ফরিদ আহমদ ফরাজী
দাদার সাথে খুনশুটি করতে করতে বুদ্ধির ঢেঁকি বনে গেছে তানভীর।শুধু বাড়ি নয় পুরো গাঁয়ের লোকে জানে তানভীর বুদ্ধিমান।বয়স এগারো কি বারো।এতেই পেকে গেছে বুদ্ধিতে।
সে আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইজ এ বিশ্বাসী। তার ঘুম টুনটান আওয়াজে গেঙে যায়।
সেদিন রাতে খটখট শব্দে তার ঘুম ভেঙে গেলো।জেগে দেখলো, একটি চোর তার ঘরে কি যেনো খুঁজতেছে।চোরের কাধে একটি বড়সর পোটলা।
তানভীরের বুঝতে বাকি নেই, চোর ঘরের জিনিসপত্র ঝোলাবদ্ধ করছে।
এদিকে চোর বেচারা দেখলো তানভীরের চোখ খোলা। তাই ভড়কে গেলো।
তানভীর হঠাৎ বুদ্ধিকরে বললো, চাচ্চু ভয় পেয়ো না।তোমায় কিছু বলবো না।বা চিৎকারও করবো না।তুমি নির্ভয় তোমার কাজ করো।
কারণ আমি দেখছি তুমি খুব রোগা।খাওনি কতোদিন? আহ্ তোমার বুঝি খুব ক্ষুধা পেয়েছে?জানো চাচ্চু!! তোমারে দেখতে ঠিক আমার চাচাজানের মতো।চেহারা দেখতে ঠিক তেমনি।চোর চাচ্চু তোমার নামটা কি গো? এসো কাছে এসো। বসো আমার পাশে।তুমি কোনো টেনশান করো না।আমার বেশ কিছু টাকা আছে তা তোমারে দিয়ে দেবো।তুমি অনেক কিছু কিনে খেতে পারবে।
তানভীরের এমন আচারণে চোরের ভয় কিছুটা কমে গেছে।
এসো চাচ্চু , কাছে এসো।বসো,তানভীর একনাগারে এমন নানান কথায় চোরটির মন গলাতে চেষ্টা করলো। সফল যে হয়নি তা কিন্তু নয়।।চোরটি তানভীরের খাটে এসে কিছুটা দুরত্ব বজায় রেখে বসলো।
এবার তানভীর শোয়া থেকে উঠে বসলো।
–আচ্ছা চাচ্চু তুমি চুরি করো কেনো? কাজ করতে পারো না? জানি কাজ করতে কষ্ট হয়। তবুও কাজে শরীর সুস্থ থাকে।কাজ করে টাকা উপার্জন করার মাঝে আনন্দও আছে।আছে সন্মান।আর চুরি করা বেশ খারাপ। তানভীর আরো বললো–
বুঝেছি, তুমি কাজ করতে অক্ষম তাই না? চাচ্চু?
–হ্যাঁ বাবা। কাজ করতে পারি না।শরীরে বল পাই না।ওদিকে বাড়িতে ছেলে মেয়ে আছে। তাদের মুখে দুমুঠো ভাততো দিতে হবে। অনুপায় হয়ে চুরি করছি।
তানভীর বললো- চাচ্চু, প্রায় প্রতিরাতে একটি স্বপ্ন দেখি।একই রকম। তুমি স্বপ্নটার মানে বলতে পারো??
চোর বললো – বলো কি স্বপ্ন দেখো প্রতিরাতে।
–দেখি আমি একটি কাঁঠালগাছে উঠছি।কাঁঠাল পাকছে।পাকা কাঁঠাল বোঁটাছিঁড়ে হাতে নিয়ে আর নামতে পারছি না।তখোন বাবা, বাবা বলে চেঁচাতে থাকি।ঠিক এভাবে– তানভীর জোরে জোরে বাবা বাবা বলে চিৎকার করতে লাগলো।
তানভীরের চিৎকার শুনে ওঘর থেকে ওর বাবা জেগে তানভীরের রুমে এসে হাজির। এসেই দেখে একি! কান্ড!!
এ কে বাবা তানভীর??
তানভীর বললো ধরো বেটাকে ও চোর।
