রাকিবুল ইসলাম রাহান
রাত একটা পেরোয়নি, আরও অল্পক্ষণ হয়েছে মাত্র। অন্ধকার ঘন হচ্ছে আশেপাশে, ঘর ফেরার পথটি অপরিচিত ও নির্জন মনে হচ্ছে। আমি বাস থেকে নেমে অল্প আলোয় ঘেরা ফুটপাতে পা রাখলাম।
ঠিক ওমন মুহূর্তে সামনে এলেন এক রিকশাওয়ালা মামা। বললেন, কোথায় যাবেন? বললাম, জুরাইন রেলগেট। তিনি চাইতে লাগলেন দেড়শো টাকা। মনে মনে বললাম, রাস্তার দূরত্ব এতটাও না যে দেড়শো চাইবে। তাই কিছু বললাম না, চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।
ঠিক ওমন সময় অপরিচিত দুজন বলল, আমরাও জুরাইন যাব। ওদের বললাম, আপনারাও ওদিকেই? ওরা ঘাড় নাড়ল। বললাম, তাহলে সবাই মিলে যাই। দরদামে মামা আশিতে রাজি হন। অপরিচিত তিনজন অপরিচিত রাতের ঘর ফেরার পথে হয়ে গেলেন পথসঙ্গী।
রিকশায় চেপে অল্পক্ষণেই পৌঁছে গেলাম জুরাইন রেলগেটে । ওরা বলল, আপনি অপরিচিত নন, পথচলায় সাথে ছিলেন। তাই আমাকে ওরা ভাড়া দিতে দিল না। অপরিচিত দুজন অল্প মুহূর্তে অপরিচিতকে আত্মীয় করে নিল ভালোবাসায়।
জুরাইন গেট নেমে ওখান থেকে আবার সিএনজি করে হাসনাবাদ গেলাম ।
ওনাদের একটু আগে আমি সিএনজি থেকে নামলাম
নেমে তাড়াহুড়া করে ভাড়াটি আমি দিলাম
ওরা চাইনি যে আমি তাদের ভাড়াটি দি কিন্তু
একপর্যায়ে জোর করে টাকা দিলাম
ভালোবাসায় ও বিশ্বাসে অল্পক্ষণে অপরিচিতরাই হয়ে গেল আত্মার আত্মীয়।
বাসায় ফেরার পথ আবার অন্ধকার ও নিরিবিলিতে ঘেরা ছিল। মনে মনে অল্প ভয় হচ্ছিল, কারণ অনেক আগে ও এলাকা অপরাধপ্রবণ ছিল। ঠিক ওমন মুহূর্তে অপরিচিত এক ভাই এলেন সামনে। বললেন, “আমি ওদিকেই যাব।
আমি বললাম, চলেন তাহলে সাথে যাই।
রিকশায় দামাদামিতে মামা চাইছিলেন একশত টাকা, বললাম, ৬০ টাকা দিই। অপরিচিত ভাইটি বলল, আমার কাছে একটু টাকা কম আছে আমি বললাম সমস্যা নেই ভাই
রিকশা থেকে নামার পর
আমি ৪০ টাকা দিলাম ভাই টি২০ টাকা দিল
অবশেষে ভাইটির মুখে হাসি ফুটে উঠল
আমি বললাম মনে মনে অপরিচিতরাও ভালোবাসা দিতে পারে, অল্প আলো ফেলতে পারে অন্ধকার পথে। অপরিচিত মানুষগুলোর সাথে অল্পক্ষণ কাটানো মুহূর্তগুলো মনে গেঁথে গেল সুন্দর স্মৃতিতে, যা অন্ধকার রাতে পথ চলতে সাহস ও অনুপ্রেরণা জোগায়।
আমি রাকিবুল ইসলাম রাহান অপরিচিতকে ভালোবাসায় কাছে টেনে নিতে চাই, কারণ জীবন হলো সম্পর্কেরই নাম।
গল্পের চরিত্র:
প্রথম দুজন ভাই: পল্লীবিদ্যুত্ অফিস, হাসনাবাদে চাকরি করেন। তাদের বাড়ি কুমিল্লায়। দ্বিতীয় ভাই পানগাঁও এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
আমি (রাকিবুল ইসলাম রাহান) আমার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে; চাকরির সূত্রে এখানে এসেছি।
