং দু’জনের নাম্বারই একই। এবার রোল ০১ এর সিংহাসন নিয়ে শুরু হলো দ্বন্দ। এ বলে আমি এর উপযুক্ত আবার ও বলে আমি। পরবর্তীতে শিক্ষকের সাহায্যে লটারির মাধ্যমে আবিদ জয়ী হয়।
এতে তাওসিফের রাগ, জেদ ও অভিমান সপ্তমে চড়ে যায়।
সে এবার তাদের পাড়া থেকে তাদের নানুবাড়ি
চলে যায় যেন আবিদ তার পরিশ্রম দেখতে না পারে এবং তার প্রতিপক্ষও না হতে পারে।
কিন্তু কেউ তাকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে- আমার দ্বারা আর পড়ালেখা হবেনা। ঐ দিকেে লোকমুখে এইব কথা শুনে আবিদ তো বেজায় খুশি। তার যেন আনন্দে হার্টফেল করার মতো অবস্থা। সে তো পড়ালেখা প্রায় ছেড়েই দিয়েছে। কিন্তু সে তো ভুলেই গেছে যে, এসএসসি বা দাখিলে তার রেজাল্ট খারাপ হলে পুরো ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়বে।

লিখুন প্রতিধ্বনিতেলিখুন প্রতিধ্বনিতে

৪.
“—কিরে তুই না বললি তোর দ্বারা আর পড়ালেখা হবেনা” দাখিল পরীক্ষার দিন গুলোতে পরীক্ষার হলে তাওসিফের সাথে তার মাদরাসার শিক্ষক বা ছাত্র যার সাথেই দেখা হয় সেই তাকে এই প্রশ্নে জর্জরিত করে। সে ইনিয়ে বিনিয়ে বলে:
“—হ্যাঁ বলেছিলাম তো, এখন শেষ চেষ্টা টা দিচ্ছি আরকি”।
টেস্ট পরীক্ষার পর থেকে বোর্ড পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত তাওসিফ একটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ করে ফেলেছে।
সারাটা দিন সে নানুর বাড়ির একটা রুমে দরজা আটকিয়ে শুধু পড়া আর পড়া সাথে লেখাও বাদ যায়নি। এ কদিন সে সূর্যের রোদও মাড়ায়নি।

আজ বুধবার—দুপুর দু’টা নাগাদ এসএসসি/দাখিল পরীক্ষার রেজাল্ট বেরুবে। তাই গতকাল বিকালেই দাদুবাড়ি থেকে বাসায় ফিরেছে তাওসিফ। পরীক্ষা শেষ করে সে দাদুবাড়ি গিয়েছিল বেড়াতে। সেখানে থাকাবস্থায় সে দিনরাত যখনই সালাতে দাঁড়াত তখনই দোআ করত মহান আল্লাহর কাছে—

“রাব্বানা আ-তিনা ফীদ দুনয়া হা্সানা ওয়া ফীল আ-খিরাতি হা্সানা ওয়া ক্বিনা আ’যাবান না-র”
(সূরা বাকারা-২০১)

আর সালাতের বাইরেও সারাক্ষণ আল্লাহর কাছে দোআ করতো যেন সে গোল্ডেন এ+ পায়। আজ যোহরের সালাতের পর সে মসজিদে সিজদায় পড়ে মহান আল্লাহর কাছে শুধু কাকুতিমিনতি করছে:

“হে আল্লাহ আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে গাধা খাটুনি করে চেষ্টা করেছি।এখন রেজাল্ট তোমার হাতে। তুমি যদি আমাকে গোল্ডেন এ+ দাও তাহলে কেউ তা ঠেকাতে পারবে না, আবার তুমি যদি তা না দাও…”

দোআ শেষ করার পূর্বেই তার বাবা এসে তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়ে বলল:

“বাবা! মহান আল্লাহর লাখো কোটি শুকরিয়া, তোকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তুই শুধু গােল্ডেন এ+ নয়, পুরো মাদরাসা বোর্ডে প্রথম হয়েছিস! এই নে শহরের সেরা মিষ্টি আমি কিনে নিয়ে এনেছি তোর জন্যে…”

আনন্দে তাওসিফের চোখ থেকে টপটপ করে মসজিদের মেঝেতে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। সে অভিভূত হয়ে নির্বিকার বসে আছেম
তার বাবার এমন রূপ সে আগে কখনো দেখেনি—এই স্নেহের সাথে সে অপরিচিত। সে তীক্ষ্ণ কিন্তু অবাক বিস্ময়ে তার বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে—এই কি তার সেই বাবা! যিনি তাকে পিটিয়ে তার হাড় মাংস সব একাকার করে দিয়েছিল?!…

Previous articleহারিয়ে গিয়েও থাকা
Next articleআলেয়া
প্রতিধ্বনি
প্রতিধ্বনি একটি অনলাইন ম্যাগাজিন। শিল্প,সাহিত্য,রাজনীতি,অর্থনীতি,ইতিহাস ঐতিহ্য সহ নানা বিষয়ে বিভিন্ন প্রজন্ম কী ভাবছে তা এখানে প্রকাশ করা হয়। নবীন প্রবীণ লেখকদের কাছে প্রতিধ্বনি একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম রুপে আবির্ভূত হয়েছে। সব বয়সী লেখক ও পাঠকদের জন্য নানা ভাবে প্রতিধ্বনি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। অনেক প্রতিভাবান লেখক আড়ালেই থেকে যায় তাদের লেখা প্রকাশের প্ল্যাটফর্মের অভাবে। আমরা সেই সব প্রতিভাবান লেখকদের লেখা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত প্রতিটি বিষয় দ্বিধাহীনচিত্ত্বে তুলে ধরতে। আপনিও যদি একজন সাহসী কলম সৈনিক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে স্বাগতম। প্রতিধ্বনিতে যুক্ত হয়ে আওয়াজ তুলুন।

4 COMMENTS

  1. “গল্পটা পড়ে হৃদয়টা কেমন যেন হালকা হয়ে গেল। লেখক খুব সুন্দরভাবে ছাত্রজীবনের অনুভূতি, বন্ধুত্বের উষ্ণতা আর বাবা-মায়ের শাসনের কঠোর কিন্তু ভালোবাসায় ভরা দিকটা তুলে ধরেছেন। গল্পের প্রতিটি মুহূর্ত যেন বাস্তব জীবনেরই প্রতিচ্ছবি। বন্ধুর সঙ্গে ছোট ছোট দুষ্টুমি, আবার ঘরে ফিরেই বাবা-মায়ের শাসনের মাঝে দায়িত্ববোধের শিক্ষা—সব মিলিয়ে এমন গল্প আমাদের হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। বাস্তবতা আর আবেগের এমন মিশেল খুব কম লেখাতেই দেখা যায়। সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here