মেহেজাবীন চৌধুরী নোভা
ভোর ৪:৪৫ মিনিট…দিগন্তের সুনশান-নিস্তব্ধতা ভেঙে সূর্যের উঁকি দেওয়ার চেষ্টা চলছে..
প্রতিদিনের মতো ফজরের নামাজ পড়ে বারান্দায় পাখিদের কলকাকলি শোনার জন্য ব্যাকুল প্রতীক্ষার মন আমার বারান্দায় পাড়ি জমালো।কিন্তু কী আশ্চর্য!!! আজ কোনো পাখিদের কিচিরমিচির নেই..কেমন যেন এক নিস্তব্ধ সকাল আবিষ্কার করলাম।।মনে মনে ভাবতে লাগলাম পাখিরাও কী সাধারণ মানুষের মতো ভয় পেয়ে বের হওয়া বন্ধ করে দিলো..কী অদ্ভুত কেমন যেন আজকে খুব পাখির ডাক শুনতে ইচ্ছে করছে,দিগন্তের মাঝে ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে..
কিন্তু হঠাৎ মনে পড়লো স্বাধীন হয়েও আমি যে এক পরাধীনতায় জন্ম হয়েছি..ইচ্ছে করলেও আমি এখন ঘর থেকে বের হয়ে অসীম দিগন্তে পাড়ি জমাতে পারবোনা কেননা দেশ তো আজ জনগণের অধিকার প্রকাশের শক্তি স্বৈরাচারী ক্ষমতালোভীদের হাতে হারিয়ে ফেলেছে.. হঠাৎ করেই খেয়াল করলাম একটা পাখি রাস্তায় পড়ে আছে..স্পষ্ট বুঝতে না পারলেও বোঝা যাচ্ছে পাখিটা ব্যাথা পেয়েছে.. আমি মরিয়া হয়ে দৌড়ে বের হলাম আহত পাখিটাকে উদ্ধারের চেষ্টায়..কিন্তু আমার মনের সকল প্রচেষ্টার অবসান ঘটিয়ে বুঝতে পারলাম পাখিটা গুলিবিদ্ধ হয়ে আগেই মারা গেছে… আমার মরিয়া মনটা কেমন যেন হঠাৎ করেই আবার হুঁশ হারিয়ে ফেললো কোনো এক ক্রোধ,কোনো এক প্রতিবাদ সংগ্রামের সংকল্পে..
আমি মনে মনে ঠিক করলাম “আমার দেশকে আমি এই নিরীহ পাখিগুলোর জন্য বসবাসের উপযুক্ত করে যাবো ইনশাআল্লাহ “
উপরের লেখাগুলো আমার ভাই আকাশের ডায়েরী হতে পাওয়া,কিন্তু আফসোস আমার ভাইয়ের আর পাখিদের জন্য সংগ্রাম করা হলোনা,পাখিদের জন্য দেশ ঠিক করা হলোনা,আমার ভাইয়ের আর পাখিদের কলকাকলি শোনা হলোনা…কোনো এক
বৃহস্পতিবার পাখিদের জন্য বসবাসের পৃথিবী ঠিক করতে গিয়ে নির্মম বুলেটে বিদ্ধ হয়ে আমার ভাই হারিয়ে গেল পৃথিবীর সকল কিছু থেকে..
আফসোস আমার ভাইয়ের আর দিগন্তে পাড়ি জমানো হলোনা, দিগন্তে পাড়ি জমানো হলো না………
